somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটা পদ্ধতিঃ বাংলাদেশের অনেক মেধাবীদের কাছে অভিশাপের আরেক নাম..... X(

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সত্যি করে বলছি বাংলাদেশের কোটা পদ্ধতি আমার একেবারেই পছন্দ না । অনেকেই ভাবতে পারেন হয়তো এই কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে আমি মোটেও উপকৃত হচ্ছি না, এই কারণেই বলছি । জী, না, এটা সম্পূর্ণ আত্মসম্মানবোধ থেকেই বলছি । যদি আমি একই আত্মসম্মানবোধ মানুষ হিসেবেই কোটা পদ্ধতি ব্যবহারের উপযুক্ত হতাম, তাও বলতাম এই কথা । বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতি সাধারণত অনেক ধরনেরই হয় । মুক্তিযোদ্ধা কোটা, উপজাতি কোটা, জেলাভিত্তিক কোটা ইত্যাদি ।

আচ্ছা, আপনি কি উপজাতি কোটার সুবিধা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন? তাইলে কি আপনি নিজেই এই দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে নিজেকে দাবী করতে পারেন ? না, পারেন না । কারণ আপনি এই দেশের নাগরিক নন । আপনি শুধুই একজন উপজাতীয় অধিবাসী । উপজাতি কোটা করার প্রধান কারণগুলো হচ্ছে এরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে থাকে । এরা অনেকক্ষেত্রেই সুবিধা বঞ্চিত থাকে । এখানে অনেকগুলো কিন্তু আছে । একজন স্বাধীন নাগরিক হয়ে তারা তো দেশের পক্ষে ভোট দিতে পারেন । এদের মধ্যে সত্যি যারা পড়াশুনায় আগ্রহী, তারা কিন্তু সেই প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে পড়ে থাকে না । তারা ঠিকই শহরে কিংবা সুবিধাযুক্ত স্থানগুলোতে এসে পড়াশুনার সুযোগ-সুবিধা নেই অন্যান্যদের মতই । তাহলে এই কোটা করে বৈষম্য করার মানে কি ?

আচ্ছা, আপনি কি মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন? এবার, সিরিয়াসলি ? আপনি নিজেই বলুন না, আপনি কি ঠিক করছেন ? একজন মুক্তিযোদ্ধা কি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন এমন কিছু পাবার আশায় ? ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে কিন্তু অহরহ এই কৌতুকটি করা হয় যে, "যুদ্ধের সময় যদি আমার বাপ একটা পাথর কিংবা ইটের টুকরাও ছুঁড়ে মারতো, তাইলে এখন আমরা এই মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিতে পারতাম ।" কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি কৌতুক ? এটাকে কৌতুক বানাচ্ছে এই কোটা পদ্ধতি । তাছাড়া এখন প্রতি বছর মুক্তিযুদ্ধ তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে । এই হালনাগাদ তালিকায় প্রতি বছরই হাজার হাজার নতুন নতুন মুক্তিযুদ্ধ যোগ হচ্ছে । এদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি নিয়েছেন কিন্তু আসলে মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্মগ্রহনও করেননি । আবার হয়তো অনেকেই যুদ্ধের সময় ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন । তারাও মুক্তিযোদ্ধা । হাস্যকর । এই সরকার তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেই ক্ষমতায় এসেছিল । মানে এই চেতনা কিন্তু রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে । আবার হাস্যকরভাবে নতুন আইন হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরাও এই মুক্তিযুদ্ধ কোটার সুবিধা পাবে । কেউ কি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলে এখন কাঁধে ঝোলা নিয়ে এখন ফেরি করে বেড়ায় ভাঙাচুরা কিংবা প্রকৃত অন্য কোন মুক্তিযোদ্ধা সারাজীবন বিকলাঙ্গ কিংবা নিহত হয়ে গেলেও ঐ মুক্তিযোদ্ধা তথা সাহসী বীরের ছেলেমেয়েরা কোনদিন তাদের বাবা কিংবা মায়ের নাম ভাঙ্গিয়ে কোনদিন সুবিধা আদায় করেনি । আসলে এই কোটাটা কারও প্রাপ্য নয় বরং দেশের সব মানুষের পক্ষ থেকে একটি উপহার । আর আপনিই কিনা এটার অপব্যবহার করছেন ? ভালোই ।

আচ্ছা, আপনি কি জেলাভিত্তিক কোটার সুবিধা নিয়েছেন না নিচ্ছেন ? এই কোটাটাও হাস্যকর । জেলাভিত্তিক কোটার সুবিধা আদায়কারী এই লোকগুলো কি দেশের বাইরের মানুষ ? এক জেলায় একাধিক যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ থাকলেও এই কোটার কারণে সকলে তাদের সেই যোগ্যতার মূল্যায়ন পাবেন না । এটা কি মগের মুল্লুক নাকি ? যতসব ফালতু নিয়ম-কানুন ।

আসলে এই কোটা পদ্ধতি আমাদের দেশকে মেধাশুন্য করে তুলেছে অনেকাংশেই । বিসিএসের মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাতেও এক কোটার জন্য এক বছর নষ্ট হয় দেশের হাজারো-লক্ষ মেধাবীদের । আরে ভাই, যোগ্যতাই আসল । কোটার সুবিধা নিয়ে আবার অন্যান্যদের কাছে বড়াই করার ক্ষেত্রে এইসব কোটার সুবিধা আদায়কারী লোকগুলোর লজ্জা করা উচিৎ । এখন আমার সাথে একমত হলে আসুন হাতে হাত মিলাই আর না হলে ? কি আর করার । ঐ যে দূরে যে দোকানটি দেখছেন, ওখানে মুড়ি পাওয়া যায় । কিনে চাবাতে থাকুন, আশা করি খারাপ লাগবে না আর ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×