somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামাজিক লিঙ্গ

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নারী ও পুরুষকে আপনি পার্থক্য করবেন কী দিয়ে ? নারী শাড়ি পরে, সালোয়ার কামিজ পরে আর পুরুষ প্যান্ট-শার্ট, পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে। নারী নুপূর পরে রুমঝুম শব্দে আপনি পুরুষের কানে ঝংকার তুলে আপনার মন হরণ করে। নারীর দীঘল চুলে আপনার মন হারিয়ে যায় । আপনি পুরুষ সিক্স প্যাক তো লাগবেই নারী জাত-এর হৃদয় কাঁপাতে ।

ল্যাপটপ বা পিসির ওইপাশে বসে যে কম্পোজ করছে আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন সে নারী না পুরুষ ? তার লেখার স্টাইল দেখে ? তার প্রোফাইল ছবি দেখে ? কিন্তু কোন নারী বা পুরুষ যদি সচেতনভাবে তার পরিচয় গোপন রেখে লিখে চলে যাতে বোঝার উপায় থাকে না পেছনের মানুষটি নারী না পুরুষ তখনই প্রকৃতির গড়ে দেয়া নারী-পুরুষ-এর বাইরে সামাজিক একটা লিঙ্গীয় পরিচয় গড়ে উঠতে পারে । একজন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তার মেধা দিয়ে শিক্ষা দান করেন...সে নারী বা পুরুষ হিসেবে নয় । তেমনি একজন ব্যাংকার বা ডাক্তারের ক্ষেত্রেও একই কথা ।

নারী শুধু মাত্র সন্তান জন্মদান করা ছাড়া আর বুকের দুধ খাওয়ানো ছাড়া প্রকৃতির কাছে আর কিছুতে বাঁধা পড়ে নেই। ঠিক তেমনি পুরুষ সন্তান উৎপাদনের একটা প্রধান উপলক্ষ‌্য ছাড়া আর কিছুতে প্রকৃতির কাছে বাঁধা পড়ে নেই ।

তাহলে দেখা যাচ্ছে প্রকৃতি নয়...আমাদের সমাজই তৈরি করছে নারী আর পুরুষের কাজের, পোশাকের ভেদাভেদ । এই সমাজ আমরাই তৈরি করি। আমরা একজন একজন মিলেই এই সমাজ।

অথচ এই সমাজের মানুষের দ্বারাই তৈরি হওয়া সংবিধানের তৃতীয় ভাগের ২৮(১) অনুচ্ছেদে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা আছে কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না ।
তাহলে এই সমাজেই পক্ষ বিপক্ষ রয়েছে। রয়েছে কথায় ও কাজে পার্থক্য ।
এতো বছর ধরে গড়ে উঠা নারী পুরুষের মধ্যে এই পার্থক্য একদিনে যাবে না...এর জন্যে সামনে আরো ততদিন বা তার চেয়েও বেশি দিন লাগতে পারে ।

ঘরের অবলা, অসূর্যস্পশ্যা নারী যখন তার ইচ্ছে পূরণ করতে আর কোন উপায় না পায় তখনই কেবল চোখের পানি দিয়ে বশ করতে চায় শক্তিশালী পুরুষকুলকে । কিন্তু নারী নিজেই যখন নিজের শক্তিতে বলিয়ান তখন আর চোখের পানি ঝড়িয়ে তাকে ইচ্ছে পূরণের আবদার করতে হয় না । সেখানে নারী নিজের যোগ্যতা দিয়েই টিকে থাকে ।

সামাজিক লিঙ্গ যা এসি রুমের "জেন্ডার" হিসেবে পরিচিত ... কমলা ভাসিন-এর মতে মেয়ে ও ছেলের মধ্যে পোষাক, চাল চলন, শিক্ষা, তাদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এর সবটুকু সমাজের তৈরি করা । যদিও ভিন্ন ভিন্ন সমাজে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নারী পুরুষ বেড়ে উঠে। অনেক নারী দিন মজুরের কাজ করে, পাহাড়ী মেয়েরা ঘরে এবং বাইরেও কাজ করে...আবার শহরের শিক্ষিত মেয়েও দেখা যায় গৃহিণী হিসেবে কখনো কখনো বা অনেক সময়ই ঘরেই কাজ করছেন। পুরুষরা সাধারণত বাইরে কাজ করলেও রান্না-ঘরের কাজও প্রয়োজনে সে সামাল দিচ্ছে।

নারী ও পুরুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংজ্ঞাকেই সামাজিক লিঙ্গ বা Gender বলে ।
কিন্তু সমাজ যখন ঠিক করে দেয় নারী ঘরে কাজ করবে, পুরুষের সেবা করবে। আর পুরুষ বাইরে কাজ করবে, অর্থ উপার্জন করবে....তখন যে সামাজিক লিঙ্গীয় বৈষম্যের সৃষ্টি হয় তা নিতান্তই সমাজের সৃষ্টি, প্রকৃতির নয় ।
সমাজ কর্তৃক চাপিয়ে দেয়া এই সংজ্ঞার কারণেই বৈষম্য বেড়ে যায় ...নারী ও পুরুষ হয়ে উঠে দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০০
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×