২০০৮ সালের ১৩ই মার্চ "তারা"র জন্ম দিন ছিলো ....
আমার খুব সখ ছিলো যে ওর জন্মদিন এক সাথে পালন করবো ....
কিন্তু তার অনেক আগেই আমাদের দুই জনের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলে ....
ও বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না । কি করি কোন বুদ্ধি আসছে না ..।
কোন উপায় না দেখে ওর ছোট মামার কাছে ৩টা ওডিও এলবাম ও একটা জাফর ইকবালের বই কিনে দিয়েছিলাম...। বইটির নাম ছিলো "আমিই তপু" না কি যেন ... । সবাই জানবে ওর মামা দিয়েছে কিন্তু যার জানার দরকার সে সঠিক টাই জানবে ।
তারপরও মনের মাঝে আকুপাকু করছে .... কি যেন বাদ পড়ছে .....
ওকে পাশে বসিয়ে কেক কাটবো কত আনন্দ করবো .. কিন্তু কিছুই হলো না ..।
তখন আকাশ নামের এক বন্ধুর পরামর্শে কফি হাউজে গিয়ে ওর ১৩ তম জন্ম দিন উপলক্ষ্যে ১৩শত টাকা দিয়ে ১৩ পাউন্ডের একটি কেক ১৩ তারিখ ১৩টার সময় দিতে হবে বলে অর্ডার দিয়ে এলাম ...। এবং ১৩টা ক্যান্ডেল কিনে আমরা ১৩ মিনিটে আমার মেসে চলে আসলাম ...।
বাসায় এসে প্লান করছি ওটা না হয় অর্ডার দিলাম বাট ওদের বাসায় পৌছে দেবে কে ...???
তখন মনে পড়লো আমাদের সোহেল নামে এক ফ্রেন্ডের কথা । কিন্তু ও যাবে কি করে ... ???
তখন আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো .... আমি আকাশ কে নিয়ে সাইবার ক্যাফেতে বসে দুজনে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের একটা আইডি কার্ড বানালাম ... তারপর ওটা প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করলাম ।
এইবার খুজতে শুরু করলাম পোশাক ...। তখন সোহেল বললো দোস্তু আমার খাকি কালারের ড্রেস আছে স্কাউটের ড্রেস । ওকে গুড বয় ....।
এবার সন্ধ্যায় ওদের বাসার পাশে আমার যে ফ্রেন্ড আছে নুর তাকে দিয়ে ওদের বাসার ঠিকানা কালেক্ট করলাম ।
এবার পরদিন সাড়ে বারোটার দিকে আমি আর ঐ দুই ফ্রেন্ড মিলে প্লান মাফিক আগে কফি হাউজ থেকে কেক আনলাম । তারপর কেক ও ক্যান্ডেল আর ১৩ টা গোলাপ ফুল ছিড়ে পাপড়ি গুলো নিয়ে খুব যত্ন করে র্যাপিং করলাম । তারপর ঠিকানা লিখে আপাতত কাজের সমাপ্তি টানা হলো.।
এবার সোহেলের মেসে গিয়ে ওর হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ও একটা প্রবলেমের কথা বলে ফাঁকি দিতে চাচ্ছিলো .... তখন ওকে খুব বুঝিয়ে প্রস্তুত করে বের হোলাম....।
মিশন জন্মদিন সফল করতে ......
"তারা"র বাবার পোশাকের ব্যবসা আছে । শহরের মিডিল পয়েন্টে দোকান....। তিনি আমাকে ভাল চেনেন না । আর তাই আমি গেলাম দেখতে উনি দোকানে কিনা ....। দেখলাম দোকানেই আছে .....।
তারপর বিকাল ৫টার দিকে ওদের বাসার রাস্তায় সোহেল কে রেখে আমি আর আকাশ একটু নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখে ওর সাথে কথা বলতে থাকলাম । সোহেলের কানে আকাশের ব্লুটুথ হেডফোন ....।
বাড়ি চিনতে দেরি হলো না ওর... কারণ ঐ বাড়ির ছাদে গ্রামীনের টাওয়ার আছে ....
ও বাসায় গিয়ে কলিনং বেল টিপলো ...। আমরা সব শুনছি .. কি হচ্ছে ..।
একটু পরেই "তারা"র ছোট বোন নেমে আসলো ।
:কে ??
: আমি সুন্দরবন করিয়ার থেকে এসেছি ,আপনাদের একটা পার্সেল আছে ।
:ও আচ্ছা , আম্মুকে ডাকবো ..??
: নানা .. তুমিই নিতে পারো ..।
: দেন
: এখানে একটা সাইন করো..??
: কেন ???
: এটা কোম্পানির নিয়ম ।
: ও !!!
: ধন্যবাদ .........
তারপর গেট লাগানোর শব্দ হলেই আমি এপাশ থেকে ফোনে চিল্লিয়ে উঠলাম ..... থ্যাংকস দোস্তো ......।
তারপর ওকে পেট পুরে খাওয়ালাম কফি হাউজে ....।
এই ঘটনার ২ দিন পর জানতে পারি .... ওকে অনেক শাস্তি দেওয়া হয়েছে শুধু ঐ কেকটার জন্য ..... আমি ওকে সরি জানিয়েছিলাম সামনাসামনি .......
সেটাও অনেক রিস্ক নিয়ে .....
কিভাবে ....??
পরে বলবো ..........
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




