বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে খালেদার ভারত সফরকে ভিত্তি করে আওয়ামী ও বাকশালী গং নানা কটাক্ষ তথা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে। তাদের কথা হল উলফা সহ সেভেন সিষ্টার্সের স্বাধীনতাকামীদের প্রশ্রয় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে খালেদা জিয়া ভারত বিরোধী অবস্থান হতে সরে এখন তার দালাল হয়ে গেছে। অথচ ভারতই সর্ব প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেই ১৯৭৩ সালে উপজাতি চাকমাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অস্ত্র ও সামরিক ট্রেনিং দিয়ে পাবর্ত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত করেছিল। এ ছাড়া জেএমবির অস্ত্র ও বোমার ঘাটি ছিল পশ্চিমবঙ্গের মালদাহ জেলায়(প্রথম আলো ৫/৬/২০০৯)। এছাড়াও বঙ্গসেনা সহ বেশ কয়েকটি উগ্র হিন্দুদের সংগঠনকেও ভারত প্রশ্রয় দেয়। এরা বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলাকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা হিন্দু দেশ বানাতে চায়। যেহেতু ভারতই প্রথম এই দেশের জনগণ ও সেনাবাহিনীর উপর হামলা শুরু করে তারই ধারাবাহিকতায় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনী সহ ভারতের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান। চীনের সামরিক সহায়তায় শান্তিবাহিনীকে ব্যাপক পাল্টা আঘাত করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এমনকি বিমানবাহিনীর হেলিকাপ্টার হতেও পাবর্ত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী চাকমাদের বিভিন্ন আস্তানার উপর হামলা চালানো হয়। এরই মাঝে পাল্টা ব্যাবস্থা স্বরুপ উলফা, বোড়ো গরিলাদেরকে সহায়তা দেওয়া হয়। ফলে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি বাংলাদেশের অনুকূলে আসে। এরপর ১৯৯৬ সালে হাসিনা ক্ষমতায় এলে কয়েকটি অসম শর্তে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর সাথে তথাকথিত শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এর নেপথ্যে ছিল দিল্লী। তার লক্ষ্য ছিল পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করে তার সেভেন সিষ্টার্সের জন্য বঙ্গোপসাগর পাওয়া। ভারত বাংলাদেশকে কোন মহৎ উদ্দেশ্যে বা আন্তরিক বন্ধু হিসেবে স্বাধীন করেনি। ১৯৭১এ স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ইন্দিরা গান্ধী ৭টি অসম চুক্তি স্বাক্ষর করায় তাজউদ্দিনকে দিয়ে;
“১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে ভারত সরকারের সাথে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার প্রশাসনিক, সামরিক, বাণিজ্যিক, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে একটি সাতদফা গোপন সমঝোতা চুক্তি সম্পাদন করেন। চুক্তিগুলো নিম্নরূপ:
১. প্রশাসনিক বিষয়ক: যারা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে শুধু তারাই প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে। বাকীদের জন্য জায়গা পূরণ করবে ভারতীয় প্রশানিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
২. সামরিক বিষয়ক: বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরম্ভ করে প্রতিবছর এ সম্পর্কে পুনরীক্ষণের জন্য দু’দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
৩. বাংলাদেশের নিজস্ব সেনাবাহিনী বিষয়ক: বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা। অভ্যন্তরীণ আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।
৪. ভারত-পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধ বিষয়ক: সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান। এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তি বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কত্বে থাকবে।
৫. বণিজ্য বিষয়ক: খোলা বাজার ভিত্তিতে চলবে দু’দেশের বাণিজ্য। তবে বাণিজ্যের পরিমাণের হিসাব নিকাশ হবে বছর ওয়ারী এবং যার যা প্রাপ্য সেটা র্স্টার্লিং এ পরিশোধ করা হবে।
৬. পররাষ্ট্র বিষয়ক: বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংগে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংগে যেগাগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং যতদুর পারে ভারত বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সহায়তা দেবে।
৭. প্রতিরক্ষা বিষয়ক: বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবে ভারত।
” (অলি আহাদ রচিত “জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫”, বাংলাদেশ কোঅপারেটিভ বুক সোসাইটি লি: প্রকাশিত, চতুর্থ সংস্করণ ফেব্রুয়ারী ২০০৪, পৃষ্ঠা-৪৩৩,৪৩৪)।
আর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে কমান্ড, বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ সহ নানা বিষয়ে ভারত সরকারের সাথে প্রায়ই মতবিরোধ ঘটত বঙ্গবীর ওসমানী, জিয়া, জলিল সহ সার্বভৌম সচেতন বাঙালী অফিসারদের সাথে। তখন থেকেই ভারত এদেরকে পাকিস্তানী আই.এস.আইয়ের চর বলে। অথচ তখন ঐ সময়ে এই ধরণের অভিযোগ পুরাই হাস্যকর। ভারতের কথা হল তার মনোরঞ্জনের জন্য সে যা চায় সেটা মানলে সে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আর সার্বভৌম সচেতন হলেই পাকিস্তানী। দিল্লীর নীতিনির্ধারকদের সাথে আমাদের আওয়ামী-বাকশালী গংদের এই বিষয়ে পুরাই সাদৃশ্য আছে।
একটি দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সহ নানা প্রয়োজনে তার প্রতিবেশী কিংবা দূরের যেকোন দেশের সাথে সম্পর্ক হতেই পারে। এটা অবশ্যই মর্যাদা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হওয়া বাঞ্চনীয়। এর জন্য চাই জাতির মধ্যে ঐক্য এবং সৎ, দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। র্দূভাগ্যজনক হলেও সত্য স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ মুজিব আধিপত্যবাদী ভারতীয় সেনাদের সরাতে পারলেও দিল্লীর বহু অসম শর্ত হতে সরতেতো পারেনই নাই উপরন্ত অদক্ষ ও দূরদৃষ্টিতার অভাবে নতুন ক্ষতিকারক চুক্তিও করেন। এরই একটা হল বেরুবাড়ী দান যার বিনিময়ে আামাদের ৩ বিঘা সাথে সাথে পাওয়ার কথা থাকলেও তা ৩৮ বছরেও পূর্ণ সুফল পাইনি। মানে আমাদের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা হয়নি। মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির একটি অংশের মাধ্যমে ভারতকে আমাদের নদী পথ ব্যাবহার করে পশ্চিম ভারত ও সেভেন সিষ্টার্সের মধ্যে যাতায়াতের সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। অথচ এখানে শুরু হতেই আমাদের টোল প্রাপ্য ছিল। মাত্র ৫কিমির যমুনা ব্রীজের জন্য কত টোল দিতে হয় আর ভারত আমাদের শত কিমির উপর চললেও কোন ফি নাই। সেই ১৯৭২ সাল হতেই ভারত আমাদের নদী পথ ব্যাবহার করছে;
Click This Link
ভারত আমাদের নদী পথ ব্যাবহার করে ও ইলিশ মাছের জন্য মুখিয়ে থাকে অথচ আমাদেরকে ন্যায্য পানির অংশ দিতে নারাজ। মুজিবও ১৯৭৫ সালে কোন কিছু যাচাই বাছাই না করে অনুমতি দিলে ভারত পদ্মা নদীর উজানে তথা গঙ্গায় ফারাক্কা ব্যারাজ চালু করে দেয়। একটা ভিডিও দেখেছিলা যেখানে তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে জড়িত আসাফউদ্দৌলা বার বার মুজিবকে বলেছিলেন অনুমতি পত্রে পরীক্ষামূলক কথাটি জুড়ে দিতে। কিন্তু মুজিব সেটাতে কর্ণপাত করেননি। যদিও মুজিব এরপর মৌখিক ভাবে শুস্ক মৌসুমের জন্য ৪৪ হাজার কিউসেক পানির গ্যারান্টি ক্লজে পানির ব্যাবস্থা করেন কিন্তু তার পতন ঘটলে ভারতও বেকে বসে। এরপর জিয়াউর রহমান কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারতকে অনুরোধ জানালেও দিল্লী কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়েই জিয়া ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই বিষয়ে নালিশ করে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ফলে ভারত বাধ্য হয়ে ৫ বছরের জন্য ৩৪ হাজার গ্যারান্টি ক্লজে পানির চুক্তি করে। পরে ১৯৮২ সালে ঐ চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে এরশাদ আমলে ভারত গ্যারান্টি ক্লজ বাদ দেয়। এরশাদ এখানে শক্ত বার্গেনিং করেননি। মুজিব, জিয়া ও এরশাদ এই তিনজনের সময়ই ভারত আমাদের স্থল, রেল ও সুমুদ্র বন্দর ব্যাবহারের আব্দার করে আসছিল। এরশাদের সময় হতে খালেদার প্রথম আমল ১৯৯১-৯৬ পানি চাইতে গেলেই ভারত বলত যে এগুলো দাও। ভারত এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নদীর পানি বন্টন আইন সনদ স্বাক্ষর করেনি। এরপর ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মত হাসিনা ক্ষমতায় এসেই গ্যারান্টি ক্লজ ব্যাতিরেকে ৩০ বছরের জন্য প্রতারণামূলক ফারাক্কা চুক্তি করে। এই চুক্তির ও হাসিনার দিল্লী যাওয়ার আগে বিএনপি, জামাততো বটেই জাপাও বার বার বলে যে কি কি শর্তে পানি চুক্তি হবে তা সংসদে আলোচনা ও অনুমোদন নেওয়া হৌক। কিন্তু হাসিনা থোড়াই এগুলার পরোয়া করে। চুক্তিতে বলা আছে যে শুস্ক মৌসুমে যদি ফারাক্কার উজানের দিকে ৭৫ হাজার কিউসেক পানি জমে তবে ভারত ৪০ হাজার রেখে ৩৫ হাজার বাংলাদেশকে দিবে। এই বিষয়ে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বলেছিলেন এটা শুভংকরের ফাকি। কারণ ভারতে গঙ্গা সংশ্লিষ্ট রাজ্য গুলি ফিডার ক্যানেল ও পাম্পের মাধ্যমে পানি টেনে নিয়ে যায় শুস্ক মৌসুমে। সে কারণে এখানে আদৌ এত পরিমাণ শুস্ক মৌসুমে জমা হবে না। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি চারদলীয় জোট হিসেবে ক্ষমতায় এসে এই চুক্তির সংশোধন দাবী করলে ভারতের হাইকমিশনার মিজ বিনা সিক্রি বলেন বাংলাদেশের উচিত জলাধার নির্মাণ করে বর্ষা মৌসুমের অতিরিক্ত পানি ধরে রাখা। তাইলে ৩০ বছরের চুক্তি করে লাভ কি হল? তারপরে হাসিনা গং শোরগোল যে তারা ঐতিহাসিক পানি চুক্তি স্বাক্ষর করাতে দেশ লাভবান হয়েছে। অথচ সত্য হল স্বাধীনতার পূর্বের ১৯৬৭ সাল হতে ১৯৭৫ সালের দুই জরিপেই এই অঞ্চলের মোট নদী পথ ছিল ২৪ হাজার কিমি। অথচ এটা বর্তমানে মাত্র ৬ হাজার কিমি। তার মানে ১৮ হাজার কিমিই গায়েব;
Click This Link
নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধা পেলে ও কম পানি আসলে তার নাব্যতা হারাতে বাধ্য। এটা আজকে নয় ১৯৫১ সাল হতেই এই অঞ্চলের সচেতন মহল এই আশংকাই করেছিলেন যে দেশের নদী গুলোর ক্ষতি হবে;
Click This Link
নদীর পানি হল বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার। শুস্ক মৌসুমে আমাদের খরা আর বর্ষা মৌসুমে সব বাধ গুলো খুলো দিয়ে বন্যা ঘটিয়ে ভারত চরম অমানুষের কাজ করে। এই সব কিছু জেনে শুনেও হাসিনা ও আলীগ ভারতকে একতরফা লাভবান করার চেষ্টায় মশগুল থাকে। ২০০৮ এর নির্বাচনের পূর্বে হাসিনা প্রতারণামূলক ভাবে বলে যে তারা আন্তর্জাতিক ট্রানজিট চান। যেখানে পুরো সার্ক সহ চীনও এই সুবিধা পাবে। মূলত দেশের দুই সুমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম ও মংলাকে ভিত্তি করেই। কিন্তু ২০১০ সালে কি দেখলাম! দেশবাসী ও সংসদকে না জানিয়েই গোপন শর্তে ভারতের সাথে একতরফা তথাকথিত ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করল। বলেছিল দেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। আর বাস্তবতা হল ভারততো কোন ফি দিবেই না উল্টো আমরা ভারতীয় যানবাহনকে ভর্তূকী দিয়েছি;
ফি না নিয়ে উল্টো ভর্তুকি দিচ্ছে বাংলাদেশ: দেবপ্রিয়
Click This Link
এই সবই হল হাসিনা ও আলীগের কাছে ভারতের সাথে দারুণ সুসম্পর্ক। সীমান্তে বিএসএফ নির্বিাচের বাংলাদেশী হত্যা, নির্যাতন ও জুলুমকেও আমলে নেয় না। বরং উল্টো আশরাফ ও নাহিদ বলে ভারত ও আমরা একই দেশ।
এখন উপরের এই সব বিষয়ের বিরোধীতা করে বাংলাদেশের মর্যাদা ও স্বার্থ সমুন্নত রেখে ভারতের সাথে শক্ত দেন দরবারে গেলেই হাসিনা, আওয়ামী-বাকশালী গং ঘেউ ঘেউ করে ভারত বিরোধীতা। তাদের কথা হল আমরা কিছু না পেলেও ভারত পুরো লাভবান হবে এটাই বন্ধুত্ব।
২০০২ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির অধীন নৌট্রানজিটের মেয়াদ শেষ হলে বিগত জোট সরকার ২০০৫ সাল পর্যন্ত তা নবায়ন করেনি। যেখানে স্থল, রেল ও সুমুদ্র বন্দর ভারতকে ব্যাবহার করতে দেওয়ার সুযোগ প্রশ্নই উঠে না। বিগত জোট সরকারের আমলে ভারতের সাথে নতুন কোন অসম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। ভারত বিভিন্ন আব্দার করলে জোট সরকার জানিয়ে দেয়;
১) ৫৪-৫৫ নদ-নদীর পানি আন্তর্জাতিক আইনে সুষ্ঠ-ন্যায্য বন্টন হতে হবে,
২) স্থল ও সুমুদ্র সীমা নির্ধারণও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হতে হবে,
৩) বাংলাদেশী বিভিন্ন পণ্য যা বিদেশে রপ্তানি হয় তা ভারতে বিনা শুল্কে ও অবাধে প্রবেশাধিকার দিয়ে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে,
৪) নেপাল, ভুটান ও চীনকে ভারতের উপর দিয়ে ট্রানজিট দিতে হবে যাতে তারা বাংলাদেশের মংলা ও চট্টগ্রাম সুমুদ্র বন্দর ব্যাবহার করতে পারে।
৫) নেপাল ও ভুটানের পানি বিদ্যুৎ আমদানীর জন্য ভারতীয় ভুখন্ডের ব্যাবহার।
এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি শর্ত।
ভারতের জবাব হল সে এই সকল বিষয়ে ইচ্ছুক নয়। তার কথা হল আগে তাকে সুবিধা দাও তারপর সে ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করবে। মানি স্রেফ হাওয়াই আশ্বাস যেখানে বড় দেশের সুযোগ নিয়ে লিখিত চুক্তি সময়মত পালনেও টালবাহানা। এই সকল বিষয়ই যখন বিএনপি ও খালেদা জিয়া শক্ত বার্গেনিং করে এটাই শুধু ভারত নয় বরং ঘরের হাসিনা ও আলীগ সারা বিশ্বে প্রোপাগান্ডা করে যে জোট সরকার দেশে জঙ্গীবাদের আস্তানা গড়ে তুলছে। অথচ জোট সরকারই বাংলা ভাই ওরফে সিদ্দিক সহ আলীগের দুলাভাই শায়খ আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করে এবং নিম্ন আদালতের রায়ে ফাসীর আদেশও হয়। এই ভাবে মার্কিন ও ইউরোপের মাধ্যমে চাপের সৃষ্টি করা হয়। তারা ভারতের সাথে পর্বতসম সমস্যার কথা জেনেও চাপ দিতে থাকে। ২০০৫ এর ডিসেম্বরে ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার সর্বজিত চক্রবর্তী বলেই দেন "ভারত আর বেশী দিন ট্রানজিটের জন্য অপেক্ষা করতে পারবে না"। এইতো শুরু হল আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। বিশেষ করে কংগ্রেস ২০০৪ সালে ভারতে ক্ষমতায় আসার পর পরই। যার ধারাবাহিকতায় শেষমেশ জোট সরকার ২০০৬ সালে বাধ্য হয় মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি মোতাবেক নৌ-ট্রানজিট সুবিধা দিতে। কিন্তু ২০১০ সালের মত গোপন চুক্তিতো দূর ভারতকে মায়ানমার হতে গ্যাস আমদানীর জন্য পাইপলাইন বসানোরও অনুমতি দেয়নি। যদিও ভারত বছরে ১৫ কোটি ডলার ভাড়া দিতে চেয়েছিল। এর পাশাপাশি জোট সরকার ৩টি শর্ত দিয়েছিল যা দিল্লী রাজী হয়নি। আর পরবর্তীতে ১/১১র ফখরু-মঈন ভারতকে এই সুবিধা দিতে উঠে পড়ে লাগে। তাতেই বুঝা যায় ২০০৬ সালের নৌ-ট্রানজিট নবায়নে পশ্চিমাদের প্রভাব ছিল।
বিএনপির কথা হল ভারতের সাথে পররাষ্ট্র সম্পর্ক হবে মর্যাদা ও বাংলাদেশের ন্যায্য স্বার্থ রক্ষা করে। এখন আলোচনার বিষয়ে কি সরকারী দল কি বিরোধী দলের নেতা হিসেবে কেউ ভারত সরকারের আমন্ত্রণে যেতেই পারে। এখানে অন্যায় কি হল? বরং সিঙ্গাপুর বানানোর কথা বলে যারা ভারতকে উল্টা বাংলাদেশের জনগণের কষ্টের অর্থ দিয়ে সহায়তা করে সেটাই রাষ্ট্রদ্রোহীতা।
উপরের এই সব বিষয় কারো বানানো কিছু নয়। এই গুলা বাস্তবতা। কিন্তু কথায় বলে ঘরের শত্রু বিভীষণ। তাই হাসিনা ও আলীগের বেশ কিছু কুলাঙ্গারদের জন্য জাতি হিসেবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতের সাথে কোন শক্ত আলোচনা করতে পারিনি। অথচ লংকানর কিভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী ভারতীয় মদদপুষ্ট তামিলদের দমন করেছে। দিল্লীর আপত্তি উপেক্ষা করে চীনের সাথে বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এখন স্রেফ ভারত ও বিদেশে ভারতপন্থী দালালরাই বলবে যে শ্রীলংকান প্রেসিডেন্ট রাজপক্ষে ভারত বিরোধী। এমনকি রাজপক্ষকে ভারতীয় দালালরা পাকিস্তানী আই.এস.আই বললেও অবাক হওয়ার কিছু নাই।
এই বছরের ফেব্রুয়ারীতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এক উদ্ধৃতি ধরে ভারতীয় মিডিয়া রিপোর্ট করে যে রাজপক্ষে নাকি বলেছিলেন তিনি লংকান সংবিধানে তামিলদের বেশ কিছু সুবিধাদি দিবেন। পরে রাজপক্ষে বলেন এটা সত্য নয়;
Click This Link
এমনই ভাবে দিল্লীর আধিপত্যবাদী গ্রুপ সমূহ এবং বাংলাদেশে তার দালালগণও খালেদা ও বিএনপির ভারত নীতি বিষয়ে নানা খুত ও বিভ্রান্তিকর-মিথ্যা তথ্য ছড়াবে। এই জ্ঞানপাপী আওয়ামী-বাকশালীদের জন্যই দিল্লী বাংলাদেশের ঘাড়ে কাঠাল ভেঙে খাচ্ছে!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


