( পনের অক্ষরে , অমিত্রাক্ষরী কবিতা )
কবিতা হলো সাহিত্যের রাজমুকুটটি । - সমারসেট মম ।
কে এমন পুঙ্গব, কামদেবে নাহি বশে,
আছে অন্তরীক্ষে কিবা ভূতলে কে সে জন
দেবকামিনী অপ্সরা মেনকারে না দোষে ?
যে পঞ্চশর রাখা আছে কন্দর্পের তূণে
সে শরাঘাতে মদন বচন নাহি শুনে
কে এমন দেবর্ষি, এমন কিবা মহর্ষি
আছে পুষ্পক উদ্যান সম এ ধরাধামে !
যে জন বলে সকম্পোষ্ঠে, “আমি কামজয়ী”
ধিক্ শত চিরকাল এমন মিথ্যুকেরে ।
বিশ্বামিত্র যেথা তাহার ব্রাক্ষ্মণ্য রুধিরে
অক্ষম কামাগ্নিশিখা থেকে রাখিতে দুরে,
মেনকার বাহুবন্ধে পুষ্করতীর্থ হতে
যে জন রাজর্ষি মোহবলে রমনপথে
মাহেন্দ্রক্ষনে করেছে মধুমক্ষি গমন
সে কি করে কহে, “পুন্যাত্মা আমিই শ্রমন” ?
তত্রাচ দেহমন্দির গমন শেষে, দোষে
রমনীরে । পাপিষ্ঠা, পিশাচিনী তোকে ধিক্
তুই ভুজঙ্গিনী, বেবুশ্যা নরকের কীট
এমতো অভিশাপে শতত দুষিছে যারে,
ফিরে ফিরে সেই কুহকীনি দেহমন্দিরে
পুঁজার লাগি আবারো কিসের তরে
আসে সুবেশী নরকুল সবে দলে দলে !
তারা পাপী কিবা তাপী জিজ্ঞাসে কোন জনে ?
হায় ধরাতল ! কাম যে দুর্লঙ্ঘ হেথায়
তবু দক্ষ অন্তজা রতি, চৌষট্টি কলায়
যতো পুঙ্গবে যেথা উদ্বাহু নৃত্যে মাতায়
কেজন সে সাধু, তাহারে না সম্ভোগে ? হায় –
কামপ্রবৃত্তি যে শত বাহু মেলি যেমতো
কান্তানুগমনে যায় , ফিরে যে নাহি চায় –
দেখে নাকো তার ও উর্দ্ধে যে “প্রেম” সতত
বিরাজে । সে কথা নাহি কেহ মানিতে চায় ।
হে পুতঃ স্মরনে রাখো, নহে যে কাম মোক্ষ,
নহে দেবযজ্ঞ কোনও শরীর সর্বস্য -
নহে পীবর কুচ-যুগমাঝে স্বর্গদ্বার ।
জেন, সেখানেও রহে দেবগৃহ পূঁজার,
প্রেম ও ভালোবাসিবার যতুগৃহ তার
রূপ-রস-গন্ধে ভরা প্রকৃতি যে উদার
হস্তে তারে করিছে দান আনন্দ সকলি
এই অনুমানে; তাহারে পূজিবে মানুষে
দ্যুলোক- মর্তে অন্তঃস্থিত অমৃত সম্ভারে ।
মনুষ্য জনমের ধারা বহিবার লাগি
প্রকৃতিমাতঃ তাহারে সোহাগে-প্রেমে বাঁধি
একে অপরেরে করেছে প্রেম অনুগামী ।
হায়- তত্রাপি মেদিনী মাঝে কাঁদিয়া ফেরে
প্রেম যে অনাদরে জন্ম-জন্মান্তর ধরে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১৬