somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম শান্তির/অশান্তির ধর্ম নিয়ে ব্লগার আরিফুর রহমানের সাথে আলোচনা।

০৫ ই মে, ২০০৮ রাত ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ্যারি সেলডন বলেছেন: আরিফভাই দেখি খালি মেইনস্ট্রীম জার্নালিজমের উপরই ভরসা করেন। কিছু অল্টারনেটিভ স্ট্রীমের জার্নালিজমের কথাবাত্রা শুনেন। টেড টার্ণারের সিএনএন আর জুইশ লবির ফক্স নিুজ/বিবিসি মনে হয় জামাতিদের মত আপনারও ব্রেণওয়াশ করে দিছে। কাউন্টার-পান্চ পড়েন। এডওয়ার্ড সাইদ আর নওম চমস্কিরা লিখেন। তারপর বুঝবেন গোয়েবলস কারে বলে। আপনার পোস্টগুলোতে নিরপেক্ষভাবে ইসলামকে যাচাই করার প্রতি চরম অনীহা দেখা যায়। মিডিয়া-ড্রিভেন মতামত বেশিরভাগই। ইউ-এস পলিটিকস এন্ড ইসরাইলে লবি- এমাযনে সার্চ মারেন। হার্ভার্ড আর কলাম্বিয়ার প্রফেসরের একটা খুব বিখ্যাত বই আছে, ওটা পড়েন।



লেখক বলেছেন: হেরি,
ইসলাম কি জিনিস সেটা বুঝতে খুব বেশি ঘাঁটাঘাটির কি দরকার আছে? বিশেষতঃ ইদানীংকার ইসলাম? আমি পছন্দ করি সেই ইসলাম ইমাম গাজ্জালীর আগে যেটা ছিলো, যাতে মানব সভ্যতা হঠাৎ করে অনেকদুর অগ্রসর হয়েছিলো বিজ্ঞানমনষ্কতার কারনে। খ্রীষ্টান আর চেঙ্গিস খানের মার খেয়ে সেই যে ইসলাম পড়লো, যেটা তারপর উঠে দাড়ালো সে্টা এতোই পুতিগন্ধময় আর কুপমন্ডুকতায় ভরা যে মৌলবাদি ইসলাম যে সমাজে গেছে সেই সমাজই অবক্ষয়ের এক এক টা ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। তুমি কোন একটা কারনে মুক্তচিন্তার হয়েও দেখা যাচ্ছে এইসব সৌদি লবির প্রোপাগান্ডা বিশ্বাস করো। তোমার রিডিং লিস্টের জন্য ধন্যবাদ।


হ্যারি সেলডন বলেছেন: আরিফভাই, সৌদী লবীর প্রোপাগান্ডায় বিশ্বাস করিনা। কারণ সৌদীআরবে ইসলাম নেই। তাছাড়া সৌদী শেখরা নাতিনের বয়সী মেয়ে আর মদ নিয়ে ব্যস্ত। প্রোপাগান্ডা করার জন্য তাদের সিএনএন অথবা ফক্স নেই। নিউইয়র্ক টাইমস অথবা টাইম/নিউজউইক নেই। আল-জাজীরা আমি দেখিনা, আরব বিশ্ব ছাড়া অন্য কেউ দেখেনা কারণ এটা আরবীতে। তাই তারা কিভাবে প্রপাগান্ডা করতেছে সেটা জানিনা। আমি তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের মত সাম্রাজ্যবাদীর সবচেয়ে বড় দালাল হিসেবে জানি। সৌদী আরবের শাসক গোষ্টী যেহেতু অবৈধ শাসক তাই ক্ষমতায় থাকার জন্য তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের মনোরন্জন করতে হয়, তাছাড়া তার ওয়াহাবী।
"ইসলাম কি জিনিস সেটা বুঝতে খুব বেশি ঘাঁটাঘাটির কি দরকার আছে? বিশেষতঃ ইদানীংকার ইসলাম? "

এই কথাটা একদম মানতে পারলামনা। ইসলামের আওতা যে অনেক বড় সেটা নিশ্চয় স্বীকার করবেন। তাহলে ইসলামকে জানার জন্য ঘাটাঘাটি করতে হবেনা? কোন বিষয়কেই তার ভিতর থেকে ভালমতে না জানলে দৃষ্টিভংগী নিরপেক্ষ হয়না। এন্থ্রপলজির গবেষণার ক্ষেত্রে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে যে জনগোষ্টীর উপর গবেষণা করা হবে তার ভিতরকার রুপ জানার জন্য সে জনগোষ্টির মানুষের সাথে গিয়ে অনেকদিন থাকতে হবে। তাদেরকে ইনসাইড-আউট জানতে হবে। ইসলামকে জানার জন্য, এমনকি আপনি ইসলামের বিরুদ্ধে বলতে চাইলেও, ইসলামকে ইনসাইড-আউট জানার প্রয়োজন আছে। নাহয় আপনার ইসলাম-বিরোধী লেখাগুলোর কোন ডেপথ থাকবেনা।
তাছাড়া ইদানিংকার ইসলাম বলতে কিছুই নেই। হিটলার কিন্তু খ্রীষ্টান ছিল, তাই বলে কি খ্রীস্টিয়ানিটিকে হিটলার দিয়ে যাচাই করা যাই? কিছু মানুষের কর্ম দিয়ে সম্পূর্ণ জনগোষ্টীর বিচার করার প্রয়াসটা ধোপে টেকেনা। মাদার তেরেসাও খ্রীস্টান ছিলেন। একইভাবে স্টালিনও নাস্তিক ছিলেন আবার আমার প্রিয় আহমদ শরীফও নাস্তিক ছিলেন, যিনি তার বাসার কাজের মেয়েকে নিজের মেয়ের মত ট্রিট করতেন। ত আপনি কি স্টালিন যে ট্রটস্কির মত অসাধারণ মেধাবী এবং নিবেদিত কম্যুনিস্টকে হত্যা করেছিল তাকে দিয়ে সমাজতন্ত্রকে বিচার করবেন? সমাজতন্ত্রের ব্যর্থতাটা কি মার্ক্স আর এংগেলের দোষ? সেটা কি যারা প্রয়োগ করতেছে তাদের দোষ নয়?

"খ্রীষ্টান আর চেঙ্গিস খানের মার খেয়ে সেই যে ইসলাম পড়লো, যেটা তারপর উঠে দাড়ালো সে্টা এতোই পুতিগন্ধময় আর কুপমন্ডুকতায় ভরা যে মৌলবাদি ইসলাম যে সমাজে গেছে সেই সমাজই অবক্ষয়ের এক এক টা ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে।"

এ বিষয়ে একমত। চেংগিস খানের নাতি বাগদাদে কিন্তু ইসলাম গ্রহণ করেছিল এবং পরবর্তীতে ইসলাম প্রচারের জন্য ব্যাপক কাজ করেছিল। আমি মুক্তচিন্তার অধিকারী কিনা জানিনা তবে আমি জানি মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস তার নিজের প্রাণ। যখন সে সেটা দিয়ে দিচ্ছে সামথিং মাস্ট বি টেরিবলি রং! আজকে আল কায়েদা থেকে শুরু করে আমাদের জামাতি ইসলামী সব কিন্তু আমেরিকার সৃষ্টি।

আপনি ইসলাম যে শান্তির ধর্ম না সেটা প্রমাণ করার জন্য কিছু উগ্র মুসলিমের কান্ডকারখানার লিস্ট দিয়েছেন। আর তার মাধ্যমে প্রমাণ করতে চেয়েছেন ইসলাম শান্তির ধর্ম না। আপনি কি ক্রুসেডের ইতিহাস পড়েননি? না পড়ে থাকলে পড়ে দেখার অনুরোধ করব। মুসলমানরাও জেরুজালেম জয় করেছিল আর খ্রীস্টানরাও করেছিল। জয়ের পর বিজিতদেরকে কিভাবে দুপক্ষ ট্রিট করেছিল সেটা দেখবেন।

শেষে আরেকটা কথা বলি। আমাদের ব্লগে দেখবেন আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করি তাদের মধ্যেই গালিবাজি বেশি। ড়াজাকাররা গালিবাজি খুব কমই করে। তাতে কি প্রমাণ হয় যে ড়াজাকাররা শান্তিতে বিশ্বাসী? ড়াজাকাররা নিয়মিতভাবে আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের চেতনা যা কিছু আমরা বুকে লালন করি সবকিছুকেই নিয়মিত আক্রমণ করে। আর কর্তৃপক্ষ বসে বসে দেখে, কিছুই করেনা, যদিও ইদানিং কিছুটা হলেও অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তো ড়াজাকারদের এহেন ঘৃণ্য কর্মে আমরা আক্রোশে ফেটে পড়ি আর কিছু না করতে পারার যন্ত্রণায় ছটফট করি। মাঝে মাঝে সহ্য করতে না পেরে গালিগালাজ করে ফেলি আর ব্যান খায়। মুকুলের মত ঠান্ডা মাথার মানুষ, বিমা, মানু'র মত ব্লগার ব্যান খায়। কেন?
তারপর জামাতিরা সেই কয়েকটা গালিবাজির কমেন্টকে স্ক্রীনশট নিয়ে বারবার দেখায় যে আমরা গালিবাজ! ৯/১১ এ হামলার পর সিএনএন এ দেখিয়েছিল যে প্যালেস্টাইনিরা আনন্দ করতেছে। অথচ পরে ধরা পড়েছে ক্লিপসটা ছিল অনেক আগের!!
যেই মুসলমানগুলো এরকম উগ্রতা করতেছে তারাও একই অবস্থার শিকার। বছরের পর বছর শতাব্দীর পর শতাব্দী তারা অত্যাচারিত হয়ে আসছে। তাদের নিজেদের শাসকগুলো সব নপুংসক। তাহলে তারা কি করবে? ইরাকে লক্ষাধিক লোক মারা যাচ্ছে অথচ তাদের কি দোষ? প্যালেস্টাইনের মানচিত্রটা দেখেছেন? আপনি ৪৭ আর ২০০৮ এই দুই মানচিত্রটা দেখেন। তারপর বুঝবেন অন্যায় অত্যাচার কাকে বলে। তাহলে তাদের যদি প্রচন্ড আক্রোশ হয় আর তাতে মানুষ হত্যা করে ইন্টারনেটে বিলি করে দোষ দিবেন কেমনে? আমি কোনমতেই এটা সাপোর্ট করিনা। কিন্তু আমি নিজেকে তাদের স্থানে বসিয়ে দেখি তারপর বিচার করি। আমাদের স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানিরা কোন মুক্তিযোদ্ধার মা-বোনকে ধর্ষণ করল, তার পিতাকে-ভাইকে হত্যা করল। এরপরে মুক্তিযোদ্ধা যদি কোন পাকিস্তানি সৈন্যকে হাতে পায় তাহলে সে কিরকম প্রতিক্রিয়া দেখাবে। যখন অত্যাচারিত মানুষ সামান্য ক্ষমতা পায় অথবা প্রতিশোধের সামান্য সুযোগ পাই তখন সে মানুষ থাকেনা। তার মাঝে পশুর হিংস্রতা ভর করে।


অলটারনেটিভ জার্নালিজম লিংক(টু বি আপডেটেড):
১। কাউন্টার-পান্ঞ
২।অমর্ত্য সেনের আইডেনটিটি এন্ড রিলিজিয়ান এক্সার্পট।
৩।শিকাগো এবং হার্ভারডের প্রফেসরের লিখিত বই "ইসরায়েল লবি এবং ইউএস ফরেন পলিসি"
৪। নওম চমস্কির আর্টিকল
৫।নওম চমস্কি আর্টিকলস কালেকশান
৬। এডওয়ার্ড সাইদ: ইসলাম থ্রু ওয়েস্টার্ণ আই'জ।
৭।
৯/১১ এর উপর নওম চমস্কির সাক্ষাতকার
৮। ৯/১১ কাউন্টার-পান্ঞ কাভারেজ।
৯।তারিক আলি।
১০।ডেমক্রেসি নাও।
১১।নওম চমস্কি জি-স্পেস।
১২।যদি আমেরিকানরা জানত!
১৩। প্রতিষ্ঠিত মিডিয়ায় সিলেকটিভ বায়াস এগেন্সট প্যালেস্টাইন।


সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৪
৯১টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×