somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণমাধ্যম ও নারী- ভুমিকা/ বিজ্ঞাপন পর্ব

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের চিন্তাধারা ও মননের গঠন ও বিবর্তনে সহায়ক যেসব শক্তি বিশ্বে বিদ্যমান তার অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হলো গণমাধ্যম। সঙ্গতকারণে গণমাধ্যম কর্মীরাই বাংলাদেশে জেন্ডার সংবেদী সংস্কৃতি গড়ে তোলায় গণমাধ্যমের ভূমিকাকে আরও বেগবান করে তুলতেপারেন। সমাজের যে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমরা সামাজিক রীতি-নীতি ও আচার-আচরণ শিখে থাকি, তার মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী হলো গণমাধ্যম। বহুধা বিস্তারের ফলে গণমাধ্যম এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও শিক্ষার সিংহ ভাগই এখন মানুষ গণমাধ্যম থেকে পায়। নারী-পুরুষের বৈষম্যের প্রশ্নেও বলা যায় যে, গণমাধ্যম নানাভাবে এই বৈষম্যকে টিকিয়ে রাখতে পারে। আবার একইভাবে গণমাধ্যমের মধ্য দিয়েই একটি সমতামূলক সমাজগঠন বার্তার প্রসার ঘটতে পারে। আর তাই সমাজে রাষ্ট্রে তথা অন্তর্জাতিক অঙ্গণে নারী ও পুরুষের ভারসাম্যময় উপস্থিতির জন্য গণমাধ্যমে নারীর ইতিবাচক প্রতিচ্ছবি অত্যন্ত জরুরী।

প্রায় সব ধরনের মিডিয়া বা গণমাধ্যমে প্রবেশের সুযোগ এদেশের মানুষের রয়েছে। এসব গণমাধ্যমের বিভিন্ন ধরণ রয়েছে। যেমন-
• শ্রবণ সম্বন্ধীয়- রেডিও, ক্যাসেটস, সিডি, সেলুলার ফোন ইত্যাদি
• শ্রবণ-দর্শণ সম্বন্ধীয়- ছায়াছবি/চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, ভিডিও, মঞ্চ, নাটক, ইন্টারনেট ইত্যাদি
• দর্শণ সম্বন্ধীয়- ছবি, পোস্টার, কার্টুন, শিল্পকলা, পেইন্টিং ইত্যাদি
• মুদ্রণ শিল্প- সংবাদপত্র, বই, ম্যাগাজিন লিফলেট ইত্যাদি

গণমাধ্যমে নারীর বর্তমান চিত্র জানতে এখানে রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, পোস্টার, সংবাদপত্র এবং বিকল্প মাধ্যম অর্থাৎ ফেসবুক, ব্লগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দেয়া হবে।

ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে নারী:


আজকে বিজ্ঞাপনে নারীর উপস্থিতি নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করবো-
নব্বইয়ের দশকে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে যে সব বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো বর্তমানে তা আরও আকর্ষণীয়, জৌলুসপূর্ণ ভাবে প্রচারিত হয়ে থাকে, বদলে গেছে উপস্থাপনের ধরণ। তবে তারপরও বিজ্ঞাপনে নারীর প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায় তা সাধারণত নেতিবাচক। একটি বিজ্ঞাপনে দেখা যায় দেখা যায়বিশেষ একটি ব্র্যান্ডের টিভি স্বামীর (!) বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিয়ের অনুষ্ঠানেই জেদ ধরে মেয়েটি। এধরনের বিজ্ঞাপন যৌতুকের মতো ঘৃণ্য প্রথাকে প্রকারান্তরে সমর্থন করে। আবার মুখের ক্রিমের বিজ্ঞাপন গুলোতে দেখানো হচ্ছে মেয়ে কালো বলে বিয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে, আর সেই নির্দিষ্ট ক্রিম মাখার কারণে রং ফর্সা হওয়াতে নতুন উদ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে এখানে মেয়ের গুণ নয় বরং রূপকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশের খ্যাত অভিনেত্রী সূবর্ণা মুস্তফা, রোকেয়া প্রাচী, ভারতের কাজল, বিপাশা বসু, হলিউডের হ্যলবেরি বা জেনিফার লোপেজের গায়ের রং তাদের পথ চলার ক্ষেত্রে কোন বাধা হতে পারেনি।আর এসব বিজ্ঞাপন প্রকারান্তরে বর্ণবাদকেই উসকে দেয়। যত মসলার বিজ্ঞাপন আছে তার সবটা জুড়ে থাকে নারী, যেখানে সুবিধাভোগী হিসেবে পুরুষকে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এমনও দেখা যায় স্বামী –স্ত্রী উভয়েই সারাদিন অফিস করে এসে স্ত্রী ঢুকলেন রান্না ঘরে আর স্বামী সংবাদপত্র পড়ে, টিভি দেখে সময় পার করছেন এবং টেবিলে এসে রান্না মুখরোচক কম হওয়াতে স্ত্রীকে বকাবকি করছেন। এবং সেই মসলায় রান্নার মুখরোচক হওয়া খাবারে সংসারে শান্তি ফিরে আসে। বস্তুত যারা বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেন এবং করান তাদের কেউ কেউ মনে করে থাকেন বিজ্ঞাপনে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয় তা সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। কিন্তু পণ্যের উৎপাদক ও বিক্রেতা নারীর ইতিবাচক ভূমিকাকে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন মাত্রায় দেখানো হলে একদিকে পণ্যের প্রচার ও হয় আর অন্যদিকে নারীর ইতিবাচক ভাবমূর্তিও প্রতিষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে একটি চায়ের বিজ্ঞাপনে নারীকে হারিয়ে যেতে না দিয়ে বরং নিজের গুণাবলির প্রকাশ ঘটাতে বলা হচ্ছে। অন্য একটি ফলের জুসের বিজ্ঞাপনের নারীর নির্দিষ্ট একটি ফল নিয়ে ভবিষ্যত ভাবনার উপস্থাপন এবং বার্ধক্যে তার সেই ভাবনার বাস্তবরূপ দেখানো অন্য বিজ্ঞাপনের তুলনায় এধরনের বিজ্ঞাপনের প্রচারে প্রসার কোন অংশে কম নয় বরং বেশিই হতে পারে।

চলবে-


উৎসর্গ: নারীর ইতিবাচক উপস্থাপনে নিবেদিত গণমাধ্যমের কর্মীদের সম্মানে

প্রথম প্রকাশ:
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৯
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:২৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×