somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজকেও কি স্টেডিয়ামে আমরা কিছু জারজ পাকি সাপোর্টার দেখব??? আসুন বিজয়ের মাসে জানি আমাদের বীর ক্রিকেটারদের কথা

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‎২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। ঢাকা স্টেডিয়ামে শুরু হলো চারদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। পাকিস্তান ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড দলের প্রতিপক্ষ কমনওয়েল্থ একাদশ। পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস ওপেন করতে নামলেন ১৮ বছর বয়সী বাঙালি ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসান। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের একমাত্র বাঙালি সদস্য।

পাকিস্তান দলের সব ব্যাটসম্যানের ব্যাটেই সোর্ড [তলোয়ার] স্টিকার। যা জুলফিকার আলী ভুট্টোর নির্বাচনী প্রতীক। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু একজন। তিনি রকিবুল হাসান। তিনি মাঠে নামলেন ব্যাটে জয় বাংলা স্টিকার লাগিয়ে, পাশে বাংলাদেশের ম্যাপ!

১ মার্চ ১৯৭১, সোমবার দুপুর ১টা ৫ মিনিট। নিশ্চিত ড্র-য়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে খেলা। তখন রেডিওতে শোনা গেলো ইয়াহিয়ার ঘোষণা, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিস্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে!
সঙ্গে সঙ্গে গর্জে উঠলো গোটা স্টেডিয়াম।ব্যাটে যে জয় বাংলা ধ্বনি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন রকিবুল হাসান, মুহূর্তে সেই জয় বাংলা ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠলো গোটা দেশ। খেলা মুলতবি ঘোষণা করা হলো। সমগ্র বাঙালি জাতি নেমে এলো রাজপথে। শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন। এর পরের ইতিহাস সবার জানা।

একজন ক্রিকেটারের জন্য জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলার চেয়ে বড় আর কোনো চাওয়া নেই। কিন্তু মাতৃভূমির জন্য রকিবুল হাসান ত্যাগ করেছিলেন আজীবন লালিত টেস্ট খেলার স্বপ্ন। কোনোরকম রাজনৈতিক নির্দেশ ছাড়াই যিনি বরণ করে নিয়েছিলেন জুলুম নির্যাতন, যোগ দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে।

বাদ দেই সে কথা। ফিরে আসি ২০১১তে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর।চলছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ।শুরু হয়েছে শেষ ওয়ানডে একটু আগেই।যথারীতি আজও অনেকে পাকিস্তানের পতাকা গালে একে তাদের সমর্থনে স্টেডিয়ামে যাবেন,আফ্রিদির বোলিং তাণ্ডবে বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইন-আপ ঊড়ে যেতে দেখে আনন্দ প্রকাশ করেবন।



যারা বাংলাদেশ বনাম পাকিস্থানের খেলায় পাকিস্থানকে সমর্থন করছেন, ওদের পতাকা গালে-মুখে এঁকে, পতাকা উড়িয়ে উচ্ছাস করছেন, একবারও কি ভেবেছেন আপনাদের এসব কর্মকান্ড দেশের জন্য যুদ্ধ করা জাতির সুর্য্যসন্তানদেক কিভাবে কতটা কষ্ট দেয়? যুদ্ধাহত ঐ পরিবারগুলিই বুঝে পাক হানাদার এবং ওদের দোসররা কিভাবে আমাদের নাগরিকদেক নিশংস ভাবে হত্যা করেছে, মা-বোনকে ধর্ষন করেছে। অনেকে বলছেন এটাতো খেলা, সমর্থনে আর কি আসে যায়, কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন, প্রতিটা দল নিজ নিজ দেশকে উপস্থাপন করছে? শুধু খেলা বলে পাকিস্থানকে সমর্থন করার যুক্তি অসাড়, আপনাদের কথামত এই সামান্য খেলাতেই দেশের প্রতি আপনার সমর্থন দিতে পারছেন না, বড় কোন ঘটনায় দেশকে সমর্থন দেবেন কিভাবে?

আবার ফিরে আসি একাত্তরে। আপনাদের কি জুয়েল এর কথা মনে আছে ?

জুয়েল ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান তথা সমগ্র পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যান । মুক্তিযুদ্ধে গেরিলার ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি । আলতাফ মাহমুদের বাসায় অবস্থানকালে তিনি পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে ধরা পড়েন । পরবর্তীতে ক্যাম্পে পাকিস্তানি আর্মি তার তার দুই হাতের বুড়ো আঙুল কেটে নেয় ।

১৮ বছরের টগবগে তরুণ রকিবুল হাসান মাতৃভূমির জন্য টেস্ট খেলার সুযোগ বিসর্জন দিতে পারেন, যে দলের ওপেনার হওয়ার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন, সেই দলকে সমর্থন দিতে আমাদের কেন লজ্জা হয় না?

আজ ফেসবুকে একটা চমৎকার ছবি দেখলাম যা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারছি না।



আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে গেয়ে উঠিঃ

‎"যেসব বঙ্গে জন্মি হইয়াছে ভারতীয়/পাকিস্তানি
সেসব কাহার জন্ম নির্ণয় ন' জানি"

বাংলাদেশে জন্মগ্রহনকারী সকল ছাগু এবং ভাদাকে গদাম।



২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×