somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীল পাহাড়ের কন্যা সেজে পাহাড়ি ছেলের কাছ থেকে হটিয়ে নিলেন ৫৩ লাখ টাকা

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহুল আলোচিত নীল পাহাড়ের কন্যা ছদ্মবেশে এক পাহাড়ী আদিবাসী ভাইয়ের থেকে ৫৩ লাখ টাকা কসরত ভাবে আত্মসাৎ করে নিলেন। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে মেয়েটির উপর খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে মেয়েটি ছদ্মবেশী সেজে নীল পাহাড়ী কন্যা নামে একটি ফেইসবুক একাউন্ট প্রণীত করেছিলেন। মেয়েটির আসল নাম হিতোষী দে তুষ্টি, হিন্দু ঘরের মেয়ে। বলতে গেলে চাকমা ভাষায় পটু। বাড়ি রাঙ্গামাটি, কালিন্দিপুর । মেয়েটির মা চাকমা বাবা হিন্দু । তার মা রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের কর্মকর্তা আর বাবা খাগড়াছড়ির উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ।

বাহ্যিক রুপের সৌন্দর্যে আর মিষ্টি কথাবার্তায় সহজ সরল পাহাড়ী ছেলেকে ৫-৬ বছরে হিমালয় পর্বত জয় করার মত স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। যা ছেলেটি যাদু মুগ্ধ হয়ে মেয়েটির দিকে অবগাঢ হয়েছিলেন। এমনকি মেয়েটি ছেলেকে বিয়ে করার একরারনামা করেছিলেন।

ছেলেটির নাম টুনু চাকমা ওরফে সুমঙ্গল চাকমা। বাড়ী রাঙ্গামাটি,সদরের সাপছড়ি,মধ্যপাড়া,চেয়ারম্যান পাড়া। বর্তমান ঠিকানা দক্ষিণ কোরিয়া। প্রায় ৫-৬ বছর যাবত দক্ষিণ কোরিয়াতে তার অবস্থান। ভিকটিমের অনুযায়ী ৫-৬ বছর আগে কোরিয়াতে প্রবাসীরা বেশী টাকা ব্যাংকে জমা রাখতে পারেনা। তাই তারা স্বদেশে উপার্জিত অর্থগুলি সাধারণত আমানত করতে এক্তিয়ারভুক্ত হয়। তাই তিনি ভেবেচিত্তে উপনীত হয়েছিলেন মেয়েটির অ্যাকাউন্টে টাকাগুলো রাখলে সঞ্চয়ী হবে ।

যেহেতু মেয়েটি দূরের কেউ নয় আমার অনাগত - হবু স্ত্রী সেই জের ধরে ছেলেটি দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে একটি ফ্ল্যাট কিনে সেখানে স্হায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিষয়টি মেয়েটির পরিবার এবং ছেলেটির পরিবারে উভয়ই অবগত ছিলেন। দুই পক্ষের মতের উপর ভিত্তি করে ৫-৬ বছর পর তাদেরকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যার কারণে দীর্ঘ ৫-৬ বছর ধরে মেয়েটির পরিবার ভিক্টিমের পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক রেখেছিলেন।তারপর একদিন মেয়েটির নামে ব্যাংক খোলার সিদ্ধান্ত নেয় ভিকটিম ছেলে। মূলত ছেলেটি মেয়েটির সাথে ৫-৬ বছররের সম্পর্কের কারণে রাজি হয়েছেন। আর বাড়িতে
বৃদ্ধ বাবা। মা আর তার বড় ভাইকেও শেষ শ্রদ্ধা দিতে পারেনি, অকালে মারা গিয়েছিল । তখন তিনি শ্রীলংকায় পড়াশোনার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

তাই মেয়েটি আর ছেলেটি দ্বৈত পক্ষ তদবির করে ব্যাংকে টাকার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এতে মেয়েটি অনেক খুশী ছিলেন। তারপর ভিকটিম ছেলেটি মেয়েটির একাউন্টে টাকা জমা করতে থাকে। ৫-৬ বছরের কষ্টের উপার্জিত অর্থ মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর কালের পরিক্রমায় ব্যাংকে হিসাব মতে ৫৩ লাখ টাকা গচ্ছিত করেছিলেন। এভাবে ৫-৬ বছর চলতে থাকে । যখন ছেলেটি চিন্তা করল টাকাগুলো দিয়ে একটা কিছু করার তখন সব চিন্তা ভাবনা উলট-পালট হয়ে যায়। শুরু হয় মেয়েটির পক্ষ থেকে একের পর এক বানোয়াট কাহিনী । যা মেয়েটি ছেলেটিকে অগ্রাহ্য করার মত চলনা নিয়ে ঝেরে নেয়।

ছেলেটি যখন টাকাগুলো খুঁজছিলো তখন মেয়েটি বলে সব খরচ হয়ে গেছে। সম্পর্ক ভেঙ্গে দিতে বলে। হুমকি দেয় যেন তাকে আর কল করা না হয়। এই ঘটনা এক পাহাড়ী সংগঠনকে জানালে মেয়েটির বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। সংগঠনের লোকজন মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করলে মেয়েটি এক মাস সময় চেয়ে নেয়। তারপর মেয়েটি বৈদগ্ধ্য করে তিনজন বাঙ্গালী ছেলেকে সিম রেজিস্ট্রেশনের লোক বলে ছেলেটির বাসায় দস্তাবেজসহ পাঠিয়ে তার বাবার কাছ থেকে কিছু দস্তখত নিয়ে আসে। ছেলেটির সহজ সরল বাবা প্যাপারগুলো ভালো করে না পড়ে সই করে দেয়।

যেখানে লেখা ছিল ৫৩ লক্ষ টাকা নগদ তার হাতে দেওয়া হয়েছে আর টাকাগুলো আবার তাদের কাছ থেকে দাবি করা হলে তার উপর ১০ লক্ষ টাকার মানহানি মামলা করা হবে। এই কথাগুলো ঐ পাহাড়ী সংগঠনকে জানালে উল্টো তারা মেয়েটির কাছ থেকে ঘুষ খেয়ে ছেলেটির কাছে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করে সমস্যাটা সমাধান করে দেবার জন্য।

এর পর মেয়েটি নীল পাহাড়ী কন্যা ছদ্মবেশী সেজে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্ঠা করে যাচ্ছে । ভিকটিম ছেলেটি যখন বিমর্ষতাপূর্ণভাবে তার বিরুদ্ধে নিজের ওয়ালে পোস্ট করেছিলেন তখন মেয়েটি অতিশয় চিন্তায় পড়ে যান। আর ছেলেকে পোস্ট গুলি ডিলিট দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। বর্তমানে নীল পাহাড়ী কন্যা আরেক আইডি থেকে মোহনা রায়ে রুপ ধারণ করে ভিক্টিমের সাথে খোঁজগল্প করতে চেয়েছিল। এরপর পোস্টটি ভাইরালে রুপান্তরিত হয়। ভাইরাল হওয়া বিষয়টি এখন জুম্ম গ্রুপ বা জুম্মদের ওয়ালে পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি বিদেশের জুম্ম প্রবাসীদের কাছে এটি পুরাদস্তুর ভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

এছাড়া স্পষ্টভাবে জানা যায় মেয়েটি জিকো মারমা নামে এক পাহাড়ী ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল । তার বাড়ি রাঙ্গামাটি আসামবস্তি । টুনুর টাকা দিয়ে অবৈধ বয়ফ্রেন্ড জিকো মারমাকে একটি মোটরবাইক কিনে দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য ৫-৬ বছর ধরে মেয়েটির পরিবার ভিক্টিমের পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল। মেয়েটি ভিক্টিমের বাড়িতে মাঝে মাঝে গিয়ে তার অনাগত শুশুর আব্বাকে ও খোজ-খবর নিয়ে আসত।" যা ভিক্টিমের বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে নীল পাহাড়ির কন্যার ছবি এখনো ঝুলিয়ে রয়েছে স্মৃতি হিসেবে ! মেয়েটির মা ছেলেটির বাবার একজন চেনাজানা নারী । তাই তারা দুই মতের উপর ভিত্তি করে এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।

এতগুলো টাকা কিভাবে পাঠালো, মেয়েটির অ্যাকাউন্ট নাম্বার সবকিছু নথিভুক্ত করা আছে। আরও কিছু আপত্তিকর ছবি, স্কাইপির কথোপকথন, অডিও রেকর্ডিং আছে যা এই মামলাটি এখনও চলতি রয়েছে বিধায় তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু তথ্য-প্রমাণ একটি রাজনৈতিক সংগঠনকে দেওয়া হয়েছে যারা পক্ষপাঠিত্ব না করে সঠিক বিচার করে দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

তুষ্টির মা শকুন্তলা আবার এক মাসের সময় (JSS) এর কাছে চেয়ে নিয়েছে । কিন্তু জে এস এস একমাসের সময় দিতে পারেনি। দুই সপ্তাহের মধ্যে বিচার কার্য সম্পন্ন করতে চাই । তাই তাদেরকে আবার ২ সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে । কারণ তাদের কাছে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট আলামত নেই সে কারণে তারা আবার এক মাসের সময় প্রার্থনা করে বিলম্বিত করতে চাচ্ছে । বিদেশে বসবাসরত প্রবাসীরা সবাই টুস্টির নাট্যক্রিয়া ফয়সালা সঠিক সিদ্ধান্তের মধ্যে উপনীত হওয়ার আশাবাদ করেছে , যেন তাদের সঠিক ন্যায়বিচার হয় । আমরা আশাকরি যাতে ন্যায় বিচার হয় আর অন্যায়কারীদের যাতে পাপের শাস্তি হয় ।
ইংরেজী ভার্সন দেখুন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×