somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম সংস্কারক হাসান মাহমুদ ভাই কে চেনেন আপনারা কেউ?

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাসান মাহমুদ ভাই সুদূর কানাডায় বসে ‘ধর্ম সংস্কারের’ কাজ করেন। ভুল ধর্ম সঠিক লাইনে আনার চেষ্টা করছেন বলে জানি। ভালো কাজ বলে মানা উচিৎ। দেশে উনি থাকেন না, অাসেনও না। বিদেশ থেকে কষ্ট করে টাকা পয়শা তুলে দেশের যুব সমাজের মধ্য থেকে বিভ্রান্ত/উদভ্রান্ত বা বেকার কাউকে ধরে কাজ হাসিল করার চেষ্টা করেন। আমাকে দিয়ে উনি চেষ্টা করেছেন। “তবে আমি ওনার বিশ হাজার টাকা প্রায় মেরে দিয়েছি।” যেটি নিয়ে ওনার সাথে এখন মহা খটমট। উনি কানাডা থেকে আমার কলার ধরছেন, আর আমি চেষ্টা করছি ঝটকা দিয়ে ওনার হাত সরিয়ে দিতে। আমি দেখতে চাচ্ছি- উনি ঠিক কত নিচে নামেন। আজকে আমি ফেসবুক একটি পোস্ট দিয়েছিলাম এরকম-

“মাঝে মাঝে সংশয়ে পড়ে যাই-
যে কৌশলে এগোচ্ছি সেটি যে সঠিক তা নিশ্চিত হতে পারি না। খুব ধীর পদ্ধতি। শরীর ভাঙছে। হৃদ রোগের লক্ষণ নিয়ে মাঝে মাঝে পড়াশুনা করি সুযোগ পেলে। আরো দশ বছর যে বাঁচব সেই গ্যারান্টি কোথায়?”

পোস্টের নিচে ওনার মন্তব্যটা দেখুন। রীতিমত দানবীয় মন্তব্য না? জীবনে বহু মানুষকে সহযোগিতা করেছি চাকরির টাকা বা টিউশনির টাকা দিই। টাকা যে কারো কারো কাছে পাই না তাও নয়, কিন্তু এভাবে কাউকে আক্রমণ করা যায়? করিনি তো কখনো কাউকে।


নিঃসন্দেহে ইনি হচ্ছেন একজন বুদ্ধিজীবী, যিনি সদূর কানাডায় থেকেও বাংলাদেশের সমাজে ‘কাজ’ করান। সংস্কৃতিমনা, গানবাজনা পছন্দন করেন, ধর্মটা বোঝেন খুব ভালো নিশ্চয়ই, এখন সবাইকে বুঝাতে চাচ্ছেন। তিনি ‘কী’ কাজ করান, তা ওনার কাছ থেকেই ভালো জানতে পারবেন। যেহেতু ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজ করেন, তাই আমার কিছু বলা ঠিক হবে না এক্ষেত্রে। হিন্দু ধর্ম প্রচার করলে বলতাম, রাখেন আপনার ধর্ম প্রচার। মানবিকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ান পারলে দেশে এসে।
নিশ্ছয়ই উনি একজন মহান ব্যক্তি নইলে কানাডার মত উন্নত দেশে নিরাপদে থেকেও দেশ নিয়ে ভাববেন কেন? তো তিনি ‘কীভাবে’ দেশ নিয়ে ভাবেন, সেটি বিস্তারিত বলার সময় অনেক আছে। যেটা বলা দরকার, ওনার একজন প্রতিনিধি দেশে আমাকে মাঝে মাঝেই ‘হাসান ভাইয়ের কিছু ভিডিও’ প্রচার করতে বলত। বিরক্ত হতাম। জানতে চাইতাম, “তুমি এগুলো কীভাবে করো? কেন করো?”
শেষে বললাম, না, এটা আমি আগে বোঝার চেষ্টা করি। বোঝার জন্য ওনার সাথে (হাসান ভাই) যোগাযোগ করলাম। তার আগে ওনার এই প্রতিনিধির সাথে কয়েকবার বচসা হয়েছে, ঠিক বচসা না, এক ধরনের বিতর্ক। তার (রনো) বক্তব্য হচ্ছে, ভালোবেসে সে এটা করে। আমি বললাম, “ভালোবেসে শো আয়োজন করা যায়? খরচপাতি লাগে না?”
তার বক্তব্য- সে নিজ খরচে করে। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম। যাইহোক, অতঃপর ফেসবুকের মাধ্যমে আমি মি. হাসান মাহমুদ ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করি। উনি দুইদিনের মধ্যে আমাকে বিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হন দুটি শো করার জন্য। আমার ধারণা ছিল না উনি কীভাবে টাকাটা দেবেন। ওনার বক্তব্য মত আমেরিকা থেকে দেশে আসা একজনের সাথে যোগাযোগ করি, তিনি আমাকে যতটা সম্ভব হেনস্থা করে (প্রায় ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রেখে) একটি খাম হাতে দেন।
দেখি ওটার মধ্যে ২৫০ মার্কিন ডলার। যা ভাঙ্গিয় ২০,০০০ টাকা হয়। বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার হয়। এরপর ওনার প্রতিনিধিকে বলি, শো করার জন্য হেল্প করতে। পরে তাকে (হাসান ভাইকে) বললাম, প্রচার করাটাই যেহেতু উদ্দেশ্য তাহলে আমার একটি ওয়েব পোর্টাল আছে, সেখানে প্রচার করি, কারণ, কিছু বিশেষ কারণে আমি এ ধরনের শো আয়োজন করতে পারছি না। ক্লোজআপনিউজে বিভিন্নভাবে ওনার ডকুমেন্টারিটি প্রচার করলাম।
কিন্তু তাতে ওনার হবে না। ওনার শো করা চাই গ্রামে গ্রামে গিয়ে, শুধু শো করলে হবে না, সেটি আবার ভিডিও করে পাঠাতে হবে ওনার কাছে কানাডায়, কারণ, ওনার তো টাকা কালেক্ট করা লাগে। উনি বলেছিলেন, যে টাকাটা পাঠিয়েছেন ওটা জাকাতের টাকা। তাই যে কাজে নিয়েছেন সে কাজটি করতেই হবে।
কাজটি আমি ভিন্নভাবে করেছি, ক্লোজআপনিউজে ৬মাস ওনার ডকুমেন্টারি প্রচার করেছি। ওনার সংশ্লিষ্ট লেখা প্রচার করেছি। তাতে যেহেতু হবে না, বললাম, ঠিক আছে আপনার টাকাটা ফেরৎ দিয়ে দেব। কিন্তু উনি এমনভাবে আমাকে শোকজ করলেন আমাকে একদিন ফোনে না পেয়ে, যেন, বিশ হাজার টাকায় দেশের সর্বস্ব ওনার কাছে বিক্রী হয়ে গেছে। এরপর থেকে উনি আমার ‘কলার ধরা’ শুরু করেছেন যেভাবে মাছের পাইকাড় সদ্য বিয়ে দেওয়া মেয়ের বাপের কলার ধরে।
টাকাটা ওনাকে ফেরৎ দেব ঠিকই, কিন্তু আমি বুঝতে চাইছি যে বিশ হাজার টাকা আদায় করতে উনি কানাডা থেকে রিমোর্ট কন্ট্রোলের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত পিছনে চাপাতিওয়ালা পাঠান কিনা। পাঠকদের কাছে মতামত চাইছি, টাকাটা দিয়ে দেব এখনই, নাকি আরো বুঝতে গিয়ে জীবন দেওয়ার ঝুঁকি নেব?
আরেকটা বিষয়, আমি কি অনেক বড় অপরাধ করেছি? মানুষের জীবনযাপন-সুবিধাঅসুবিধা সম্পর্কে না জেনে হুট করে ওনার এভাবে টাকা পাঠিয়ে কাউকে দিয়ে কোনো কাজ হাসিল করতে চাওয়ার মধ্যে কোনো অপরাধ নেই? বাংলাদেশ নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে বিদেশে বসে যা ইচ্ছে তাই করা যায়?
এই যে উনি আমাকে শো করতে বললেন, উনি তো কোনো সিস্টেম দেননি, প্রশাসনিক কানেকশন দেননি, তাহলে কোনো ঝামেলা হলে দায় নেবে কে? কেউ বোমা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করলে? কারো সাথে কোনো কাজ করার আগে তো দীর্ঘ আলোচনা লাগবে, তাকে বোঝা লাগবে। আপনি হুট করে টাকা দিয়ে দিলেন, ভাবলেন ছা পোষা বাঙালি দুই টাকা পকেটে পোরার লোভে বাকী দুই টাকা দিয়ে কাজ করবে। মরলে মরবে। তাই না? বেজার হয়েছেন আমি পুরো টাকাটা পকেটে পোরায়। মনে রাইখেন, টাকা আমি পকেটে পুরি নাই, ঠিকই পাবেন, কিন্তু আপনাদের মত সংস্কার কারনেওয়ালাদের বোঝা দরকার ছিল।
অনেকেই বেঘোরে জীবন দিয়েছে আপনাদের মত ‘মহৎ মানুষদের’ জন্য। নীলয় নীলের কথা মনে পড়ে? নীলয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসরের ফার্ম-এ কাজ করত। ঐ অধ্যাপকও একজন নাস্তিক বলে প্রচারিত, কিন্তু তিনি এক্সট্রিম কিছু লেখেন না, তবে কেউ লিখলে পছন্দ করেন, নিজের কাজটা হয়েছে বলে মনে করেন। ওনারা শুধু টকশোতে এসে মেপে কথা বলে যাবেন। খানিক জোর খাটাবেন যাতে প্রতিপক্ষ শুধু ভয় পায়। এতটা জোর আবার খাটাবেন না যাতে প্রতিপক্ষ তেড়ে আসতে চায়।
যাইহোক, হাসান ভাই ক্ষমতাবান, মিডিয়াও কিনে ফেলতে পারেন, ঘাটাতে চাই না। মন্দ কিছুও বলতে চাই না, দিনশেষে সম্মানই করতে চাই। তবে এটাও আশা করি কাউকে দিয়ে এভাবে কাজ করাতে চাইবেন না, তাকে আগে বুঝুন, আস্থায় নেন, তারপর কাজ করান। শুধু কাউকে দিয়ে কাজ হাসিল করার চেষ্টা করবেন না, মানুষকে একটু ভালোবাসতে শিখুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×