somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হারানো দিনের কিছু প্রযুক্তি / একটি ছবি ব্লগ

২১ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেক দিন কোন পোস্ট দেইনা । এটা রীতিমত অস্ত্বিত্তের সংকট । লিখার মত কিছু পাচ্ছিও না । সামুর এক মুরুব্বি বলেছিলেন পোস্ট দেয়ার মত কিছু যদি লিখতে না পার তাহলে ছবি পোস্টই ভরসা ।
আমিও সে লাইনেই আগালাম । পুরনো দিনের কিছু জিনিসপাতি সাথে একটু স্মৃতি নিয়ে একটা ছবি পোস্ট দিয়ে বসলাম ।

১/ প্রথমেই নিব কলম



আমাদের সময় প্রাইমারী পেরিয়ে হাই স্কুলে যাওয়া ছাত্ররা এই কলম ব্যবহার করতো । ইয়থ , পাইলট , উইংচং, হিরো সহ ছিল হরেক নামের কলম ছিল। মুল্য ছিল ২৫ থেকে ৪৫ টাকার ভিতরে । আমার অবশ্য অনেক দামী একটা কলম ছিল । এটা আমার বাবা জার্মান থেকে এনেছিলেন । পার্কার । ফিলিং এর জন্য বাজারে কালির দোয়াত পাওয়া যেতো , বেশির ভাগ চায়নিজ কালি । বাজারে সহজলভ্য ছিল আমাদের দেশি জেম কালি ।

২/ ম্যাচ লাইট



দেখতে অনেকটা এখনকার গ্যাস লাইটের মত , তবে স্টিল বডি । মেড ইন অস্ট্রিয়া । ধূম্র এস্তেমালকারীদের কাছে এটা ছিল রীতিমত ৭ রাজার ধন । হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকে রশি বা চেইন দিয়ে কোমরের সাথে বেঁধে রাখতেন । ভিতরে ছিল ফুয়েল চেম্বার । তুলা দিয়ে চেম্বার ভর্তি করা থাকতো । পেট্রোল দিয়ে এই তুলাগুলি একবার ভিজিয়ে দিলে অনেক দিন কাজ চলতো । আমাদের পাশের গ্রামের এক কৃষক এক বার আমাদের জন্য ১০ জোড়া নারিকেল নিয়ে এসেছিল । বাবা টাকা দিতে চাইলে সে কিছুতেই নিতে রাজি নয় । সে জানালো আগামী বার জাহাজ থেকে আসতে যেন তার জন্য একটা ম্যাচ লাইট আনা হয় ।


৩/ টেবিল ল্যাম্প



৮০র দশকে বিয়ে শাদীতে এই টেবিল ল্যাম্পটি ব্যাপক হারে উপহার পড়তো । কেরোসিন দিয়ে চালানো এই ল্যাম্পের প্রস্তুত অবকাঠামো ছিল অনেকটা হারিকেনের মত । ইচ্ছামত আলো বাড়ানো কমানো যেতো । গ্লাসের উপরে ছিল খোলা ।
আলাদা গ্লাস কিনতে পাওয়া যেতো , তেল খরচ হতো খুব কম ।

৪/ খড়ম



আমাদের সময় জুতা স্যান্ডেলের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়ে গেলেও অনেক মুরুব্বিকে দেখতাম পুরনো ঐতিহ্য আর সাচ্ছন্দের জন্য তখনো খড়ম ব্যবহার করতেন । কাঠের তৈরি খড়মে আঙ্গুল আটকানোর খুঁটিটিও ছিল কাঠের । বনেদি লোকদের খড়ম তৈরি হত চন্দন জাতীয় দামী কাঠ দিয়ে । আর খুঁটি ছিল পিতল , রুপা বা মহিষের শিঙের । আমি আমার নানুর খড়ম পায়ে দিয়ে হাঁটতে গিয়ে কাদার মধ্যে তিন আছাড় খেয়েছিলাম ।

৫/ স্লেট চক



স্লেট চকে লিখে বর্ণ পরিচয়ের হাতে খড়ি হয়েছিল এমন লোক সামুতে থাকলেও এই মাটির তৈরি স্লেট আর মাটির তৈরি খড়ি ব্যবহার কারীর সংখ্যা বেশি থাকার কথা নয় । মাটির তৈরি এ স্লেট চার দিকে কাঠের ফ্রেম দিয়ে বাঁধাই করা ছিল । খুব সতর্কতার সহিত হ্যান্ডেলিং করতে হত । হাত থেকে মাটিতে পড়ে গেলেই শেষ ! আমি নিজে এ বস্তু ব্যবহার না করলেও আমার কয়েকজন সহপাঠী এটাতে বিদ্যা চর্চা করতো ।


৬/ ক্যাসেট প্লেয়ার



প্রচলিত অন্যান্ন ক্যাসেট প্লেয়ারের তুলনায় ছোট সাইজের এই প্লেয়ার চলতো মিডিয়াম ব্যাটারিতে । চারটা ব্যাটারিতে ৩/৪ ঘণ্টা চলতো । ইন্টারনাল ব্যাটারিতে চালানো ব্যয়বহুল ছিল তাই অনেকে ৬ ভোল্টের ব্যাটারি দিয়ে এটা চালাতেন ।


৭/ হক/ চান্দা ব্যাটারি



ক্যাসেট প্লেয়ার , টর্চ , দেয়াল ঘড়ি , রেডিও ইত্যাদি ইলেকট্রনিক ডিভাইস চালাতে দেশে তৈরি এক মাত্র ব্যাটারি ছিল , কোহিনূর ক্যামিকেল কোম্পানির চান্দা ব্যাটারি । অনেক পরে এর সাথে হক ব্যাটারি যোগ হয় । এক জোড়ার মুল্য ছিল ৮ টাকা । বড় । মিডিয়াম , পেন্সিল এই তিন ধরণের ব্যাটারি পাওয়া যেতো ।

৮/ রাজা



প্রস্তুতের উদ্দ্যেশ্য যাই হোক আমরা এটাকে বেলুন হিসাবে পেয়েছি । টাকায় ৪ থেকে ৬ টা বিক্রি হতো । বাঁশের বাঁশির সাথে এই বেলুন ফুলিয়ে ফেঁ পু না করলে ঈদ পার্বণগুলি পানসে মনে হত ।


৯/ মায়া বড়ি



এটা ছিল জন্মনিয়ন্ত্রণ ফিল । কাউকে খেতে দেখিনি , তবে ঝুরানি বা রানিখেত রোগে এই বডি মোরগ মুরগীকে খাওয়ানো হত ।

১০ / বলাকা ব্লেড



চুল কাটা বা শেভের কাজটা সাধারনত ক্ষুর দিয়েই সারানো হত , কেউ এই কাজে বা অন্য প্রয়োজনে ব্লেডের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে বাজারে ছিল এই ব্লেড ''বলাকা।'' পিচ ৫০ পয়সা ।


সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬
৩৯টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×