আবার ঘুরে এলো বছরটা, এলো বৈশাখ আর বৈশাখের দোহায় দিয়ে পান্তা-ইলিশ সহ আরো নানান অপসংস্কৃতি উদযাপনের অপ্রস্তুত সময়।
এবার আসি পয়েন্টে, পয়েন্টে টু বি নোটেড...
বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র বা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র যাই হোক না কেন, এদেশ যে একটি মুসলিমপ্রধান দেশ এতে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হলে অন্যকথা! এমতাবস্থায় এই দেশের জাতীয় উৎসব বাংলা নববর্ষ উদযাপনের বেলায় যদি পরিপূর্ণ বা অন্তত কিছুটা হলেও ইসলামী রীতি রেওয়াজের প্রচলন থাকতো, তাহলে দেশের মানুষ খুশিই হতো। তবে পাঁচ ভাগ অমুসলিম নাগরিকের কথা বিবচনায় এও না হয় মেনে নেয়া গেল যে, পূজার জায়গায় পূজা আর ঈদের জায়গায় ঈদ থাক, বাংলা নববর্ষের মত একটি জাতীয় অনুষ্ঠান ধর্মনিরপেক্ষ এবং দেশীয় সংস্কৃতি অবলম্বনেই পালিত হোক। এতে কারো আপত্তি থাকার কোন কারণ থাকবেনা। আর বাকি ৯৫ ভাগ মুসলমান না হয় একটা বড় ধরনের ছাড়ই দিতো!
কিন্তু একথা মেনে নেয়া যায় কি করে যে, ইসলামকে বস্তাবন্দী রেখে হিন্দুয়ানি রীতি-আচারের সংস্কৃতি প্রকাশ্যভাবে আমাদের জাতীয় উৎসবে ঢুকিয়ে দেয়া হবে..!?
চোখ কপালে তোলার মত কোন কথা নয়। বাংলা ভাষা, বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং এখানকার নববর্ষের দিনক্ষণ, রীতি-আচার সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ কোন বিদেশিকে বটমূলের সাজ-সমাচার এবং বর্ষবরনের বর্তমান প্রচলিত মিছিল দেখিয়ে যদি প্রশ্ন করা হয়, বলুন তো এখানে কি হচ্ছে? তখন যদি এই বিদেশি ভদ্রলোক বলে বসেন, 'কি আবার! হিন্দুদের রথযাত্রা হচ্ছে। দেখতে পাচ্ছেন না, ছেলেদের হাতে রাখি পরানো হচ্ছে, মেয়েদের কপালে লাল ফোটা আর সিঁদুর, সবার ঢোল বাদ্য বাজিয়ে নেচে গেয়েই চলছে!
এবার আপনারাই বলুন লোকটির নিরীক্ষণ এবং মন্তব্যে খুব একটা ভুল ধরা যাবে কি..?
যে সংস্কৃতি বাংলাদেশকে অন্যদেশে পরিণত করে, যে রীতি-রেওয়াজ মুসলমানদের হিন্দুতে রুপদান করে, সেটাকে আর যাইহোক অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি বলা যায় না।
-এবার আসি ইলিশ-পান্তায়...
নববর্ষের দিন পান্তা-ইলিশ ভোজনটা কুত্থেকে এলো আমার মনে হয় সেটা কোন ভোজনকারীই বলতে পারবেনা। আসলে এই পন্তা-ইলিশ প্রথাটা পুরাই ভোয়া একটা রীতি। এটি বাংলা ঐতিহ্যের কোন অংশ ছিলনা, না গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ এতে অভ্যস্ত ছিলেন।
বছরের প্রথম দিনটা কে না ভাল কাটাতে চায়। একটা বিশেষ দিন মনে করে ঘরে ভাল রান্নাবান্না করা, মেহমানদারি করা এগুলো খুবই সাভাবিক বিষয়.. আমাদের দেশ ও জাতির মূল কাঠামো ৬৮ হাজার গামের মানুষ নতুন লুঙি, নতুন শাড়ি-জামা আর ক্ষির মিঠাই দিয়ে নববর্ষের দিনটা পালন করে আসছে। বাড়ির আশপাশের শাকপাতা দিয়ে তৈরি নিরামিষ খাবার একটা নিয়ম আছে। কিন্তু গরম ভাতে পানি ঢেলে ইলিশ ভাজা দিয়ে খাওয়ার কোন ধারাবাহিক বাস্তবতা খোঁজে পাওয়া যায় না।
থাই, চাইনিজ আর ফাস্টফুডে নির্ভরশীল উচ্চবিত্তের শখ করে ইলিশ-পান্তা খাওয়ার জন্য রমনায় ছোটে আসা যেন গরিবের ভরসা প্রকৃত পান্তাকে উপহাস করারই নামান্তর হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ভোয়া সংস্কৃতির দোহায়ে ইলিশ এখন খবরের শিরোনামে, মূল্যতাপ এসি দিয়েও কুল করা সম্ভব নাহ। এর কঠিন ফায়দা উঠিয়ে সল্প পুঁজিতে পকেট গরম করছে কতিপয় মহল..
অবশেষে বাঙ্গালী আবার লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ালো, আবার নিজেকে বাঙ্গালী বলতে লজ্জাবোধ করছি...!
বাংলা নববর্ষের মত একটি জাতীয় অনুষ্ঠান ধর্মনিরপেক্ষ এবং সার্বজনীন দেশীয় রীতি অবলম্বনেই পালিত হোক..
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ



ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন
মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন
তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।