somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাগজের প্লেন এবং কিছু পিচ্চির নির্মল আনন্দ...

২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাগজের প্লেন এবং কিছু পিচ্চির নির্মল আনন্দ...

কয়েক দিন ধরেই হল এর বাইরে ইফতার করতেছি, তারি ধারাবাহিকতায় আজকে ইফতার করলাম রবীন্দ্র সরোবর এ কিছু ফ্রেন্ড আর কিছ জুনিয়র নিয়ে।
তা আমি একটু আগে ভাগেই গিয়ে পউছিলাম। বসে আছি, পাশেই একটা কাপল। ভাব নিচ্ছি যে মোবাইল টিপতেছি, কিন্তু কান খারা করে তাদের খুনসুটি শুনতেছি। :P
এমন সময় একটা পিচ্ছি একটা লিফলেট হাতে ধরিয়ে দিল। আমি প্লেন বানানর মানসে আরও কয়েকটি লিফলেট চেয়ে নিলাম, এরপর সেগুলা দিয়ে প্লেন আর নৌকা বানানো শুরু করলাম। আমার দেখে মেয়েটি ছেলেটিকে প্লেন বানিয়ে দিতে বলল। সেও বানিয়ে দিল।
তারপর ছেলেটি প্লেন টি উড়িয়ে দিল, যথারীতি প্লেন ক্রাস করলো লেকের পানিতে।
ভাব নিতে গিয়া আমি একটু জোরে ছুঁড়ে মারলাম আমার প্লেনটা। ফলে আরও দূরে গিয়া ক্রাস করলো আমার প্লেন।
এইটা দেখে কপোত-কপোতীর মনে হয় একটা প্রতিযোগিতায় আসার ইচ্ছে হল। তারাও প্লেন বানায়া ছুঁড়ে মারে, আমিও আরও জোরে ছুঁড়ে মারি। এভাবে ৩ বার হল। :D
দেখতে দেখতেই কয়েকটা পিচ্ছি জুটে গেলো। তারাও বেশ মজা পাচ্ছে, আমিও। :P
তাদের একজনকে বললাম আরও কিছু লিফলেট এনে দিতে। এনে দিল। এরপরের প্লেন গুলা তাদের উড়াতে দিলাম।
তাদের সেকি আগ্রহ...
না দেখলে বিশ্বাসই হতো না যে সামান্য এই প্লেন ছুঁড়তে দেওয়াতেই তাদের এতো বেশি আনন্দ হচ্ছে। একেক জন ছুঁড়ে মারতেছে আর অন্য গুলান হেসে কুটিকুটি হচ্ছে।
ওদিকে আমাদের কাপল হাল ছেড়ে দিয়ে অন্য জায়গায় চলে গেলো। এইটা দেখে পিচ্ছিগুলার আরও উৎসাহও বেড়ে গেলো। আমাকে একাবারে ছেকে ধরল আরও প্লেন বানিয়ে দেবার জন্য।
আমিও দিতে লাগলাম... অপেক্ষা করতে করতে এদের সাথে একটু মজা করতে আমারও ইচ্ছে হচ্ছে।
লিফলেট শেষ হয়ে গেলে কয়েকজন ছুটে গেলো সেই লিফলেটওয়ালা পিচ্ছিতাকে খুজে বের করতে, আর সেই সময়ে আমি আমার ব্যাগ থেকে খাতা বের করে খাতার পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে প্লেন বানাতে লাগলাম।

তারপর ফুয়াদ এসে ফোন দিল যে আঙ্কেল আপনি কই।
তারপর ওদের হাত থেকে নিস্তার পেলাম।



_________________________________________________________

আমার এই ঘটনা টা শেয়ার করার কারণ হল শিশুদের নির্মল আনন্দ এর কথা বলা। আসলে শিশুরা অনেক কোমল মনের হয়।এই যে পিচ্ছিরা আজকে রবীন্দ্র সরোবরে ঘুরে বেরাচ্ছে এরা কিন্তু সকলেই কোমল মনের, আমরাই তাদের নিষ্ঠুর বানাই, আমাদের জন্যই তারা বড় হয়ে মাস্তান হয়ে উঠে।

চিন্তা করে দেখুন তো, এই বাচ্চা গুলান যদি বাবা মায়ের স্নেহ ভালবাসায় বড় হতো তবে কি তারা এমন হতো? আমাদের নিষ্ঠুর আচরণে অভ্যস্ত হতে হতে তারা সিখে যায় যে এই পৃথিবীটা শুধুই নিষ্ঠুর মানুষের জায়গা। সেজন্য তারাও শেষ পর্যন্ত কিন্তু নিষ্ঠুর হয়ে যায়।

তাদের একটু স্নেহ ভালবাসা দিয়ে দেখুন...
দেখবেন তারা আপনার কোলের বাচ্চাটার মতোই কোমল স্বভাবের। এই সব রাস্তাঘাটের বাচ্চাদের মাথায় কি কখনো আপনি হাত বুলিয়েছেন? একটু নরম স্বরে কথা বলেছেন? একটু ভালবাসার কথা বলেছেন????
এগুলো পারলে কখনো একটু করে দেখিয়েন। দেখবেন সামান্য একটু মিষ্টি কথাতেই কিভাবে তারা আপনার অনুরক্ত হয়ে যায়, দেখবেন সামান্য একটু নরম কথাতেই তারা আপনার জন্য কতো কিছু করবে।
আমি মাঝে মাঝে রবীন্দ্র সরোবরে গেলে এই পিচ্চিদের সাথে বসি, তাদের নাম জিজ্ঞেস করি, তারা খেয়েছে কিনা, গোসল করেছে কিনা এসব জিজ্ঞেস করি...
এসব তেমন কিছুই না। তাতেই তারা অনেক খুশি। আমার মোবাইলে তাদের গেম খেলতে দিলে, মোবাইল দিয়ে তাদের ছবি তোলা শেখালে তারা এতো বেশি খুশি হয় যে বলার মতো না, নিজের চোখে না দেখলে কেউ আপনারা বিশ্বাসই করতে পারবেন না।
আমার দেখতে ভালো লাগে তাদের চোখের সেই ভালো লাগার আভা। এটা দেখার মতো সান্তি-ভাল লাগা আমি আর কখনো খুজে পাই নাই।
আপনারা ট্রাই করে দেখতে পারেন।
এই পিচ্চিদের একটু নিজের সন্তানের মতো করে দেখার মতো দেখার চেষ্টা করে দেখুন প্লিজ।
__________________________________________________________

ইচ্ছে হলে আমার ব্লগ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। আনাড়ি হাতে বানানো।
আমন্ত্রণ রইলো। :)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×