somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Destination Tokyo (1943) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানে প্রথম পাল্টা মার্কিন হামলা!

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




Cary Grant




লাল বৃত্ত চিহ্নিত টোকিও উপসাগর


মার্কিন বিমানবাহি রণতরী ইউএসএস হরনেট




বি-২৫ বোমারু বিমান

১৯৪১ সালের ৭ই ডিসেম্বর পার্ল হারবার তথা মার্কিন ৫০ তম অঙ্গরাজ্য হাওয়াইয়ে অতর্কিতে জাপানী হামলার পর প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট চাচ্ছিলেন জাপানের মূল ভূখন্ডে এর পাল্টা জবাব দিতে। বলতে গেলে রুজভেল্ট অস্থির হয়ে উঠেন! বস্তুত রুজভেল্টের এই চাপের জন্যই দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে মার্কিন সমরবিদরা সিদ্ধান্ত নেন ১৯৪২ সালে টোকিওতে বিমান হামলার।

এরই পটভূমিতে ১৯৪৩ সালে তৈরি হয় চলচিত্র Destination Tokyo। এই মূভিতে দেখানো হয় পার্ল হারবারের ঘটনার জের ধরে সানফ্রান্সসিস্কোর নৌ ঘাটিতে থাকা সাবমেরিন ইউএসএস কুপারফিনের ক্যাপ্টেন ক্যাসিডি সহ বিভিন্ন নৌবাহিনীর অফিসারদের বড়দিনের ছুটি বাতিল করে বিশেষ গোপন মিশনের আদেশ আসে ওয়াশিংটন ডিসি হতে। সঙ্গত কারণেই প্রায় সবারই মন একটু খারাপ। কিন্তু তাদের রওনা হওয়ার পূর্বে বলা হয়নি কোথায় তাদের গন্তব্য ও মিশনের কি উদ্দেশ্য। ক্যাপ্টেনের হাতে বিশেষ সিল মোহর করা খাম দিয়ে বলা হয় যাত্র শুরুর ২৪ ঘন্টা পর সেটা খুলে গন্তব্য জেনে নিতে। সেই খাম খুলে যদিও জানা গেল গন্তব্য টোকিও তথা টোকিও উপসাগর কিন্তু সেটা সরাসরি নয়। তার আগে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরে কোথাও মার্কিন বিমানবাহী রণতরী হতে সি প্লেনে পাঠানো বিশেষ বিমানবাহিনীর এক অফিসারকে তুলে নিতে হবে। উক্ত মার্কিন অফিসারের জন্ম জাপানেই ও যিনি জাপানী ভাষায় দক্ষ। তাকে রিসিভ করেই এই সাবমেরিনের গন্তব্য হতে টোকিও উপসাগর। কিন্তু এখানে চাইলেই বিদেশী বা শত্রুপক্ষের সাবমেরিনের সহজে ঢুকা সম্ভব নয়। কারণ এখানে আছে মাইন ফিল্ড এবং নেট স্থাপিত জাহাজ প্রবেশ-বর্হিগমনের ব্যাবস্থা। এটা একমাত্র জাপানী জাহাজ ও নৌবাহিনীর পক্ষেই সম্ভব। এই চ্যালেঞ্জই দেওয়া হয় ক্যাসিডি চরিত্রে থাকা নায়ক Cary Grantকে। তারপর সেখানে ঢুকতে পারলে উক্ত বিমানবাহিনীর অফিসার সহ আরো কয়েকজন ক্রকে টোকিও উপসাগরের এক জনমানবহীন এলাকায় রাবারের ডিঙি নৌকায় করে পাঠাতে হবে। যাদের কাজ হবে টোকিওর আবহাওয়া, বায়ুর চাপ, জাপানী বিভিন্ন বেলুন, নৌবাহিনীর জাহাজের অবস্থান সহ বিভিন্ন কৌশল গত তথ্য সংগ্রহ করা। এগুলো সংগ্রহ হলে তাদের সাথে থাকা রেডিও মারফত জাপানী ভাষায় ঐ বিমানবাহিনীর অফিসার ম্যাসেজ পাঠাবেন জাপানের হতে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে থাকা মার্কিন বিমানবাহি রণতরী ইউএসএস হরনেটের কাছে। এই ক্রুদেরকে সময় দেওয়া আছে কখন কাজ শেষ ও ম্যাসেজ প্রেরণ করে টোকিও উপসাগরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যেয়ে উপস্থিত হতে যেখানে সাবমেরিন কুপারফিন নীচ হতে ভেসে উঠবে এবং তাদেরকে তুলে নিবে। এই মূভিতে দেখানো হয় যে এই সমস্ত তথ্য টোকিওতে হামলা চালানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউএসএস হরনেট হতে ঐ সময়কার দূর পাল্লার বোমারু বিমান বি-২৫ ব্যাবহার করা হয়। এই মূভিটি এ্যাডভেঞ্চার ধর্মী।

আই.এম.ডি.বিতে এর রেটিং হল ৭.১

http://www.imdb.com/title/tt0035799

এটা ডাউনলোডের জন্য টরেন্ট লিংক হল;

Click This Link

প্রকৃতপক্ষে পার্ল হারবারে জাপানী আক্রমণের জবাব স্বরুপ ১৮ই এপ্রিল ১৯৪২ সালে টোকিওতে মার্কিন বি-২৫ বোমারু বিমান হামলা করলেও সাবমেরিনের এই মিশন সত্য ঘটনা নয়। এই বি-২৫ বিমান গুলোকে হামলা শেষে পূর্বে হতে চীনের জাপানী দখল মূক্ত অঞ্চলে নামানোর ব্যাবস্থা করা হয়। এই বিষয়ে হামলার আগেই চীনাদের সাথে সমঝোতা হয় মার্কিন সমরবিদদের। আমি যা বুঝি মূলত যুদ্ধকালীন প্রচারণা তথা মার্কিন নৌ সহ অন্যান্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের চাঙ্গা ও শত্রু তথা জাপানীদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টির জন্যই ১৯৪৩ সালে মূভিটি বানানো হয়। এই বিষয়ে কিছু তথ্য আছে নিম্নের লিংকে;

http://www.answers.com/topic/destination-tokyo

মার্কিন এই প্রথম পাল্টা হামলা জাপানী সম্রাট হিরোহিতো ও তার সমরবিদদের বিচলিত ও ক্ষেপিয়ে তুলে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন বিভিন্ন ঘাটি ধ্বংস করে সে গুলো দখলে নিয়ে পুরো প্রশান্ত মহাসাগরের নিয়ন্ত্রণ তারা তুলে নিবে। অর্থাৎ মার্কিন কোন সামরিক তৎপড়তা সেখানে থাকবে না। এতে যেমন তারা এশিয়াতে অবস্থান শক্ত সহ ভারতীয় উপমহাদেশ ও অষ্ট্রেলিয়াতেও জাপানী সম্রাজ্য বিস্তার করবে। প্রায় ২০০র মত বিভিন্ন যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে তারা বড় ধরণের যুদ্ধ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়। এরই পরি প্রেক্ষিতে পরবর্তী দুটি মূভির বিষয়ে পোষ্ট লিখার আশা করি ইনশাল্লাহ!
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×