somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

-চাল আমদানী : জাতীর জন্য নতুন চমক!-

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর আগে একটি পোষ্টে বলেছিলাম, চাল নিয়ে চালবাজি’র কথা। যেখানে চাল রাফতানির রেকর্ড গড়তে শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশে চাল রাফতানির যে হিড়িক পড়েছিলো, তার অল্প কিছু দিনের মধ্যে জাতী দেখতে পেলো আরো নতুন এক তাকলাগানো চমক! {(আমার মহল্লার সরকার সমর্থক বেশিরভাগ ব্যক্তিরাই অনেকের নাম ধরেই বলে যেতে পারি কিন্তু না...এই চাল রাফতানি নিয়ে কতই না গর্ব করে বলেছেন, এই সরকার ছাড়া এটা অন্য কোনো সরকারের পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না! তারমধ্যে একজন তো প্রায়ই বলতেন, এই সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন দেশেরও মঙ্গল-তারও মঙ্গল! আমি একদিন ওনাকে প্রশ্ন করলাম, আচ্ছা-সরকার আপনার (আওয়ামীলীগ সমর্থনকারীদের) জন্য দৈনন্দিন ব্যবহারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম কি কমিয়ে দিয়েছে!? নাকি সবাই যেভাবে কিনতে হয়, কিংবা পরিশোধ করতে হয়, আপনি ঠিক সেইভাবে করেন!? কোনো উত্তর নেই কিন্তু তাও আওয়ামীলীগ তাঁর জন্য সব সময় মঙ্গল বয়ে এনেছে এইদেশে!)} অথচো এখন প্রায়ই খবরে দেখতে পাই, প্রতিনিয়তিই চাল আমদানী করে খাদ্যে যোগান দেয়ার কথা। খাদ্যে নাকি স্বয়ংসম্পূর্ণতা পেয়েছে বাংলাদেশ, এতোদিন পর্যন্ত এসব খবর প্রকাশ করে আসছিলো সরকারসহ তৎমহলগুলো। এখন বলছি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবি কতটা যৌক্তিক, কতটা রাজনৈতিক, সেটা মূল্যায়নের সময় এসেছে বলে মনে করি। একদিকে চাল রফতানির খবর শোনানো হচ্ছে আপামোর জনসাধারণকে, অন্যদিকে খাদ্যে যোগান দেওয়ার জন্য আমদানিও করা হচ্ছে ঢালাওভাবে! এখানে জনগণ ও কৃষকদের আড়ালে রেখে পরিকল্পিতভাবে দেশে ঢোকানো হচ্ছে ভারতীয় চাল! এতে দেশী চাল বিক্রি করতে পারছেন না কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এমন অবাধ আমদানির প্রভাবে এবার বোরোর উৎপাদন কমে যাবে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। এবার আমনের দামও তেমন পাননি কৃষকরা। বোরোর দামও যদি না পান তাহলে কৃষকেরা বিপন্ন হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবে দেশে খাদ্যনিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে, এমন আশংঙ্খাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইতিমধ্যে শুল্কারোপের মাধ্যমে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে উৎপাদন বাড়ানোর দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

দেশের বেশির ভাগ কৃষকই পাইকারদের কাছ থেকে বিনাসুদে ঋণ নিয়ে ধান আবাদ করেন। শর্ত থাকে, ধান উঠলে বাজারদামে ওই পাইকারের কাছে ধান বিক্রি করবে। পাইকাররা এই ধান দেয় নিদিষ্ট চালকলে। এসব চালকল থেকে টাকা নিয়েই পাইকাররা কৃষকদের দেয়। তবে এবার ব্যাপক হারে আমদানির কারণে চালের দাম কৃষকদের অনুকূলে নেই। এজন্য মিল মালিকেরা চাল বিক্রি করতে পারছেন না। চাল বিক্রি করতে না পারায় মিল মালিকেরা টাকা দিতে পারছে না। কৃষকেরা বাধ”্য হয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে যাচ্ছেন। তারা মহাজনের জালে আটকা পড়ে যাচ্ছেন। সময় মতো টাকা না পাওয়ায় অনেকেই ঠিক মতো সার ও সেচ দিতে পারেননি। বাংলাদেশের বাজারে ডার্ম্পিং করে ভারতীয় চাল ঢোকানো হচ্ছে, এমন অভিযোগ ধানকল মালিকদেরও। বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সংশ্লিষ্টরাও মনে করেন। এখন চরম খারা অবস্থা মিল মালিকদের। বাজার দখলে কম মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। কম দামে ভারত থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। ইমোর্ট ডাম্পিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন আমদানিকারকেরাও।

অন্যদিকে দুই মন্ত্রণালয় আবার দু’ধরণের ধারণা পোষণ করেন। ফলে পুরো বিষয়টি রাজনৈতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর খেসারত গুনছে ব্যবসায়ী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ। বিশেষত কৃষিপ্রধান দেশটিকে ভারতীয় চালের বাজারে রুপান্তর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি বয়ে আনা ছাড়া আর কিছুই উপহার দিবেনা। এ ব্যাপারে ভারসাম্য রক্ষা করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আশা করছি, নীতিনির্ধারকরা এ ব্যাপারে জাতীয় স্বার্থের অনুকূলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। অন্যথায়, দেশকে ধীরে ধীরে ১৯৭৫ সালকেই বরণ করে নিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৫৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×