আজকে আমি বাংলাদেশের পড়ালেখার প্রেক্ষাপটে কিছু কথা বলবো। বিশেষ করে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের উপর পড়ালেখা যেভাবে চাপিয়ে দেয়া হয় সেভাবে হয়তো আর কোন দেশেই চাপিয়ে দেয়া হয়না।
প্রতিটা বাবা মায়ের স্বপ্ন তার ছেলে ডাক্তার হবে নাহয় তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে নতুবা কোন ব্যাংকের বড় একজন অফিসার হবে। এগুলা যদি নাই হতে পারে তাহলে কি লাভ তাকে পড়াশোনা করিয়ে, জীবন ব্যর্থ।
অষ্টম শ্রেণী পাশ করার পর নবম শ্রেণীতে উঠার সময় সাবজেক্ট বাছাই করার যে প্রক্রিয়া টি থাকে সেখানে দেখা যায় বাবা মা একধরণের জোড় করে তার ছেলের উপর বিজ্ঞান বিষয়টি চাপিয়ে দিচ্ছে। দেখছেনা, তার ছেলে বিজ্ঞানে কতটুকু আগ্রহী, দেখছেনা তার ছেলের আগ্রহ কিসে? দেখছেনা তার ছেলের স্বপ্ন টা কি আসলে? তাদের কথা একটাই, তুমি বিজ্ঞান নিয়ে পড় ডাক্তার হবা।
দেখা যায় একটি ছেলে দেশের ইতিহাস জানতে চায়, জানতে চায় একজন নাগরিকের কর্তব্য গুলো, জানতে চায় পৃথিবীর গঠন, তার এগুলাতে অনেক আগ্রহ। কিন্তু না তার আগ্রহের ষোল আনা পূরণ হবার সম্ভাবনাও যে নাই। কারণ তার উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে তার অনাগ্রহের বিষয়টি
ডাক্তার, দেশের অন্যতম একজন সম্মানিত লোক। দেশের মানুষ তার দিকে চেয়ে থাকে একটি সাহায্যের আশায়। কিন্তু কয়জন লোকই ডাক্তার হবার প্রতিভা নিয়ে জন্মায়? কয়জন আর তাদের মত মেধা নিয়ে জন্মায়?
বাংলাদেশের শিক্ষায় সবচেয়ে বড় যে সমস্যা সেটা হল কোন কিছুর মুল্য দিতে না পারা। সব অভিভাবক মনে করেন তার ছেলেকে যদি মানবিক শাখায় পড়ানো হয় তাইলে তার দ্বারা কিছুই হবেনা। মানবিক শাখা মানেই হল দুনিয়ার নিকৃষ্ট একটি শাখা।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চাকরি হল বিসিএস দিয়ে ক্যাডার হওয়া। এই চাকরি পাবার জন্য লাখ লাখ যুবক দিনের পর দিন রাতের পর রাত খেয়ে না খেয়ে পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেখা যায় এ চাকরিতে যারা টিকে তাদের অধিকাংশই মানবিক থেকে পাশ করা ছাত্র।
অভিভাবকদের বলবো, আপনি আপনার ধ্যান ধারনা বদলে ফেলুন, দেখবেন সব কিছু বদলে যাবে। আপনার সন্তানের আগ্রহ যে বিষয়টিতে তাকে সেটি পড়তে দিন। দেখবেন আপনার সন্তান কোন না কোনোভাবে সফল হবেই। জোড় করে কিছু চাপিয়ে দিয়েন না। এতে হিতে বিপরীত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৫