somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিমাপ ও একক

০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




পরিমাপ সম্পর্কে আমরা কম বেশি সবাই জানি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিমাপের গুরূত্ব অপরিসীম। এমন একটি দিনও মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না যেদিন আমরা কোন কিছু পরিমাপ করিনা। আজ এ প্রসঙ্গে সামান্য কিছু আলোচনা করবো, বিশেষ ধরনের কিছু নয় খুব সাধারণ আলোচনা । এর প্রথম কারণ হচ্ছে আমি বিশেষজ্ঞ নই দ্বিতীয়তঃ বেশির ভাগ ব্লগারও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন।

পরিমাপ কি? কোন কিছুর পরিমাণ নির্ণয় করাকেই পরিমাপ বলে।পরিমাপ করতে গেলে প্রথমেই যে জিনিষটির প্রয়োজন হয় তা হল একক (Unit)। একক কি? কেতাবি ভাষায় বলতে গেলে-
সর্বজনগ্রাহ্য বা যে আদর্শ প্রমাণ কোন পরিমাণের সাথে তুলনা করে ঐ পরিমাণকে পরিমাপ করা হয় তাকেই একক বলে। অর্থাৎ একক হচ্ছে এমন একটা প্রমাণ যা সম্পর্কে সবাই (বেশিরভাগ ব্যক্তি) অবগত এবং স্থান কাল, পাত্র ভেদে যে প্রমাণের কোন পরিবর্তন হয় না। যেমন ১০ মিটার কাপড়, আমি মাপলে যতটুকু হবে আপনি মাপলে ততটুকুই হবে, বাংলাদেশে ১০ মিটার কাপড় বললে যতটুকু কাপড় দেবে, ফ্রান্সেও ১০ মিটার কাপড় বললে ততটুকু কাপড় দেবে । এটাই এককের সার্বজনিনতা ।



ভিন্ন ভিন্ন দেশে একই জিনিষ পরিমাপের জন্য ভিন্ন ভিন্ন একক দেখা যায়। যেমন- ক’বছর আগে আমাদের দেশে ভর মাপার জন্য সের, মণ ইত্যাদি ব্যাবহার করা হত ইংল্যন্ডে এই একই কাজে আউন্স, পাউন্ড ব্যবহার করা হয়, ফ্রান্সে ব্যবহার করা হয় গ্রাম, কিলোগ্রাম ইত্যাদি। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা তথ্য আদান প্রদানে সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা দূর করতে একটি আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যাকে SI বা International System of Unites বলে, যা মূলতঃ ফ্রেন্চ Systeme International d’unite’s থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।

SI মূলতঃ মেট্রিক পদ্ধতির একটি রূপ। এই পদ্ধতিটি ব্যবহারের একটি সুবিধা হল এটি দশ ভিত্তিক পদ্ধতি। এর একটি ধাপের সাথে আরেকটি ধাপের পার্থক্য হল দশ (বা এর গুনিতক) গুন বা দশ ভাগ। আমরা গণনার কাজে যেহেতু দশ ভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করি তাই এ পদ্ধতিতে হিসাব করা অনেক সহজ।

যেমন- আমাদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয় ১৪০০ মিটারে কত কিলোমিটার, তাহলে খাতা কলম না নিয়েই আমরা বলে দিতে পারবো ১.৪ কিলোমিটার (যেহেতু ১০০০মিটার = ১ কিলোমিটার)। কিন্তু যদি জিজ্ঞাসা করা হয় ১৪০০ ইঞ্চিতে কত ফুট তাহলে ব্যপারটি আর অত সহজ থাকে না।

যাহোক বৈজ্ঞানিক কাজে অসংখ্য ধরনের জিনিষ মাপতে হয়, তার জন্য এককও অসংখ্য রকমের। যেমনঃ ভরের একক কিলোগ্রাম, দূরত্বের একক মিটার, সময়ের একক সেকেন্ড, রোধের একক ওহম, কম্পাঙ্কের একক হার্টজ, দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড ইত্যাদি। অসংখ্য ধরনের একক হলেও মূলতঃ এদেরকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা ১) মৌলিক একক (Base Unit) ২) লব্ধ একক (Derived Unit)।


মৌলিক একক (Base Unit) কি? - যে সমস্ত একক অন্য কোন এককের উপর নির্ভরশীল নয় তাই মৌলিক একক।

লব্ধ একক (Derived Unit)কি?- যে সমস্ত একক মৌলিক এককের উপর নির্ভরশীল তাকে লব্ধ একক বলে।

অনেকটা আমাদের ছোট বেলায় পড়া Vowel, Consonant বা মৌলিক, যৌগিক পদার্থের মত। লব্ধ একক অসংখ্য হলেও বিজ্ঞানীরা মাত্র ৭টি একককে মৌলিক এককের মর্যাদা দিয়েছেন । নিচে সেই ৭ টি মৌলিক এককের একটি তালিকা দেওয়া হল-



অসংখ্য লব্ধ একক রয়েছে। যেমনঃ দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড , ক্ষেত্র ফলের একক বর্গ মিটার, আয়তনের একক ঘন মিটার বা লিটার ইত্যাদি। এ জন্য এ বিষয়ে আর বিস্তারিত আলোচনা করলাম না, নিচে শুধু একটা ছোট তালিকা দিলামঃ



আগেই বলা হয়েছে SI পদ্ধতির এক ধাপ থেকে অপর ধাপের পার্থক্য দশ (কোন কোন ক্ষেত্রে হাজার) গুন বা দশ ভাগ এবং এই প্রত্যেকটি ধাপ বা স্তরের এক একটি নাম (prefix) আছে।যেমনঃ ডেকা, হেক্টো, কিলো বা ডেসি, সেন্টি, মিলি ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হতে পারে এত নামের প্রয়োজন কি? একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে-


যদি বলি একটি পরমাণুর ব্যস প্রায় ০.০০০০০০০০০০১ মিটার বা আমার কম্পিউটারের RAM টি ১০০০০০০০০০ বাইটস (আসলে ১০৭৩৭৪১৮২৪ বাইটস, যেহেতু কম্পিটারের হিসাব বাইনারি পদ্ধতিতে হয়) তাহলে আপনার পড়তে গিয়ে যেমন অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে আমার লিখতেও একই অবস্থা হবে এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। কিন্তু তার পরিবর্তে আমি যদি লিখি একটি পরমাণুর ব্যস প্রায় ১০ পিকো মিটার আর আমার কম্পিটারের RAM টি ১ গিগা বাইটস, তাহলে সেটি পড়তে, লিখতে, বুঝতে সুবিধা হবে আবার ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকবে । কিন্তু SI পদ্ধতির সব ধাপগুলোর নাম (prefix) আমরা কি জানি। মনে হয় আমরা বেশির ভাগ ব্যক্তিই তা জানিনা। নিচে এর একটি তালিকা দিচ্ছি সম্ভব হলে তালিকাটি সেভ করে রাখবেন আশা করি কাজে লাগবে।



আজকের মত লেখা এখানেই শেষ করছি। লেখাটি যদি আপনাদের কোন কাজে আসে তবে আমার শ্রম স্বার্থক হয়েছে মনে করবো। সকলকে ধন্যবাদ।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×