somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

-আজ পহেলা বৈশাখ : প্রাণের উৎসবের বৈশাখ-

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগামীকাল, রোজ মঙ্গলবার, তারিখ ১৪.০৪.২০১৫ইং। আজ পহেলা বৈশাখ। নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন। বৈশাখী উৎসবের মধ্যে দিয়ে বাঙ্গালি তার শিকড় খুঁজে পায়। জীবন সংগ্রামী মানুষগুলো প্রতিনিয়ত বাঙ্গালিয়ানার যে নিজস্বতা আছে সেটা ধরে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে। বৈশাখ, এই কাজে উদ্দীপনা দেয়। পয়লা বৈশাখে প্রকৃতিও যেনো নতুন জীবন ফিরে পায়। তাই এইদিনে সকলে পান্তা ইলশ খেতে খেতে হয়তো সুর তুলে একসাথে গেয়ে ওঠে-‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল/আমাকে তুই বাউল করে সঙ্গে নিয়ে ছল’। বৈশাখ বাঙ্গালীর জীবনে এক বড় সুখের সময়। এইসময় উদ্দীপ্ত ও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে জীবন। এই উদ্দীপনা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। বাঙ্গালীর হৃদয় ও মনে উৎসবের যে আমেজ ছড়িয়ে পড়ে তা নানা ধরনের কলুষতার মধ্যেও নবীন আবেগ সঞ্চার করে। প্রাণের আবেগ নিয়ে বেঁচে ওঠার প্রেরণা দেয়। বৈশাখের এইদিনে ঢাকার রাজপথ রঙ্গিন রুপ ধারন করে। লাল নীল আলোক সজ্জায় নয়, প্রকৃতির আলোতে সজ্জিত হয় জীবন। নতুন শাড়ি ও পাঞ্জাবী পরে হাজার হাজার বাঙ্গালী নানা উৎসবের মধ্য দিয়ে নববর্ষকে বরণ করে নেয়। দেশের শিল্প ও সঙস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এই পয়লা বৈশাখ। আমাদের বুটিক হাউজগুলো বাংলা নববর্ষকে আরো সমৃদ্ধ, সুসজ্জিত করেছে তাদের নতুন নতুন দেশীয় ডিজাইনের মাধ্যমে। যা তরুণ-তরুণীদের সাজে আলাদা মাত্রা আনে। এটা ভাবতে বেশ গর্বিত লাগে যে, এই বৈশাখ উদযাপন শুধু আমাদের বাঙ্গালিদেরই উৎসব।

আমাদের সংস্কৃতিতে বারো মাসে তেরো পার্বেণের ব্যাপারটি মিলেমিশে আছে। বেশির ভাগ উৎসবই ধর্মীয় আচার-আচরণ সমৃদ্ধ। বাকি সব উৎসব লোকজ চেতনার ওপর দাঁড়ানো। বাংলা নববর্ষ সে উৎসবের মধ্যে অন্যতম। ছায়ানটের বৈশাখী আহবানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঢাকাই বৈশাখী উৎসব। রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরদোলা, ইলিশ পান্তা, মুড়ি, মুড়কি, খই, ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা কাচের চুড়ি, ঢোল, একতারা, মাটির গয়না, ডুগডুগি আর বাঁশির শব্দে মুখরিত হয় আকাশ বাতাস আর চারুকলার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বর্ষবরণ আয়োজনকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। বাঙ্গালীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি মানুষের কাছে আরো সাবলীল ভাবে তুলে ধরে। প্রতিবারের মতো এবারো সবাই বিভিন্ন দর্শণীয় স্থানে ঘুরে বেড়াবে, পান্তা-ইলিশ খাবে। যেসব যায়গায় বৈশাখী অনুষ্ঠান হয় সেসব যায়গায় গিয়ে অনুষ্ঠান দেখবে। এটা বাঙ্গালীর একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। যদিও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে বাঙ্গালি কি তাদের শিল্প, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ভুলে থাকবে? এ বছর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপিত হয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারী, স্বাধীনতা দিবস, নারী দিবস। সেভাবেই উদযাপিত হবে নববর্ষ। আশা করছি সবকিছু ঠিকঠাকমতোই হবে। প্রতিবারের মতো এবারো সবাই সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবটি উদযাপন করবে। এই উৎসব সার্বজনীন। এই দিনে ভুলে যাবে সব ভেদাভেদ, হিংসা-বিদ্বেষ।

এ বছর ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হবে। দুই মাসেরও অধিক সময় ধরে সারা দেশে চলছে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। নানা হাঙ্গামায় মানুষ নিহত হয়েছে, হচ্ছে। আহত হয়েছে অনেক নারী, পুরুষ ও শিশু এবং হচ্ছেও। রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে দুর্ঘটনায় মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এছাড়াও আছে রোগ-শোকসহ নানান অস্থিরতা। তারপরেও নতুন বাংলা বছরের আবেদন সকলের কাছে আলাদা এক বৈচিত্রময়। নতুন বছর মানুষকে নতুন করে উজ্জীবিত করে বাঁচতে শেখায়। তাই, নববর্ষের প্রথম দিন সবাই উদযাপন করে প্রাণভরে। নববর্ষের প্রথম দিন সবার জন্য শুভ হোক এবং ভরিয়ে দিক সকলের প্রাণের চাহিদা। শুভ বাংলা নববর্ষ-১৪২২ বঙ্গাব্দ।
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×