somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালো লাগা কিছু গান

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উৎসর্গঃ Erik Mack



এখন ভাবতে গেলে অবাক লাগে, দুবছর আগেও, আমি তখন ক্লাস টেনে পড়ি, জানতাম না বীটলস বা লেড জেপেলিন বা ডিলানের নাম; যাঁদের গানে এখন মুখরিত থাকে আমার অবসরের অনেকটুকু। কিংবা কোনো বাঙলা সঙ্গীতদলের নাম যে 'মহীনের ঘোড়াগুলির' মতো অদ্ভূত হতে পারে তা কি স্বপ্নেও ভেবেছিলাম? এখন হাসি পায় যখন ভাবি, এইতো দুবছর আগেও ভালো লাগতো লিঙ্কিন পার্ক বা ব্যাকস্ট্রীট বয়েজকে। বলছিনা এরা খুব খারাপ গায়; এরা সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য গায়। এদেশে নব্য 'অল্ট-রক' ভক্তরা ইদানিং লিঙ্কিন পার্ক ভালোই শোনে। অনেককেই বলতে শুনি লিঙ্কিন পার্কের মিউজিক ভিডিওগুলো নাকি অসাধারণ!! এদেশে সমসাময়িক যারা জনপ্রিয় তাদের মধ্যে পিটবুল, এনরিকে, অ্যাকনদের গানের ভিডিও দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। যা বুঝলাম এগুলো দেহস্বর্বস্ব 'চটি-সঙ্গীত' [ওয়েল, ওগো ভিডিওগুলার মাইয়াগুলান জোশ্‌!!!]।



খুব থেকে মোটামুটি কাছের অনেকেরই মুঠোফোন নেড়েচেড়ে দেখেছি। বেশিরভাগের মুঠোফোনে বাঙলার চেয়ে হিন্দি গানই বেশি। বাঙলা গান যে একেবারে থাকে না তা নয়, যা থাকে তাও রিমেক বা রিমিক্স। তাদের প্রিয় গানের তালিকায় ফুয়াদের 'নিটোল পায়ে' থাকে; কিন্তু শচীন দেব বর্মণকে কি এই পুঙ্গব-দল চেনে? এরা নজরুলের গান শোনে আর্টসেলের কণ্ঠে; এদের কারনেই রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার সাহস পায় মিলারা। সুমির কণ্ঠে 'আমি অপার হয়ে' শুনে ইচ্ছে করছিলো খাবলিয়ে ওর কণ্ঠনালী ছিঁড়ে ফেলি। তাই বলে কেউ যেন মনে না করে আমি কভার গানের বিরুদ্ধে। অবশ্যই গান কভার করা যাবে কিন্তু সেটাকে মানসম্পন্ন হতে হবে। রিমেকের নামে যাচ্ছেতাই ভাবে গান নষ্ট করার মানে কি?



হয়তো সমস্যাটা বৈশ্বিক। ৬০'র দশকে ব্রিটেনে যেমন বীটলস ছিল, আমাদেরও তো মহীনের ঘোড়াগুলি ছিলো। এখনতো পশ্চিমেও তেমন আহামরি কাউকে দেখিনা।



সমবয়সী অনেককেই ইদানিং ইংরেজি গানে বেশ আকৃষ্ট দেখি। আগেই যাদের কথা বলেছি সেই পিটবুল, এনরিকে, অ্যাকন, টেইলর সুইফট, লিঙ্কিন পার্ক বা ব্যাকস্ট্রীট বয়েজেই এদের গণ্ডি আঁটা। আর ভ্যারিয়েশনের জন্য মাঝে-মধ্যে দুয়েকটা মেটালও যে তারা শোনে না এমন নয়; তারা মেটালও শোনো বইকি! কদিন আগে মেটালিকা-ভক্ত এক বন্ধুর কাছে 'Hallowed Be Thy Name'-এর কথা পেড়ে জানতে পারলাম আমার এই মেটালমনস্ক(!) বন্ধুটি আয়রন মেইডেনের নামও শোনেনি কখনো !!!



যাক সেসব কথা। তারচে আমি বরং ভালো লাগা আমার কিছু ইংরেজি গানের কথা বলি।

নিচের বারোটি গান ভিন্ন বারোটি ব্যান্ডের গাওয়া। মোটেও সেরা দশ গোছের কোনো তালিকা নয় এটি। বরং আমি এমন কিছু গান নির্বাচন করেছি যেগুলো এদেশে মোটেও জনপ্রিয় নয়। কারণ খুব কম মানুষকেই দেখেছি রেডিওহেড বা পার্ল জ্যামের গান শুনতে, এমনকি নামও জানতে!



Love Will Tear Us Apart – Joy Division : সর্বকালের সেরা ইংরেজি গানগুলোর মাঝে অন্যতম। গানটি ব্যান্ড সদস্য Ian Curtis- এর দাম্পত্য সমস্যা নিয়ে রচিত।



1979 - The Smashing Pumpkins : Grunge ধারার গান যখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে তখনই আবির্ভাব স্ম্যাশিং পাম্পকিন্সের। অল্টারনেটিভ রক ব্যান্ডগুলোর মাঝে অন্যতম এই ব্যান্ডের আরও অনেক গান ভালো লেগেছে, যেমন- Rhinoceros, Cherub Rock, Today, Bullet with Butterfly Wings, Ava Adore.



Idioteque – Radiohead : বীটলসের পরেই এই ব্যান্ডটি আমার প্রিয়। Electronica ধারার গান গায় বলে জনপ্রিয়তা পায়নি। Besteveralbums.com এর জরিপে সর্বকালের সেরা অ্যালবাম রেডিওহেডের OK, Computer. আর এই গানটি সম্পর্কে বলবো, এটি একটি Anti-war, Anti-imperialist গান।



Jesus Christ Pose – Soundgarden : ৯০'র সেরা ব্যান্ডগুলোর একটি Soundgarden. অন্যগুলো হচ্ছে Nirvana, Pearl Jam, Radiohead, Rage Against The Machine. গানটি অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। অনেকেই একে Anti-Christ গান বলে অভিহিত করে যদিও আমার তেমনটি মনে হয়নি।



Losing My Religion – R.E.M. : নাম দেখে যাই মনে হোক না কেন এটি মোটেও Anti-religious কোনো গান নয়। 'Religion' শব্দটি গানে 'Temper' অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কিছু গান আছে যা প্রথমবার শুনেই ভালো লেগে যায়; এটিও তেমন একটি গান।



Yellow Ledbetter – Pearl Jam : ৯০'র শুরুতে সিয়াটল ভিত্তিক যে কয়েকটি ব্যান্ড Grunge ধারার গোড়াপত্তন করেছিল পার্ল জ্যাম তাদের একটি। নির্ভানার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় এই গানের দলটি। পার্ল জ্যামের আরো অনেক গান বেশ সুন্দর, যেমন Black, Better Man, Jeremy, Alive. আর 'Black' তাদের Legendary Song.



Bittersweet Symphony – The Verve : Rolling Stone-এর The Last Time গানের সাথে এই গানের সুরে মিল থাকায় মিক জ্যাগার দ্য ভার্ভের নামে প্ল্যাজিয়্যারিজমের অভিযোগ এনেছিলেন। তারপরও 'Bittersweet Symphony' ৯০'র সেরা গানগুলোর একটি।



Last Nite – The Strokes : দ্য স্ট্রোকস আমায় ৭০'র রক ব্যান্ডগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। ব্যান্ডটির আর একটি গানই আমার ভালো লেগেছে। সেটি হলো 'Reptilia'.



Seven Nation Army – The White Stripes : গানটি বিখ্যাত এর অসাধারণ গীটার রিফের জন্য। গত দশকের সেরা ব্যান্ডগুলোর একটি White Stripes-এর আর যে গানটি আমার ভালো লেগেছে সেটি হলো 'Fell in Love with a Girl'.



Here In My Room – Incubus : নিঃসন্দেহে গত দশকের সেরা ব্যান্ড Incubus. তাদের অসাধারণ একটি অ্যালবাম 'A Crow Left Of The Murder...'. একই ব্যান্ডের আর যে গানটির কথা না বললেই নয় সেটি হলো 'Talk Shows On Mute'.



Wonderwall – Oasis : Britpop ধারার জনকদের অন্যতম। ৯০'র দশকে দারুন জনপ্রিয় ছিল এ ব্যান্ডটি। চমৎকার কিছু গান আছে Oasis-এর।



No Rain – Blind Melon : অনেক মিষ্টি একটা গান। Blind Melon-কে তেমন একটা ভালো লাগে নি আমার। তবে এ গানটি সত্যিই চমৎকার।





হয়তো অনেকের কাছেই আমার লিস্টটা ভালো লাগবে না। আর সেটাই স্বাভাবিক। Incubus-কে গত দশকের সেরা ব্যান্ড এদেশে কেউ মানবে বলে মনে হয় না। আর একটা কথা না বললেই নয়; জনপ্রিয় গানগুলো আমি সচেতনভাবেই নির্বাচন করিনি। যেমন ইচ্ছা করেই বাদ দিয়েছি Nirvana, U2 এর মতো জনপ্রিয় আর অবশ্যই ভালো ব্যান্ডগুলোকে। আর ব্যক্তিগত রুচির ছাপতো থাকবেই। যেমন- র‍্যাপ ভালো লাগে না বলে 'Rage Against The Machine'-কে ঠাঁই দিই নি এ তালিকায়।





ডাউনলোড লিঙ্ক দিতে না পারার জন্য দুঃখিত। গানের টাইটেল ও ব্যান্ডের নামের সাথে Mediafire লিখে গুগোলে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন আশা করি। আর না পেলে আমি তো আছিই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×