somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি অসাধারণ মুভির সাদামাটা রিভি্উ

১৫ ই মার্চ, ২০১১ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিদেশী ভাষার মুভি এতো কম দেখা হয় কেন, এই জিনিসটা নিয়ে মাঝেমাঝে ভীষন আত্মগ্লানিতে ভুগি।তাই ভাবলাম, একটা ভালো টাইপের ফরেন ল্যাংগুয়েজের মুভি দেখা দরকার।IMDb ঘেঁটে একটা কোরিয়ান মুভির নাম বের করলাম গতকাল রাতে।একরাতেই ডাউনলোড শেষ। আজকে সন্ধ্যায় তা দেখেও ফেললাম।আর এখন মনে হচ্ছে গত কয়েকদিনে এর চেয়ে ভালো কোনো কাজ আমি করি নাই।মুভি ডাউনলোড করা স্বার্থক, মুভিটি দেখাও স্বার্থক।
আর সেই অসাধারণ মুভিটির সাদামাটা রিভি্উ দিতে আবারো হাজির হলাম সামুতে।সেই মুভিটির নাম, Spring, Summer, Fall, Winter... and Spring। এটি একটি সাউথ কোরিয়ান ফিল্ম যা রিলিজ হয়েছিলো ২০০৩ সালে।এটির IMDb রেটিং ৮.১ এবং টপ ২৫০ এ ২৪৭ নাম্বারে রয়েছে। অর্থাৎ আর কিছুদিন পরে হয়তো অনেকেই এই মুভির নামও শুনবে না।



এটি মূলত জীবনধর্মী ড্রামা টাইপের মুভি, তবে একটু অন্যরকম প্লট।এখানে মুভিটি একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও তার এক শিষ্য কে ঘিরে আবর্তিত হয়।পুরা মুভিটি ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে(যা মুভিটির টাইটেলএর পাঁচটি ঋতুর নাম ও ক্রম অনুসারে), যার মাধ্যমে ঐ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও তার সেই শিষ্যের জীবনকে পর্যায়ক্রমে দেখানো হয়েছে।।
এবার কাহিনীর দিকে একটু নজর দেই, গল্পের শুরুতে দেখা যায়,ঐ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী একটি নীরব-নিভৃত একটি জলাশয়ে ভাসা বাড়িতে বাস করেন ও ধর্মচর্চা করেন।সাথে থাকে এক বাচ্চা ছেলে, যাকে তিনি শিষ্যরূপে জ্ঞান, বুদ্ধি ও সহানুভূতি শিক্ষা দিতে থাকেন।কালক্রমে ছেলেটা বড় হয়।একদিন, ঐ সন্ন্যাসীর কাছে এক মহিলা তার অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে আসেন এই বিশ্বাসে যে সন্ন্যাসী তাকে ভালো করে দেবেন।ঐ মহিলা তার মেয়েকে সন্ন্যাসীর কাছে কিছুদিনের জন্য রেখে আসেন। আস্তে আস্তে ঐ মেয়েটার সাথে সন্ন্যাসীর শিষ্যটির প্রেম হয় এমনকি সেটা শারিরীক সম্পর্ক অবধি যায়।খুব দ্রুত মেয়েটি সুস্থ হয়ে উঠে।কিন্তু এক পর্যায়ে প্রেমের বিষয়টি তার গুরু জানতে পারেন এবং তিনি ঐ মেয়েটিকে বাইরে ফেরত দিয়ে আসেন।ঐ মেয়ের বিরহে শিষ্যটি একসময় ঐ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।এভাবে কাহিনী চলতে থাকে, আর কিছু বলবো না।তাহলে আর কাহিনীর আর মজা থাকবে না।শুধু এটুকু বলতে পারি, ঐ শিষ্যটি একদিন আবার তার গুরুর কাছে ফেরত আসে।কিন্তু ততোদিনে তার জীবনটা অনেক পাল্টে যায়।
মুভিটির এই কাহিনীগুলো ধাপে ধাপে এগুতে থাকে আর সেগুলোর ধারাবাহিক প্রকাশ পায় একেকটা ঋতুর মাধ্যমে।মূলত ঋতুগুলো জীবনের একেকটা অধ্যায়, যার ব্যবধান ১০ থেকে ১৫ বছর।একেকটা অধ্যায়ে জীবনের অন্যরকম মানে।কোনোটার সাথে তার আগেরটার মিল নেই।জীবন যেন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়। জীবনের কঠিন বাঁকগুলোর গন্ডি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ঐ শিষ্যটি তার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর দেখিয়ে যাওয়া স্পিরিচুয়াল পথেই তার karma বা পাপ মোচনের পথে নিজেকে সমর্পন করে।১০৩ মিনিটের এই মুভির Writer+Director হলেন Ki-duk Kim।
এটি একটি অসাধারন মুভি,ভিজ্যুয়ালি ও দারুন উপভোগ্য।মুভিটির সংলাপ তেমন বলতে গেলে নেই। এই মুভির সবচেয়ে শক্তিশালী দিকটি হলো এর প্লট।ঘড়ি ধরে ২০ মিনিট দেখুন, নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হবেন।অনবদ্য এবং বেশ হৃদয়স্পর্শী।মেকিংয়ে তেমন কোনো এক্সপেরিমেন্ট নেই, অথচ এই সিম্পল মেকিংকেই আপনার কাছে পারফেক্ট মনে হবে।ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ও বেশ মানানসই।
এই মুভিটি নিয়ে পরিশেষে বলতে চাই, এই মুভি আপনাকে ভাবনার খোরাক দেবে, মনকে বিশুদ্ধ করবে আর cycles of life আর redemption নিয়ে বেশ নাড়া দেবে।সবার উদ্দেশ্যে বলছি, এই মুভিটি দেখুন, অবশ্যই ভালো লাগবে।মনকে নাড়া দেবার মতো ছবি এই Spring, Summer, Fall, Winter... and Spring (2003)।



ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
১২টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×