somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিমালয়ের কোলে পাহাড়কন্যা দার্জিলিং ভ্রমন !

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিত্রঃ দার্জিলিংযের টাইগার হিলে আমরা


চিত্রঃ দার্জিলিংযের রক গার্ডেনে আমরা


চিত্রঃ পাখির চোখে ভুটানের Phuentsholing শহর থেকে জাইগন শহরের দৃশ্য ।

আমাদের গ্রুপটা হল ভ্রমণ পিয়াসু গ্রুপ। সুযোগ পেলেই আমরা ছুটে যাই দুরে কোথাও। ২০১৪ সাল, আমরা মিনহাজ, আহসান, বিমল, সবুজ এবং আমি, আলোচনা করছিলাম কোথায় যাওয়া যায় ,তবে এটা হতে হবে দেশের বাহিরে, কেউ বলছে নেপাল, ভুটান, আর কেউ বলছে মালদ্বিপ, থাইল্যান্ড , মালেশিয়া ইত্যাদি । কিন্তু বললেই তো আর হবে না , সেটা হতে হবে আমাদের সাধ্যের ভিতরে, কিন্তু বিভিন্ন ব্যাক্তিগত ও ভিশাজটিলতায় আর আমরা ২০১৪ তে যেতে পারি নাই। ২০১৫ তে সিদ্ধান্ত নিলাম যে কোন উপায়ে যেতে হবে।অনেক তর্ক বিতর্কের পরে সিদ্ধান্ত হল রোজার বন্ধের ছুটিতে ইন্ডিয়া ও ভুটান যাব । যেহেতু আমরা সবাই চাকরীজীবী ।আর এই ধরনের লম্বা ট্যুরে অনেকদিন সময় লাগে !

ভ্রমনের প্রস্তুতিঃ যেহেতু এটা বিদেশ ট্যুর ,তাই ২০১৫ সালের শুরুতেই আমরা আমাদের প্রস্তুতু নিতে শুরু করলাম। আমাদের সবার ভিসার কাজ সবুজ ভাই করতে লাগল ।আর আমরা আমাদের টুকটাক কেনাকাটা করলাম ট্যুরের জন্য । অনেক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করলাম, Google street এ গিয়ে পথ ঘাট চেনার চেষ্টা করলাম। মোটামুটি থিসিস মার্কা গবেষণা যাকে বলে। আমরা মিনহাজ, এহসান ,সবুজ ,বিমল ,মিনহাজ( এহসানের ফ্রেন্ড) এবং আমি সহ মোট ৬ জন । আমরা মোট ৭ জন যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু একজন দূর্ভাগ্যক্রমে যেতে পারল না ,যদিও ওর টিকেট সহ সবকিছু হয়ে গিয়েছিল ।প্রত্যেকেরই কয়েক কপি ছবি, পাস পোর্ট এর ভিসা পেজ সহ কয়েক কপি করে নিলাম কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে আমরা কেউ NOC বা লাইসেন্সের কপি নিয়ে যাই নাই, যার প্রেক্ষিতে এর ফল আমরা ভোগ করেছি বুডিমারিতে গিয়ে ।

যাত্রা শুরুঃ ১৭ ই জুলাই ২০১৫,
যেহেতু আমরা সবাই থাকি চট্টগ্রামে। সকাল ৬.৪০ টার শুভর্না এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে বসি।এইদিন ছিল ঈদের আগের দিন, তাই অনেক কষ্টে ট্রেনের টীকেটের ব্যবস্থা হল এবং ঢাকায় পৌঁছে যাই ২ টার দিকে।



বাসের টিকিট করলাম শ্যামলীতে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১৮৫০ টাকা এসি বাস ।
ঢাকায় গিয়ে মিনহাজ ভাইয়ের বোনের বাসাই উঠলাম।যেহেতু, বুড়িমারির বাস ছাড়বে সাড়ে ৮ টায়, তাই ব্যাগগুলো বাসাই রেখে আমরা সবাই মিলে চলে গেলাম বসুন্দারা সিটিতে, যে যার মত ঘোরলাম, কেউ বা ডিএস এল আর দোকানে একটু ঢুস মারল। এই দিন ছিল শেষ রোজা, তাই ইফতারীর আগে বাসাই ফিরে আসলাম। ইফতারীর আইটেম দেখে তো আমাদের চক্ষু চডকগাছ, এত গুলো ইফতারি করলাম যে ভাত খাওয়ার মত অবস্থা আর নেই, যেহেতু মিনহাজ ভাইএর দুলা ভাই , তাই আমাদের ও দুলাভাই , তবুও ওনি ওনেক জুরাজুরি করলেন ভাত খেতে। সত্যিই, দুলাভাই এর এত আথীতিয়তাই আমরা মুগ্ধ , যেন আমরা সবাই তার আপন শালা । সবাই দুলাভাই কে ধন্যবাদ দিয়ে কল্যাণপুর চলে যাই ৭ টার দিকে। রাত্রে যখন বাস কাউন্টারে বসা ছিলাম , ঠিক তখনই টিভিতে দেখলাম, ঈদের চাঁদ দেখা গিয়েছে, পরের দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। জীবনে এই প্রথম আম্মা, আব্বা , ভাইদের ছেরে বাহিরে ঈদ করছি। খুব খারাপ লাগছিল আমার। ঠিক সময়ে বাসে উঠে পড়ি। কিন্তু রাতে প্রচুর জ্যাম ছিল রাস্তায়।

১৮ ই জুলাইঃ
রংপুর পৌছতে পৌছতে প্রায় সকাল ৯ টা বাজছে , তখন আশে পাশের মানুষগলো সবাই দলবব্ধভাবে ঈদের নামাজে যাচ্ছে । আমরাও ভাবছি যে গাডি থামিয়ে কোথাও নামাজটা পডে নিব , কিন্তু সামনে আরেকটা জামাত পাব বলে সবগুলোই মিস করলাম ,খুবই খারাপ লাগছিল যে ঈদের নামাজটা পডতে পারলাম না । যাক শেষপর্যন্ত পৌছে গেলাম বুডিমারী স্থলবন্দরে তখন বেলা সাডে ১০ টা।বুড়িমারি ইমিগ্রাশন অফিসে একটা নির্দিস্ট রুম এ গেলাম। ২০/২৫ জনের লাইন। ঈদের সিজন – তাই প্রচুর মানুষ ছিলো। আমাদের পাসপোর্ট নিয়ে জিজ্ঞসা করলো কি করি, কেনো যাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি ইত্যাদি। পরে প্রাইভেট সার্ভিস শুনে NOC চাইলো। কিন্তু আমরা কেউ NOC আনি নাই , ২০০ টাকা আক্কেলসেলামি দিয়ে হল প্রতিজনকে শুধু মিনহাজ( এহসান ভাইএর ফ্রেন্ড) ভাই ছাডা। এখানে একটা বহির্গমন কার্ড দিলো ফিলাপ করার জন্য। করলাম। এরপর আরেক রুম এ গেলাম। ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়াই ছিল।
এখানে দিলাম বন্দর ট্যাক্স (সম্ভবত ৬০ বা ৩০ টাকা) + ১০০ টাকা। (১০০ টাকা এই সাইডে, ইন্ডিয়ার সাইডেও আরো ২০০ দিতে হবে।) এরপর আবার প্রথম রুম এ। এখান থেকে বের হয়ে সাইন নেয়ার জন্য গেলাম বি জি বি’এ একটা ছাউনি তে। নিয়ে ফিরলাম। আবার সেই প্রথম রুম। সিল ছাপ্পর মেরে ব্যাস এদিকের কাজ শেষ। নাস্তা করে নিলাম। দুরেই ইন্ডিয়ার কাস্টমস এ গেলাম।



আমরা যাত্রা করলাম নুম্যান্স ল্যান্ড এর দিকে


চিত্রঃ আমি এখন বি জি বি কেম্পে। প্রায় ২০০ গজ দুরে দেখা যাচ্ছে ভারতের ইমিগ্রেশন। খুব কাছেই। এই জায়গাটা নো মেন্স ল্যান্ড।

এটা আমার প্রথম বিদেশ ভ্রমণ।তাই একধরনের উত্তেজনা কাজ করছিলো। অবশেষে প্রায় ইন্ডিয়া ঢোকার পথে। সপ্নের দার্জিলিং! আর আমার আছে চায়ের নেশা। বাংলাদেশ বর্ডার এ কার্জক্রম সারতে ২ ঘন্টা লাগলো ঈদের দিন হওয়াতে ।
এখানে একটা দালাল মতো লোক অটোমেটীক জুড়ে গেলো। আমাদেরকে নিয়ে গেলো একটা রুম এ – এখানে পাস পোর্ট জমা নিলো। একটু পরে নাম ধরে ডাকল। কি একটা ফর্ম ফিলাপ করতে করতে জিজ্ঞাসা বাদ করলো। ওই দালাল ফি নিলো ১০০ টাকা। এরপর অন্য এক টা রুমে ছবি তুলল কম্পিউটার এর সামনে বসিয়ে। এর পর ব্যাগ চেকিং করলো। অবশেষে সব সারতে আরো এক ঘন্টা। এখান থেকে কিছু বাংলা টাকা ও ডলারগুলো রেখে বাকি টাকা গুলো ভাঙ্গিয়ে রুপি করে নিলাম শ্যামলীর মানি একচেঞ্জ থেকে। ৮০ রপি করে পেলাম ১০০ টাকার বিপরীতে।ডলারগুলো না ভাজ্ঞিয়ে টাকা ভাঙ্গালাম এই জন্য যে ডলার যেখানে সেখানে ভাঙ্গা যাবে কিন্তু টাকা যাবে না ।

Jaigaon যাত্রাঃ
আমরা বাসের টিকেট নিয়েছি শিলিগুডি পর্যন্ত , কিন্তু ঐখানে গিয়ে সময় নষ্ট করার মানে হয় না , তাই আমরা ঠিক করলাম যে সরাসরি ভুটান সিমান্ত শহর Jaigaon চলে যাব। শ্যামলীর লোকদের সাথে অনেক তর্কবিতর্কের পরে আমদের ৭০০ রুপি ফেরত দিতে রাজি, তবে তা সরাসরি আমাদের না দিয়ে আমরা যে গাডিটি ভাডা নিলাম তাকে ওরা ৭০০ রুপি দিয়ে দিবে, Jaigaon পর্যন্ত গাডি ভাডা হল ১৭০০ রুপি , আমরা দিলাম ১২০০ রুপি ।এই পথটা ৩ থেকে ৮ ঘন্টার পথ।যাওয়ার পথে রেস্টুরেন্টে আমরা দুপুরের খবার খেয়ে নিলাম


যাওয়ার পথে দুপাশের অপুরুপ দৃশ্য দেখতে লাগলাম আর ছবি তুলছি !! চারদিকে শুধু সারি সারি চা বাগান আর চা বাগান। এহসান ছবি তুলছে তার সেই বিখ্যাত DSLR ক্যামেরা দিয়ে ।


অবশেষে পৌছে গেলাম জাইগন শহরে, তখন বেলা ৪ টা বাজে ।


পৌছেই শুরু করলাম হোটেল খুজতে ।
[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/Fahimabu/Fahimabu-1453805717-177d07e_xlarge.jpg

অনেক চেষ্টার পরে হোটেল পেলাম হোটেল "বিশাল" !! এটা জাইগন শহরের মোডে অবস্থিত। আমরা ৬ জনের জন্য মোট তিনটা রুম নিলাম , এক রুমে ২ জন করে। ব্যাগগুলো রুমে রেখে আমরা সবাই বেরিয়ে পডলাম শহরটা ঘুরে দেখতে, যেহেতু আমদের প্লান ছিল পরেরদিন ভুটান রাজধানী যাত্রা করব , তাই সবাই মিলে গেলাম Jaigaon ইমিগ্রেসান অফিসে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে শুধুমাত্র এহসান ভাইয়ের ভিসা বাদে আর কারও ভিসায় Jaigaon পোর্টের নাম না থাকায় এহসান ভাই বাদে অন্যদের ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না ।

। অনেক চেষ্টার পরেও অনুমোতি না পেয়ে গেলাম ভুটানের Phuentsholing ইমিগ্রেসান অফিসে গেলাম , দেখলাম ভুটানিরা খুবই আন্তরিক আমদের প্রতি। Phuentsholing হল ইন্ডিয়ার সাথে ভুটানের একটি সিমান্ত শহর । এরা অনেক চেষ্টা করল , কিন্তু ইন্ডিয়ানদের অসহযোগিতার জন্য পারে নাই, কেউ যদি Jaigaon দিয়ে by Road দিয়ে ভুটান যেতে চান , তাকে অবশ্যয় ভিসাতে প্রোর্টের নাম Jaigaon লেখাই নিতে হবে, যাহোক , অনেক চেষ্টা করেও যখন থিম্পু যেতে পারলাম না ,তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম পুরা ভুটানের Phuentsholing সব কিছু ঘুরে দেখব ।ব্যার্থ হয়ে আমরা শহরে কেনাকাটা ও ঘুরাঘুরি করলাম । আমি কিনলাম একটি "Power Bank" কেউ বা জুতা, অন্যান্য জিনিস ইত্যাদি কিনল। সন্ধায় সবাই মিলে নাস্তা করলাম। তবে একটা জিনিস হল ভুটান কিংবা ভারতের যে কেউ চাইলে Phuentsholing বা Jaigaon যাতায়াত করতে পারত ইচ্ছেমত কোন ভিসা ছাডাই।ভুটানিরা Jaigaon শহরে এসে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করে আবার চলে যাচ্ছে । সেই সুযোগ নেওয়ার চিন্তা করে রাতের ডিনার Phuentsholing শহরে করার সিদ্ধান্ত নিলাম



রাতের ডিনার শেষে আমরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখতে লাগলাম , দেখলাম ওদের কালচার, তারপর আমরা গেলাম ভুটানের একটি বারে , সেখানে ওরা ছেলেমেয়ে সবাই মিলে হিন্দি গান গাচ্ছে ! আমরা ওদের সাথে যোগ দিলাম , কথা বললাম ওদের দেশের কালচার সম্পর্কে । ওরা বন্ধুর মত আমদের সাথে মিশল ।রাত তখন ১১.০০টা , অনেক কথা বার্তার পরে আমরা আমদের হোটেলে চলে আসতে ছিলাম


ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে গেট , সেই গেটের এই প্রান্ত ভুটান আর ঐ প্রান্ত হল ইন্ডিয়ার Jaigaon শহর ।
আমদের ভুটানি বন্ধুরা আমাদের সিমান্ত গেট পর্যন্ত পৌছে দিল । আমরা পরের দিনের জন্য পরিকল্পনা করে ঘুমিয়ে গেলাম ।

পরেরদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে গেলাম ভুটানের Phuentsholing শহর ভ্রমনে । তার আগে আমরা অনেক খোজাখুজির পরে একটা রেস্টুরেন্ট পেলাম সকালের নাস্তা করতে । নাস্তা করে একটা জিপ ভাডা করলাম Phuentsholing শহর ঘুরতে ।

প্রথমেই গেলাম Phuentsholing Crocodile Park ।



Phuentsholing Crocodile Park , এরপরে আমরা যাত্রা একটা প্যাগুডা দেখতে ,কিন্তু যাওয়ার পথে আশেপাশের এত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখে ইচ্ছে হচ্ছিল পাডীতে না গিয়ে হেটে হেটে যাইতে আর ফটো তুলতে , কিন্তু এভাবে গেলে তো অল্প সময়ে শেষ করা যাবে না , তারপরও আমরা কিছু জায়গা গাডি দাড করিয়ে ছবি তুলেছি




কিছু পথ যাওয়ার পরেই একটি সুন্দর বাডী দেখে ফটো তুলার লোভ সামলাতে না পেরে ছবি তুলে নিলাম ।



প্যাগোডাঃ এই প্যাগোডা থেকে Jaigaon শহরকে এত সুন্দর লাগছিল , তা ভাষায় পরিপূর্নভাবে প্রকাশ করতে পারছিনা ।

[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/Fahimabu/Fahimabu-1453977129-a468e69_xlarge.jpg
ছোট বেলায় বইতে পডছিলাম যে অমুক শহর অমুক নদীর তীরে অবস্থিত, তখন এই কথার প্রকৃত অর্থ বুঝি নাই, এই প্যাগোডা এসে বুঝলাম যে এই শহরটা একটা নদীর তীরে অবস্থিত !! চারপাশের দৃশ্য দেখে চোখ জুডিয়ে যাচ্ছে !!


[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/Fahimabu/Fahimabu-1454132277-1b80488_xlarge.jpg
এক পলকেই দেখছিলাম Jaigaon শহরটা !! এত দেখার পরেও যেটা দেখছিলাম সেটাই আমরা অভিবূত হচ্ছিলাম ! যেন সবুজের মাঝে আমরা সাতার কাটছিলাম !! যেহেতু সময় খুব অল্প , কিন্তু দেখার জায়গা অনেক , তাই সময় নষ্ট না করে আমরা আবার Phuentsholing বাস টার্মিনালে ফিরতে লাগলাম ,আসার পথে ভুটানে কিছু ছবি তুললাম


দুপুর ১২.৩০ মিনিটে আমরা ফিরে আসলাম Phuentsholing বাস টার্মিনালে যেখান থেকে আমরা ভুটান ঘুরার জন্য বাস ভাডা করেছিলাম !!


ছবিঃ Phuentsholing বাস টার্মিনাল
দুপুর ১ টা আমরা আবার জাইগন ফিরে আসলাম !


যদিও আমাদের টার্গেট ছিল ভুটানের রাজধানী থিম্পু যাওয়া , কিন্তু ভিসা জটিলতায় Phuentsholing শহর দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে !!

দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে যাত্রা করলাম শিলিগুডির উদ্যেসে , সেখনা থেকে যাব দার্জিলিং !! গাডি ভাডা করে যাত্রে এবং পথে সবুজ ভাই একটা সেলফি তুলল !!

[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/Fahimabu/Fahimabu-1454138473-a1dc30a_xlarge.jpg

শিলিগুডিতে রাত যাপনঃ
সন্ধায় আমরা শিলিগুডি পৌছে গেলাম । নাস্তাপানি করে রাতে থাকার জন্য হোটেল খুজতে লাগলাম । অবশেষে আমরা ঊঠলাম " Hotel Rajdarbar", Hill Cart Road, যেটার অবস্থান হল শিলিগুডি মহানন্দা ব্রিজের পাশে । হোটেলে উঠে ফ্রেস হয়ে সবাই বেরিয়ে পডলাম পরেরদিন দার্জিলিং যাওয়ার গাডী ভাডা করতে । দেখা হল এক বাংগালী বাবুর সাথে , সে চাইছিল তার গাডী ও তার দার্জিলিং এর বাডী এখান থেকে যেন বুকিং দেই । কিন্তু ভাগ্যক্রমে আমরা বাংগালী বাবুর ফাঁদে পা দেই নাই ।আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম দার্জিলিং গিয়েই আমরা ভাল থেকে চেক করে হোটেল বুকিং দিব । শেষ পর্যন্ত একটা ৮ সিটের একটা জিপ ভাডা করলাম দার্জিলিং যাবার জন্য । বুকিং দিয়েই রাতের ডিনার করতে একটা ভাল মানের রেস্টুরেন্ট খুজতে লাগলাম। কিন্তু হাটতে হাটতে অনেক দূর গেলাম , কিন্তু যাকেই জিগ্যেস করি সেইই বলে একটু সামনে , এই "একটু সামনে" আর শেষ হয় হয় না !! অবশেষে খুজে পেলাম আমাদের সেই কাংখিত ভাল মানের হোটেল,যেটা আসলে আমাদের হোটেলেরই পাশে । খাওয়া দাওয়া শেষ করে পরেরদিনের যাত্রা পরিকল্পনা করে ঘুমিয়ে গেলাম

২০ শে জুলাই যাত্রাঃ পরবর্তি গন্তব্য মিরিখ ;
এই দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে নির্ধারিত বাস স্টান্ডে গিয়ে আমাদের জীপটি খুজে বের করলাম । সবাই জিপে চেপে বসলাম মিরিখের উদ্দেশ্যে ।



আশেপাশের নয়নাবিরাম দৃশ্য দেখতে লাগলাম আর যাওয়ার পথের ভয়ংকর সুন্দর বিভিন্ন পাহাডী বাঁকের ছবি তুলছিলাম

। মিরিখ যাওয়ার পথে গুডি গুডি বৃষ্টি হচ্ছিল ।


হটাত দেখলাম খুব সুন্দর ছোট্ট একটা নদী!


তডিঘরি করে এই ছবিটা তুললাম !


মাঝ পথে আমরা একটা দোকানে ঢুকে আমরা হালকা চা বিস্কুট খেলাম !
অবশেষে পৌছে গেলাম মিরিখ !!


এখানে এসেই প্রথমে সকালের নাস্তা করলাম হোটেল রাত্নাগীরীতে


হোটেলে ঢুকে নাস্তার অর্ডার দিয়ে ঐখানে থাকা লাফিং বুদ্ধের সাথে কিছু ছবি তুললাম



Bokar Monastery "পরিদর্শন:
খাওয়া আমরা সবাই যাত্রা করলাম মিরিখের ঐতিহাসিক "Bokar Monastery "পরিদর্শন করতে




ভিতরে ঢুকেই প্যাগোডার বিভিন্ন অংশে ঘুরলাম , পিকচার তুললাম


এক নজরের প্যাগোডার বিভিন্ন অংশ !!
!



ঘোরাঘুরি শেষে আমরা বেরিয়ে আসলাম


প্যাগোডা থেকে বের হওয়ার আসার পথে পথেও কিছু ছবি তুলে নিলাম



মিরিখ লেক পরিদর্শনঃ
Bokar Monastery "পরিদর্শন শেষে আমরা গেলাম মিরিখ লেক দেখতে । পৃথিবীতে খুব কম জায়গা আছে যে ভূপৃষ্ট থেকে এমন উচু স্থানে এত বড লেক যেটা হল মিরিখ লেক এত সব অবাক করা দৃশ্য দেখে আমরা সবাই ছবি কেমেরাবন্দি করতে লাগলাম ।


মিরিখের সৌন্দর্য দেখতে ও ছবি তুলতে যে অনেক সময় কেটে গেল বুঝতেই পারতাম না , যদি না আমাদের গাডীর ড্রাইভার তাগাদ না দিত ।

দার্জিলিংযের পথেঃ
সাপের মত পেচানো চা বাগানের মধ্যদিয়ে আমাদের গাডী যাচ্ছিল। দুপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে আমদের এমন অবস্থা হচ্ছে কিছুপথ যাওয়ার পরে আমাদের রিজার্ব করা গাডী দার করাচ্ছিলাম যাতে কিছু ছবি ফ্রেমবন্দি করতে পারি । আমদের মনে প্রকৃতি নিজে সবুজ চাদর গায়ে দিয়ে এবং সবুজের গালিচা বিছিয়ে আমাদের বরন করে নিচ্ছে ।




অবশেষে দুপুর ১২.৪০ মিনিটে পৌছে গেলাম স্বপ্নের সেই দার্জিনিংযে , যে জায়গার কথা বইতে পডেছি, মানুষের কাছে শুনেছি, যেটা আমরাই মানুষকে বলতে পারব।


উপরের ছবিটি হল সেই জায়গা যেখানে আমরা গাডি থেকে নেমে পডি ।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৮
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×