somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমগ্র মানবজাতিকে ঐক্যে আনবে যে পদ্ধতি

১২ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


৩য় ভাগ(মুসলিম উম্মার ঐক্য)
পূর্বেই বলা হয়েছে পৃথিবীর সকল ধর্মগুলোর মাঝেই আলাদা আলাদা ভাবে কি করে ঐক্য আনা যায় তা স্বল্প পরিসরে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয় তাই উদাহরন হিসেবে যেকোন একটি প্রধান ধর্মকে বেছে নিয়ে সেই ধর্মের মাঝে কিভাবে ঐক্য আনা হবে সেটির মুল থিম যখন দেখানো হবে তখন অন্যান্ন ধর্মগুলোর পক্ষেও সহয হবে কি করে তারাও তাদের ধর্মের মাঝে ঐক্য আনবে । তাই ধর্মীয় ঐক্যের আদর্শ হিসেবে অন্যসব ধর্ম বাদ দিয়ে কেন একমাত্র মুসলিমদেরই ১মে উদাহরন হিসেবে আনা হল তার কিছু কারন নিচে বর্ননা করা হল- ১) একমাত্র মুসলিমদেরই প্রধান ধর্মগ্রন্থ আজও মুল ভাষায় অবিকৃত পাওয়া যায় ২) মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থগুলো সবাই খুব সহযেই পড়তে পারে আর এতে মুসলিমরা বাধা না দিয়ে বরং অন্যদের আরো উতসাহিত করে । ৩) ইসলাম ধর্মই আজকের বিশ্বে সবচেয়ে বেশী আলোচিত এবং সমালিচিত ধর্ম । এবং ৪) ঐক্য,ভ্রাতৃত্ব ইসলাম ধর্মের বড় একটি অংশ হলেও এই ধর্মের মাঝেই আজ তৈরী হয়েছে বিভিন্ন দল-উপদল এবং বিভক্তির বীজ তাই এত বিভক্তি আর অনৈক্য থাকার পরও যদি এই ধর্মের লোকদের মাঝেই ঐক্যের সেতুবন্ধন তৈরী সম্ভব হয় তবে তা অবশ্যই অন্নান্য ধর্মের জন্যও ঐক্যের এক আদর্শ হিসেবে কাজ করতে পারে।
আল্লাহর নামে শুরু করছি-
প্রথমেই লক্ষ্য করলে দেখা যায় মুসলিম উম্মাহ আজ বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত যেমন- শীয়া, সুন্নি আর শীয়াদের মাঝেও যেমন রয়েছে বিভিন্ন দল-উপদল তেমনী সুন্নিদের মাঝেও রয়েছে প্রাথমিকভাবে হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলী, সালাফী মাজহাব বা লা মাজহাবী এছারাও এসব মাজহাবীদের মাঝেও রয়েছে বিভিন্ন ফিরকা যেমন- আহমদীয়া, সুফীবাদী, পীরবাদী ইত্যাদি। আরো রয়েছে রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক বিভিন্ন দল যেমন- ধর্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষে বিভিন্ন ইসলামিক দল; এদের কেউ কেউ আবার প্রচলিত তন্ত্রের মাধ্যমেই ইসলাম চায় আবার কেউ স্বতন্ত্রভাবে চায়, এদের মাঝেও আবার বিভিন্নতা আছে যেমন- কেউ স্বসস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে আবার কেউ দাওয়াত বা গনআন্দোলনের মাধ্যমে ইসলাম চায় এছারাও রয়েছে অরাজনৈতিক বিভিন্ন দাওয়াতি সংঘটন যেমন- তাবলীগ এছারাও রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আলেম-ওলামাদের দল যেমন- দেওবন্দি, বেরলভী/ রিজভী, আলিয়া এবং সৌদিপন্থি মাদ্রাসা । মোট কথা মুসলিমদের দল- উপদলের চার্টগুলো লিখেও শেষ করার মত না। এখন সবচেয়ে বড় যে সমস্যা তা হল তারা প্রত্যেকেই নিজদেরকে একমাত্র সঠিক দল মনে করে, পাশাপাশি অন্য সকল দলকে ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট মনে করে, কাউকে আংশিকভাবে আবার কাউকে পুরোপুরিই; তার চেয়েও বড় সমস্যা হল এরা অন্যদেরকে অনেক সময় অমুসলিম কাফের পর্যন্ত ঘোষনা করে ফেলে। শুধু তাই নয় বরং অনেক দল এমনও আছে যে তারা অন্যদের সাথে মারামারি, কাটাকাটি এবং এমনকি হত্যাযজ্ঞ পর্যন্ত করে আর এর মাধ্যমে তারা জাহির করতে চায় যে তারাই সঠিক এবং অন্যদের সাস্তি দেবার অধিকারও তাদের আছে। আসলে মুসলিম উম্মার মাঝে এসকল ফিতনার মুল কারনই হল তাদের মাঝে ঐক্য নেই বরং রয়েছে পরস্পর মতবিভেদ আর দলা দলি। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় হল মুসলিম উম্মার মাঝে যেসব বিষয় নিয়ে এসব মতবিভেদ সেসব বিষয় কিন্তু ধর্মের মূল বিষয়কেন্দ্রিক নয় বরং তার বেশিরভাগই হল ধর্মের আংশিক বা ঐচ্ছিক কিছু ব্যাপারে অথচ ধর্মের কিছু কিছু ব্যাপারকে ইস্যু করেই শয়তান মুসলিম উম্মার মাঝে বিভেদের ঢোল পিটিয়ে তাদেরকে ইচ্ছেমত নাচাচ্ছে। অথচ মুসলিম উম্মার উচিত ছিল ধর্মের মূল মূল বিষয়ে যেহেতু কারও মতবিভেদ নেই(যেমন- আল্লাহ, রসুল, আল কুরান, নামাজ, রোজা ইত্যাদি অনেক মূল বিষয়) তাই এসবের উপর ভিত্তি করে সর্বক্ষেত্রেই ঐক্যে থাকা আর যেসব বিষয়ে মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে তাকে বেশী পাত্তা না দিয়ে মতভেদ টিকিয়ে রেখেও ঐক্যে থাকতে পারত আর এমনটাই সাহাবী, তাবেইনদের যুগে ছিল বলে তারা আমাদের মত আল্লাহর গজবে নিমজ্জিত হয়নি অথচ বর্তমান মুসলিমরা এর উল্টোটি করেছে অর্থাৎ মতভেদের বিষয়কেই মূল বিষয় গন্য করে পরস্পর দ্বন্দ সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে আর ইসলামের মূল বিষয়ে যে পরস্পরের ঐক্যমত ছিল তাকেই পাত্তা দেয়নি। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কথা হল মতভেদের বিষয়গুলোর পরিপুর্ন সমাধান করে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যে আনাও সাধারনের পক্ষে দূরহ কেননা এমন করতে চাইলে অবশ্যই আমাদের মাঝে নবীর ন্যায় কোনকিছুর প্রয়োজন হবে যার কথা সবাই একবাক্যে বিশ্বাস করবে কিন্তু এছারা অন্য কেউ যদি এসবের কোন সমাধান বের করে তবে তার যোগ্যতার প্রশ্ন তুলে তাকে মোটেও প্রাধান্য দেয়া হবে না ফলে সমাধানও সম্ভব হবে না কারন যদি কোন সমস্যার সমাধানের চেষ্টা কেউ করেও তখন দেখা যাবে তারচাইতেও যোগ্য ব্যাক্তি বা বেশি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যাক্তিই উক্ত সমস্যার সৃষ্টি করে রেখেছে বা ভুল সমাধান দিয়ে রেখেছে তাই বেশী জ্ঞান সম্পন্ন ব্যাক্তির ভক্তগন তা মেনে নিবে না আর যোগ্যতার দোহাইও দিবে তাই সমস্যারও সমাধান হবে না। তাই এই নাজুক পরিস্থিতি থেকে বাচাঁর পথ হল দুটি আর তা হল-
১মতঃ- সমস্যা বা মতবিভেদগুলোকে গুরুত্বপুর্ন মনে না করে বেশী মাথা না ঘামানো পক্ষান্তরে যেসব বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে তার উপরে শক্তভাবে ঐক্য বজায় রাখা আর কিছুতেই সেই ঐক্যে যেন মতবিরোধমুলক বিষয়ের কারনে ফাটল সৃষ্টি না করে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
২য়তঃ- যেহেতু অনেক ব্যাপারেই মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে তাই সেগুলোকেও একেবারেই ইগনর করা সম্ভব না তাই যেসব বিষয়ে মতভেদ রয়েছে সেসব বিষয় নিয়ে অপর পক্ষের সাথে সাপ্তাহিক বা মাসিক একটি আলোচনা বিতর্কের ব্যাবস্থা করতে হবে যার মাধ্যমে একে অন্যকে নিজেদের সঠিক হবার যুক্তি ও প্রমান দিতে পারবে এরপরও যে যেদলের সেই দলেরই থেকে গেলেও সমস্যা নেই তবু তো পরস্পরের সাথে শান্তিপূর্নভাবে আলোচনায় বসল। তাছারা এধরনের আলোচনা বিতর্ক অনেক হয়েছেও কিন্তু সমাধান হয়নি বরং নিজেদের মাঝে আরো বিভেদের সৃষ্টি হয়েছে কারন এই ধরনের আলোচনা যাদের মাধ্যমে হয়েছে তারা নিরপেক্ষ ছিল না বা পন্থা শান্তিপূর্ন ছিল না অথবা এখানে উল্লেখিত উপরের ১ম পদ্ধতি অনুযায়ি যে সর্বদাই মতভেদমূলক বিষয়কে কম প্রাধান্য দিয়ে ঐক্যমতের বিষয়ের খাতিরে পরস্পরের ভ্রাতৃত্ববন্ধন অক্ষুন্ন রাখা। তাই যদি এ ধরনের আলোচনা বা বিতর্ক যদি ১ম পদ্ধতির কথা স্বরন রেখে শান্তিপুর্ন পন্থায় ইউনাইটেড প্যাচিফিক দলের কারও আন্ডারে করা যায় তবে ইনশাহ আল্লাহ ভ্রাতৃত্ববোধ আরো বাড়বে। আর বিতর্ক আলোচনায় অংশ নেয়া ব্যাক্তিবর্গ ভাববে যে- যদি আমার নিজের ছেলে বা ছোট ভাইয়ের সাথে এরচাইতেও বড় ব্যাপারে মতবিভেদ থাকত তবে আমি কি তাকে ১মে আলোচনার মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করার পরও যদি একেবারেই না ই বুঝত তবে কি আমি তার সাথে সকল সম্পর্ক ত্যাগ করে চরম শত্রু হয়ে যেতাম ?

উপরে উল্লেখিত দুটি পদ্ধতি শুধুমাত্র ঐক্যে থাকার মুল মন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করা হল। এখন দেখতে হবে কিভাবে ঐক্যে আসতে হবে এবং মুসলিমদের কাদের মাঝে এসব ঐক্য আনতে হবে ? সাধারনত মুসলিমদের দল দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত যেমন-
একদল হল সংখ্যাগরিষ্ঠ , এরা ভাবে নিজেদের মাঝে বিভিন্ন মতভেদ থাকলেও মুসলিম থেকে কেউ খারিজ হয়ে যায়নি যদিও এদের মাঝেও অনেক শেরকি কুফরী আক্বিদাও থাকে

আরেক দল আছে যারা সংখ্যালঘু এবং এরা নিজেদের সঠিক মুসলিম ভাবলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দলগুলো ভাবে এরা সম্পূর্নই ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে। এখন উভয় পক্ষেরই গোঁরা মন মানসিকতার মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে বড় ভয়ের কারন হল ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব এই দুই দলের মাঝেও রাখতে হবে। আবার এই উভয় পক্ষের মুসলিমদের মাঝেও দেখা যায় দুই ধরনের মুসলিম আছে- ১ম শ্রেনী হল কোন নেতা বা দলের মতের উপর প্রতিষ্ঠিত। প্রকৃতপক্ষে এরাই সংখ্যায় বেশী আর কিছু রয়েছে তাদের নির্দিষ্ট কোন দল বা নেতার আনুগত্য নেই , যাদের এরকম অবস্থা তারা ইউনাইটেড গ্রুপে থাকতে চাইলে তাদের মাঝেও একজন নেতা নির্ধারন করে দেওয়া হবে আর যাদের নেতা আছে এমনকি সেই নেতার সার্বক্ষনিক আনুগত্য করার জন্য বায়াতও করা আছে এমনকি কারও কারও কিছু দেশ বা অঞ্চলের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাও রয়েছে বা কারও আবার সুগঠিত নেতৃত্বও বিদ্যমান। এখন তারা যদি সমস্ত মুসলিম উম্মার বৃহত্তর ঐক্যে সামিল থাকতে চায় তবে ঐক্যের এসব পদ্ধতিগুলো তাদের প্রধান নেতার কাছে জানাতে হবে এরপর সে ইচ্ছে করলে তার সমস্ত দলসহ বৃহত্তর মুসলিমদের জামাতের সাথে কূটনৈতিক আকারে হলেও ঐক্য গড়ে তুলতে পারবে এমনকি তাদের দেশে সমস্ত প্যাসিফিক দলের সদস্যদের ঠায়ও দেয়া লাগতে পারে আর যদি তাদের এরকম অঞ্চল না থাকে আর ভবিষ্যতেও যদি কখনও এমন হয় তবু সাহায্য করতে হবে কোনরকম শত্রুতা বা ক্ষতি তো করাই যাবে না। আর যদি সেই দল বা নেতা প্রত্যাখ্যান করে তবুও সেই দলের কেউ ব্যাক্তিগতভাবে এই বৃহত্তর মুসলিমদের জামাতে থাকতে পারবে কিন্তু এজন্য তাকেও আলাদাভাবে আরেকটি নেতা নির্ধারন করে বা সে নিজেই ১মে নেতা হয়ে ঐক্য করতে পারবে তখনও কিন্তু তাকে তার পূর্বের দলের নেতার আনুগত্য ছেরে আসতে হবে না । আনুগত্য তখনই ছারবে নয়ত বৃহত্তর মুসলিমদের জামাত হতে বহিস্কৃত হবে যখন তাদের সেই নেতা বা দল কিছু শর্ত ভংগ করবে যেমন- ১) শুধু নিজের দল ছারা অন্য কোন দলের অস্তিত্ব দুনিয়াতে রাখা হবে না এই উদ্দেশ্যে যদি সেই দল কোন কর্মসূচি গ্রহন করে আর সেই পদক্ষেপ যদি মৌখিক বা লিখিত পদক্ষেপ না হয়ে শক্তিগত বা কৌশলগতও হয়। ২) ১মত ইউনাইটেড প্যাসিফিক দলের কারও উপর সেই পদক্ষেপ গ্রহন করলে ২য়ত ইউনাইটেড প্যাসিফিক দল ছারাও যারা তাদের ধংস চায় না যুদ্ধও করে না এমনকি শত্রুতাও করে না শক্তি বা কৌশলগতভাবে অর্থাৎ সাধারন নিরিহ শ্রেনীর মানুষ এদের উপরও তাদের এই দুই ধরনের কোন পদক্ষেপ কখনও গ্রহন করলে । আর সেই দল এমন পদক্ষেপের পরও যদি সেই দলের কেউ বৃহত্তর মুসলিমদের জামাত এর সাথে ঐক্যে থাকতে চায় তখন কিন্তু তাকে অবশ্যই সেই দল বা নেতার আনুগত্য সম্পুর্ন পরিহার করতে হবে মোটকথা সেই দলই ত্যাগ করতে হবে সম্পূর্ন মন থেকে এক্ষেত্রে সে ইচ্ছে করলে মুসলিম জামাতের আমিরের দলে যোগ দিতে পারে অথবা নিজেই আলাদা দল তৈরী করে জামাতুল মুসলিমিনদের সাথে ঐক্যে থাকতে পারে।

এখন আলোচনা করা হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় যে কিসের ভিত্তিতে মুসলিমদের মাঝে মতভেদ, দলাদলি থাকা সত্তেও ঐক্যে আসা সম্ভব হবে? সেসব ভিত্তিগুলো হচ্ছে- ১)আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ/মাবুদ/আইনদাতা/ ঈশ্বর মানা, ২) নবী ও রাসুল হিসেবে মুহাম্মদ সাঃ কে মানা, ৩) কালিমা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ সহ প্রত্যহ ফরজ নামাজ পড়া(বেনামাজী বা মাঝে মাঝে নামাজী এমনকি শুধুই জুমার নামাজী না হওয়া) এবং বাৎসরিক ফরজ রোজা ইত্যাদি মৌলিক বিষয়ের উপর অটল থাকার চেষ্টা। ৪) পরকালের উপর বিশ্বাস রাখা বা শেষ বিচারে জবাবদিহিতা রয়েছে বিশ্বাস করে তদানুযায়ি আমল করা বিশেষ করে প্রত্যহ ফরজ নামাজ অবশ্যই পড়া। ৫) ইসলামের মূল ভিত্তি হিসেবে আল কুর'আনকে মানা(যদিও শীয়াদের কিছু দল অভিযোগ করে যে বর্তমানে উসমান রাঃ কর্তৃক সংকলিত যে কুরান রয়েছে তাতে যে সুরা ১মে থাকার কথা তাকে রাখা হয়েছে পেছনে আর যাকে শেষে রাখার কথা তাকে রাখা হয়েছে সামনে এমনকি আয়াতের ক্ষেত্রেও সিরিয়াল উলটাপালটা করা হয়েছে অর্থাৎ অহী নাজিলের ক্রমান্বয় অনুসারে কুরান সংকলন করা হয়নি এমনকি কুরানের হুবহু বক্তব্যও পরিবর্তন করে কুরাইশি ভাষায় সংকলিত হয়েছে, তারা এমন অভিযোগ করে কারন একমাত্র আলী রাঃ ই অহী নাজিলের ক্রমান্বয় অনুসারে কুরান সংকলন করেছিলেন কিন্তু যেহেতু তাদের কাছে আর সেই কুরান নেই আর আল্লাহ কর্তৃকই কুরানের বানীকে ৭টি আঞ্চলিক ভাষায় পাঠ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল তাই কুরাইশি ভাষাও গ্রহনযোগ্য আর কুরানের সুরা ও আয়াতের সিরিয়াল আগ পিছ থাকলেও কুরানের প্রতিটা বানীই আল্লাহ সুবহানাতালারই নাজিলকৃত তাই শীয়াদের সেসব দলও বর্তমান কুরানকেই প্রধান ধর্মগ্রন্থ মানতে বাধ্য হয় তাই সকল প্রকারের মুসলিমদের মাঝেই কুরানই হল ইসলামের প্রধান ভিত্তি)। উপরোক্ত ৫টি বিষয়কে মূল পুজি ধরে সকল মুসলিমের মাঝে খুবই জোরাল ঐক্যের বন্ধন তৈরী করতে হবে। উপরোক্ত ৫টি বিষয় কারও মাঝে বিদ্যমান থাকার পরও যদি কারও মাঝে বড় ধরনের পথভ্রষ্টতা বা ভুল দেখা যায় এমনকি ছোটখাট শেরকীও যদি কারও দৃষ্টিতে পরিলক্ষিত হয় তবু তাকে সরাসরি কাফের মুশরেক ঘোষনা দেওয়া যাবে না বরং ভাবতে হবে পরকালে আল্লাহই তার ব্যাপারে ফয়সালা করবে আর নিজের দায়িত্ব হতে মুক্তির জন্য শুধুমাত্র তাকে মৌখিকভাবে বা লিখিতভাবে আপন সহদর ভাইয়ের ন্যায় শান্তিপূর্নভাবে ভুলটি ধরিয়ে দিতে হবে এরপরও সে না মানলে তার ব্যাপার সম্পূর্নই আল্লাহর উপর ছেরে দিতে হবে কিন্তু মুসলিম হিসেবে তার হক্ব বা অধিকার ঠিকই রক্ষা করে চলতে হবে যদি তাদের মাঝে যুগের শিরক বা বড় শিরক না থাকে। মোটকথা উপরোক্ত ৫টি ভিত্তির উপর নিজেদের ঐক্য টিকে রেখে যেসব বিষয়ে মতভেদ আছে তাকে নিছক ছেলেখেলা ভাবতে হবে আবার পাশাপাশি মতভেদের বিষয় নিয়ে পরস্পর আলোচনা বিতর্কও চালিয়ে যেতে হবে এতে করে কেউ এক মতবাদী হতে অন্যমতবাদী হয়ে গেলেও সমস্যা নেই আবার নিজ নিজ মতবাদের উপর স্থির থাকলেও সমস্যা নেই কারন সে যে মতবাদই গ্রহন করুক না কেন বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহর মাঝে ঠিকই থেকে যাচ্ছে আর অবশ্যই ঐক্য ভ্রাতৃত্বের বেলাই ঠিকই ৫টি ভিত্তির জন্য সবাই এক থাকতে বাধ্য থাকবে আর তাছারা ইসলাম ধর্মে ঐক্য হল তৌহিদেরও একটি অংশ সুতারাং ঐক্য ছিন্ন করলে তৌহিদেরও কিছু অংশ অমান্য করা হয়। আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্য রাখতে হবে যে বিচ্ছিন্নভাবে এক মতবাদীর সাথে অপর মতবাদীর যেন অহেতুক বিতর্ক না বাধে এতে শত্রুতা মনমালিন্যের সৃষ্টি হতে পারে তাই বিতর্ক বা আলোচনা যেটাই করা হোক না কেন এখানে মধ্যস্থতা করার জন্য প্যাসিফিক গ্রুপেরই নিরপেক্ষ কাউকে রাখতে হবে অর্থাৎ তার আন্ডারেই বিতর্ক চালাতে হবে এমনকি তা যদি শুধুমাত্র দু-একজনের বিতর্কও হয় অথবা অনলাইন বা মোবাইল কনফারেন্সের মাধ্যমেও হয় তবুও তৃতীয় পক্ষকেই এটি মেইনটেইন করতে হবে। আর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন কথা হল- সুবিধার জন্য এই ইউনাইটেড দলের ধার্মিক অধার্মিক সব দলেরই একজন করে প্রধান নেতা থাকতে হবে কিন্তু মুসলিমদের যে প্রধান নেতা হবে সেই কিন্তু খলিফা বলে গন্য হবে আর মুসলিমদের সকল দলই চাইবে আমাদের দলের নেতাই খলিফার বেশী যোগ্য আবার অনেক দল পূর্ব হতে বিচ্ছিন্নভাবে খলিফা নির্ধারনও করে নিয়েছে তাই তারাও চাইবে না তাদের নেতাকে মানার পরও আবার মুসলিম উম্মাহর জন্য আরো নতুন একজনকে খলিফা হিসেবে আনুগত্য করতে তাই সকল দলকে ঐক্যে রাখার জন্য মুসলিমদের সর্বচ্চ প্রধান নেতার পদটি শুন্যই রাখতে হবে আপাদত, পরে ইনশাহ আল্লাহ আল্লাহ সুবঃই যোগ্য কাউকে খলিফা নির্ধারন করে দিবেন । আর যারা তাদের নিজ নিজ দল অনুযায়ি নির্ধারিত খলিফার আনুগত্য করে উপরোক্ত শর্তে ঐক্যে থাকবে তাদের মনে করতে হবে আমাদের নির্ধারিত নেতার আনুগত্যের বাইরের মুসলিমদের সাথে আমরা শুধুমাত্র কুটনৈতিক স্বার্থে বা বৃহত্তর কল্যানের স্বার্থে ঐক্যে আছি। আর মুসলিমদের মাঝে এরকম খলিফাওয়ালা দলও অনেক, এখন এদের সবাই যদি মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর কল্যানের স্বার্থে ঐক্যে থাকতে চায় তবে সবাইকে সমন্বয় করার জন্য অবশ্যই একজন প্রধান সমন্বায়কের প্রয়োজন পরবে যিনি মুসলিমদের প্রধান খলিফা নয় কিন্তু সকল দলের মিমাংসা করার স্বার্থে কিছু কিছু পর্যায়ে টেম্পরারী খলিফার ন্যায় আচরন করতে বাধ্য। আর এই প্রধান সমন্বায়ককে সকল দলের প্রধান মিলে মানবে আর তাকে অবশ্যই নিরপেক্ষ, উদার এবং যোগ্য হতে হবে, সে যদি স্পষ্ট কুরান-হাদীসের বিরুদ্ধে যায় তবে শুধু তার ঐ ক্ষেত্রটি না মেনে আনুগত্য ঠিকই করতে হবে যতদিন পর্যন্ত সে ১মত কালেমায় পরিপূর্ন বিশ্বাস ২য়ত পাশাপাশি নামাজও ৫ ওয়াক্ত চালিয়ে যাবে কিন্তু যখনি সে প্রত্যহ নামাজ কায়েম পরিত্যাগ করবে তখনই তাকে ইসলামি পদ্ধতিতে অপসারন করতে হবে অন্যজনকে নির্বাচন করা হবে আর এই নির্বাচন পদ্ধতি অবশ্যই প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতির ন্যায় হবে না বরং পূর্ব হতেই সমন্বায়ক বা আমিরের পছন্দানুযায়ি শুধু ১জনই যুবরাজ টাইপ নির্ধারন করা থাকবে অথবা খলিফা ওমর রাঃ এর নীতি অনুযায়ি একাধিক ব্যাক্তিও নির্ধারন করা থাকতে পারে যদি আশংকা থাকে যে শত্রুরা যেকোন সময় হত্যা করতে পারে তবে এক্ষেত্রে যোগ্যতার ক্রমান্বয় রাখতে হবে যেমন- ৭জনকে যোগ্য করা হলে যে বেশী যোগ্য তাকে ১নম্বর এরপরের জনকে ২ নম্বর এভাবে নির্ধারন করতে হবে যদি ৬ জনকেই মেরে ফেলা হয় তবে ৭ম যোগ্যকে আমিরের দায়িত্ব পালন করতে আর সেও আমির থাকাবস্তায় আরো একাধিককে এমন সিরিয়াল করে রাখবে । আর তাছারা মুসলিমদের মাঝে অনেক আলেমই গবেষনা করে বের করেছেন এবং কিছু হাদিসও ইংগিত দিচ্ছে যে আর কিছুদিনের মাঝেই ইমাম মাহদি আঃ আত্মপ্রকাশ করবেন আর তিনিই যেহেতু সকল মুসলিমদের খলিফা হবেন তাই আমরাও পুর্ব হতেই সেই পদ শুন্যই রাখতে চাই। বর্তমানে শুধুমাত্র ঐক্যে থাকব ভেদাভেদ ভুলে আর যদি তিনি এখন নাও আসেন তবু সমস্যা নেই আমরা কুরান অনুযায়িই চলতে থাকব এতে তিনি হাজার বছর পর এলেও সমস্যা নেই পথভ্রষ্ট হব না ইনশাহ আল্লাহ যদি ইসলাম অনুযায়ি চলি। আর এভাবে দলাদলি না করে সবাই ঐক্যের সাথে কুরান অনুযায়ি চললে আমরাই প্রথমে তাকে চিনতে পারব এবং তাকে বরন করে বায়াত গ্রহন করতে পারব ইনশাহ আল্লাহ আর যদি ইমাম মাহদি বলে যা হাদিসে আছে তা জালও হয়ে থাকে তবু সমস্যা নেই আমাদের কাছে কুরান তো আছেই সুতারাং আল্লাহ সুবঃই আমাদের সাহায্য করবেন।
মুসলিমরা কোন কোন নীতি অনুসারে নিজেদের মাঝে ঐক্যে থাকবে পাশাপাশি অন্য ধর্মালম্বী ও নাস্তিকদের সাথে কেমন সম্পর্ক হবে তার মূল থীম ১ম ও ২য় ভাগে উল্লেখ করা হয়েছে আর মুসলিমদের বিভিন্ন দলের জন্যও একই শান্তিচুক্তি থাকবে পাশাপাশি পরস্পর আলোচনা করে আরো নতুন করে শান্তিচুক্তি এবং ঐক্যের পদ্ধতি তৈরী করা যাবে।
বিঃদ্রঃ মানব জাতির সামনে আগত বিশাল ধংস হতে বাঁচার তাগিতে শান্তিকামী আস্তিক নাস্তিক এবং বিভিন্ন ধর্মের সাথে মুসলিমদের শান্তিচুক্তি তৈরীর এই পন্থা বা ঐক্যের এই আহব্বানকে যারা ইসলাম ধর্ম বিরোধী একটি নীতি মনে করবে তাদের অবশ্যই সেটা দলীল দিয়ে আমাদেরকে প্রমান দেখাতে হবে। সমগ্র মানব জাতির ঐক্যে আনার এই পন্থায় দ্বিমতপোষনকারীর সাথে আমরা সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি এবং এ ব্যাপারে আলোচনারও আহব্বান জানাচ্ছি । আর কোন অজ্ঞ মুসলিমদের কিছুতেই এটি যেন মনে না হয় যে কোন একটি বিশেষ পক্ষ চক্রান্ত করে এইসব করছে বরং সম্পুর্ন পদ্ধতিই ইসলাম ধর্মেরই প্রণিত পন্থায় করা হয়েছে এবং এমনটাই করা উচিত। এখন বৃহত্তর মুসলিমদের এই শান্তিকামী জামাতে কোন কোন দল হতে বা কোন কোন মতবাদের মুসলিম ঐক্যের আহব্বানে সারা দিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে এটাও প্রকাশ পাবে যে কারা বেশী সত্যিকারের ইসলাম ধর্মের অধিক নিকটবর্তী ? সবশেষে মহান আল্লাহ সুবঃ এর প্রশংসা করে ইতি টানছি ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:২৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×