somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বানান নিয়ে বানানো কথা

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আজ বানান নিয়ে আমার নিজের কিছু বানানো কথা বলবো। আমি ভাষাবিদ নই, লিখতে গেলে আমারও বানান ভুল হয় এবং খুব ভাল পরিমাণে হয়। হয়তো আমার লেখা ৬০০ শব্দের এই পোস্টে ১২০০ বানান ভুল পাওয়া যাবে। তবে বানান ভুল এড়ানোর জন্য সদা সচেষ্ট থাকি। তার জন্যে কিছুটা সতর্ক থাকতে গিয়েই বিভিন্ন বানান ভুল দেখে নিজের মনের মধ্যে বানান ভুলের একটা শ্রেণী বিন্যাস সৃষ্টি হয়েছে। এই শ্রেণী বিন্যাসটি একান্তই আমার নিজস্ব। এটি কতটুকু ভুল কতটুকু শুদ্ধ জানিনা, তবে এটি একেবারে ভিত্তিহীন তা আমার মনে হয় না। সাধারণত নিচের “/” উভয় পাশে লিখিত বর্ণের একটির স্থলে ভুলে অন্যটি লেখার কারণে বানান ভুল করতে দেখা যায়-
অ/ও, ই/ঈ, ক/খ, গ/ঘ, ঙ/ং, চ/ছ, জ/ঝ, ট/ঠ, ড/ঢ, ণ/ন, ত/থ, দ/ধ, প/ফ, ব/ভ, য/জ/ঝ, স/ষ/স , ত/ৎ
তাছাড়া ি/ী, ‍ু/ূ , "ো" ”য” ফলা “ব” ফলার ব্যবহার এবং মাত্রা ছাড়া বা মাত্রা যুক্ত কার চিহ্নের ভুল ব্যবাহর ইত্যাদি ধরণের আরও উচ্চ মার্গীয় ভুল নিয়ে আলোচনা করলাম না। কারণ এসব বিষয়ে খুব ভাল জ্ঞান আমারও নাই।

বর্ণের ভুল ব্যবহার জনিত কারণে বানান ভুল কে আমি চার ভাগে ভাগ করেছি এবং এ শ্রেণী বিভাগটিকে মোটামুটি বাংলা বানান ভুলের মাত্রা বা Level of Misspelling বলা যায় । যিনি বাংলা ভাষায় যত অদক্ষ হবেন তিনি ততই নিম্নতর ধাপের বানান গুলো ভুল করবেন। ধাপটি এ রকম-
১) শুধু বানান ভুল
২) বানান ও অর্থ ভুল
৩) বানান ও উচ্চারণ ভুল
৪) বানান, অর্থ ও উচ্চারণ ভুল


১) শুধু বানান ভুল- এ ধরণের ভুলের ফলে শুধু শব্দের বানান ভুল হয় উচ্চারণ বা অর্থ কোনটিই পরিবর্তিত হয়না । যেমন- বাড়ি/বাড়ী, ইমান/ঈমান, উদাহরণ/উদাহরন, চাঁদ/চাদ ইত্যাদি।

২) বানান ও অর্থ ভুল- এ ধরণের বানান ভুল করার ফলে শব্দটির অর্থ পরিবর্তিত হয় কিন্তু উচ্চারণ পরিবর্তিত হয় না। যেমন- বর্ষা/বর্শা, বীণা/বিনা, শাপ/সাপ, জলা/জ্বলা ইত্যাদি।

৩) বানান ও উচ্চারণ ভুল- এ ধরণের বানান ভুলের ফলে উচ্চারণ পরিবর্তিত হয়ে যায় তবে অর্থের পরিবর্তন হয় না।প্রকৃতপক্ষে এ ধরেণের ভুলের ফলে উচ্চারণ পরিবর্তিত হয়ে যে শব্দের সৃষ্টি হয় বাংলা ভাষায় অনুরূপ শব্দ না থাকায় ঐ শব্দ দ্বারা ভিন্ন কোন অর্থ প্রকাশ পায় না। যেমন- ভালবাসা/বালবাসা, ঝিকমিক/জিকমিক, তাড়তাড়ি/তারাতারি, ঝামেলা/জামেলা, টের/ঠের, ছারপোকা/ছাড়পোকা ইত্যাদি।

৪) বানান, অর্থ ও উচ্চারণ ভুল- এ ধরণের বানান ভুলের ফলে অর্থ এবং উচ্চারণ উভয়ই পরিবর্তিত হয়ে যায়। যেমন- পড়া/পরা, পাড়া/পারা, ভাগ/বাগ, জাল/ঝাল, ঢাকা/ডাকা, ভাল/বাল ইত্যাদি।

যারা এ ধরণের ভুল বানান সচরাচর লিখে থাকেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা বাংলা বানানে সবচেয়ে অদক্ষ।
তবে এ ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায় র/ড় এর ক্ষেত্রে। অনেক ব্লগার আছেন যারা বাংলা ভাষায় অত্যন্ত ভাল, ভাল কবিতা, গল্প লেখেন অথচ ”র” আর “ড়” লেখার ক্ষেত্রে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন।
যাহোক এতক্ষন অজ্ঞের কাছ থেকে বিজ্ঞের মত কথা শুনে অনেকেই বোর হয়ে গেছেন। তাদের জন্য এখন বাংলায় বিজ্ঞ!!! আক্কেল আলীর একটি প্রেমপত্র –

ঝান(জান) সকিনা,
পত্রের প্রথমে আমার বালবাসা নিও। তোমারে ছারিয়া ডাকায় (ঢাকায়) পরিয়া থাকিতে বাল (ভালো) লাগেনা। এখানে পরিতে (পড়িতে) আসিয়াছি, কিন্তু কিছুই পরা (পড়া) হয় না। কিছু না পরিয়াই (পড়িয়াই) কলেজে যাই। ছারেরা (স্যারেরা) বলে, ”কিছু না পরিয়া (পড়িয়া) কলেজে আসিতে তোমার লজ্জা করেনা। আমি আর কি বলিবো, লজ্জায় মাথা নিচু করিয়া রাখি। এদিকে জামালের কাছে শুনিলাম তুমিও পর (পড়) না। কিছু না পরিয়াই (পড়িয়াই) তুমি নাকি ক্লাসে সব পাড়। কিছু না পরিয়া (পড়িয়া) তুমি কি ভাবে পাড় (পার), অথচ আমি পাড়ি না!! শুনিয়া লজ্জা লাগে। আসলে চিরকাল আমি বলদ আর তুমি মেধাবী, সে কারণেই পাড় (পার)। সে যা হোক কতদিন গ্রামে যাই না। তোমাকে একবার ধর্শন (দর্শন) করিবার জন্য মনটা পাগল হইয়া আছে।
আর বিশেষ কি লিখিবো। তোমার জন্য একগাধা (একগাদা) গাধা (গাঁদা) ফুলের শুভেচ্ছা।

ইতি
তোমার আক্কেল আলী

শেষ করার আগে কিছু কথা না বললে না। ৯০% ব্লগারই আমার চাইতে ভাল এবং নির্ভুল বানানে লেখেন। তারা সাধুবাদ পাবার যোগ্য। তারপরও অনেকেরেই লেখার ভিতর কিছু বানান ভুল থাকে, থাকাটাই স্বাভাবিক। কারণ প্রূফ দেখে তারপর ব্লগে লেখা পোস্ট দেয়ার মত সময় বের করা সত্যি দুষ্কর। তবে যখন দেখি শিরোনামেই মারাত্মক ভুল বানান, তখন খারাপ লাগে আর আরও বেশি খারাপ লাগে যখন সে রকম পোস্ট নির্বাচিত পাতায় যায় বা স্টিকি হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:০১
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×