somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(সকল রাজাকারের বিচার হোক) ৭১’এ কিশোরগঞ্জে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে মওলানা আশ্রাফ আলী থানভী’র অন্যতম খলিফা কুখ্যাত রাজাকার আতাহার আলী

২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর সারা দেশ বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করলেও কিশোরগঞ্জের মানুষ সে আনন্দ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। কারণ এ জেলা শহরটি সেদিনও ছিলো রাজাকার, আল-বদরদের দখলে। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর্মুখী সাঁড়াশি আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনীর এই ধ্বজাধারী ঘাতকরা পরাজয় মানতে বাধ্য হয়। যেই সকল ঘৃণ্যিত রাজাকারের জন্য কিশোরগঞ্জবাসীর চিরদিনের ঘৃণা তার মধ্যে অন্যতম দেওবন্দের মাও. আশ্রাফ আলী থানভীর অন্যতম খালিফা মাও. আতাহার আলী। এই কুখ্যাত রাজাকার কিশোরগঞ্জে কমপক্ষে ৩ হাজার লোককে হত্যা করে। সে মূলত: পরিচিত ছিল নেজামে ইসলামের নেতা মাওলানা আতাহার আলী দেওয়ান হিসেবেই। তার অন্যতম সাগরেদ ছিল বর্তমান দেওবন্দীদের অন্যতম পূজনীয় মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ ওরফে হাফেজ্জী হুজুর। এছাড়া আতাহার আলীর মুরিদ ও খলিফা মওলানা আতাউর খান ( সেই সময়কার স্বাধীনতাবিরোধী ইসলামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক) তার পীর আতাহার আলীর কুকীর্তিতে সহযোগীতা করে (বিএনপি আমলে সে এমপি হয়)।


১) বর্তমানে বাংলাদেশ জেনোসাইড আর্কাইভে এ রাজাকারদের নাম রয়ে গেছে:

* রাজাকার-মওলানা আতাহার আলী, সাং ঘোঙাদিয়া, জেলা-সিলেট।
* রাজাকার-মওলানা আতাউর রহমান খান পিতা মওলানা আহম্মদ আলী খান, কিশোরগঞ্জ সদর।
* মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ, (হাফেজ্জী হুজুর) সভাপতি, খেলাফত আন্দোলন, গ্রাম-সোহাগপুর, থানা-বেলকুচি, পাবনা


২) দেওবন্দী সিলসিলার বা নিখিল ভারত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (দেওবন্দ) উত্তসুরী ‘পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম’ নামক দলটিও সেই সময় মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এ দলটির পশ্চিম পাকিস্তান শাখার নেতৃত্বে ছিলেন মুফতী মাহমুদ ও পূর্ব পাকিস্তান শাখার নেতৃত্বে মৌলানা মহীউদ্দীন।





৩) শাকের হোসেন শিবলী’র লেখা “আলেম মুক্তিযোদ্ধাদের খোজে” নামক বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে অনেকেই বলতে চান: হাফেজ্জীর অনুপ্রেরণায় মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিল বা ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ফতওয়া দিয়েছিল।
এদের উত্তরে বলতে হয়: শাকের হোসেন শিবলী’র লেখা “আলেম মুক্তিযোদ্ধাদের খোজে” একটি চরম বিভ্রান্তিমূলক ও ইতিহাস বিকৃত বই, যেই বইটি জামায়াত যুদ্ধাপরাধের দায় এড়ানো জন্য ছেপেছিল। যুগান্তর পত্রিকার ধর্মীয় পাতার বিভাগিয় সম্পাদক শাকের হোসেন শিবলী “আলেম মুক্তিযোদ্ধাদের খোজে” নামক বিতর্কিত বইয়ে বহু কুখ্যাত রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেখায়। এই বইয়ের লেখাগুলো যুগান্তর পত্রিকায় ধারাবাহিক আসলে যুগান্তর পত্রিকা ব্যাপক সমালোচনার মুখে। সারা দেশ থেকে যুগান্তর অফিসে ফোন আসে এই উপহাসমূলক লেখা বন্ধ করার জন্য। ব্যাপক সমালোচনার মুখে যুগান্তর পত্রিকা ধারবাহিক লেখাটি বন্ধ করে এবং একই সাথে শাকের হোসেন শিবলীকে বরখাস্ত করে। এই বইটি ব্যাপক সমালোচিত এবং জাতিকে বিভ্রান্ত করতেই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ছাপায় যুদ্ধাপরাধীদের পেয়িং এজেন্ট শিবলী । আর এই বিভ্রান্তিকর বইয়েই দেওবন্দী মওলানা কুখ্যাত রাজাকার আতাহার আলী ও হাফেজ্জীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা যুগশ্রেষ্ঠ মিথ্যা ও ধোকাবাজি নামান্তর।
প্রকৃত সত্য হচ্ছে, জামায়াতের পাশাপাশি কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররাও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। যাদের সহায়তায় ’৭১-এ করা হয় বহু খুন ধর্ষণ ও লুটতরাজের মত ওয়্যার ক্রাইম ।

৪) অনেকে বলতে পারেন: কওমী রাজাকারদের অনেকে যেমন হাফেজ্জী হুযুর তো মারা গেছে। তার বিচার হবে কি করে?
উত্তর হচ্ছে: এই কওমী রাজাকারা যাদের হত্যা, ধর্ষণ, সম্ভ্রমহরণ করেছে তারা তো তাদের ক্ষমা করেনি। তাহলে আমরা এদের ক্ষমা করব কিভাবে?
নাৎসী যুদ্ধাপরাধীদের যেমন কবর থেকে তুলে বা কবরের গায়ে আঘাত করে বিচার করা হয়েছিল তেমনি এই মৃত কওমী রাজারকারদেরও অনুরূপ কায়দায় বিচার করতে হবে, দিতে হবে অনুরূপ শাস্তি।

*****১৯৯১ সালে প্রকাশিত ‘কিশোরগঞ্জের ইতিহাস’ গ্রন্থে এসব ঘাতক-দালালদের অনেকের নামই বিধৃত হয়েছে। ছড়াকার মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এবং ১৯৭১-এর একজন বীর শহীদের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাহান রচিত ‘রক্তে ভেজা কিশোরগঞ্জ’ গ্রন্থেও উল্লিখিত হত্যাকাণ্ডের বিশদ বিবরণ লিপিবদ্ধ রয়েছে।


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪৩
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×