somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি: অটোগ্রাফ: বাজারে, গোপন কথাটি রবে না গোপনে

০৪ ঠা জুন, ২০১১ রাত ৮:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
রাজনৈতিক-সম্পাদিত এবং প্রকাশিত:


মাঝে কিছুদিন বেশ পরিমানে রেডিও শোনা হয়েছিল। বাংলাদেশ বেতারের রমরমা যুগ শেষ হয়েছে সেই কবে। এখন রেডিও শোনা মানে হলো এফএম শোনা। এফএম রেডিও মানে গান শোনা। ডিজুস কিংবা গ্রামীনফোনের বিজ্ঞাপন কিংবা আরজেদের বকবক শুরু হওয়া মাত্রই এক ক্লিকে পরের চ্যানেলে, যদি সেখানেও একই অবস্থা হয় তো পরের চ্যানেলে – কোন না কোনটাতে গান চলতে থাকেই, আমিও মন না দিয়ে শুনি। এরকমই কোন একদিন গানটা শোনা হয়েছিল;

‘আর আমি আমি জানি জানি চোরাবালি কতখানি গিলেছে আমাদের রোজ/
আর আমি আমি জানি প্রতি রাতে হয়রানি , হারানো শব্দের খোঁজ’।

গানের কথা যতটা নয় তার চেয়ে সংগীত আকৃষ্ট করেছিল বেশী আর তাই খুজতে খুজতে পেয়ে গেলাম ‘অটোগ্রাফে’র নাম, কিছু জানার পরে আগ্রহটা চেপে বসলো। আগ্রহের পরিসমাপ্তি ডাউনলোড পরবর্তী সিনেমাদর্শনের মাধ্যমে। এখানে টরেন্ট থেকে মুভিটা ডাউনলোড করতে পারেন।

সত্যজিৎ রায়কে গুরু মানে এমন এক তরুন তার প্রথম চলচ্চিত্রটি নির্মান করতে চান সত্যজিৎ এর ‘নায়ক’ রিমেক করে। মূল চরিত্রে তিনি নির্বাচন করেছেন ইন্ডাস্ট্রির সবচে’ সফল নায়ক তরুন চ্যাটার্জীকে। তরুন চ্যাটার্জী যার নামে কিনা ইন্ডাস্ট্রি চলে তার ইচ্ছাতেই চলচ্চিত্র নির্মাণের সুযোগটা মিলে গেল। প্রযোজনাটাও করবেন তরুন চ্যাটার্জী। এভাবেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে পড়লো শুভব্রত মিত্র। নির্মিতব্য চলচ্চিত্রটির নাম ‘আজকের নায়ক’। নায়ক চরিত্রে তরুন চ্যাটার্জী, আর নায়িকার চরিত্রে শুভব্রতের লিভিং পার্টনার শ্রীনন্দিতা। সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে তরুন চ্যাটার্জী আর শ্রীনন্দিতার মাঝে এক নতুন সম্পর্কের সূত্রপাত হয়। তরুন চ্যাটার্জী শ্রীনন্দিতার অনুরক্ত হয়ে পড়ে। শুটিং শেষে শুভব্রত মিত্র সিনেমার প্রমোশনের জন্য তরুন চ্যাটার্জীর একটি ব্যক্তিগত স্ক্যান্ডালকে মিডিয়ার সামনে নিয়ে আসে। ইন্ডাস্ট্রিতে সফলভাবেই ঢুকে পড়ে শুভব্রত মিত্র, কিন্তু হারাতে হয় লিভিং পার্টনার শ্রীনন্দিতাকে।

সংক্ষেপে এই হলো চলচ্চিত্রটির কাহিনী। শ্রীজিত মুখার্জির প্রথম পরিচালনা। মুখার্জি এর আগে বেশ ক’টি সিনেমার সাথে সহকারী পরিচালনা থেকে শুরু করে গান লিখা পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন। প্রথম সিনেমায় মাত করে দেয়ার চেষ্টা সবার থাকেই। শুভব্রতের ছিল, শ্রীজিতের ও। শুভব্রত সফল হতে পারেনি, কিন্তু শ্রীজিত পেরেছে। সিনেমার ভেতরেই সিনেমা বানানোর গল্প – ধারনা হিসাবে নতুন নয়। কিন্তু শ্রীজিত মুখার্জি নতুনত্ব নিয়ে এসেছেন গল্প বলার ঢঙ-এ, সিনেমাটোগ্রাফিতে। চমৎকার ফটোগ্রাফি, দারুন লোকেশন, মিউজিক-লিরিক অসাধারণ। গানের লিরিক লিখেছেন কবি শ্রীজাত। সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন দেবজ্যোতি মিশ্র। চলচ্চিত্রটি উৎসর্গ করা হয়েছে ‘নায়ক’ (১৯৬৬ সাল) চলচ্চিত্রের পরিচালক সত্যজিৎ রায় এবং ‘নায়ক’ উত্তমকুমার’কে ।
অটোগ্রাফ চলচ্চিত্রতরুন চ্যাটার্জি চরিত্রে সত্যিকারের টালিউড হিরো প্রসেনজিত চ্যাটার্জী

অভিনয়ের জন্য তরুন চ্যাটার্জি চরিত্রে সত্যিকারের টালিউড হিরো প্রসেনজিত চ্যাটার্জী। সস্তাদরের অভিনয় থেকে শুরু করে উচু দরের অভিনয় প্রসেনজিত করেন দক্ষতার সাথে। পরিচালক শুভব্রত চরিত্রে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত বেশ ভালো অভিনয় করেছেন। শ্রীনন্দিতা চরিত্রে ছিল নন্দনা সেন। নোবেল বিজয়ী অর্মত্য সেন এর কন্যা। এই চরিত্রটিকে আমার কাছে সামঞ্জস্যপূর্ন মনে হয় নি। তার জায়গায় কোয়েল মল্লিক কিংবা রিয়া সেন হলে যেন ভালো মানাতো। বিশেষ করে নন্দনার এক্সপ্রেশনে অনেক ঘাটতি দেখা যায়।

অটোগ্রাফে সামজিক যে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে তা হলো লিভিং টুগেদার। নায়ক শুভব্রতের বন্ধুর ভাষায় – সামথিঙ ইজ মিসিং। লিভিং টুগেদারে মিসিং থাকা এই সামথিং টা কি? পারস্পরিক আস্থা? নাকি প্রচলিত সামাজিক্ সম্পর্কের মধ্যে তৈরি হওয়া বাধ্যবাধকতা? নাকি এই মিসিং হবার যাতনা আধুনিক সমাজের দুঃখবিলাসের বুদবুদ? এই জিনিস হলিউডের সিনেমায়ও ঢের দেখা মেলে। এখন নতুন রমরমা অর্থনীতিতে বৃদ্ধি পাওয়া মহানগরী কলকাতায় এই সব প্রশ্ন হাজির। কিন্তু পুঁজির ধর্মে গোপন বলে কিছু থাকে না। না সম্পর্ক না গোপন ভিডিও। সবই তার মার্কেট প্রমোশনের- আত্মস্ফীতির হাতিয়ার।

সে যা-হোক, এই সামথিং ইজ মিসিং কাহিনীর মধ্যেই অটোগ্রাফ মাধ্যমে কলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে সফল পরিচালক হিসেবে শ্রীজিতের যাত্রা শুরু হয়ে গেল। এই যাত্রা অব্যাহত থাকুক এই শুভকামনা।

দারাশিকো'র ব্লগে
সম্প্রতি কি সিনেমা দেখলেন?
আপডেটেড থাকুন সবসময়
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১১ রাত ৮:৩৮
১২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×