আবেগ ও রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিহার করে ঠান্ডা মাথায় পড়ে কমেন্ট করুন।
নারায়নগন্জ্ঞের ৭ খুনের মামলায় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারে হাইকোর্টের নির্দেশ আজ আংশিক বাস্তবায়ন হলো। লেঃ কমান্ডার এম এম রানাকে এখনো গ্রেফতার করতে না পারায় পরিপুর্ণ বাস্তবায়ন এখনো সম্ভব হয়নি। আজ সকালে নিজের কাজ শেষে দুপুরের দিকে এ বিষয়ে কোন খবর আছে কি না তা জানতে টিভি খুলেই খবরটা পেলাম। এরপর বিস্তারিত জানতে সময় খবর দেখতে দেখতে শহীদুল ইসলাম নামক একজন ভদ্রলোকের (প্রত্যক্ষদর্শী বলে জানানো হয়) ছোট্ট সাক্ষাৎকার সময় টিভিতে দেখালো। সেখানে তিনি বললেন যে তিনি তার মেয়েকে নিয়ে স্কুল থেকে আসছিলেন। সে সময় ফতুল্লা স্টেডিয়ামের ওখানে র্যাবের তিনটি মাইক্রোবাস দাড়িয়ে ছিলো যেখানে পোষাকধারী জনা বিশেক র্যাব সদস্য ছিলো যাদের দেখে তিনি মনে করেছিলেন একটা চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। সেখান থেকে কয়েকজনকে পুলিশের চেয়েও ছোট পিস্তল এর বাট দিয়ে মাথার আর ঘাড়ের পেছনে আঘাত করতে করতে র্যাবের HIACE মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
এরপর গণশুনানীর উপরের প্রতিবেদনে এক ভদ্রলোক স্বাক্ষাৎকারে বলেন যে, ভিকটিমদের নূর হোসেনের মাইক্রোবাসে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
এখানে প্রণিধানযোগ্য যে একজন বলছে র্যাবের মাইক্রোবাসে উঠানো হয়েছে আরেকজন বলছে নূর হোসেনের মাইক্রোবাসে উঠানো হয়। এবার আমরা আসি এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের কি কি কারন বা ফাঁক-ফোকর এবং প্রশ্ন থাকতে পারে।
ক। র্যাব নূর হোসেনের একটা মাইক্রোবাসে র্যাব এর স্টিকার লাগিয়ে দিয়েছিলো যার কারনে শহীদুল ইসলাম নামক প্রত্যক্ষদর্শী ঐ মাইক্রোবাসকে র্যাব এর গাড়ী মনে করেছে।
খ। নূর হোসেন নিজের মাইক্রোবাসে র্যাবের স্টিকার লাগিয়েছিলো যার কারনে যার কারনে শহীদুল ইসলাম নামক প্রত্যক্ষদর্শী ঐ মাইক্রোবাসগুলোকে র্যাব এর গাড়ী মনে করেছে। কিন্তু পোষাকধারী র্যাবের উপস্থিতি এ বিষয়টাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
গ। স্তবক খ এর আলোচনা থেকে প্রশ্ন আসবে, র্যাব কি দিনে-দুপুরে ইউনিফরম পরে গ্রেফতারের নামে অপহরণ করার মত বোকামী করবে? এখানে তো অনেক স্বাক্ষী চলে আসবে।
ঘ। হয়ত শহীদুল ইসলাম নামক প্রত্যক্ষদর্শী আসলে কোন প্রত্যক্ষদর্শী নয়। হয়ত তিনি একজন সাজানো স্বাক্ষী।
ঙ। গণশুনানীর স্বাক্ষী হয়ত র্যাব এর গাড়িকে নূর হোসেনের গাড়ী বলে ভুল করেছেন।
চ। গণশুনানীর স্বাক্ষী হয়ত মিথ্যা বলছেন। হয়ত তিনি একজন সাজানো স্বাক্ষী।
ছ। হয়ত ২ জনেই সঠিক স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন, শুধু গাড়ী চিনতে ভুল করেছেন বা সন্দেহে পড়েছেন।
জ। হয়ত ২ জনেই মিথ্যা, সাজানো স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন।
এর বাইরেও কিছু সম্ভাবনা থাকতে পারে। হয়ত তারেক সাইদ মোহাম্মদ শ্বশুরের খুঁটির জোরে বা নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে একজন ঘড়তেরা মানুষ ছিলেন এবং এলাকার বড় গডফাদারকে পাত্তা দিতেন না। হয়ত ঐ বড় গডফাদার ছোট দুই মাফিয়ার মধ্যে গন্ডগোল লাগিয়ে একজনকে দিয়ে ারেকজনকে খুন করিয়ে, খুনীকে দেশছাড়া করে তাদের ব্যাবসা নিজ নিয়ন্ত্রনে নিয়ে লেঃ কর্ণেল (অবঃ) তারেককে ফাসিয়ে তার বিরুদ্ধেও একহাত দেখে নিচ্ছেন। হয়তবা এটাও একটা নিছক কল্পনা।
উপরের অনেক অপশন থেকে ২/৩ টা হয়ত সঠিক হবে। বাকীগুলো অবশ্যই ভুল হবে।
সমস্যা হলো বাংলাদেশের পাবলিকরে নিয়ে এত বেশী সাপলুডু খেলা হয় যে যা দেখানো বা শোনানো হয় তাকেই সত্য বলে মেনে নিতে অনেক কষ্ট হয়। আমার মনে হয় এখানেও সাপলুডু খেলা হতে পারে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




