জীবনের কোনো একটা পর্যায়ে এসে মানুষ তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুতুল হয়ে ওঠে। সেই পুতুল নিয়ে ইচ্ছামত খেলতে থাকেন নিয়ন্ত্রকরা- প্রত্যক্ষভাবে কিংবা পরোক্ষভাবে।
শায়লার মত কিছু মেয়েরা মাংসাশী, মিথ্যাবাদী কিংবা লোভী অ-প্রেমিকদের প্রেমে পড়ে জীবনের সবটুকু নির্মম জায়গাকে চিনে ফেলে- নিজেকে শামুকের মত গুটিয়ে নেয়। এরপর মানুষকে ভয় পেতে শুরু করে, সমাজকে ভয় পেতে শুরু করে, নিজেকে ভয় পেতে শুরু করে। সবচে বেশি ভয় পেতে শুরু করে ; প্রেমিক হয়ে উঠতে পারে এরকম সম্ভাবনাময় মানুষগুলোকে। সময় হয় গতিপথ বদলে ফেলার। শায়লারা তাই করে- গতিপথ বদলে ফেলে। যে রাস্তায় প্রেম থাকে সে রাস্তা এড়িয়ে চলতে শুরু করে।
পুতুলের নিয়ন্ত্রক হাসেন- খেলাটা একটু অন্যভাবে নতুন করে শুরু করতে হবে ভাবেন।
শায়লারা আবার হাসতে শেখেন। মৃত্যুকে হাতে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিয়ে নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন।
কিন্তু সেই স্বপ্নের বুননটা শক্ত হয়? কামনার মৃত্যু দূরে মিলিয়ে যায়? জীবনের শেষ অবধি প্রেমের কবিতা ভালো লাগে? কপালের টিপটা ঠিক করে পরার মত শক্তিটুকু থাকে? চিঠি লেখার সময় চোখ লাল হয়? বটগাছ ভালো লাগে?
এইসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে তিয়াশা সুরভীর লেখা 'খুব প্রেম অথবা মৃত্যু' বইয়ে।
আমার ধারণা, একজন লেখক কিংবা কবি তার প্রথম বইয়ে ঠিক একজন নতুন মায়ের মত- প্রথম সন্তানকে বড় করতে গিয়ে সে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও ছোটখাটো কিছু ভুল এড়াতে পারবে না। পারাটা সম্ভবও নয়।
লেখিকার প্রথম বই হিসেবে যেটুকু আশা করেছিলাম সেটুকু পেয়েছি। নিরাশ হইনি।
লেখিকার জন্য শুভকামনা। আগামী বইমেলা তার পাঠকদের জন্য আরো সুখকর হয়ে উঠুক।
বই : খুব প্রেম অথবা মৃত্যু
লেখক : তিয়াশা সুরভী
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৫