somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন ঈশ্বর আবশ্যক

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(চিরপরিবর্তনশীল, গণতান্ত্রিক, উদারমনস্ক ও বৈষম্যহীন ধর্ম প্রবর্তনের জন্য)

প্রারম্ভিকা: বিশ্বের এখন ক্রান্তিকাল। এ পর্যন্তসৃষ্টি করা স্রষ্টা ও ধর্মের বিরোধে বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসী মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। যুক্তিসঙ্গত কারণে মানুষের প্রয়োজন একটি নতুন, কার্যকর ও যুগোপযোগী ধর্ম। কিন্তু নতুন ধর্মের কাঠামো নিয়োগ দেয়ার আগে প্রয়োজন একজন গণতান্ত্রিক, উদারমনা, বৈষম্যবিরোধী ও পরিবর্তনে আস্থাশীল ঈশ্বর নিয়োগ। ঈশ্বর একক, দ্বৈত বা বহুসত্ত্বা হওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য কোনো বাধা নেই। তবে স্বৈরাচারী ঈশ্বরের চেয়ে গণতান্ত্রিক, জীবমতসহিষ্ণু, ধর্মনিরপেক্ষ ঈশ্বরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

নতুন ঈশ্বরকে বর্তমান অসহিষ্ণু অবস্থার দায়-দায়িত্ব নিতে হবে বিধায় তার কার্যাবলী সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হবে। তবে প্রাথমিকভাবে তাকে নিম্নলিখিত গুণাবলীর অধিকারী হতে হবে এবং বর্ণিত নিয়মাবলী অনুসরণ করতে হবে:

*নতুন ঈশ্বরকে অবশ্যই আগের ঈশ্বরদের দোষ-ত্রুটি মুক্ত হতে হবে।
*একটি সর্বসম্মত ও সার্বজনীনভাবে গৃহীত ঐশীগ্রন্থ গণতান্ত্রিকভাবে অনুমোদনের আগে গোপনে কোনো বিশেষ ব্যক্তির কাছে ঐশিবাণী প্রেরণ করা যাবে না।
*ঐশিবাণী প্রেরণের পদ্ধতি অবশ্যই প্রকাশ্য হতে হবে এবং বিশেষ কোনো মানুষ বা বিশেষ কোনো যুগের মধ্যে এটি সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না।
*বিশ্বমানবতার জীবনকে কণ্টকমুক্ত রাখার দায়িত্ব সার্বক্ষণিকভাবে পালন করে যেতে হবে এবং অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত ছুটি নেয়া যাবে না।
*কোনো অবস্থায় অন্যের মাধ্যমে বাণী পাঠানো যাবে না এবং কোনো মানুষকে মহামানব, মহানারী বা মহাপুরুষ ঘোষণা দিয়ে তার কাঁধে দায়িত্ব চাপিয়ে কুম্ভকর্ণের নিদ্রা দেয়া যাবে না।
*অতিঅবশ্যই ঈশ্বরকে নিজ দায়িত্বে সকল জীবের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে ও কোনো প্রেরিত পুরুষ, নারী বা প্রাণীকে এ কাজে ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ ঈশ্বরের কর্মকান্ড ও বিশ্ব পরিচালনার কার্যক্রম প্রতিনিধিত্বমূলক না হয়ে অংশগ্রহণমূলক হবে।
*মানুষের ভাষায় প্রকাশ করা যায় এমন যাবতীয় গুণ ঈশ্বর নিজের দখলে নিতে পারবে না। সর্বোচ্চ দশটি গুণ তার জন্য বরাদ্দ করা যেতে পারে এবং সেগুলো মানবীয়গুণের তালিকার বাইরের গুণ হতে হবে।
*কোনো ধ্বংসাত্মক বা বিপর্যয়মূলক কর্মকান্ড যেমন, সুনামি, বন্যা, অগ্নু্যৎপাত, সাইক্লোন, হারিকেন ইত্যাদিকে নিজের কৃতিত্ব হিসেবে প্রচার করা যাবে না। ঈশ্বর অবশ্যই কোনো কার্যকারণ ছাড়া নির্বিচার নিষ্ঠুরতা, নির্মমতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে সচেষ্ট থাকবে।
*সপ্তাহের কোনো বিশেষ দিবসকে পবিত্র দিবস ঘোষণা বা উপাসনার জন্য নির্দিষ্ট করা যাবে না। ঈশ্বরকে সপ্তাহের যেকোনো দিনে বা যেকোনো সময়ে করা মানুষের সৎ কাজকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।
*ঈশ্বর কোনো বিশেষ অঞ্চলের ভাষাকে অন্য ভাষার উপর গুরুত্ব দিতে পারবে না এবং নিজের মাতৃভাষায় ঈশ্বরের ঐশিবাণী সরাসরি শোনার অধিকার সব মানুষের থাকবে।
*মৃতু্য পরবর্তীকালে নরক যন্ত্রণার ভীতি প্রদর্শন করে বা কোনো মনোরম বাসস্থান, অতিপ্রাকৃত পুরষ্কার এবং দৈব রূপসী বা নট-নটীদের লোভ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে আনুগত্য আদায়ের কোনো চেষ্টা করা যাবে না। আনুগত্য স্বত:স্ফ্থর্ত, যৌক্তিক ও উভয়পক্ষের পারষ্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
*মানুষের কর্মকান্ড গোপনে লিপিবদ্ধ বা প্রত্যক্ষ করার জন্য কোনোরকম আড়িপাতা যাবে না বা কোনো গোয়েন্দা তা শরীরি বা অশরীরি হোক নিয়োগ করা যাবে না।
*মানুষকে বিভ্রান্ত, বা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পথভ্রষ্ট করার জন্য অতিক্ষমতাশীল অন্য কোনো অস্তিত্ব (যেমন: শয়তান, ভূত-পেতি্ন, জি্বন) তৈরি করা যাবে না।

তাছাড়া, বিভিন্ন প্রাণী সত্ত্বা ও প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক শক্তির মধ্যে অধিকার সংক্রান্তবিরোধের ক্ষেত্রে ঈশ্বরকে নিরপেক্ষ থেকে যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক সমাধান উপস্থাপন করতে হবে। শিশুহত্যা, দুর্বল মানুষ ও প্রাণীহত্যা, যা পাশবিক পর্যায়ে পড়ে, এধরনের হীন কাজ করে নিজের ক্ষমতা জাহির করার প্রবণতা অবশ্যই রাখা যাবে না। সময়ের সাথে মানুষের অগ্রযাত্রা, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও সামাজিক গবেষণার ফলাফল অবশ্যই নখদর্পনে রাখতে হবে এবং পশ্চাদপদ ধারণাকে প্রশ্রয় না দিয়ে সর্বদা প্রগতিশীল চিন্তাধারাকে সমুন্নত রাখতে হবে।


উপরোলি্লখিত প্রাথমিক গুণাবলী বিশিষ্ট ও কার্যতালিকায় বর্ণিত দায়িত্বসমূহ যোগ্যতা ও নিষ্ঠার সাথে পালনে সক্ষমদেরকেই শুধুমাত্র যোগাযোগের জন্য উৎসাহ দেয়া যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী অস্থির সময়ের প্রেক্ষাপটে এ দায়িত্ব পালনের ভার অযোগ্য কারো কাঁধে পরীক্ষামূলক দেয়ার ঝুঁকি বহন করা সম্ভব নয়। কেবলমাত্র প্রাথমিক বাছাইয়ের শর্তপূরণ করা সাপেক্ষে প্রার্থীদেরকে পরবর্তী যাচাইয়ের ধাপে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। প্রাক্তন দায়িত্বপালনের দোহাই বা কোনো রকমের ক্ষমতাপ্রয়োগের মাধ্যমে নিয়োগকে প্রভাবান্বিত করার চেষ্টা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

এতদবিষয়ে ধারনাপত্র বা কনসেপ্ট পেপার জমা দিতে ইচ্ছুকরা পদটি সংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণের জন্য দীক্ষক দ্রাবিড়ের তড়িৎডাকে আগ্রহের কথা জানান।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৬৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×