somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল-কায়দার পর আইএস জুজুর ভয়, লড়াই পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আল-কায়দার পর আইএস জুজুর ভয়ে আলোড়িত বিশ্ব সম্প্রদায়। মধ্যপ্রাচ্যে কয়েকবছর আগে আবির্ভূত আইএস নামে নিষ্ঠুর ও মানবতাবিরোধী সংগঠন আইএস কি করে এতো দ্রুত বিভিন্ন দেশে তাদের মতবাদের পক্ষে তরুণ মুসলিম ও নও-মুসলিমদের টানছে, তা দেশে দেশে দুঃশ্চিতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিকট অতীতে যেমন ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের মাথা ব্যথার কারণ হয়েছিল আল কায়দা। বর্তমানে খুবই সীমিত পর্যায়ে আল-কায়দা’র কথা শুনাে গেলেও মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক আইএস অপকর্মের জোয়ারে এখন তা’ ঢাকা পড়ে গেছে। একদিন হয়ত আইএস নামের দানবের গতিও রোধ হবে। কিন্তু পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে এসব সন্ত্রাসীর অপকর্মের খেসারত আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের শান্তিপ্রিয় ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষকেই দিতে হবে। বাংলাদেশী মুসলমানদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন আইএস’র সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এক ব্রিটিশ বাংলাদেশী পরিবারের সকল সদস্য এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য ছেড়েসিরিয়ার আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চলে গেছে। আরেক বাংলাদেশী তরুণ তথ্য প্রযুক্তিবিদ আইএস’র সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করতে গিয়ে সেখানে আমেরিকান বিমান হামলায় নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মুসলিম তরুণদের মধ্যে মৌলবাদীদের প্রভাব আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। হরকাতুল জিহাদ, হিজবুত তাহরীর, জেএমবি, আনসার উল্লাহ বাংলা টিমসহ বিভিন্ন নামে মৌলবাদীরা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এরা সংগঠন হিসেবে পৃথক হলেও জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের সাথে কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন। কারণ শায়খ আব্দুর রাহমান ও সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলাভাই আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক এবং তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পর জেএমবি প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন মাওলানা সাইদুর রহমান। তিনি এক সময় হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর ছিলেন। অবশ্য সেসময় জামায়াত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল মাওলানা সাইদুর রহমান একসময় তাদের নেতা থাকলেও তাকে বহিস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ যা বুঝার বুঝে নিয়েছিল।
বাঙালীরা ধর্মভী রু, ধর্মান্ধ নয়- দীর্ঘদিনের এই সুনামের কথা আজ আমরা আর জোর গলায় বলতে পারি না। কতিপয় মৌলবাদীর অপতৎপরতা ও প্রগতিশীল মত পথের মানুষের প্রাণনাসের ঘটনায় হাজার বছরের কৃষ্টি-ঐতিহ্য চোকখর সামনে ধূলিস্মাৎ হতে দেখেছি। যা’ একজন বাঙালী হিসেবে আমাকে খুবই আহত করেছে। গতবছর আইএস’র ডামাঢোলে বাংলাদেশে সংগঠিত কয়েকটি ঘটনার পর দেশে আইএস আছে কি নেই, তা নিয়ে বির্তক শুরু হয়। সরকার দৃঢ়ভাবে বলতে শুরু করে বাংলাদেশে কোনো আইএসআই নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবেও মনে করি দেশে আইএসএ'র কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে দেশে তৎপর মৌলবাদী সংগঠনগুলোরই কোনটি তাদের পিঠের চামড়া বাঁচানোর জন্য অপকর্ম করে আইএস’র নামে চালিয়ে দেয়। মৌলবাদী এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে আইন-শৃংখলা বাহিনী সদা তৎপর থাকায় তাদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই বলে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। যেকোন সময় এরা মাথা ছাড়া দিয়ে উঠতে পারে। আমাদেরকে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে ও নাগরিক সমাজের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। আমাদের আত্মউপলব্ধি করতে হবে, কিভাবে ঘৃণা ছড়ানো এসব অপকর্ম প্রতিহত করা যায়। কিভাবে তরুণ প্রজন্মকে এসব অপশক্তির খপ্পর থকে রক্ষা করা যায়।
আসলে পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ছাড়া কোন চরমপন্থী-মৌলবাদী কার্যক্রমই দমন করা সম্ভব নয়। সেজন্য প্রথমে নিজেদের সন্তান ও অধীনস্থদেরকে আমাদের প্রত্যেককে সময় দিতে হবে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় তারা কি করছে তা’ অভিভাবক হিসেবে প্রত্যককে খোঁজ রাখতে হবে। একইসাথে তাদের কাছে ইসলামের সুমহান বাণীকে যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে হবে, যাতে তাদের মনোজাগতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি দরদী সমাজ প্রতিষ্ঠিত করা যায়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসর থেকে এভাবেই একটি শান্তিময় নাগরিক সমাজ-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এমন বিশ্বাসের সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে পারলে আমাদের পরিবারের বা সমাজের কেউ মানবতাবিরোধী চরমপন্থার সাথে যুক্ত হতে পারবে না। আর এর সুফল আমরা ধীরে ধীরে রাষ্ট্রীয় প্রতিটি পর্যায়েও পাব।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×