somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফকির ইলিয়াস
আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ ও প্রজন্মের আত্মপ্রত্যয়

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ ও প্রজন্মের আত্মপ্রত্যয়
ফকির ইলিয়াস
===========================================
মাহমুদ আলী নামে একজন পাকিস্তানি দালালের কথা আপনাদের মনে আছে? লোকটি মহান মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল। আর ফিরে আসেনি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এই লোকটি বাংলার মাটিকে চিরতরে পরিত্যাগ করেছিল।
এই তমদ্দুনের অনেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নেয়নি। এর পরের ঘটনাবলীর দিকে তাকালে আমরা দেখব- একাত্তরের অন্যতম ঘাতক নেতা গোলাম আযমের উদ্যোগে পাকিস্তানে পালিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার সপ্তাহ’। এরপর লন্ডন গিয়ে সেখানে ‘পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধার কমিটি’ নামে একটা কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি বাংলাদেশকে উদ্ধার করে আবার পূর্ব পাকিস্তান করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। ওই বছর ডিসেম্বরে সৌদি আরবে আন্তর্জাতিক যুব সম্মেলনে অংশ নিয়ে সব মুসলিম রাষ্ট্রকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের সহায়তায় কোনো প্রকার আর্থিক সাহায্য না দিতে আহ্বান জানান গোলাম আযম।
১৯৭৩ সালে সরকারি এক আদেশে ৩৮ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। এর একজন গোলাম আযম। গোলাম আযম মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো সফর শুরু করেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে এবং পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধারে সহায়তা চান। ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটির সম্মেলনে পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধারের বিষয়ে বক্তৃতা দেন।
১৯৭৪ সালে মাহমুদ আলীসহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে লন্ডনে পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধার কমিটির বৈঠক হয়। মক্কায় অনুষ্ঠিত রাবেতায়ে ইসলামির সম্মেলনে বাংলাদেশ উদ্ধার নিয়ে বক্তৃতা দেন গোলাম আযম। এই গোলাম আযম কিন্তু পাকিস্তানে থাকেননি। তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। এই দেশে তাকে ফিরিয়ে আনতে কারা সাহায্য করেছিল- তাও আমাদের অজানা নয়। এর পরবর্তী বছরগুলোর ধারাবাহিকতা আমাদের কাছে খুবই স্পষ্ট।
একাত্তরের ঘাতক ও রাজাকার ফজলুল কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও এই দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন বিলাতে। পরে ফিরে এসেছিলেন। সময় সুযোগ মতো নেমেছিলেন রাজনীতিতেও।
সা কা চৌধুরীর ফাঁসি হয়েছে। ফাঁসি হয়েছে বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম নায়ক আলী আহসান মুজাহিদেরও। এই ফাঁসির আগে ও পরে পাকিস্তান কী বলেছে- তা বাংলাদেশের মানুষ দেখেছেন, শুনেছেন। ফাঁসির রায় ঠেকাতে পাকিস্তানকে সরব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন পাকিস্তান জামায়াত-ই-ইসলামের আমির সিরাজুল হক। জামায়াতের আমির বলেছিলেন, বাংলাদেশে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনে’ পাকিস্তান সরকারকে নিশ্চুপ দর্শকের ভূমিকা পালন করলে হবে না। মুসলিম বিশ্বসহ সারা বিশ্বকে সোচ্চার করতে উদ্যোগী হতে হবে পাকিস্তানকে। পাক জামাতের আমির সিরাজুল হক আরো দাবি করেন, জামায়াত নেতা মুজাহিদ কোনো অপরাধী নন। ‘সেই সময়ে আলী আহসান মুজাহিদ একজন পাকিস্তানি নাগরিক হিসেবে ভারতীয়দের প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ কিছু যুদ্ধ-আগ্রাসীর হাত থেকে দেশকে রক্ষার চেষ্টা করেছিল। সেই দিক দিয়ে চিন্তা করলে তো মুজাহিদ অপরাধীই নয়।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা পাকিস্তানের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন উল্লেখ করে পাকিস্তানি এই নেতা বলেন, ‘এখনো তারা সেই দেশের সৃষ্টিকে ভুলে গিয়ে পাকিস্তানের মতাদর্শ ধারণ করে চলছে।’ এই গেল ফাঁসির আগের কথা। ফাঁসি হওয়ার পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, দুই নেতাকে ফাঁসি দেয়ার ঘটনায় তারা খুবই উদ্বিগ্ন। এ ঘটনা দুদেশের সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্কের ক্ষতি করবে। শেখ হাসিনা সরকার আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত গড়ে একাত্তরের গণহত্যার আসামিদের বিচার শুরু করার পর থেকেই তার সমালোচনা করে আসছে পাকিস্তান। এ দিনের বিবৃতিতেও পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক এই বিচার পদ্ধতিকে ‘ভুলে ভরা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেছে। কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। তার বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। পাকিস্তান রাষ্ট্রটি কে বাংলাদেশ বিষয়ে নাক গলাবার? তাদের এই অধিকার দিল কে?
পাকিস্তান দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশ বিষয়ে অনেক বাড়াবাড়ি করছে। এর আগেও তারা এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মজার কথা হচ্ছে, পাকিস্তানের এই যে বাড়াবাড়ি, এটাকে বাংলাদেশের কিছু রাজনীতিক ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই বাহবা অতীতেও দিয়েছেন, এখনো দিচ্ছেন। এরা কারা? কী তাদের মতলব- তা সব মানুষের অনুধাবন করা দরকার।
পাকিস্তানের প্রতিবাদের কড়া জবাব দিয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মিজানুর রহমান হাইকমিশনারকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তলব করে এ প্রতিবাদ জানান। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ফাঁসির ব্যাপারে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় তারও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
প্রতিবাদের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাদের বিবৃতিতে উদ্বেগের বিষয়ে পাকিস্তানকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পাকিস্তান হাইকমিশনারকে বলা হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিচার নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর শামিল। এটা খুবই দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকারের এই প্রতিবাদপত্রটি যেন তিনি তার সরকারের কাছে পৌঁছে দেন।
এই ঘটনা প্রমাণ করেছে, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আমাদের চারপাশে একটি শত্রুপক্ষ ঘুর ঘুর করছে সবসময়। সা কা চৌধুরী কিংবা মুজাহিদ কেমন দাম্ভিক উচ্চারণ করেছিলেন- তা বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন ভুলবে না। সাকা তুড়ি মেরে বলেছিলেন- ‘ফটাফট বেরিয়ে আসব’। আর মুজাহিদ বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। সবই কল্পনাপ্রসূত।’
এই ভাষ্য টিভি চ্যানেলগুলোতে বারবার প্রচারিত হয়েছে। ভাবার মতো বিষয় হলো, একেরারে শেষ মুহ‚র্তে এসে এই দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন। রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে হলে, দোষ স্বীকার করেই চাইতে হয়। তারা সেই দোষ অকপটে স্বীকার করেই কাজটি করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাণভিক্ষা তো ওরা চেয়েছিলেন। তাহলে প্রমাণিত হয়- আসলে তাদের নৈতিক ভিত্তি ছিল পুরোই ফাঁকা বুলির ওপর। এই ফাঁকা বুলি আর মানুষের সঙ্গে মিথ্যা প্রতারণা করেই তারা চালিয়েছিলেন তাদের রাজনৈতিক জীবন ও কর্মকাণ্ড।
বাংলাদেশে এমন প্রতাপশালী যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হতে পারে, তা এই প্রজন্মের অনেকেই ভাবেনি। কাজটি করতে পেরেছেন জাতির জনকের সাহসী কন্যা ও তার সরকার। বিষয়টি ভাবাও একসময় যেত কি? হ্যাঁ- সেটাই সম্ভব হয়েছে। আর এই যে সম্ভব- তা মেনে নিতে পারছে না অনেকেই। কিন্তু সত্যের বিজয় তো হবেই।
যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে পাকিস্তান সরকারের ‘উতলা’ আচরণকে ‘দ্বৈতনীতি’ আখ্যায়িত করে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশটির মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী আসমা জাহাঙ্গীর। তিনি আরো বলেছেন, ‘পাকিস্তান সরকার এই আচরণের মাধ্যমে শুধু এটাই প্রমাণ করল যে, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে তারা আসলে ছিল রাজনৈতিক চর, তারা পাকিস্তানের স্বার্থের জন্য কাজ করছিল।’
পাকিস্তানি নাগরিকদের অনেকেই পাকিস্তান জামায়াত ও সরকারের নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন। আমাদের মনে রাখা দরকার, একাত্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু সে দেশের সাধারণ মানুষ ও বুদ্ধিজীবীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।
আজ আমরা অবাক হয়ে দেখছি, সেই বাংলাদেশের ভেতরেই একটি গোষ্ঠী যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। যারা নিজেদের ‘মুক্তিযোদ্ধার দল’ বলে মনে করে। বিষয়টি খোলাসা করেছে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম। তারা বলেছে, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি নিয়ে মন্তব্য ও বিবৃতিতে য্দ্ধুাপরাধীদের পক্ষে বিএনপির অবস্থানের প্রকাশ ঘটেছে।
ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব বলেছেন, সাকা চৌধুরীকে নিয়ে বিএনপির বক্তব্য আর পাকিস্তানের বক্তব্যের মধ্যে হুবহু মিল রয়েছে। পাকিস্তান বলেছে, পাকিস্তানের সমর্থকদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাহলে আমরা বলব, সঠিক কাজটি হয়েছে। পাকিস্তানের সমর্থকদের হত্যা করেছি। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল, আমাদের বিরোধিতা করেছিল।’ যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলার প্রতিবাদ জানিয়ে হারুন হাবীব বলেছেন, ‘বিএনপি বলেছে, সাকা চৌধুরীর ফাঁসি বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে হয়নি, সরকারের নির্দেশনায় হয়েছে। বিচারক রায় দেয়নি, রায় দিয়েছে সরকার। এর মানে হচ্ছে- বিচার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা এবং সরাসরি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেয়া।’
একই সঙ্গে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারী হিসেবে চিহ্নিত ১৯৫ জন পাকিস্তানির বিচারের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ফোরামের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কে এম সফিউল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে তাদের সহযোগীদের বিচার হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানে চিহ্নিত ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে হবে। এই বিচারের দাবিতে আমরা সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তুলব।’
এই যে কাজগুলো, তা অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধেরই অংশ। কাজগুলো বাঙালি জাতিকে করতে হবে। এই সময়ে এসে আমি যে মহীয়সী নারীকে স্মরণ করতে চাই- তিনি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। তাঁর লেখা শেষ চিঠিটি আমি এই প্রজন্মকে আবারো পড়তে বিনীত অনুরোধ জানাই। যে চিঠিটি বাঙালির প্রেরণা হয়ে থাকবে আজীবন। তিনি লিখেছিলেন-
‘সহযোদ্ধা দেশবাসীগণ, আপনারা গত তিন বছর একাত্তরের ঘাতক ও যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমসহ স্বাধীনতাবিরোধী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন। এই লড়াইয়ে আপনারা দেশবাসী অভূতপূর্ব ঐক্যবদ্ধতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। আন্দোলনের শুরুতে আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। আমাদের অঙ্গীকার ছিল লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ রাজপথ ছেড়ে যাব না। মরণব্যাধি ক্যান্সার আমাকে শেষ মরণ কামড় দিয়েছে। আমি আমার অঙ্গীকার রেখেছি। রাজপথ ছেড়ে যাইনি। মৃত্যুর পথে বাধা দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। তাই আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি এবং অঙ্গীকার পালনের কথা আরেকবার আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই। আপনারা আপনাদের অঙ্গীকার ও ওয়াদা পূরণ করবেন। আন্দোলনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে থাকবেন। আমি না থাকলেও আপনারা আমার সন্তান-সন্তুতিরা- আপনাদের উত্তরসূরিরা সোনার বাংলায় থাকবেন।
এই আন্দোলনকে এখনো অনেক দুস্তর পথ পাড়ি দিতে হবে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মুক্তিযোদ্ধা, নারী, ছাত্র ও যুবশক্তি, নারীসমাজসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ এই লড়াইয়ে আছে। তবু আমি জানি জনগণের মতো বিশ্বস্ত আর কেউ নয়। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। তাই গোলাম আযম ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের দায়িত্বভার আমি আপনাদের, বাংলাদেশের জনগণের হাতে অর্পণ করলাম। অবশ্যই, জয় আমাদের হবেই।- জাহানারা ইমাম’।
শহীদ জননীর সেই অগ্নিমশাল এই প্রজন্মের বুকে আত্মপ্রত্যয় ফিরিয়ে দিয়েছে। এই প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা দেখছে অনেক কিছুই সম্ভব হয়েছে ন্যায়ের পক্ষে। এই প্রত্যয় ও সাহস ধরে রাখতে হবে। জাতিকে আজো দাঁড়াতে হবে সেই মহান একাত্তরের চেতনায়।
----------------------------------------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ ॥ ঢাকা ॥ শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৪
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×