আপনার পান্ডুলিপি গুলো দেখানো যাবেনা দাদু?
কোন উত্তর না দিয়ে কাঠের আলমারি খুলে দেখাল। চমকে উঠলেন মহিউদ্দীন মিঞা। বললেন এগুল সবি আপনার লেখা বই?
জ্বী।
সোব্হান আল্লাহ্! মনে হয় এক মনেরও উপর হবে কাগজ!
এতো কাগজ লিখে স্তুপ করেছেন। একটি কথাও আপনার পড়ে দেখার সুযোগ পেলনা মানুষ! তার পরেও লিখছেন।
এর স্বার্থকতাটা কোথায় দাদু?
আর কেনই বা লিখছেন? এত কাগজ কেনার পয়সায় বা আসে কোত্থেকে? বইয়ের লেখা গুলো মিটমিটে হয়ে গেছে।
অচিরেই তো এগুলো আর পড়া যাবেনা।
শুনি, কোন কোন প্রকাশক পান্ডুলিপি কিনে নেন। তাদের সংগে কোন যোগাযোগ কয়েছে আপনার?
হয়েছে মিঞাজী।
কি বলেছেন তারা?
কেউ বলেছেন লখার মান ভালোনা কেউ বলেছেন সেকেলে লেখা। কেউ বলেছেন কিছু পয়সা দেব কিন্তু; প্রকাশিত হবার পর। কেউ বলেছেন কিছু পয়সা নিন,বই চলবে চলবে না সেটা আমরা বুঝবো কিন্তু; লেখক হিসেবে আপনি থাকবেন না।
লেখকের কথা গুলোর উপর বেশ কিছুক্ষন চিন্তা করলেন মিঞাজী। তারপর নিঃশ্বাস ফেলে বল্লেন,-মহান আল্লাহ্ পাকই ভালো জানেন,তিনি কেন লিখাচ্ছেন আপনাকে। আচ্ছা একটা কথার বুঝ দিবেন দাদু আমাকে?
বলুন।
লেখকরা লেখেন কেন?
খুব জটিল প্রশ্ন বটে। কতকগুলো মানুষকে মহান আল্লাহ্ লেখার প্রতিভা দিয়ে পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রেরণ করেন।
সাবার মান অবশ্য সমান নয়। এদের মধ্যে কেউ গগন স্পর্শী প্রতিভার অধিকারী, কেউ আবার নিজ দেশ ও সমাজে সঞ্চারণকারী। কেউ লেখার সকল ক্ষেত্রেই দক্ষ, কেউ আবার দুই একটি পথের যাত্রী।
যেমন দাদু?
ধরুন, শ্রী রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর। লেখার এমন এককিট দিক নেই যেখানে তার কলম ক্রিয়াশীল নয়। আবার শ্রী শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায় কেবল মাত্র ছোট গল্প,উপন্যাস লিখেই ক্ষান্ত। নজরুল ইসলাম কাব্য,উপন্যাস নিয়েই ক্ষান্ত। নজরুল ইসলাম কাব্য রচনা করে যে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তার চেয়ে গৌরভ অর্জন করেছেন গান ও গজল লিখে।
কবি সম্রাট তো কোন মহা কাব্য লিখেননি দাদু; কেন লিখেন নি এ সম্পর্কে কিছু বলবেন?
আমার বিশ্বাস, তিনি ভাবতেন,-মানুষ মহা কিছু সৃষ্টির ক্ষমতা রাখেনা। এটা শুধু মহান স্রষ্টার দারাই সম্ভব। তাই তিনি এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেননি। কারণ;-মানুষ ভূল করে। ভূল হয়না একমাত্র মাহান স্রষ্টার।
যেখানে ভূল পরিলক্ষিত হয়,-তা মহা নামে আক্ষায়িত হতে পারেনা।
যেমন দাদু;
যেমন আলকুরআন। এর লেখক কোন মানুষ নয়। স্বয়ং আল্লাহপাক জীবরাঈল আমীন দ্বারা প্রেরণ করেছেন আখেরী মহা নবী (দঃ) এর নিকট। তিনি অহীগুলো তার বক্ষে ধারন করে ছিলেন, লিপিবদ্ধ করে ছিলেন হযরত আলী, হযরত মুয়াবিয়া ও খালিদ বিন ওয়ালিদ। কিন্তু তার কেউ কবি বা লেখক নামে পরিচিত নন। সে যুগের ভাষায় তাদের মুন্সী বলা যেতে পারে।
যেমন,- এখনও প্রতিটি থানা পুলিশ অফিসে একজন মুন্সী নামে সেরেস্তাদার দেখা যায়। কিন্তু প্রকৃত লেখক হচ্ছেন কবি ও সাহিত্যক। এদের লেখায় দেশ ও সমাজ গড়ে উঠে, এদের লেখায় দেশ ও জাতী ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে। এজন্যই বলা হয়েছে কবি ও সাহিত্যিক হচ্ছে দেশের উন্নতির মূল চাবী। যে দেশের সাহিত্য যতক উন্নত সে দেশ ততটুকুই উন্নত।
তা বুঝলাম কিন্তু; আমার প্রশ্নের জবাব পেলাম কই দাদু?
প্রসংঙ্গত অন্য দিকে চলে গিয়েছি ভাই। এবার আপনার প্রশ্নের
দিকে ধাবিত হলাম।
(চলবে.....)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




