স্বপ্নের দেখা শেখ রাসেল
মোঃ হুমায়ূন রেজা
দেখিনি তোমারে দাদু, কখনো জীবনে,
আমার পাপে ঘেরা এই দুই নয়নে;
কেন বলতো দিলে দেখা আজ স্বপনে?
দেয়ালে দেখেছি অনেক ছবি তোমার
কিন্তু; হইনিকো বিহ্বল এমন ভাবে,
তোমার মরণ-ছবি কেমনে আঁকিব
আমার কলম তুলিতে? পিতা মাতা ও
ভাই ভাবী, সকলের লাশ স্তুপিকৃত
ক‘রে এক ঠাঁয়; খুঁজিছে তোমারে ক‘রে
লিখি লিখি শালা রাসেল গেল কোথায়?
কহিল পাষণ্ড কর্ণেল ফারুক, দেখ
পালঙ্ক-তলে; নিশ্চয় শালা লুকাইয়া
আছে; বিপদে পড়িব সর্প মেরে লেজ-
জিন্দা রাখিলে। টর্চ মেরে ডালিম দেখে
বেটা, এইখানে তুই লুকিয়ে আছিস?
বেরিয়ে আয়, বাঁচবি কি তুই লুকিয়ে
থেকে? আমার নাম ডালিম, পশুরাজ-
সিংহ সেও ভয় পায় আমারে দেখে
তোরাতো মুসিক ছানা মাত্র, হানাদার
পাক বীরেরা নামটি শুনিলে ঢুকেছে
বাঙ্কার গর্তে। কান ধরি টানি করিয়া
বাহির লাথি মারি বুকে ফেলে মাটিতে!
কাকু-কাকু, পায়ে ধরি আব্বু, পানি দাও
বুক মুখ আমার পিপাসায় শুকিয়ে
গেছে। মোর মার কাছে যাবো আব্বু জান;
পায়ে ধরি আব্বু; বাঁচাও আমার প্রাণ!
আমি শপথ নিচ্ছি রবনা এই দেশে
চলে যাবো সুদূর লন্ডনে, অতি দূরে-
না হয় তেপান্তরে। শুনি কথা ফারুক
মেরে দিল লাথি বক্ষপরে; পড়ে গেল
রাসেল চিৎ হয়ে, আর উঠিতে নারে!
বাক-রহিত বাছা কাঁপে শুধু থরালে।
পানি শব্দটি মাত্র অস্ফুটে করিলেক
বাহির; আর কিছু নাহিকো বাছা বলে!
বৃথা সময় করনা ক্ষেপন ডালিম;
কাজ সাঙ্গ করি চল দ্রুত যাই চলে।
কথা শুনি পামর উঠায়ে শূণ্যে তারে
স্তুপিকৃত লাশের উপর আছাড়টি-
স্বজোরে মারে; অর্দ্ধমৃত রাসেল সেথা
মৃত মায়ের বুকেরই উপর পড়ে।
রক্ত জমাট বেধে গেছে বরফ-মত
হাঁটু বরাবর হইয়া ঐসে ঘরে।
বিড়াল ইঁদুরের খেলা খেলনা বন্ধু;
শেষ করে ফেল তোমার যেইটি কাজ;
বেয়ানট মারিল ডালিম বক্ষমাঝ!
সমাপ্ত