"Attested Certificate" বা সত্যায়িত Certificate বলতে কি বুঝায়, বেচারি পেনসা সেটা জানে না ( যদিও সে ইংলিশ মিডিয়াম এবং ইংলিশ ভার্সনের ছাত্রী )। তার কাছে সত্যায়িত অর্থ "Authorized"। এখন কথা হচ্ছে, স্বয়ং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক "Authorized" Certificate এর আবার কি সত্যায়ন? ভাবতে থাকলো পেনসা।
অত্র পরিবারে,খাঁটি বাংলায় বলতে গেলে " চৈদ্দো গুষ্টির" মধ্যে কেও কখনো বিদেশে পড়ার উপলক্ষে, Scholarship নামক বিষয়টির জন্য Apply করিয়াছে কিনা, উহা তাহার জানা নেই। আর যদি কেও করেও থাকে তবে তা কীভাবে, সেটাও জানেনা পেনসা।
Young Generation এর মধ্যে বিরাজমান এই "না জানা"র অভ্যাস টি, সামাজিক কিংবা পারিবারিক (বিশেষ করে পারিবারি) দৃষ্টিতে কোন দন্ডনীয় অপরাধের থেকে কম নয়। আজ সেই অপরাধের দায়ে আসামী হয়ে দাড়িয়ে আছে পেনসা।
পেনসার মা, Mrs. Wasima Iqbal। একজন উচ্চশিক্ষিত মহিলা। তাই মেয়ের শিক্ষার ক্ষেত্রে তার রয়েছে সেই Level এর সচেতনতা। কিন্তু জীবনের এই সময়ে এসে বহু আশার মেয়েটির আশানুরূপ রেসাল্ট না পেয়ে বরং নিরাশার দ্বারা ধরাশায়ী হয়ে আজ শ্বাসের চেয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ছেন ই বেশি। তার উপর মেয়ের Year Loss এর ব্যাপার টা ত আছেই।
মেয়েকে নিয়ে অনেক গুলা ঝামেলার মধ্যে একটি হলো, মেয়ের শারীরিক অসুস্থতা। রুগ্ন পেনসা কে নিয়ে তাকে সারাজীবন ডাক্তার খানায় হাজিরা দিতে হয়েছে। এখনো ঐরকম ই কিছু ঝামেলা চলছে।পেনসা ইদানিং অনেক দুর্বল হয়ে পরেছে। শারীরিক দুর্বলাতার কারন জানতে Mrs. Wasima Iqbal ছুটে বেরাচ্ছেন দিক্বিদিক। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। অবশেষে লাভ-লোকসানের হিসাব গুছাতে আবির্ভাব ঘটলো তার খালাত ভাই, Dr. Ashraf এর।
ভাই টাও একদম সেইরকম। পৃথিবীর হয়ত এমন কোন রোগ নেই যেটার সমাধান তার কাছে নেই। অবশ্য বড়মাপের ডাক্তার বলে কথা। বেশ সহজ-সরল আবার রসিক প্রকৃতির মানুষ তিনি। Wasima বেগম তাই শেষ-মেশ তার স্বরনাপন্য হলেন। পেনসার চিকিৎসা করতে যেয়ে তিনি পেনসার Year Loss এর ব্যাপার টা জানতে পারলেন। Dr. Ashraf ও সবার সুশিক্ষার জন্য বেশ উদ্বিগ্ন থাকেন। সকলকেই শিক্ষ মূলোক উপদেশ দিতে থাকেন তাও আবার ডাক্তারি ফিস বহির্ভুত। আর পেনসা তো ক্ছিলেন তার ভাগনি। পেনসার সম্পর্কে Dr. Ashraf যাই জানতেন, ভালই জানতেন। তাই পেনসার এই Year Loss এর ব্যাপারে জানতে পেরে উনি খুব আফসোসিতো (!!) হলেন।
একদিন তিনি পেনসা কে ফোন দেন। একটি Scholarship এর ব্যাপারে জানানোর জন্য। জাপান সরকার প্রদত্ত একটি Scholarship। দেশটির নাম শুনে পেনসার কেমন যেনো লাগলো। কিন্তু করার কিছু নেই। ঐদিকে তার মা তো রীতিমত লাফাচ্চেন। তাই ল্যাপটপ নিয়ে বসে পরলো পেনসা। অনেক ঘাটা-ঘাটি করে পেনসা এই Scholarship এর নোটিস এবং ফর্ম খু্ঁজে পায়। অনলাইনে ফর্ম ফিল-আপ করে, প্রিন্ট- আউট করে, সেই প্রিন্ট-আউট ও তার সাথে Attested Certificate সব সচিবালয় যেয়ে জমা দিতে হবে। এই শুরু হলো তার ভাবনা হতে জন্মিত বিপদের।
সে তো Attested কে "Authorized" মনে করে, দিব্বি আনন্দে আগের রাতে সব Authorized Certificate এর ফটোকপি, আবেদন ফর্মের সাথে গুছিয়ে রাখে। কয়েকদিন আগে অবশ্য পেনসা যখন এইসব নিয়ে দৌরা-দৌরি করছিলো, তখন একবার Wasima বেগম জানতে চেয়েছিলো যে পেনসা ওর সব Certificate গুলা Attested করিয়েছিলো কিনা। এখন মিস. ভাবুক পেনসা ভাবলো,
"উফফফ!! এই বাংলাদেশী কিছু মানুষ ইংলিশ শব্দ গুলাকে বিকৃত করতে করতে কথায় নিয়ে যায়। কই হলো Attached ( :o :o ) আর কই হলো Attested!! একেই বুঝি বলে ধ্বনি বিকৃতি-
Attach-Ed > Attach-Ted> Attas-Ted> Attested!!!!!!!( :o :o )
"হ্যা মা, আমার Attested (তার চিন্তা অনুযায়ি, আসলে Attached ) করা হয়ে গেছে।
তো যথারীতি রাত গড়িয়ে ফর্ম সাবমিশনের দিন আসলো। পেনসা সচিবালয় যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলো। এমন সময় Wasima বেগম পেনসা কে ডেকে বললো, " দেখি তোমার সবকিছু গুছানো হয়েছে কিনা"
পেনসা জানে তার সব গুছানো হয়েছে, তাই সে Certificate গুলা মাকে দেখতে দিলো।
মেয়ের Attached ডকুমেন্টস্ গুলা দেখে Wasima বেগমের চোখ কপলাে। তিনি চিৎকার করে উঠলেন, " Sign কোথায়? seal কোথায়?"
পেনসা,- "অ্যা!!!!?????? কিসের Sign? কিসের seal?" ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রোইল পেনসা।
"কী? Attested মানে বুঝোনা?"
হতবাকের মত পেনসা তার মার দিকেৎাকিয়ে রোইল.......
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৬