অনেক হয়েছে, আর নয়, বর্তমান ও সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া গণতান্ত্রিক আবহে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পদ্ধতি কায়েম করেছেন। দেশকে স্বাবলম্বী রাষ্টে পরিণত করা তো দূরের কথা চলমান সংসদীয় গণতন্ত্রকে অর্থবহ করার জন্যও কোনো উদ্যোগ তারা নিতে পারে নাই। বরং দেশকে অস্থিতিশীল ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন এই দুই’ নেত্রী। দুজনই শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করছেন। তাদের নেতৃত্বাধীন দুটো দলই কূটনীতিনির্ভর দল হয়ে পড়েছে। পরের স্বার্থে সংরক্ষণ করে তারা শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করছেন। সঙ্গী তাদের দূর্নীতি। এভাবে আরচলতে পারে না। তাই দু’ নেত্রীকে রাজনীতি হতে অবসর নিতে হবে। আর এই দাবিতে আগামী ১৭/১২/২০১২ইং তারিখ রাজনীতি ঢাকাতে হরতালের ডাক দিয়েছে গড়বো বাংলাদেশ, গড়বো বাংলাদেশ বিপ্লবী দলও গড়বো বাংলাদেশ পার্টি।
আজ ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই আহ্বান জানান সংগঠনগুলোর রূপকার ও মুখপাত্র কামরুল হাসান নাসিম। তিনি ও গড়রো বাংলাদেশ বিপ্লবী দলের উদ্যোক্তা সদস্য ও মুখপাত্র প্রফেসর ড. শাহেদা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে এ্যাডভোকেট আবুল খায়ের, শফিকুল ইসলাম, মহিবুল হক লিটন, মুসাদ সৈকত সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান নাসিম বলেন, বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জনকল্যাণের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র গঠনতন্ত্র, আদর্শ উন্নত মানের ও উৎকর্ষের, কিন্তু তার চর্চা বা অনুশীলন হচ্ছে না। গভীর পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ‘গঠনতান্ত্রিক আবহে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন’ কায়েম করেছেন। তারা মুখে বলছেন গণতন্ত্রের কথা কিন্তু কার্যতঃ তারা দু’জনই স্বৈরশাসক। অথচ ৯০’র গণআন্দোলনের মাধ্যমে তারাই এই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রকে সার্থক ও অর্থবহ করতে পারত। দুজনের দল দুটিই এখন কূটনীতি নির্ভর রাজনৈতিক দল হয়ে পড়েছে। কারণ পরের (বহিররাষ্ট্র) স্বার্থ সংরক্ষণ না করলে তারা যে ক্ষমতায় যেতে পারবে না তা এখন ওপেন সিক্রেট। গত ২০ বছর এই দুটি দল রাষ্ট পরিচালনা করতে গিয়ে নিজেরা, মন্ত্রিপরিষদ, স্বজন দুর্নীতি করেছেন। স্বভাবতই সাহসিকতা ও দেশপ্রেম নিয়ে রাষ্ট্রকে ‘উচ্চ আয়ের দেশ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিলেই পরাক্রমশালী রাষ্ট্র তাদেরকে (হাসিনা-খালেদা) বলবে, ১/১১ চলাকালীন সময়ে তোমরা চোর বনেছিলে,‘বাড়াবাড়ি করো না’-এবার ডাকাত বানিয়ে দিব। স্বভাবতই এরা ডাকাত হওয়ার ঝুঁকি নিবে না। আমরা ১৬ কোটি মানুষ দুই পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে থাকব। অথচ এই দেশের সৎ, মেধাবী, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ও প্রবল দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দের প্রয়োজন। কারণ ৪হতে ৫বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উচ্চ আয়ের রাষ্ট্র হতে পারে। তাই আর কোনো পথ খোলা নাই। জাতীয় স্বার্থে দ’ুনেত্রীকে সংলাপে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিষ্টার রফিক-উল হক ও ‘গড়বো বাংলাদেশ’-এর অন্যতম কর্ণধার প্রফেসর ড. শাহেদা। অথচ তারা কর্ণপাতই করেননি। আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দু’নেত্রীর পারস্পারিক অবস্থান দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একদিকে তারা দেশকে স্বাবলম্বী রাষ্ট্রে প্ররিণত করার কোন উদ্যোগ নিতে পারছে না অপরদিকে শাসন ব্যবস্থার বর্তমান নীতি অর্থাৎ সংসদীয় গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে পারছে না। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন হলেও ষোল কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের তার কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু মাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করছেন দু’জনই। মহাজোট সরকারের নির্মাণবীয় রাজনীতি, প্রধান বিরোধী দলের ব্যক্তি ইস্যুকেন্দ্রীক ও প্রহসনের রাজনীতি, সার্বিক সাংঘর্ষিক রাজনীতি রুখবার জন্য দ’ুনেত্রীকে রাজনীতি হতে অবসর নেওয়ার দাবিতে আগামী ১৭/১২/২০১২ইং তারিখ রাজধানী ঢাকাতে ভোর ৬টা হতে বেলা ২টা পর্যন্ত হরতাল আহবান করা হলো।
প্রফেসর ড. শাহেদা বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে এপর্যন্ত আমরা দেখলাম, ২২ বছর জাতীয় জীবনে খুব কম সময় নয়। তাতে স্পস্ট হয় জনমানুষকে গিনিপিগ বানিয়ে রাখা হয়েছে এবং শাসক গোষ্টির নেতৃত্বে থাকা দু’নেত্রী দুর্নীতি ও মানুষ হত্যার রাজনীতিই করবেন। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলছি এই রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়নে অর্থাৎ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধতার পথে হাটছেননা আমাদের দু’নেত্রীর নেতৃত্ত্বাধীন দুটি বিশেষ দল। জনগণও সম্ভবত উপলদ্ধি করতে পেরেছে সমকালীন শাসক গোষ্টির নেতৃত্বে থাকা এই দু’ নেত্রীর আর জাতীয়কে দেওয়ার কিছু নেই জাতীয় স্বার্থ-জাতীয় ইস্যু কোন ক্ষেত্রেই তাদের ঐক্যমতে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। ব্যারিষ্টার রফিকুল হক থেকে আমি নিজেও তাদের মধ্যকার সংলাপ আয়োজনের চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু তাতে তারা কোন কর্ণপাতই করেনি। আজ দেশকে চরম অস্থিতিশিল পরিস্থিতির দিকে ক্রমশ নিয়ে যাচ্ছেন দু’ নেত্রী। রাজনীতিতে অবসরগ্রহনের উদ্যোগ নিলে এই দু’ নেত্রী জনসাধারণের স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার ব্যবস্থা করতে পারে এবং তাতেই বাঁচবে বাংলাদেশ। সময় জনগণের ঘূরে দাঁড়াবার। আসুন কোন ভয় পেয়ে নয় নিজে স্বপ্রণদিত হয়ে দু’ নেত্রীকে অবসরগ্রহণের দাবিকে যোক্তিক করে আসন্ন হরতাল সফল করি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



