আমার বন্ধুর মডেল হওয়ার শখ ছিলো । শার্ট প্যান্ট ব্যাগে করে শহরে নিয়ে যেতো তারপর কোন শপিং মলের বাথরুমে চেন্জ করে অতপর বিভিন্ন অফিসে ঘুরোঘুরি করতো কিন্তু কাজ হতো না ।
.
তার থেকে প্রথম জানলাম মডেল হতে টাকা লাগে এবং বিনিয়োগ করতে হয় । শেষমেষ তাকে একদিন হাটহাজারীর একটি শপিং মলের বিলবোর্ডে দেখেছিলাম । সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে বললাম, দোস্ত তোরে পাইছি! তোর বিলবোর্ডের সাথে এক্কান সেলফিও তুলছি । তুই তো নোবেল হয়ে গেছিস্ ম্যান!
.
সে বললো, হাটহাজারী যাওয়া মানা । শপিংমলের শর্ত আছে । মডেল হওয়ার পর সেখানে যাওয়া যাবে না তাতে নাকি ডিমান্ড নষ্ট হবে । যাই হোক, সেটাই তাকে শেষ মডেল হিসেবে দেখা ।
.
মডেলিং করার জন্য সে একটা গার্মেন্টেসের দোকান দিয়ে বসলো । দিনের বেলায় সেগুলো পরে ছবি তুলে তো রাতে ভাঁজ করে দোকানে রেখে দেয় । মডেল হওয়ার জন্য তার চেষ্টার ত্রুটি কখনো ছিলো না ।
.
পাশাপাশি বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের কাছে সে ভালোই পরিচিতি লাভ করেছে । সবাই তাকে মডেল শফিক হিসেবেই ডাকে । মডেল হওয়া হলো না দেখে রাগে ক্ষোভে অবশেষে সে পাগলপ্রায় হয়ে গেছে ।
.
গোসলের ঠিক নেই । আউট ফিটের প্রতি মনোযোগ নেই । নখ চুল দাঁড়ি কাটে না । গেন্জির উপর শার্ট পরে তো জাইঙ্গার নীচে প্যান্ট । হযবরল অবস্থা । এভাবে চলে যাচ্ছিলো তার জীবন । অদ্ভুত পাগলের বেশ-ভূষা নিয়ে থাকে । এভাবে অভ্যাসবশত সে আগের মডেলিং রিলেটেড অফিসগুলোর আশেপাশে হাঁটতো ।
.
অফিসগুলো এখন আর আগের মতো মডেল খুঁজে পাচ্ছে না । অবশেষে তাকে দেখে এক প্রকার জোর করে মডেল হিসেবে নিবন্ধন করে নিলো । এখন মডেল হিসেবে তার আবেগ কাজ করলেও বিবেক কাজ করছে না । এভাবে সে একদিন দেশের সেরা মডেল হয়ে উঠলো ।
.
আরো কয়েক বছর পর তাকে বিচারক হিসেবে মঞ্চে আনা হলো । দেশ সেরা নবীন মেয়ে মডেলের খোঁজ করার দায়িত্ব তার কাঁধে । একে একে তার সামনে র্যাম্প করে যাচ্ছে আর্টিস্টরা । সবাইকে সে নেগেটিভ মার্কিং করে যাচ্ছে । হঠাৎ একটি মেয়ে শার্টের উপর ফ্রক্ আবার ফ্রকের উপর কামিজ সাথে কামিজের উপর কোট্, কোটের উপর ওড়না সহ এহেন কিছু বাদ নাই যে পরিধান করে আসে নাই তাকেই সে সেরা মডেল ঘোষণা করলো ।
.
তার কান্ডে সবাই অবাক । অবশেষে বিচারককেও বিচারের আওতায় আনা হলো । কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলে সে বললো, ‘এই মেয়ে মডেল হলে এক দোকানে এক সাথে দাশটি কাপড় বিক্রী হবে । পাশাপাশি আমাদের তো স্পন্সর সার্ফএক্সেল কোম্পানির ব্যবসার প্রসার হবে সাথে আরেক স্পন্সর ওয়ালটনের ইস্ত্রী ব্যবহারও বেড়ে যাবে সাথে টাইটেল স্পন্সর আরএফএলের ওভার ড্রয়ারের বিক্রী বাড়ার সমূহ সম্ভবনাতো আছেই ।’