somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই জাতির মূল্যবোধ বৃদ্ধি পাবে কবে..??

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
স্বাধীনতা আর বিজয় দিবসে স্মৃতীসৌধে ফুল দিলেই সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় কি?



স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা অধিকতর কঠিন!



দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি! দেশ ও জাতির বর্তমান পরিস্থিতি, এই যে বেচে থাকা প্রতিনিয়ত এটাও একটা যুদ্ধ! যুদ্ধ কখনোও শেষ হয় না! জীবন সংগ্রাম, অবিরত বেঁচে থাকাও এক যুদ্ধ।

বর্তমান সময়ে যা ঘটছে যা দেখছি, শুনছি তা কিভাবে মেনে নেয়া যায় তার হিসেব মেলাতে পারছি না! বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারী, স্বাধীনতা দিবসে মাইক দিয়ে খুব উচ্চ শব্দযোগে হিন্দি গান বাজানো হচ্ছে, মাঝে মাঝে ওয়েষ্টার্ন গান ও বাদ্য বাজানো হচ্ছে!! এমন কি স্কুল কলেজেও একি অবস্থা; অভিভাবক এবং উনাদের সন্তানদের মনোরন্জন করার জন্য বাজানো হচ্ছে হিন্দি গান; হাহ্! এগুলো কেন করা হচ্ছে? পরিপুর্ন অজ্ঞতার কারনে! যা খুবই দুঃখজনক!! অথচ স্বাধীনতার প্রকৃত রুপ ভবিষ্যত প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে না, ভবিষ্যত প্রজন্ম কে কি শেখানো হচ্ছে? এই ভবিষ্যত প্রজন্ম তো একটা সময় পঙ্গুত্ব বরন করবে।
কি একটা অবস্থা যে, বিজয় দিবসেও সারারাত ধরে সারাদিন ধরে বেশির ভাগ সময়ই হিন্দি বাজানো হচ্ছে! তাও আবার হিন্দি আইটেম সং এর গান!!! আহ্ এই জাতির কি হবে! এখানে কেউ বলতে পারেন; আইটেম সং যে বাজায় সেটা আপনি কিভাবে বুঝলেন? জনৈক মশাই, না জানলে প্রতিহত করবো কিভাবে?! যদি বিষ না চেনেন তাহলে বিপদ! আর সমগ্র বাঙালী জাতিই তো এখন স্লো পয়জন ( slow poison ) আক্রান্ত!! যা এখন মারাত্মক ব্যাধিতে আকার ধারন করছে!!!

শুধুমাত্র " মূল্যবোধ " শব্দ দিয়ে এই সমস্যা গুলো পরিমাপ করা যায়। যা অভিভাবক ও শিক্ষক দের মাঝে মাত্রাতিরিক্তভাবে কমে গেছে, রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে তা নেই বললেই চলে। আমাদের শেখার ক্ষেত্রগুলো তে শুদ্ধতা চর্চা হচ্ছে না। যে সব অনুষ্ঠানে এই অপসংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে তা দিবস উদযাপন এর জন্য না, নেতাকে খুশি করা আর নিজেদের উল্লাস প্রকাশ করার জন্য!

বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসে যে সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয় ( কথায় ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন ) সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়, জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় সে ঠিক আছে, খুবভালো!! কিন্তু হাতে যে ছোট ছোট পতাকা থাকে, তারপর ছোট কাগজের পতাকা চিকন রশি দিয়ে লাগিয়ে বিভিন্ন ভাবে সাজানো হয়, তা একটা সময় দেখা যায় মাটিতে পরে আছে খুব কষ্টের সহিত বলতে হচ্ছে পতাকা গুলো পদদলিত হয়!! কেউ বিন্দু মাত্র লক্ষ্যও করেনা! এখানে একটা প্রশ্ন; কিভাবে স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব বজায় রাখবে এই জাতি!? এই জন্যই কি দেশ স্বাধীন করা হয়েছিলো!!

১৫ নভেম্বর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে বাসে পরিচয় হলো। উনার সাথে অনেক কথার মাঝে আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম এই যে বিজয় বিজয় দিবস স্বাধীনতা স্বাধীনতা দিবসে অনুষ্ঠানে পতাকা পরে থাকে তা পদদলিত হচ্ছে এখানে কি করা উচিত! উনার উত্তর; " যে বা যারা এই কাজ করে তাকে ঘৃনা করা উচিত" । উনি বয়ষ্ক মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধা তাই বেশি কথা বাড়াইনি উনি সম্মানিত, এই প্রশ্নটা আপনাদের কাছে ছেড়ে দিলাম; শুধু কি ঘৃনা করলেই হবে নাকি স্বাধীনতা, স্বাধীনতা চেতনা ভিত্তিক সঠিক শিক্ষা দিতে হবে?! এই জাতির মেরুদন্ড ও শিক্ষা খুবই দূর্বল! একে শক্ত করার জন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা যিনি জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলেন,, সেই উনারা আজ জীবন যুদ্ধে পরাস্ত! কেউ রিকশা চালিয়ে কেউ ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন!! আজকাল নাকি মুক্তিযুদ্ধের জাল সার্টিফিকেট পাওয়া যায়! আহ্ কি দেশে বাস করি!? হাহ্! এই জন্যই কি দেশ স্বাধীন করা হয়েছিলো?!
একটা চ্যানেলের খবরে দেখলাম ( চ্যানেলের নাম উল্লেখ করবো না ) একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা উনি কোন কাজ করতে পারেন না, অনেক বয়স্ক। উনার একটি ছেলে একটি মেয়ে আছে। মেয়েটিকে অনেক কষ্ট করে এস.এস.সি পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়েছেন, আর ছেলেটা একটা খাবার হোটেলে কাজ করে যে কিনা এরকম ছোট খাটো কাজ করে খুব কষ্ট করে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছেন! এরকম আরো অনেক জীবন্ত ঘটনা আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে, যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে অবহেলিত!!! এই জন্যই কি দেশ স্বাধীন করা হয়েছিলো? এর চেয়ে তো পরাধীন থাকাও অনেক ভালো ছিলো।
একজন মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যের একটা গাড়ির দামে কয়টা যোদ্ধা পরিবার কত মাস,বছর খেতে পারেন তার হিসাব করা কি খুবই কঠিন? হিসেব করাটা কঠিন নয় কঠিন শুধু ভালো একটা পদক্ষেপ নেয়া। আসলে দেশের সিস্টেম টাই এমন হয়ে গেছে। ভালো মানুষের কদর শেষ করে ফেলা হচ্ছে! নাহলে কি মুক্তিযোদ্ধারা এভাবে অবহেলিত হয়! বক্তৃতায় তারা স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে একদম একাকার করে ফেলে অথচ এইসব লোকেরাই স্বাধীনতার চেতনা সম্মক কোন ধারনাই রাখে না!

মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, নেতা সহ সকলকেই একটা প্রশ্ন, শহীদদের উদ্দেশ্যে স্মৃতীসৌধে ফুল দেন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে কয়দিন গিয়ে খবর নিছেন?

গান টা খুব সুন্দর ছিলো, " এক সাগরের রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা, আমরা তোমাদের ভূলবো না।" কত্থেকে সারা বছর তো ভূলেই থাকে। শুধু বিজয়, স্বাধীনতা দিবস আর ২১ শে ফেব্রুয়ারীর দিন ঢাক ঢোল পিটিয়ে মনে করা হয়; যা স্রেফ লোক দেখানো!! কোন সম্মান বোধের দিক থেকে নয়। আসলে দেশ মাত্র ৯ মাসে স্বাধীন হয়েছে তো তাই এই স্বাধীনতার মহত্ব বুঝতে পারছে না বাঙ্গালী! হয়তো ৯ বছর পর দেশ স্বাধীন হলে এমন প্রেক্ষাপট দেখতে হতো না ( খুব কষ্ট নিয়ে কথাটা বলতে হচ্ছে )।
আজকাল শিশু কিশোর সহ সব স্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে অনাগ্রহী হয়ে পরছে! কেন?কারন, সরকার বদল হয় ইতিহাসের বইও বদলানো হয়! ইতিহাস কে বিকৃতিও করা হচ্ছে! জোর পূর্বক পাঠ্যপুস্তকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে! হাস্যকর বিষয় ছাত্র ছাত্রিরা শুধু পাশ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের গল্প পড়ে জানার জন্য নয়!! এই জন্য যদি স্বাধীনতা অর্জন করা হয় তাহলে পরাধীন থাকাও অনেক ভালো ছিলো।।
এর শেষ কবে হবে? এ জাতি কি কখনোই মেরুদন্ড সোজা করে দাড়াতে পারবে না? নিজের ভালো কখনোই বুঝবে না? সারা জীবন কি এভাবেই চলবে?!! মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা কোন ভালো বিষয় তুলে ধরা কি এতোই কঠিন? আমরা কি কখনোই দেখবো না একটা সুন্দর, সুস্থ, সাবলীল একটি জাতি? যে জাতি কোন বিদেশী চক্রান্তের মায়াজাল থেকে বেড় হয়ে আসতে পারবে। যে জাতি মাথা উচু করে নিজের দাবী আদায় করে নিবে, নিজের দেশকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।


আমি একটা স্বপ্ন দেখি সব সময় যে বাংলাদেশ একদিন পৃথিবীর শ্রেষ্ট রাষ্ট্র হবে। এই দেশের নাগরিক হবে সাবলম্বি শক্ত দেশ প্রেমিক! স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব ধরে রাখার জন্য লড়াই করে বাঁচবে, নিজের দাবী প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঝাপিয়ে পরবে....!
..

সবারই নিজস্ব মতামত আছে, তাই ভুল ত্রুটি মার্জনার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ, সবাই ভালো থাকবেন...

ছবি সমগ্র: নেট
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩২
২০টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×