somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার হাস্যকর ভুল কিংবা ত্রুটি - পর্ব ২

১৬ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার হাস্যকর ভূল ত্রুটি নিয়ে আমি আবার লিখছি। এবার আমার এই হাস্যকর ভূলের জন্য আমি খুব বিমুগ্ধ , চমকিত এবং বিস্মিত। ঘটনাটা হলো এই রুপ বাংলাদেশে এখন সালামের প্রচলনটা একটু ভিন্ন হয়ে গেছে। একটু ভিন্ন বলার কারন, এখন মানুষ সালাম দেয় হয় তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য মানে এক কথায় যাকে বলে মতলবি সালাম আর না হয় নির্দিষ্ট কাউকে খুশি করার জন্য এটার মানে কমার্শিয়াল রাজনৈতিক সালাম। যেমনই হোক আমি কখনো এরকম রাজনৈতিক কিংবা মতলবি সালাম দেই না, নিজের প্রশংসা করছি না কথা টা সত্য। তবে একবার সালাম দিয়ে কিঞ্চিত দিধা দন্দের মধ্যে পরে গিয়েছিলাম। ঘটনা টা অনেক দিন আগের তখন ২০০৮ কি ২০০৯ইং এমন হবে। আমাদের পাশের এলাকার একজন ভদ্রলোক ছিলেন মোটামুটি ভালো বয়স হবে লোকটার। পাশের এলাকা বলতে খুব দূরে নয় বাড়ি থেকে কাছেই, তো সেখানে মুল সড়কের পাশে অনেক বাড়ি ঘরের সাথেই একটা খালি জায়গা ছিল যার আশেপাশে গাছপালা ও বসার জন্য স্থান ছিলো যা বর্তমানে নেই, সে যাই হোক । আমরা কজন বন্ধু মিলে ওখানে প্রায় সময় আড্ডা দিতাম। অনেক হাসি ঠাট্টা হৈ হুল্লোরে ভালোই সময় কাটতো। তো একদিন বিচার গেল মহল্লার মুরব্বীদের কাছে, ইদানিং এখানে বেশি চেচামেচি হচ্ছে, মা বোনদের চলাফেরায় সমস্যা ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তো যা করার কিছু মুরব্বী আমাদের ডাকালেন, আমরাও হাজির হয়ে জানতে পারলাম একজন ভদ্রলোক এই নালিশ গুলো করছেন। এরপর মুরব্বী মহোদয় গন আমাদের বললেন,
-ঠিক আছে বাবারা তোমরা ইয়াং মানুষ একটু আড্ডা তো দিবাই তা একটু পরিমার্জিত থাকে আর উচ্চ আওয়াজ যেন নাহয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবা। জানোই তো বাবারা দিনকালের অবস্থা ভালোনা যত পারা যায় সাবধান থাকাটা ভালো।
আমরা সবাই কথা গুলো গ্রহন করে চলে আসলাম। কিন্তু সবার মনে একটা প্রশ্ন কে এই নালিশ দিল। আমাদের এক বন্ধু পাড়ার এক মুরব্বীর ভাতিজা তাকে দায়িত্ব দেয়া হলো, তুই এই খবর টা বের করবি। তারপর একদিন সকালে ওখানটায় সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি। আমার সাথে আশ্চর্যজনক এক ঘটনা ঘটলো। ঘটনাটা এরকম, এক ভদ্রলোক ওই পথ ধরে আসছিলো সাথে তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে। ওই ভদ্রলোক যার কথা প্রথমেই বলেছিলাম মোটামুটি ভালো বয়স হবে লোকটার। তো লোকটাকে দেখে আমি সালাম দিলাম, লোকটা আমার দিকে এমন রিয়েকশনে তাকালো যেন আমি কি না জানি করে ফেলছি, আবার সাথে তার মেয়ে বুঝতেই তো পারছেন। তো আমার বাকি বন্ধুরা ব্যাপারটা নোটিশ করলো। আমাকে বলল- এই লোক এরকমই বুঝে শুনে সালাম দিস আর কথা বলিস। তো একদিন হঠাৎ লোকটার সামনাসামনি দেখা আর আমি একাই ছিলাম। লোকটা আমাকে নানান ধরনের প্রশ্ন করলো।
-কি করো, কোথায় বাড়ি, বাবা কি করে ইত্যাদি । ( এমন ভাবেই জেরা করছিলো যেন আমি তার কি ক্ষতি টাই না করছি)
আমি সব উত্তরই ঠিক ঠাক দিলাম, পড়লেখার কথা যখন বললাম তখন ভাষা একটু অন্যরকম হয়ে গেলো।
-আরে ভাই পড়াশোনা করো মনোযোগ দিয়ে করো, এসব আড্ডা বাজি ভালোনা। আমি ঠিক আছে বলেই বিদায় নেই।
তারপর আমার বন্ধুরা ঘটনা জানতে পারলো। এরপর আমার দিকে যখনই তাকায় ওরা শুধু হাসে। আমি জিজ্ঞেস করলেই, কিছু না কিছু না উড়িয়ে দিত। আমার প্রচুর রাগ উঠতো। তো তারপর ওখান টার আড্ডাটা আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে গেল। সবাই যার যার মত এখন ব্যাস্ত সবাই। মাঝে মাঝে দেখা হয় চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিই তবে আগের মত না।
কিছুদিন আগে ওই পুরোনো ভদ্র লোকের সাথে হঠাৎ পথে দেখা। লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো, অনেকদিন পর দেখা তাই চিনতে পারিনি। লোকটা আমাকে জিজ্ঞেস করলো, তুমি ওই ছেলেটা না যে আমাদের বাসার সামনে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিতে। আমি তখন লোকটাকে চিনতে পারলাম, সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছেন (এবার আর তিনি বিব্রত হননি) । তো কিছুক্ষন কথা হলো, জিজ্ঞেস করলেন আমি কি করি। বললাম পড়লেখা শেষ এখন বেকার চাকরি খুজছি আর বেশিকিছু বললাম না। বিদায়ের সময় অনেক স্নেহের সহিত; আঙ্কেল ভালো থাইকেন আপনি দোয়া করি ভ, এই বলে বিদায় নিলেন।
আমার বন্ধুদের সাথে যখন লোকটার বললাম তখন সবাই ছিলো না দু তিন জন ছিলো, কারন সবাই এখন দেশে নেই, তো যারা ছিলো তারা লোকটার কথা শুনে বেশ কিছুক্ষন হাসলো, আমি কিছুই বুঝলাম না। তারপর হাসি থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
- লোকটা কই থাকে জানিস?
- না জানি না তো, হঠাৎ দেখা।
এরপর যা শুনলাম মাথা ঘুরায়া গেল
- জানিস সাগর এই সেই লোক যে আমাদের নামে এলাকার মুরব্বীদের কাছে নালিশ দিতো ।
আমি ঘটনা শুনে আকাশ থেকে পরলাম। এই হলো ঘটনা যা আমি এতোদিন পর জানতে পারলাম। মনে মনে রাগ উঠছিলো কিন্তু কি আর করার। এইরকম হাস্যকর ঘটনা আমার সাথেই ঘটে। যেই কারনে নামকরন করেছি আমার হাস্যকর ভূল ত্রুটি ।।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×