প্রয়াত সাহিত্যিক বুদ্ধদেব বসু'র এই সনেট কবিতাটি সাম্প্রতিক আমার মনকে দারুণভাবে আন্দোলিত করেছে। কতো সহজে, গতানুগতিক আড়ম্বরতা ব্যতিরেকেও কতো চমৎকার কবিতা লেখা যেতে পারে, তার একটি উত্তম উদাহরণ মনে হয়েছে কবিতাটিকে।
কবিতাটি বহু বছর আগে লেখা হলেও পরিস্থিতি এখনও তেমন বদলায়নি। আজও আমাদের দেশের ইলিশ দেদার রপ্তানি হয়। এখন তো কোলকাতা, ভারত ছাড়িয়ে বিদেশেও নিয়মিত রপ্তানি হয়। অপরদিকে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে থেকে যায় দেশের ইলিশ!
আশা করি কবিতাটি সবার ভালো লাগবে। এই প্রত্যাশায় প্রিয় কবিতাটি ব্লগের সকল পাঠক ও সহ ব্লগারদের সাথে শেয়ার করছি। আগামীতে এমন আরও দুর্লভ কবিতা এই বিভাগে শেয়ার করার ইচ্ছা রইলো।
শুভকামনা সবার জন্য।
ইলিশ
বুদ্ধদেব বসু
আকাশে আশাঢ় এলো , বাংলাদেশ বর্ষায় বিহ্বল।
মেঘবর্ণ মেঘনার তীরে-তীরে নারিকেলসারি
বৃষ্টিতে ধূমল , পদ্মাপ্রান্তে শতাব্দীর রাজবাড়ি
বিলুপ্তির প্রত্যাশায় দৃশ্যপট-সম অচঞ্চল ।
মধ্যরাত্রি , মেঘ-ঘন অন্ধকার , দুরন্ত উচ্ছল
আবর্তে কুটিল নদী , তীর-তীব্র বেগে দেয় পাড়ি
ছোটো নৌকাগুলি , প্রাণপণে ফেলে জাল, টানে দড়ি
অর্ধ নগ্ন যারা, তারা খাদ্যহীন, খাদ্যের সম্বল।
রাত্রিশেষে গোয়ালন্দে অন্ধ কালো মালগাড়ি ভরে
জলের উজ্জ্বল শস্য, রাশি-রাশি ইলিশের শব,
নদীর নিবিড়তম উল্লাসের মৃত্যুর পাহাড় ।
তারপর কলকাতার বিবর্ণ শহরে ঘরে-ঘরে
ইলিশ ভাজার গন্ধ , কেরানির গিন্নির ভাঁড়ার
সরস শর্ষের ঝাঁজে। এলো বর্ষা, ইলিশ উৎসব।
বেনামে চুরি করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছি। এরকম হলে এইসব কালজয়ী বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের ভীষণ অপমান হবে! তা নিশ্চয়ই কারও কাম্য হতে পারে না। ভালো লাগলে লেখকের নামসহ নিঃসঙ্কোচে যেখানে যেমন খুশি শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৬