১৯৩৯ খ্রীষ্টাব্দের শেষের দিকে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাস আগেই ফরাসী বিজ্ঞানীরা পারমানবিক বোমা ও শক্তি উৎপাদনের জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন । যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে হিটলার ঘোষনা করেছিলেন যে জার্মানীর হাতে এমন এক ভয়ংকর গোপন অস্ত্র আছে যার গতি রোধ বা ধ্বংশ করার কৌশল কারোর জানা নেই । তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বিজ্ঞানী ছাদউইককে হিটলারের গোপন অস্ত্রের শক্তির উৎস অনুসন্ধান করার অনুরোধ করেন । ছাদউইক তার প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সরকারকে জানিয়েছিলেন যে ১ থেকে ৩০ টন ইউরিনিয়াম যোগার করতে পারলে এই ধরনের বোমা তৈরি করা সম্ভব । কিন্তু অটো ফ্রিস ও রুডলফ পিয়ারলস বিজ্ঞানীদ্বয় হিসাব করে দেখালেন যে প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামের পরিবর্তে যদি খাঁটি ইউরেনিয়াম-২৩৫ মৌল ব্যবহার করা হয় তাহলে ১ থেকে ৩০ টন ইউরেনিয়ামের দরকার নেই বরং কয়েক পাউন্ড ইউরেনিয়াম হলেই বিষ্ফোরণ ঘটানো সম্ভব । কিন্তু সমস্যা হল ইউরেনিয়াম-২৩৫ আইসোটোপ পৃথক করার কৌশক তখনো বিজ্ঞানীদের জানাছিল না । তবুও ব্রিটিশ সরকার ছাদউইককে বোমা তৈরীর দায়িত্ব দেন । তাঁর সাথে আছেন অটো ফ্রিস ও রুডলফ পিয়ারলস ।যে সকল ইহুদি বিজ্ঞানীরা হিটলারের ক্ষমতা দখলের সাথে সাথে জার্মান ত্যাগ করেছিলেন তাদের মধ্যে পিয়ারলস, আইনস্টাইন, ঝিলার্ড, বিগনার,টেলরের নাম উল্লেখযোগ্য । মজার ব্যপার হল দেশত্যাগী বিজ্ঞানীরাই ব্রিটিশ ও যুক্তরাষ্ট্রকে পারমানবিক বোমা তৈরির সম্ভাব্যতার কথা বুঝিয়েছিলেন । পরে ব্রিটিশ সরকার অলিফেন্ট, থমসন ও ব্লাকেট বিজ্ঞানীদেরকে নিয়ে গঠন করেন থমসন কমিটি । এই থমসন কমিটিই পরে মড কমিটিতে রূপ নেয় । এই কমিটি দ্ব্যার্থহীনভাবে সুপারিশ করেছিল “ এই কমিটির বিবেচনায় পারমানবিক বোমা তৈরীর পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত এবং যুদ্ধের চূড়ান্ত ফলাফল অর্জনে এই বোমার উপযোগীতা অনস্বীকার্য । অপর দুই বাস্তুহারা হাঙ্গেরীয় বিজ্ঞানী ঝিলার্ড ও এডওয়ার্ড টেলর যুক্তরাষ্টকে পারমানবিক বোমা তৈরীর ব্যপারে উৎসাহিত করেন । তাদের কথায় যুক্তরাষ্ট সরকার কান না দেওয়ায় তারা দুই জন আইনস্টাইনের কাছে যান এবং তাকে অনুরোধ করেন তিনি যেন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে চিঠি লিখে এ ব্যপারটি বুঝিয়ে বলেন । পরবর্তীতে আইনস্টাইন রুজভেল্টকে কয়েকটি চিঠি লিখেছিলেন । রুজভেল্ট ও বুজতে পারলেন হিটলার যদি এই বোমা তৈরী করতে পারেন তাহলে সব সর্বনাস হয়ে যাবে । তাই রুজভেল্ট এই ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার সচিবকে নির্দেশ দেন । সচিব ওয়াটসন তিন সদস্য বিশিষ্ট ব্রিগস কমিটি গঠন করেন । এ দিকে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ জোরে সোরে শুরু হয়েছে । তখনও আমেরিকা যুদ্ধে জড়ায়নি । এ সময়ের মধ্যে ব্রিটেন পারমানবিক বোমা তৈরী কর্মসূচীর একটা খসড়া সম্পুর্ণ করেছিল । এই খসড়া থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের মধ্যে সামরিক দিক থেকে উপযোগী অস্ত্র তৈরীর সম্ভাবনা উজ্জল । যুক্তরাষ্টের ব্রিগস কমিটি ও জাতীয় একাডেমির সুপারিশগুলি তখনও পর্যম্ত এতটা অগ্রসর হতে পারেনি । ব্রিটেনের মড কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই রুজভেল্টকে বোঝাতে পেরেছিলেন যে বায়বীয় ব্যাপনের সাহায্যে পৃথকীকৃত ইউরেনিয়াম-২৩৫ মৌলের সাহায়্যে পারমানবিক অস্ত্র তৈরী সম্ভব । পারমানবিক বোমা তৈরীর কলাকৌশল ব্রিটেন ও আমেরিকার মধ্যে আদানপ্রদান শুরু হয় । সাথে সাথে আমেরিকা ও ব্রিটেনের মিত্র দেশগুলোর সাথেও পারমানবিক বোমা তৈরির কলাকৌশল সংগ্রহের কাজ শুরু হয় । ব্রিটেনের প্রযুক্তির জ্ঞান সরবরাহের জন্য রুজভেল্ট চার্চিলকে একটি চিঠি লিখেছিলেন । যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মধ্যে পারমানবিক বোমা তৈরীর কাজে ব্রিটেনই সবচেয়ে বেশী অগ্রগামী ছিল । কিন্তু এক বছরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র পারমানবিক বোমা তৈরীর ক্ষেত্রে ব্রিটেনকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছিল । কতটা পেছনে পরেছিল ব্রিটেন তা আমেরিকার বোমা তৈরির একটি বাজেট দেখলেই বুঝা যাবে। ইউরিনিয়াম -২৩৫ মৌল পৃথকীকরণ করার জন্য সেন্ট্রিফউজ প্লান্টের জন্য ৩৮ মিলিয়ন ডলার, বায়বীয় ব্যাপন প্লান্টের জন্য সীমাহীন ডলার, তড়িৎ চুম্বকীয় পৃথকীকরণের জন্য ১২ মিলিয়ন ডলার, প্লুটোনিয়াম গাদা তৈরির জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার এবং ভারী পানি উৎপাদনের জন্য ৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয় ।
আলোচিত ব্লগ
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন
পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়
আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন
দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।