somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কিশোর মাইনু
মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। পড়ালেখার কারণে ঢাকায় থাকি। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

তিন(৩)-দুনিয়ায় সবচাইতে প্রভাব বিস্তারকারী সংখ্যা

২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিন(৩)।
দুনিয়ায় সম্ভবত সবচেয়ে বেশী প্রভাব বিস্তারকারী সংখ্যা।সবকিছুতেই যেন ৩ লুকিয়ে আছে।কোন না কোনভাবে ৩র সাথে সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে।
গ্রিক দার্শনিক পিথাগোরাসের মতে তিন হচ্ছে পারফেক্ট নাম্বার।

তিন,মানে আমি-তুমি-সে।কাল তিনটি,অতীত-বর্তমান-ভবিষৎ। মোলিক রঙের সংখ্যা ও তিন-লাল,সবুজ,হলুদ।মানুষের তিন প্রকৃতি দেহ-মন-আত্মা।
ক্রিস্টানদের হলি ট্রিনিটি-পিতা,পুত্র,পবিত্র আত্মা।
হিন্দুদের ত্রিমুত্রি-ব্রক্ষা,বিষ্নু ও শিব।তাদের প্রধান দেবী সংখ্যা তিন-দুর্গা,সরস্বতী,কালী।
বোদ্ধ ধর্মের পবিত্র গ্রন্থের নাম ত্রিপিটক।এর অর্থ তিনটি ঝুড়ি।ত্রিপিটককে তিন ধরণের শিক্ষায় ভাগ করা হয়-সুত্রা পিটক,বিনায়া পিটক,অভিধর্ম পিটক।
জুডাইজমেও তিনের আধিক্য ব্যাপক।তাদের পুর্বপুরুষ তিনজন-আব্রাহাম,আইজ্যাক,জ্যাকব।তাদের প্রার্থনার সময় তিনটি-সকাল,দুপুর,রাত।সাবাতের সময় তারা তিনবার খাবাত গ্রহণ করে।
দুনিয়াতে একেশ্বরবাদী ধর্মের সংখ্যা ও তিন-মুসলিম,ক্রিস্টান,ইহুদি।
মুসলমান ধর্মে পরিচিত ৭৮৬,বিছমিল্লাহ-র স্যাংখিক রুপ।অংক সংখ্যা তিন।
শয়তানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ৬৬৬।এখানে ও তিনটি অংক।
গ্রিক পুরাণে তো তিন রীতিমত রাজত্ব কায়েম করে বসে আছে।তাদের দেবতা তিনজন-দেবতারাজ জিউস,সমুদ্রের দেবতা পসাইডন,মর্ত্যের দেবতা হেডিস।জিউসের প্রতীক তিনফলাঅলা বজ্র,পসাইডনের প্রতীক ত্রিশুল,হেডিসের প্রতীক তিনমাথা অলা কুকুর।

বলা হয়ে থাকে সৃষ্টিকর্তা তিনটি জিনিস দিয়ে দুনিয়া বানিয়েছেন-মাটি,পানি,বায়ু।সৃষ্টিকর্তা মানুষ ও বানিয়েছেন তিন ধরণের।পুরুষ,নারী ও বৃহন্নলা,সোজা বাংলায় বললে হিজড়া।
পদার্থের তিন অবস্থা-কঠিন,তরল,বায়বীয়।
উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ধরলে ও একই:মুল-কান্ড-শাখা,পাতা-ফুল-ফল,বিচি-মাংসল-খোসা।
আবহাওয়া ধরলে গরম-শীত-বর্ষা।
বলা হয়,জন্ম,মৃত্যু,বিয়ে যে ৩টি বিষয়ে মানুষের কোন হাত নেই।পৃথিবী ১বছর মানে ৩৬৫দিন(শতক)।

মস্তিস্কের ভিত্তিতে মানুষ তিনভাগে বিভক্ত:হোমো সেপিয়েন্স-হোমো ইরেক্টাস-হোমোনিডি।আবার মস্তিস্কের তিনটি অংশ:সরিসৃপীয়-স্তন্যপায়ী-মানব।আবার কাটাকাটির হিসাবে ভাগ করলেও তিনটি ভাগ,সোজা কথা যেভাবেই ভাগ করা হোক না কেন তিনটি ভাগেই ভাগ হবে।(মস্তিস্কের এই সকল শ্রেণিবিভাগ নিয়ে ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ আলাদা করে একটি পোস্ট দেওয়া হবে)।
আমাদের কানকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে।আমাদের রক্তে রক্তকণিকার সংখ্যা ও তিন:লোহিত কণিকা-শ্বেত কণিকা-অণচক্রিকা।যে কোন প্রাণীকে যে ভাবেই ভাগ করা হোক না কেন মুল অংশের সংখ্যা তিন ই হবে।যেমন,চামড়া-মাংস-কংকাল,পেশী-তন্ত্র-কংকাল।

ঐতিহাসিক কাল তিনটি:প্রাগৈতিহাসিক-সুপ্ত ঐতিহাসিক-ঐতিহাসিক।প্রস্তর যুগ তিনটি:প্রাচীন-মধ্য-নব্য।মানব সমাজের বিবর্তনের পর্যায় ও তিন:বন্যদশা-বর্বর দশা-সভ্য দশা।ইতিহাসের কাল বিভাজন ও করা হয়েছে তিনটি পর্বে:প্রাক ইতিহাস-ইতিহাস-প্রায় ইতিহাস।ধাতু যুগের শ্রেণীবিভাগ ও তিন:তাম্র-ব্রোঞ্জ-লোহা।সভ্যতাকে ও ঐতিহাসিকগণ তিনটিভাগ করেছেন:ভুসংস্থানিক-দৈশিক-কালিক।

প্রথথভাবে পরিবার তিন প্রকার:যৌথ-একক-বর্ধিত।বিবাহোত্তর বসবাসের ক্ষেত্রে তিন:পিতৃবাস-মাতৃবাস-নয়াবাস।পরিবারে স্বাভাবিক তিন অংশ:পিতা-মাতা-সন্তান।একদিনে ধরলে পিতা-পুত্র-নাতি।

এইসবের প্রভাব আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও পড়েছে।আমরা ধরেই নিয়েছি সবকিছু তিন হতে হবে।যেমন,আমরা দিনে খাওয়াদাওয়া করি তিনবার,সকাল-দুপুর-রাত।যেকোন জায়গায়,যেকোন ধরণের প্রতিযোগিতায় আমরা প্রথম তিনের মধ্যে আসার চেস্টা করি।কারণ পুরস্কার পায় ১ম তিনজন।কোন কিছু হিসাব করি শতকরায়(percentage)।শতকরা মানে ১০০,তিন অংক।আমাদের বাংলাদেশে পাশ করতে হলে পেতে হয় ৩৩%নাম্বার।২টা তিন এইখানে।এমনকি ৯ম শ্রেণীতে যখন আলাদা হয়ে যায় তখন ও ভাগ হয় তিন অংশে-সায়েন্স-কমার্স-আর্টস।
আমরা একমাস হিসেব করি ৩০দিনে(৩দশক),সেটা যেই ক্যালেন্ডারি হোকনা কেন।আমরা সময়ের হিসাব ও করি তিনভাবে:সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টা,দিন-সপ্তাহ-মাস,বছর-যুগ-শতক।

এই দুনিয়ায় ইতিহাস,সমাজ,বিজ্ঞান,মিথ,ধর্ম যেদিকেই তাকাই না সবদিকেই মহাপরাক্রমশালী তিনের রাজত্ব।বছর পার হয়ে যাবে,তবুও বলা শেষ হবেনা এর রাজত্ব সম্পর্কে।
মাহাত্ম্য,প্রভাব,গুরুত্ব সব মিলিয়ে মনে হয়না আর কোন অংক/সংখ্যা তিনের ধারেকাছে ও আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৩:০৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×