সেদিন টি এস সি চত্বরে আমি আর আমার আই সি এম এ বি ( ICMAB ) এর কয়েকজন খুব ভালো বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম, ৩১ অগাষ্ট বিকেল ৪টা ৫ টার দিকে। খুব সুন্দর একটা বিকেল ছিলো সেদিন, কখনো মেঘ আবার রৌদ্রের খেলা চলছিলো। সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম অনেক কথাবার্তা সাথে চায়ের কাপে চুমুক সেইরকম একটা আমেজ। আমার সাথের বন্ধুরা বিভিন্ন ভাবে দুষ্টামি করছিলো আমার সাথে আমিও ছেড়ে দেওয়ার লোক না,আমিও প্রতিউত্তর দিয়ে দেই হাসাহাসিতে। আর বন্ধুদের সাথে এরকম মজার দুষ্টামি সবারই হয়ে থাকে সাভাবিক বিষয়। আমি মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছিলাম। তো ওরা জিজ্ঞেস করছিলো কিরে কোন মেয়ের ছবি তুলিস, আবার কোন মেয়ের উপর ক্রাশ খেয়েছিস!!? আমি উত্তর দিলাম, ছবি তুলি প্রকৃতির আর ক্রাশ অনেক সময় আছে খাওয়ার মত। এরকম অনেকক্ষন হাসাহাসি, গল্প সাথে সেলফি তো আছেই।
বন্ধুরা সবাই গল্প করছিলো ঠিক ওই সময়টায় আমি একটু অন্য মনষ্ক হয়ে একদিকে ধ্যান মগ্ন হয়ে তাকিয়ে রইলাম সামনে দিয়ে অনেক মেয়ে ছেলেরা চলাফেরা করছিলো, এর মাঝেই আমার সাথে থাকা বন্ধুরা, দেখ কোন মেয়েটা পছন্দ হয় ( কারন ওদের টার্গেট ছিলো কিভাবে আমাকে পচাবে; হা হা হা )। আরে ওসব কিছু নাহ্, তো ওরা আবারও মজা করতে থাকে আমিও ওদের সাথে তাল মিলাই, খুব আনন্দের সাথে সময় পার হচ্ছিলো।
তখনই হঠাৎ অনেক পুরোনো দিনের একটা স্মৃতী মনে পরে গেলো। সময় হবে ২০০৬ এর দিকে আমরা ৭ জন বন্ধু মিলে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। পরীক্ষার শেষ হওয়ার পর একজন বায়না করে, চল টি এস সি চত্বরে যাই, চা সিগারেট খাব কিছুক্ষন ঘুরে ফিরে বাড়ি চলে যাব। তো সবাই রাজী এবং আমিও!! চত্বরে বসে সবাই চা সিগারেট খাচ্ছিলাম কার পরীক্ষা কেমন হলো জিজ্ঞাস করা আর হাসাহাসি হচ্ছিলো। আমি খুব ধ্যান মগ্ন হয়ে একদিকে অনেকক্ষন তাকিয়ে থাকি, দুজন বন্ধু এটাই খেয়াল করছিলো; আর প্যাঁচ টা ওখানেই বাধে। ওরা হাসাহাসি করছিল আর আমাকে উদ্দেশ্য করে বলছিল হায় হায় সাগর তুই তো আগে খুব ভালো ছিলি নাহ্ তুই নষ্ট হয়ে গেছত এই ঢাকা শহরে আইসা ( খুব মজা কইরা বলছিল )। তখনও আমি বুঝতে পারি নাই যে ওখানে কখন দুটো মেয়ে তাও সুন্দরী মেয়ে এসে দাড়িয়ে কথা বলছিলো!!!! তো এ বিষয় টা নিয়ে অনেক মজা করলো, নাহ্ সাগর তুই এরকম কেমন করে হয়ে গেলি আমাদের চোখ কে ফাকি দিয়ে! আমি বললাম, দেখ আমার দৃষ্টি ওদিক ছিল না, কিন্তু কে শুনে আমার কথা!? যাই হোক আমি বুঝতে পেরে বলে দিলাম, ছেলে মানুষ মেয়েদের দিকে একটুআধটু তাকাবেই ব্যাপার না কেন তোরা মনে হয় তাকাস না, হা!! কারন ওদের থামাতে হবে তো তাই একটু বলে দিলাম। এর মধ্যে আমার পক্ষ হয়ে এক বন্ধু উত্তর দিলো, ওই ছেড়ারা ওর কথা তো ঠিকই আছে নইলে একটু মেয়েগুলার দিকে তাকাইছে কি হইবো তাতে, হুমম; তোরা মনে হয় তাকাস না?? এ ঘটনা নিয়ে অনেক মজা, হাসাহাসি হলো, তারপর যে যার মত বাড়ি চলে গেলাম।!
হঠাৎ যখন মনে পরে যায় সেই দিনের কথা খুব কষ্ট লাগে। সেইদিন গুলি আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা খুব মিস ফিল করি। বন্ধুদের কথাও খুব মনে পরে। আমার সাথের অনেক বন্ধুরা দেশের বাইরে আছে এখন।দু এক জনের সাথে দেখা হয় খুব হঠাৎ, সবাই এখন খুব ব্যস্ত, কারো হাতে সময় নেই এখন আড্ডা দেয়ার মত। পুরোনো সেই দিন গুলো আর কখনোই ফিরে আসবে না। তাই খুব কষ্ট লাগে যখন মনে পরে সেই হাসি, আড্ডা আর হাস্যকর সব ভুল ত্রুটির কথা।।
চলবে-
আগের লেখা পর্ব গুলোর লিঙ্ক দিয়ে দিলাম সময় পেলে পড়ে দেখতে পারেন, আশা করি ভালো লাগবে-
আমার হাস্যকর ভুল কিংবা ত্রুটি - পর্ব ৩
আমার হাস্যকর ভুল কিংবা ত্রুটি - পর্ব ২
আমার হাস্যকর ভুল কিংবা ত্রুটি - পর্ব ১
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১২