১-ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হয়ে বর্ষসেরা(১৯৯৬) যখন বয়স মাত্র ১৯ বছর কয়েক মাস।যে বয়সে জাতীয় টিমেই চান্স পাওয়া স্বপ্ন।কল্পনাকেও হার মানানো রুপকথা।
২-ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হয়ে বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল(১৯৯৮) যখন বয়স মাত্র ২১ বছর যে বয়সে বিশ্বকাপে চান্স পাওয়াটাই দুরূহ ব্যাপার।
৩-ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যিনি বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল, গোল্ডেন বুট, সিলভার বল, ম্যান অফ দি ফাইনাল সহ বিশ্বকাপের সব ধরনের এওয়ার্ড জিতেছেন এবং বিশ্বকাপের ইতিহাসে ২য় সর্বোচ্চ ১৫ টি গোল করেছেন মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলে।
৪-ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যিনি উভয় শতাব্দীতে বিশ্বকাপ ও বর্ষসেরা ফুটবলার হবার দুর্লভ কৃতিত্ব অর্জন করেন।
৫-ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যিনি ৫ টি ফিফা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট জিতেছেন যেখানে বিশ্বকাপ, কনফেডারেশন, কোপা আমেরিকা সবই আছে।
৬-ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যিনি ইউরোপের সেরা চারটি রাইভাল টিম( রিয়াল মাদ্রিদ,বার্সেলোনা,এসি মিলান ও ইন্টার মিলান) এ খেলেছেন এবং গোল করেছেন।
৭-ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যিনি তিনিটি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে বর্ষসেরা জিতেন( বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান ও রিয়াল মাদ্রিদ)।
৮- ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যার আলাদা তিনটি বিশ্বকাপে অন্তত ৩ গোল করার রেকর্ড আছে যদিও জার্মানির ক্লিন্সম্যানও এই রেকর্ডের ভাগিদার।
৯-ইতিহাসের একমাত্র ফুটবলার যিনি ৪টি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে গোল করেছেন ।
মানুষ না অন্য কিছু? এবার বলি তাকে নিয়ে গ্রেটেস্টদের মন্তব্য
১।ফুটবলের কোন ঈশ্বর থাকলে রোনালদো তার পুত্র- পেলে ।.
২ রোনালদো ইনজুরিতে না পড়লে মানুষ পেলে ম্যারাদোনাকেও ভুলে যেত-ম্যারাদোনা ।
৩। আমার দেখা সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় রোনালদো -জিদান
৪ ।রোনালদো আমা্র আইডল এবং আমি ফুটবল খেলা শুরু করেছিলাম রোনালদোর খেলা দেখে-রোনালদিনহো।.
৫ রোনলাদোর খেলা যখন দেখি তখন আমার হাত পা অবশ হয়ে যায়(২০১২ সালে রোনালদো যখন বেলন ডি অর দেয় মেসির হাতে)-মেসি
৬। রোনালদো অল্প বয়সে ইনজুরিতে পড়ে খেলা না ছাড়লে এতোদিনে পেলেকে ছাড়িয়ে যেতেন-জিকো
৭ । আমাকে কেউ পারলে রোনালদোর মত খেলোয়ার এনে দাও-ববি রবসন
৮ রোনালদই সর্বকালের সেরা ফুটবলার -ইব্রাহিমোভিচ।
৯ রোনালদোর সাথে কোন ফুটবলারের তুলনা দিবেন না -ক্রুইফ
১০ ম্যারাদোনাকে আটকানো অনেক কঠিন কিন্তু রোনালদো ছিল আমার কাছে দুঃস্বপ্ন - মালদিনি।
১১ রোনালদোকে ফেস করাই ছিল আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন বিষয় -নেস্তা
১২ সেই ৯০ মিনিটে তাকে যতটা ভয় পেয়েছিলাম আমার সারাজীবনেও এতো ভয় পাই নি -অলিভার কান ।
১৩ আমি পেলে ম্যারাদোনা দুই জনকেই দেখেছি তবে রোনালদোই আমার চোখে সেরা -মরিনহো
১৪ আমি পেলে দেখিনি আমি রোনালদোকে দেখেছি আমার কাছে রোনালদোই পেলে- এমারসন
১৫ আমার চোখে সর্বকালের সেরা রোনালদো , সে আমার আইডল ও প্রিয় ফুটবলার -করিম বেঞ্জেমা
১৬ সে আমার আইডল -তেভেজ
১৭ আমার দেখা সবচেয়ে কমপ্লিট ফুটবলার রোনালদো -ক্লোসা
১৮ আমার কাছে রোনালদোই ফুটবল -বাতিস্তুতা ।
আসলে সারা রাত লিখলেও শেষ হবে না তার সম্পর্কে
বলছিলাম সর্বকালের সেরা ফরওয়ার্ড রোনালদো লুইজ নাজারিও ডি লিমার কথা।
এই জন্যই তিনি দি ফেনোমেনন।
যার খেলা দেখেই আজও পর্যন্ত ফুটবল নিয়ে মাতামাতি করি। ইউটিউবে প্রতিদিন একবার হলেও তাকে সার্চ করতে হয় সেই জাদুকরী ড্রিবলিং দেখার জন্য।
এগুলা শুধু ব্রাজিলেই জন্ম নেয়।এবার আসল আলোচনায় আসি,
সনটা ১৯৯৬ বয়স তখন মাত্র ১৯ ,কিশোর ছেলে, বার্সেলোনায় খেলতেন তখন । ওইটুকু বয়সেই ফিফা বর্সসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন , পরের বছর আবারো !!!! তিনিই একমাত্র ফুটবলার যে সবচেয়ে অল্প বয়সে ফিফা বর্সসেরা নির্বাচিত হন। বিশেষজ্ঞরা কি আর হাদে কয় '' দি ফেনোমেনন'' !!!! এর অর্থ বিস্ময় !!!! তার খেলাটা আসলেই ছিল একটা বিস্ময় । তাকে প্রথম দেখি ১৯৯৮ বিশ্বকাপে । দুর্ভাগ্যবশত ফাইনালে ঠিক জ্বলে উঠতে পারলেন না তবে সেরা খেলোয়াড়ের সোনার বল টা ঠিকই লুফে নিলেন। ১৯৯৭ কোপা জিতলেন সোনার বল নিয়ে , ১৯৯৭ কনফেডারেশন জিতলেন ফাইনালে হ্যাট্ট্রিক করে । ১৯৯৯ কোপা জিতলেন সোনার বুট নিয়ে । ২০০২ তে ভাঙ্গা পা নিয়েও জিতলেন বিশ্বকাপ তাও আবার ৮ গোল করে সোনার বুট নিয়ে । ওই বছর বর্সসেরা ফুটবলার ও হলেন । বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান, রিয়াল মাদ্রিদ ও এ সি মিলান এই চারটি ক্লাবেই খেলা একমাত্র ফুটবলার ও তিনি । হাইপোথাইরয়ডিজম -এ ভুগার কারণে অল্পতেই বেশ মূটিয়ে গেলেন । ২০০৬ বিশ্বকাপে এসে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোল দাতা হলেও খুব একটা ভাল করতে পারলেন না ফিটনেসের অভাবে ।
ফুটবলকে তিনি যেভাবে মাতাতেন অন্য কাউকে দেখিনি তার পর এভাবে । স্বয়ং জিদান , রোনালদিনহোর মত কিংবদন্তি ফুটবলাররা তাকে আইডল মানেন । বিশ্বকাপ আসলেই শহর গ্রাম গঞ্জে চিকা মারার মত দেয়ালে ছবি আঁকতেন ভক্তরা । আমি পেলে কিংবা ম্যারাডোনা কতটুকু জনপ্রিয় ছিলেন জানি না ,তবে মনে হয় না তার মত এতটা জনপ্রিয় আর কেউ হতে পারবে কোন কালে । মূলত ফুটবলের ভক্ত হয়েছি আমি তার খেলা দেখে আর সেই সাথে ব্রাজিলেরও । স্টেপ ওভার যখন দিতেন ৩/৪ জন ডিফেন্ডার এক সাথে বোকা বনে যেতেন , আর ফিনিশিং তো দিতেন হেসে হেসে তাও আবার অলিভার কান দের মত গোল কিপারদের বোকা বানিয়ে।
আজ সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের ৪২ তম জন্মদিবস । স্যারের জন্মদিনে স্যারের জন্য রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০২