somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ:

০১ লা মে, ২০০৭ ভোর ৫:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ হোক। এগুলো কোন শ্লোগান নয়। ধর্ম নিয়ে অপকর্ম নতুন নয়। জীবনব্যবস্থার প্রবক্তা জামাতীদের গুণগান আমরা নিয়মিত শুনে আসছি। রাজনীতি আর দলীয় স্বার্থে এরা ধর্মকে ব্যবহার করে আসছে। আড্ডার পাতায় অসংখ্য বার লিখেছি কেন ধর্মভিততিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত। ধর্মের মধ্যে রাজনীতির আবিস্কার ধর্ম ব্যবসায়ীদের এক নতুন হাতিয়ার। ইসলাম এধরনের ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধার্মিকদের বিশ্বাসকে রক্ষা করার আহবান জানিয়েছে।

বাংলাদেশে ধর্মের নামে কি পরিমাণ অপকর্ম হয়েছে তা নতুন করে বলার দরকার নেই। এই উপমহাদেশে ১৯৪১ সালের ২৬শে আগস্ট ধর্মভিততিক রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামীর গঠন হয়। তারপর থেকেই এরা ধর্মান্ধতার মাধ্যমে মুসলামানদের বিশ্বাসকে কলুষিত করেছে। জামাত জন্মলগ্ন থেকেই বৃটিশদের পদলেহন করেছে। বলেছে বৃটিশরা এই উপমহাদেশের শত্রু নয়। এই উপমহাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে দালালির ইতিহাস এভাবেই জামাতীরা শুরু করে। ইতিহাস সাক্ষী দিবে জামাতীদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশী।

জামাতের ডিগবাজীর ইতিহাস আরও চমকপ্রদ। ১৯৬১ সালে জামাতের গুরু মওদুদীর ফতোয়া ছিল নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ফাতেমা জিন্নাহকে রাস্ট্রপ্রধান করলে জামাতীদের ইসলাম বরবাদ হয়ে যাবে। সেই সময় মওদুদীর লেখা "বিংশ শতাব্দীতে ইসলাম" নামের পুস্তিকায় নারীদের রাস্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলে, "রাজনীতি, দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাপনা ও সামরিক খিদমত এবং এ ধরণের অন্যান্য কাজ পুরুষের। চোখ বন্ধ করে অন্যদের অজ্ঞতার অনুকরণ করা জ্ঞানের পরিচায়ক নয়। ইসলাম নীতিগতভাবে যৌথ সমাজ ব্যবস্থার বিরোধী। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এর অত্যন্ত খারাপ পরিণাম দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশের জনসাধারণও যদি তা ভোগ করার জন্য তৈরী হয়ে থাকে, তবে তা যত ইচ্ছে করতে পারে..."। এভাবে ফাতেমা জিন্নাহর রাস্ট্রপ্রধান পদ গ্রহণ করার বিরোধিতা করে ১৯৬৪ সালে ফাতেমা জিন্নাহর সাথে মোর্চা গঠন করে। সাথে সাথে ঘোষণা দেয়, মিস জিন্নাহর নেতৃত্বে ভোট না দিলে পাপ হবে। ১৯৬৪ সালের ১১ই অক্টোবর সাপ্তাহিক শেহাব পত্রিকায় মওদুদী তার ফতোয়া উল্টিয়ে বলেন, "মোহতারেমা ফাতেমা জিন্নাহকে নির্বাচন করায় এছাড়া কোন অসুবিধা নেই যে, তিনি একজন মহিলা। এদিক ছাড়া আর সব গুণাবলীই তার মধ্যে রয়েছে যা একজন যোগ্য রাস্ট্রপ্রধান প্রার্থীর জন্য বলা হয়েছে"। আর বাংলাদেশে বিএনপি জামাত জোট তো নারী নেতৃত্বকে স্বীকার করেই মোর্চা গঠন করে। এই হচ্ছে জামাতীদের রাজনৈতিক ইসলামের আসল চেহারা।

এই হচ্ছে জামাতীদের ইতিহাস। ক্ষমতার রুটির জন্য এরা নিজেদের স্বরচিত আদর্শ গ্রহণ ও ত্যাগ করার বাণিজ্য চালায়। তাই ধর্মের নামে এরা পড়ে নানান মুখোশ। বিভ্রান্ত করতে চায় মুসলিম উম্মাহকে। বিভক্ত করে মুসলমানদের। অস্ত্র তোলে, ভয় আর ভীতি দেখায়। প্রলোভন দেখায়। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের বদান্যতায় শুরু হয় জামাতীদের পঁচাততর পরবর্তী যাত্রা। তারপর থেকেই ব্যাংক, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, সমাজ সেবা প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার দিয়ে জামাত-শিবির তাদের প্রভাব বলয় তৈরী করেছে।

চট্রগ্রাম আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের দৌরাততের কথা কারও অজানা নেই। ধর্মভিততিক রাজনীতি যে কতোটা বিষাক্ত তা তুরস্ক, আলজেরিয়া আর আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক কালে প্রমানিত হয়েছে। আর আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাতীদের হত্যাযজ্ঞের কথা কখনও ভুলব না। তাই প্রতিহত করতে হবে জামাতীদের সর্বত্র। যারা জামাতীদের তোষামোদ করেছে, প্রশ্রয় দিয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে তাদেরকেও চিন্হিত করে প্রতিহত করতে হবে। ধর্মের নামে অপকর্ম মানবতার সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে এগোতে হবে নতুন প্রজন্মকে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০০৭ সকাল ১০:৪০
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×