( ব্লগের পাতায় সারগর্ভ বা ভারী প্রবন্ধ লেখার সুযোগ বা প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি একটা নেই হয়তো । তাই বিষয় বস্তুর ওজন যা-ই হোকনা কেন তাকে সহজ ভাষায় খানিকটা সহজ করে তোলাই যথাযথ , যাতে পাঠকের মনযোগ বিচ্ছিন্ন না হয় । তার পঠনের সময়টুকুর মূল্য হিসেবের মধ্যে ধরে এই লেখার প্রয়াস করা গেল । )
জনগণের জন্যে, জনগণের দ্বারাই নাকি গণতন্ত্র !
বৃহত্তর জনগণের জন্যে নয় , সমগ্র জনগণের বৃহত্তর স্বার্থের ভাবনা-ই নাকি গণতন্ত্রের ভেতরের কথা ।
এর পথ ধরেই গণতন্ত্রের আধুনিক চরিত্রে সংযোজিত হয়েছে, “মুক্তচিন্তা”। তাই মুক্তচিন্তা বা মুক্তবুদ্ধির চর্চার কথা আমরা বলি আজকাল, বলতেই হয় । আসলে সেটা কি ? আপনি বলবেন , চলমান কালের বৈশ্বিক সংস্কৃতি বুঝে সে মতো চলার চর্চা করাই মুক্তবুদ্ধির চর্চা । অনেকটা যেন জোয়ারের তালে নৌকো ভাসানোর মতো । ভালো করে খেয়াল করুন, এই চলমান সংস্কৃতি কে বা কারা তৈরী করেন ? আপনি নিজেই এর উত্তরটি জানেন । বুদ্ধিজীবি, সুশীল নাগরিক আর ছোটপর্দার কথা বলিয়েরা । এখানে বৃহত্তর সাধারন জনগণের কোনও অংশগ্রহন নেই । এই মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে হলে আপনাকে “প্রগতি” , “উন্নয়ন” , “প্রবৃদ্ধি” ইত্যাদি মুখরোচক শব্দগুলির কথা বলতে হবে । যেমন সুন্দর বনের রামপালের কয়লা বিদ্যুত প্রকল্পের কথাই ধরা যাক । এটা মুক্ত বাজার অর্থনীতির পথ ধরেই এসেছে । সুন্দর বনের এই কয়লা বিদ্যুত প্রকল্প হোল একটা “প্রগতি” । একটা উন্নয়ন । এই জাতীয় শব্দগুলো ভাষাকে ছিনিয়ে নিয়ে স্বার্থ সিদ্ধির কৌশলগত বিজয়ের এক একটি উদাহরন । কারন এই বিদ্যুত প্রকল্পের কারনে সুন্দরবনের যে অপরিমেয় ক্ষতি হবে , জনগণ যে তার বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ হবে , কৃষিজমি যে বিলুপ্ত হবে , সামগ্রিক পরিবেশ বিপর্যয়ের সাথে সাথে জনস্বাস্থ্য ও যে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে তা সুকৌশলে ঢেকে দেয়া হয়েছে “প্রগতি”, “অর্থনৈতিক উন্নয়ন”, “কর্মসুযোগ সৃষ্টি” এই সব শব্দগুলির আড়ালে ।
তাহলে কি আপনি প্রগতি চান না ? দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হোক , এটা চান না ? এ ধরনের উন্নয়ন যদি আপনি না চান তবে আপনি অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিরূদ্ধে , প্রগতির বিপক্ষে , সংস্কারের বিপক্ষে, সর্বোপরি জাতীয় উন্নয়নের বিরূদ্ধে যা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের ম্যান্ডেট । অনেকটা যেন মার্কিনী বুশ সাহেবের সেই থিয়রীর মতো - আমাদের সাথে না থাকলেই আপনি সন্ত্রাসের পক্ষে , আপনিও সন্ত্রাসী ।
অথচ গণতন্ত্র বলে , সমগ্র জনগণকে সুরক্ষা দেয়া গণতান্ত্রিক সরকার বা রাষ্ট্রের “ ফরজে আইন” । কিন্তু , নদী বাঁচাও, তেল-গ্যাস রক্ষা করো, বনভূমি বাঁচাও এইসব কথা বলে তো আপনি রাষ্ট্রের উন্নয়নের বাঁধা হয়ে উঠতে চাইছেন । আপনি তো “গণতন্ত্র বাঁচাও” বলে কাঁদছেন না । আপনি তো অগণতান্ত্রিক, প্রাগৈতিহাসিক এক জীব ।
আর এর আড়ালে প্রাকৃতিক সম্পদ যেন উপযুক্ত হয়ে উঠছে কর্পোরেট লুটেরাদের জন্যে । গণতান্ত্রিক সরকারের ততোধিক গণতন্ত্রমনা অর্থনীতিবিদ, পরিকল্পনাবিদ ইত্যাদি বিশেষনে ভূষিত লোকজন উন্নয়নের এক একটা লালমুলো ঝুলিয়ে দেন আমাদের চোখের সামনে । গোয়েবলসীয় কায়দায় তাদের চালানো প্রপাগান্ডায় আমরা আমাদের চারদিক নষ্ট করে ফেলেছি এ ধারনা থেকে যে , প্রাকৃতিক সম্পদ নিলামে উঠিয়ে এর প্রাচুর্য দ্বারা আমাদের সব ক্ষতিই পুষিয়ে নিতে পারবো । যদি তা-ই হতো তবে কর্ণফুলি বাঁধের কল্যানে যে সুগভীর আর অপরিমেয় ক্ষতি করে ফেলেছি আমরা তা এতোদিনে পুষিয়ে দেয়া যেতো ।
আবাসনের খাতিরে নদীনালা , খালবিল ভরাট করার অনুমতি দিয়ে যতো লোকের মাথাগোঁজার ঠাই করে দেয়া হয়েছে তার চেয়েও হাযারো গুন বেশী লোকের ক্ষতি করা হয়েছে পরিবেশ দূষন আর ইকো –সিষ্টেমকে নষ্ট করে দিয়ে । যে ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া যাবেনা কোনওদিন । ট্যাংরাটিলার উদাহরন মনে করুন । এগুলোও জায়েজ করা হয়েছে “প্রগতি”র নামে ।
আবার ইসলামী নামের ব্যাংকগুলো সন্ত্রাসবাদের পুজির যোগানদাতা একথা জেনেও ইসলামী ব্যাংকগুলো কি বন্ধ করা হয়েছে ? যদি রাজনৈতিক ভাবে তা অচ্ছুত ও রাষ্ট্র সংহারী হয় তবে কি করে সে তার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে সরকারের নাকের ডগায় বসে ? এটা কি গণতান্ত্রিক সরকারের কর্পোরেট মনোবৃত্তি ? ধর্মকে পুঁজি করে সে ব্যবসা যদি হালাল হয় তবে কালো টাকা সাদা করাও হালাল । তাই কালো টাকা হালালের ফতোয়া দেয়া হয়েছে । এতে কতো কালো টাকা সাদা হয়েছে ? ১% ও বোধহয় হয়নি । তবুও এই অফার দিয়ে যেতেই হবে । এটাও দেশীয় গণতান্ত্রিক সরকারের কর্পোরেট চরিত্র।
এভাবেই গণতান্ত্রিক অভিনয়ে এটাই দৃশ্যমান করে তোলা হয় যে , সে ধনী আর গরীবের স্বার্থই রক্ষা করছে । এটা অভিনয় এ কারনে যে, একজনের স্বার্থ তখোনই রক্ষা করা যায় যখোন আর একজনের স্বার্থকে গলা টিপে মারা যায় । আর সেটা যে গরীবের স্বার্থ তা না বললেও বোধহয় চলে ।
গণতন্ত্র মনে হয় অদ্ভুত একটি ব্যাপার । আপনার যেমনটি মন চায় তেমনটি অর্থ করতে পারেন আপনি । সাধারন মানুষ বলবে এই রকম, তো বামপন্থীরা বলবে ঐরকম । ডানপন্থীরা বলবেন আর এক । সরকার বলবেন তার সুবিধা মতো । সব রাজনৈতিক দল , সব সরকারের ধারনায় এটাই মনে হয় যে গণতন্ত্র মানেই শুধু নির্বাচন । ক্ষমতা, কেবলমাত্র ক্ষমতায় থাকার লোভেই এই প্রজাতিগুলো এবং তাদের জন্মদাতা দল ও গোষ্ঠী , যারা গনতন্ত্রের চর্চ্চা করতে গিয়ে জনগণ এবং সংবিধানের দোহাই দিতে দিতে মূর্চ্ছা গেছেন সকাল-বিকেল; তারাই সেই রাষ্ট্র ,জনগণ, গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে লাথি মেরেছেন অবলীলায়, যে রাষ্ট্র এবং জনগণের উছিলায় তারা এই পদাভিসিক্ত হয়েছেন । এমনকি সেই রাষ্ট্রের জন্মের বিরূদ্ধাচারনকারী এবং জনগণকে ভারতের জারজ সন্তান হিসাবে আখ্যায়নকারী গোষ্ঠীর সাথে গলাগলি করেছেন এবং করছেন নির্লজ্জের মতো কেবলমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে। একবারের জন্যেও তাদের আত্মসম্মানবোধ , নিছক যেটুকু থাকলে মানুষ “মানুষ” পদবাচ্য হয় ; তা চিড় খায়নি । ক্ষমতালীপ্সার কারনে এদেশের জনগণের ০.৫ % (শূন্য দশমিক পাঁচ) মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে ৯৯.৫ % ( নিরানব্বই দশমিক পাঁচ ) মুক্তিকামী জনগণের চেতনা বিকিয়ে দিয়ে নিজেরাই যে পিতৃ পরিচয়হীন তা প্রমান করে দিয়েছেন ।
চলমান সংকট এই জাতীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চ্চারই ধারাবাহিকতা মাত্র । কেউ “ আপনা হাত জগন্নাথ” নামের এই “গণতন্ত্র” রক্ষায় এই করতে চাইছেন ; তো কেউ ওই করতে চাইছেন । ইস্যু একটাই – “ভোট” । তাই সরকারী উদ্দ্যোগে “আমার ভোট আমি দেবো । যাকে খুশি তাকে দেবো” কিম্বা “ভোট দেয়া নাগরিক অধিকার” এমোন সব নির্লজ্জ প্রচারনার মধ্যে দিয়ে সমগ্র নিবার্চন ব্যবস্থাকেই যেন একটা বাজার ব্যবস্থায় পরিনত করা হয়েছে । এখানে ভোটাররা শুধুমাত্র ক্রেতা । এবং গণতন্ত্র একটা সুপার মার্কেট । এখানে যা খুশি তার সব কিছু আপনি পেতে পারেন । তবে তার দরজা গৃহহীন, দরিদ্র জনগণের জন্যে উন্মুক্ত নয় । তাই তো দেখি, নির্বাচনে ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ সৎ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই পরাজিত হন । কারন তারা , এলাকার ঘরে ঘরে একটি চাকুরী দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন না । কৃষিপণ্যে ভর্তুকি দেয়ার আশ্বাস দিতে পারেন না । এমোন কি এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করে দেবেন কিম্বা নিদেন পক্ষে মহল্লার পুকুরের কচুরীপানা পরিষ্কার করিয়ে দেবেন একথাও বিশ্বাস করাতে পারেন না কাউকেই । কারন এ সুপার মার্কেটের সব পণ্যেই বিশাল অংকের প্রাইজ ট্যাগ মারা যেখানে এসব সৎ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর গায়ে ওজনদার কোন ট্যাগই নেই । এর সাথে নব্য সংস্করন “মুক্তচিন্তা” যুক্ত হয়ে ‘ভ্যাট” এর মতোই তা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে ।
জনগণই যে রাষ্ট্রের মালিক, বর্তমানের এদেশীয় গণতন্ত্রের গণতান্ত্রিক চরিত্রে সে ধারনার ছিঁটেফোঁটাও নেই । বরং নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে একটি সরকার গঠিত হলেই তারা মালিক হিসেবেই দেশী জাহাজের ইঞ্জিনরুমের (প্রশাসন) সব নাটবল্টু খুলে ফেলে নতুন করে মেড-ইন “অমুক” মার্কা নাটবল্টু লাগিয়ে নিজস্ব ষ্টাইলের জাহাজ বানিয়ে ফেলেন । যে জাহাজ তাদের কথা ছাড়া চলেনা । ভাবখানা এই যে , তাদের ছাড়া আর কারো পক্ষে এই জাহাজ চালানো সম্ভব নয় । জনগণকে এই জাহাজেই চড়তে হবে । সে জাহাজই শুধু তাদের কাঙ্খিত ঘাটে নিয়ে যাবে ।
মুক্ত ও স্বাধীন ভাবে জনগণের অধিকার লুট করলেই শুধু এমনটা বলা যায় ।
গণতন্ত্রের গর্ভপাত ঘটিয়ে এই যে গত কদিন ধরে খেটে খাওয়া মানুষদের আগুনে পুড়িয়ে কাবাব বানানো হচ্ছে এও গণতন্ত্রের আর এক দাম্ভিক চারিত্রিক রূপ । কার দেশ অবরোধ করছে এই গণতন্ত্র ? প্রতিদিন যে হাযারো কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে নিরীহ জনগণকে , তা কি এই গণতন্ত্রে জনগণ সাড়া দিচ্ছেনা বলে ? দেখে-শুনে তো তাই-ই মনে হয় । যেখানে গণতন্ত্রে সরকার সহ সকল দলকে ( রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি ) জবাবদিহি করতে হয় দেশের জনগণের কাছে, সেখানে দীর্ঘদিনের চর্চ্চায় আমরা উল্টো জনগণকেই বাধ্য করেছি তাদের কাছে জবাবদিহিতার । নিরাপদ ঘেরাটোপে বসে কেউ জনগণের চলাচলে কারফিউ জারী করার পরেও অবোধ জনগণ রুজি-রোজগারে রাস্তায় নেমেছেন । কেন নেমেছেন এটার জবাব তো তারা চাইতেই পারেন এই ধরনের গণতান্ত্রিক চর্চ্চায়। তাই এই সব অবুঝ জনগণকে তো পুড়িয়ে মারতেই হয় ! দোকান পাট বন্ধ রাখতে বলেছেন তারা । কোন সাহসে আপনি তা খোলা রেখেছেন ? তাই তো ককটেল মারতেই হবে আপনাকে । সব কিছুতেই তারা অবরোধ দিয়ে রেখেছেন । এর জন্যে প্রতিদিন যে হাযার কোটি টাকা গচ্ছা যাচ্ছে তা তো আপনার রক্ত পানি করা পয়সা । তাদের মাথাব্যথা নেই এই সামান্য ব্যাপার নিয়ে । আপনার অর্থনৈতিক উর্ধগামীতা বা নিম্নগামীতা নিয়ে তাদের মোটেও মাথাব্যথা নেই । আপনার একমাত্র গণতান্ত্রিক অধিকার , ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতেই তো তারা জানপ্রান দিয়ে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন । রাত জেগে সভা করে চলেছেন । জনগণ মরুক ক্ষতি নেই , গণতন্ত্রকে যে বাঁচাতেই হবে !!!!!!
ব্লগে একটি পোষ্টে লেখা দেখলুম , …… “আন্দোলন করতে হলে কর, কোন সমস্যা নাই। ২০ দলের নেতা কর্মীরা রাস্তায় শুয়ে থাক। মারতে হলে সরকারী দলের কর্মীদের মারো কিংবা মরতে হলে নিজে মর। কিন্তু কি দোষ করেছে বাসের হেল্পার আর সবজি বিক্রেতা? কি দোষ করেছে শ্রমজীবী/চাকুরীজীবী/ছাত্ররা?”
এ রকম লেখা ব্লগে আরও অনেক আছে । প্রতিদিনই আসছে । এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার সংস্কৃতি নেই এই গণতন্ত্রের চরিত্রে । জনগণের প্রশ্নের কোনও জবাব-ই এই গণতন্ত্র দেয়না ।
সব মিলিয়ে এই সিস্টেমটাই তারা এমন ভাবে তৈরী করেছেন যে কয়েকটা রাজনৈতিক দল, কিছু ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং সুবিধা লুন্ঠনকারী কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবি ও মানবতাবাদীকর্মী যা করবে মিলেমিশে, সাধারন মানুষকে তাই ই মেনে নিতে হবে। সাধারন মানুষের পকেটে “সন্ত্রাসী” বাহিনী নেই বলেই আপারগ মানুষকে তা মেনে নিয়ে মুখে কুলুপ আটকে থাকতে হবে ।
গত তিন তিনটি যুগ ধরে এই চরিত্রের গণতন্ত্র নিয়ে ঘর করার পরও আজও এই গণতন্ত্রকে জনগণ চিনে উঠতে পারলোনা !
অবুঝ ও আপারগ জনশ্রেনীর মুখপাত্র হিসেবে যে সুশীলদের আমরা দেখি তারাও “হরবোলা”র মতো যে “ভাবে-সপ্তমী”তে কথা বলেন তাও গণতান্ত্রিক চরিত্রে এক আলাদা সংযোজন । মাছ ধরতে গিয়ে এরা গায়ে পানি লাগান না । গণতন্ত্র যে একমাত্র তারাই বোঝেন আর কেউ বোঝেন না, এরকম একটা ভাব থাকে তাদের কথায় । যা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষেই যায় । “গণতন্ত্র” একমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোরই পৈত্রিক সম্পত্তি ; খেয়াল করলে দেখবেন তাদের কথায় এটাই স্পষ্ট । এতে পক্ষ-বিপক্ষ উভয়দলই খুশি থাকেন । গণতন্ত্র যে সাধারন মানুষেরও সম্পত্তি তা তাদের কথায় প্রতিফলিত হয়না । এরাই গণতন্ত্রের চরিত্রকে দলীয়করন করে ছেড়েছেন । এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা , মানবাধিকার সংগঠনগুলো ক্রসফায়ারে সন্ত্রাসী নিহত হলেই শুধু জোরে চীৎকার দিয়ে মাঠ গরম করে ফেলেন , মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে । তারা আজ কই ? গণতন্ত্রের বিজয় বনাম গণতন্ত্রের হত্যার লড়াইয়ে আজ জনগণের যে ত্রাহি অবস্থা তা নিয়ে তো এদের ঢিলেঢালা মন্তব্য ছাড়া আর কিছু মেলেনি জনগণের । তারা যা বলছেন তার প্রায় সবটাই নির্বাচন সংক্রান্ত । নির্বাচন কি ভাবে , কি করে , কবে ,কখন , কার অধীনে ইত্যাদি । নির্বাচন না হলে জনগণ যে “বেহেশত”এর টিকিট পাবেন না তার বয়ান সব ।
তাই গণতন্ত্রে আজ আর “গণ” শব্দটি নেই । আছে “তন্ত্র” - পরিবারতন্ত্র । “গণ” নেই বলেই এই তথাকথিত গণতন্ত্র একপেশে, স্বৈরতান্ত্রিক চরিত্রের হয়েছে । ফর দ্য পিপল , বাই দ্য পিপল, অব দ্য পিপল আর নেই আজকের এ দেশীয় গণতন্ত্রে । চরিত্র হারিয়ে বেবুশ্যের মতো তা দাঁড়িয়েছে এখানে – “ফর মি...... বাই মি ........অব মি........” র গণতন্ত্রে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১৮