somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবী আর কি কোনদিন দেখবে সেই ফুটবল কিংবদন্তিদের?

২৮ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের ফুটবলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এসেছে নিত্য নতুন কলা-কৌশল। বদলে গেছে খেলার ধারা। কিন্তু কাদের হাত ধরে এই পরিবর্তনগুলো এল? আপনি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার হলে হয়ত ম্যারাডোনার নাম বলবেন আর ব্রাজিলের হলে পেলে অথবা জিকোর নাম বলবেন। তাহলে শুধু কি এই দুই-তিনজনই ফুটবলের রুপকার? তার মানে কি ইউরোপে কোন রুপকারের আগমন কোনদিন হয় নি? অবশ্যই হয়েছে এবং তারা কোন অংশেই পেলে আর ম্যারাডোনার চেয়ে কম ছিলেন না। হয়তো তাদের সবার খেলা দেখার সুযোগ আমাদের হয়নি আর এমনসব খেলোয়াড় আগামীতে আসবে কি না তাও সন্দেহ। তাদের খেলা দেখলে হয়তো বা আমরা সাপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার গন্ডী থেকে বের হয়ে আসতে পারতাম। আসুন কিছু সনাতন ও আধুনিক ফুটবল কিংবদন্তীর সাথে পরিচিত হই।

ফরাসি বিপ্লবের রূপকার

জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান (ফ্রান্স)ঃ



আলজেরিয়ার কোচ আবেদল্লাহিম কারমেলি নাকি তাঁকে দলে নিতে চাননি। বলেছিলেন, ‘এই মিডফিল্ডারটি খুব অলস’। আসুন, এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে মিডফিল্ডারটিকে আলজেরিয়া জাতীয় দলে না নেওয়ার জন্য আমরা সবাই কারমেলিকে প্রাণভরে ধন্যবাদ দিই। কারণ, কারমেলি এই সিদ্ধান্ত না নিলে হয়তো সর্বকালের সর্বসেরাদের একজন হয়ে ওঠা হতো না সেই মিডফিল্ডারের।
সেই ‘অলস’ মিডফিল্ডারটির নাম জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান। প্লাতিনি-উত্তর ফরাসি ফুটবলের প্রাণভোমরা, ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে বিশ্ব মাতানো মিডফিল্ডার, ফ্রান্সের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক জিদান।
জিদানের নাম উচ্চারিত হলেই এখন আমাদের মনে পড়ে যায় গত বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই ‘ঢুস’-এর কথা। বিশ্বকাপ ইতিহাসে মাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে দুটি ফাইনালে গোল করার পরও জিদান আলোচনায় থাকলেন মার্কো মাতেরাজ্জির বুকে মাথা দিয়ে ঢুস মেরে। একটা লাল কার্ডে শেষ হয়ে গেল এক কিংবদন্তির বিশ্বকাপ।
কিন্তু জিদানের ফুটবল-জীবনটা এ রকম ধাক্কায় শেষ হওয়ার কথা ছিল না। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত ফরাসি দল কান ও বোর্দোর হয়ে খেলা জিদান প্রথম নজর কাড়েন জুভেন্টাসের হয়ে। সিরি ‘আ’তে নিজের প্রথম মৌসুমে মাত্র পাঁচটি গোল করলেও জাদুকরি মিডফিল্ডার হিসেবে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন। বল নিয়ন্ত্রণ, ডিফেন্সকে হতভম্ব করে দিয়ে নির্ভুল পাসে স্ট্রাইকার খুঁজে পাওয়া—মোদ্দা কথায় মাঝমাঠে দাঁড়িয়ে খেলাটাই নিয়ন্ত্রণ করতে থাকা জিদান হয়ে উঠলেন ফুটবলের নতুন এক মাঝমাঠের সেনাপতি।
এই সেনাপতিকে বিশ্ব ভালোমতো চিনল এক বিশ্বকাপেই। ঘটনাটা ফ্রান্সেই ঘটল, ১৯৯৮ সালে। ফ্রান্স প্রথম তিনটি গ্রুপ ম্যাচ জিতে দ্বিতীয় পর্বে গেল; জিদান খুব আলোচনায় নেই। আলোচনায় এলেন সৌদি আরবের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে। আসলে আলোচনায় এলেন সেমিফাইনালে, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। গোল করেননি, কিন্তু ফ্রান্সের ২-১ গোলে জেতা এই ম্যাচে স্রেফ জাদু দেখালেন মাঠজুড়ে। গোল তৈরি করে দিলেন, মাঝমাঠের দখল হাতে (নাকি পায়ে?) রাখলেন, পুরো খেলার গতি বদলে দিলেন বারবার।
সেরাটা অবশ্য জমিয়ে রেখেছিলেন ফাইনালের জন্য। ফেবারিট ব্রাজিল টানা দ্বিতীয় শিরোপা জেতায় ফেবারিট হয়ে নেমেছিল ফাইনালে। কিন্তু মাথা দিয়ে দু দুটো গোল করে ব্রাজিলকে কাঁদালেন জিদান আর ফ্রান্সকে উপহার দিলেন প্রথম বিশ্বকাপ।
পরের বিশ্বকাপটা অবশ্য জিদানের জন্য হাহাকারের নাম হয়ে রইল। ইনজুরির কারণে গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে মাঠেই নামতে পারলেন না। তৃতীয় ম্যাচে পুরো ফিট না থেকেও নেমেছিলেন। কিন্তু ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়া ঠেকাতে পারেননি।
এই আক্ষেপ মেটাতেই যেন এসেছিলেন জার্মানিতে। একের পর এক ম্যাচে একাই যেন বুক চিতিয়ে লড়লেন কোনো এক ফরাসি সেনাপতির মতো। দলকে তুললেন ফাইনালে। ২০ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে দিলেন দলকে। এরপর সমতা ফেরাল ইতালি। ৯০ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে জিদানের শট ঠেকিয়ে দিলেন বুফন।
তারপর যেন কী হয়ে গেল! অতিরিক্ত সময়ে মাতেরাজ্জিকে ঢুস মেরে মাঠের বাইরে চলে গেলেন জিদান। দূর থেকে চেয়ে দেখলেন পেনাল্টি শুট আউটে দলের পরাজয়। তার পরও জিতলেন ‘গোল্ডেন বল’।
তাতে কি ফরাসি কিংবদন্তির দুঃখ ঘুচল?

বিদ্যুত্গতির এক মেজর

ফেরেঙ্ক পুসকাস (হাঙ্গেরি)ঃ



হাঙ্গেরিতে কিসপেস্ট বলে একটা ফুটবল দল ছিল। ১৯৪৮ সালে এই দলটিকে হঠাৎ ‘দখল’ করে নেয় সে দেশের সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর ফুটবল দল যেহেতু, ফুটবলারদেরও সৈনিকসুলভ উপাধি থাকা চাই। দলের সবাইকে লেফটেন্যান্ট, সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট; বিভিন্ন পদ দিয়ে দেওয়া হলো। এক ফুটবলার পেলেন মেজর র্যাঙ্ক। কিন্তু ফুটবল-ভক্তরা তাঁকে শুধু মেজর বলে থামবে কেন? ভক্তরা প্রিয় ফুটবলারটির নাম করে দিল—গ্যালোপিং মেজর; মানে, বিদ্যুত্গতির মেজর! এই মেজরের নাম ফেরেঙ্ক পুসকাস। হাঙ্গেরির সর্বকালের সেরা তো বটেই, ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফুটবলার।
হাঙ্গেরির জার্সি গায়ে ৮৫ ম্যাচে করেছেন ৮৪ গোল। হাঙ্গেরিয়ান ও স্প্যানিশ ক্লাবের হয়ে ৫২৯ ম্যাচে ৫১৪ গোলের অবিশ্বাস্য রেকর্ড পুসকাসের। রেকর্ডই বলে দেয় কেমন বিধ্বংসী এক স্ট্রাইকার ছিলেন পুসকাস।
অথচ চূড়ান্ত সাফল্যটা তাঁর ভাগ্যে জোটেনি। জিততে পারেননি বিশ্বকাপ। কেন, সেটা এখনো এক বিস্ময়। সেই বিস্ময়ের উত্তর হতে পারে একটাই—১৯৫৪-এর সেই বিশ্বকাপ ফাইনালে পুরোপুরি ফিট ছিলেন না পুসকাস।
সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপে হাঙ্গেরি খেলতে গিয়েছিল চার বছর অপরাজিত থাকার রেকর্ড সঙ্গী করে। দু বছর আগে তারা জিতেছিল অলিম্পিক সোনা। তার পরও পুসকাসের এই দলটি বিশ্বকাপ জিততে পারল না!
গ্রুপ পর্বে পশ্চিম জার্মানিকে ৮-৩ গোলে হারিয়েছিল হাঙ্গেরি। কিন্তু চড়া মূল্য দিতে হয়েছিল সে জন্য। ইনজুরিতে পড়েছিলেন পুসকাস। যে কারণে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল খেলা হয়নি তাঁর। ফাইনালে অর্ধ-ফিট হয়েও মাঠে নেমেছিলেন পুসকাস। মিনিট আটেকের মধ্যে এক গোল করে, আরেক গোল করিয়ে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে দলকে এগিয়ে নেন দুই গোলে। কিন্তু আর পারেননি। অসহায় চোখে দলের ২-৩ গোলের হার চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না তাঁর।
ফুটবলার হওয়াটাই ছিল পুসকাসের নিয়তি। বাবা ছিলেন হাঙ্গেরির কিসপেস্ট ক্লাবের কোচ, সে ক্লাবের হয়েই ফুটবলে হাতেখড়ি। পঞ্চাশের দশকে হিদেকুটি-জিবর-ককসিসদের সঙ্গে নিয়ে পুসকাসের গড়ে তোলা অসাধারণ দলটির নাম হয়ে যায় ‘ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্স’।

সত্যিকারের সম্রাট

ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার (পশ্চিম জার্মানি)ঃ



ডাক বিভাগের এক কর্মীর ছেলের নাম রাখা হয়েছিল অস্ট্রিয়ান সম্রাট ফ্রাঞ্জ জোসেফের নামে। সম্রাটের নামে রাখলেই কি আর সে সম্রাট হয়! অনেক আকবর, বাবর, আলেক্সান্ডার হয়তো সম্রাট হতে পারেন না। কিন্তু এই ছেলেটি সত্যিই একদিন সম্রাট হয়ে উঠেছিল।
সেই সম্রাটের দাপট এতই বেশি ছিল যে লোকেরা তাকে ডাকা শুরু করল—হের কাইজার! মানে, জার্মানির সম্রাট। হ্যাঁ, ‘কাইজার’ ফ্রাঞ্জ অ্যান্টন বেকেনবাওয়ারের কথা বলা হচ্ছে। অনেকের মতেই জার্মানির তো বটেই, সর্বকালেরই অন্যতম সেরা ফুটবলার।
লিবারো পজিশনকে ভিন্ন এক মাত্রা দিয়েছিলেন তিনি। রক্ষণে প্রাচীর হয়ে থাকার পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে হয়ে উঠতেন প্রকৃত আক্রমণভাগের খেলোয়াড়।
তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছেন। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারাতে না পারলেও ২০ বছরের সেই তরুণ বেকেনবাওয়ার নিজের জাত ঠিকই চিনিয়েছিলেন। ৪ গোল করে যুগ্মভাবে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন এই ‘ডিফেন্ডার’। ১৯৭০-এ ইংল্যান্ডের কাছে এই হারের প্রতিশোধ নিলেও ইতালির বাধা টপকে ফাইনালে উঠতে পারেনি বেকেনবাওয়ারের দল। ‘গেম অব দ্য সেঞ্চুরি’ নামে খ্যাত ইতালির বিপক্ষে ৩-৪ ব্যবধানে হেরে যাওয়া সেই ম্যাচে কাঁধের হাড় স্থানচ্যুত হয়ে যাওয়ার পরও গলায় হাত ঝুলিয়ে খেলে গেছেন বেকেনবাওয়ার!
পরপর দুটি বিশ্বকাপের এই অতৃপ্তির হাহাকার ঘুচে যায় ১৯৭৪-এ। নিজ দেশের সেই টুর্নামেন্টে বেকেনবাওয়ারের দলকে রুখতে পারেনি কেউ।
ক্লাব ফুটবলে সাফল্যও কম নয়। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে টানা তিনবার (১৯৭৪-৭৬) জিতেছেন ইউরোপিয়ান কাপ। ইউরোপিয়ান বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছেন দুবার (১৯৭২ ও ১৯৭৬)। খেলা ছাড়ার পর কোচ হিসেবেও পেয়েছেন চূড়ান্ত সাফল্য। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে শেষ বাধাটা টপকাতে না পারলেও ১৯৯০-এর বিশ্বকাপে তাঁর দল ঠিকই হাসে শেষ হাসি। অধিনায়ক ও কোচ দুই ভূমিকাতেই বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি শুধু তাঁরই।

‘টোটাল ফুটবলার’

ইয়োহান ক্রুইফ (হল্যান্ড)ঃ



ফুটবল খেলাটা কীভাবে হয়? উত্তর সোজা—এক গোলরক্ষক থাকেন, কয়েকজন ডিফেন্ডার, কয়েকজন মিডফিল্ডার আর কয়েকজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড়। এঁরা সবাই মিলে নিজেরা গোল না খেয়ে অন্যদের গোল দিতে চেষ্টা করেন।
এই সোজা ব্যাপারটাকে বদলে দিতে চাইলেন দুজন মানুষ। তাঁরা বললেন, গোলরক্ষক ঠিক আছে। কিন্তু ডিফেন্ডার, মিডফিল্ডার, স্ট্রাইকার বলে আলাদা কিছু আর থাকবে না। যে যখন সুযোগ পাবে, তখন আক্রমণে উঠবে। একজন আক্রমণে উঠলে তাঁর জায়গা নেবে অন্য কেউ। মানে, সবাইকে সবকিছু পারতে হবে। এই ফুটবলের নাম দেওয়া হলো—টোটাল ফুটবল। ধারণাটা পৃথিবীর সামনে নিয়ে এলেন কোচ রাইনাস মিশেলস। আর এই ফুটবলকে মাঠে বাস্তবায়ন করে ছাড়লেন একজন ‘টোটাল ফুটবলার’—হেনডরিক ইয়োহানেস ক্রুইফ বা ইয়োহান ক্রুইফ।
একেবারে বাল্যকালে মিশেলসের সঙ্গে কাজ শুরু করেছিলেন ক্রুইফ। শুরুর গল্পটা মন্দ না। ক্রুইফের বয়স যখন ১২, বাবার মৃত্যুতে দরিদ্র পরিবারটি আরও বিপাকে পড়ে গিয়েছিল। মা আমস্টারডামের ক্লাব আয়াক্সের স্টেডিয়াম ও ট্রেনিং গ্রাউন্ডে কাজ করে সংসার চালাতেন।
মায়ের সঙ্গে স্টেডিয়ামে ঘুরতে ঘুরতেই ফুটবলের প্রেমে পড়ে যান ক্রুইফ। ওখানেই চোখে পড়েন আয়াক্স কোচ রাইনাস মিশেলসের। এই সময়টাই বদলে দিল পরবর্তীকালের ফুটবল দুনিয়াকে। সামনে নিয়ে এল ‘টোটাল ফুটবলার’ ক্রুইফকে।
টোটাল ফুটবলে কারও নির্দিষ্ট কোনো পজিশন না থাকলেও, ডাচ দলের প্রাণভোমরা ছিলেন ক্রুইফ। বল পায়ে এমন এক টার্ন আবিষ্কার করেছিলেন, যাতে ডিফেন্ডার কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছনে পড়ে যেত। ফুটবলে যেটি ‘ক্রুইফস টার্ন’ বলে বিখ্যাত হয়ে আছে।
তিনটি ইউরোপিয়ান কাপ, ৯টি ডাচ চ্যাম্পিয়নশিপ, একটি স্প্যানিশ লিগ শিরোপা, ছয়টি ডাচ কাপ—সর্বোপরি তিনবার ইউরোপ-সেরা ফুটবলারের পুরস্কারই ক্রুইফের সামর্থ্যের কথা বলবে। কিন্তু বড় একটা অতৃপ্তিকে সঙ্গী করেই ক্যারিয়ার শেষ করতে হয়েছে তাঁকে। জাতীয় দলের হয়ে কিছু জেতা হয়নি। না ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, না বিশ্বকাপ।
অথচ ১৯৭৪-এর বিশ্বকাপটি হল্যান্ডের না জেতার কোনো কারণ ছিল না। অভূতপূর্ব টোটাল ফুটবলের বিস্ময়কর প্রদর্শনীতে ক্রুইফের দল বিমোহিত করে রেখেছিল বিশ্বকে। কিন্তু পশ্চিম জার্মানির শেষ বাধাটা টপকাতে পারেনি।
বিশ্বকাপ জেতা হয়নি বলে ক্রুইফের মন খারাপ করার কিছু নেই। তিনবার ব্যালন ডি’অর জেতা এই ফুটবলার ফুটবলকে যা দিয়ে গেছেন, তাতে বিশ্বকাপই বরং তাঁর ছোঁয়া না পেয়ে লজ্জা পেতে পারে।

একজন বোমারু

জার্ড মুলার (পশ্চিম জার্মানি)ঃ



লোকেরা তাঁকে ‘বম্বার ডের ন্যাশন’ বলে ডাকত; মানে ‘জাতির বোম্বার’। কেন! তিনি কি যুদ্ধ-টুদ্ধ করে বেড়াতেন নাকি! বোমা ফেলতেন আকাশ থেকে?
যুদ্ধ করতেন না। তবে বোমা ফেলতেন। বোমাটা পড়ত বিপক্ষের গোলপোস্টে। জাতীয় দল হোক আর ক্লাব; তাঁর মাঠে নামা মানেই গোল আর গোল। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ৬২ ম্যাচে ৬৮ গোল করেছেন, বুন্দেসলিগায় ৪২৭ ম্যাচে ৩৬৫ গোল! ফুটবল ক্যারিয়ার-জুড়ে গোলের এই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যাওয়া মানুষটি হলেন কিংবদন্তি ফুটবলার জেরহার্ড মুলার, সংক্ষেপে জার্ড মুলার।
অথচ মুলারের এই বিস্ময়কর প্রতিভা পৃথিবী হয়তো দেখতেই পেত না। অন্তত মুলার যদি কোচের কথা শোনা সুবোধ বালক হতেন, তাঁর তাহলে ফুটবল খেলাই হতো না। শহরের ক্লাব টিএসভি নর্ডলিনজেনের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মাত্র ৯ বছর বয়সে। কিন্তু শুরুতেই কোচ তাঁর খেলা দেখে বলে দিলেন, ‘ফুটবলে তুমি বেশি দূর যেতে পারবে না। বরং অন্য কিছু চেষ্টা করো।’ ভাগ্যিস, মুলার কথাটা শোনেননি!
কথা শোনেননি বলে ৩২ বছর বিশ্বকাপ ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে ছিলেন মুলার। তাঁর সর্বোচ্চ গোলের (১৪) রেকর্ডটি ২০০৬ বিশ্বকাপে ভেঙে দিয়েছেন রোনালদো। তাতে ফুটবল-ইতিহাস থেকে সহজাত এই স্ট্রাইকারের নাম মুছে যাওয়ার কোনো কারণ ঘটেনি।
আকৃতিতে ছিলেন ছোটখাটো, কিন্তু দারুণ শক্তিশালী। বিশ্বকাপে অভিষেক ১৯৭০-এ। দু-দুটো হ্যাটট্রিকসহ সেবার ১০ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতে নেন ‘বোম্বার’। ১৯৭০-এ না পারলেও ১৯৭৪-এ ঠিকই বিশ্বকাপ জিতে নেয় পশ্চিম জার্মানি। মুলার সেবার ‘মাত্র’ ৪ গোল করলেও এর মধ্যেই ছিল ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি। হল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালের জয়সূচক গোলটি যে তাঁরই করা।
মুলার যতটা পশ্চিম জার্মানির, ততটাই বায়ার্ন মিউনিখের। ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত বায়ার্নে ১৫ বছরের ক্যারিয়ারের শেষ মৌসুমটা বাদ দিলে প্রতিবারই সর্বোচ্চ গোলদাতা মুলার। এর মধ্যে বুন্দেসলিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন সাতবার।

পাখিদের সঙ্গী

গারিঞ্চা (ব্রাজিল)ঃ



‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ ধরনের সংসার। সংসারের একমাত্র আয়ক্ষম মানুষটি সর্বক্ষণ মদে চুর হয়ে পড়ে থাকেন। ফলে নুনও আসে না, পান্তাও তৈরি হয় না।
ভাত-কাপড়ের জন্য লড়তে থাকা এমন হতদরিদ্র পরিবারে জন্মাল ‘বিকলাঙ্গ’ একটি ছেলে। যার মেরুরজ্জুতে জন্মগত ত্রুটি, ডান পা ভেতরের দিকে বাঁকানো, ডান পায়ের চেয়ে বাঁ পা আবার ৬ সেন্টিমিটার ছোট। এমন ছেলের ভবিষ্যৎ কী? রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষে করে বেড়ানো!
হায়রে অনুমান! এই তথাকথিত বিকলাঙ্গ ছেলেটি তার বিকলাঙ্গ বাঁ পা দিয়ে ভবিষ্যতে শাসন করে চলল ফুটবল-দুনিয়াকে। সেই শাসনের এমনই দাপট যে সর্বকালের সেরা ফুটবলার পেলের ছায়া অতিক্রম করেও তিনি হয়ে উঠলেন একজন মহানায়ক—ম্যানুয়েল ফ্রাঞ্চিসকো দস সান্তোস। চিনতে পারলেন না? চিনবেন তাঁকে ‘গারিঞ্চা’ নামে।
ম্যানুয়েল দস সান্টোস ফ্রান্সিসকোকে এই ‘গারিঞ্চা’ নামটি দেন তাঁরই ১২ সহোদরের একজন। ভালোবেসে নয়, ঝগড়া করে। ব্রাজিলের ওই অঞ্চলের কুিসত-দর্শন এক পাখির নামে খেপাতে শুরু করেন তাঁকে। ১৯৫৩তে বোটাফোগোর হয়ে ক্যারিয়ার অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করলে আরেকটি নাম পেয়ে যান তিনি—দ্য লিটল বার্ড। ভক্তদের এই নামটি অবশ্য ভালোবেসেই দেওয়া। ১৯৫৮ বিশ্বকাপে প্রথম দু ম্যাচে তাঁকে দলে রাখেননি কোচ। সতীর্থদের অনুরোধে তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ পান খেলার। এরপর পেলের সঙ্গে জুটি বেঁধে বিশ্বকাপ জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আর আহত পেলের অনুপস্থিতিতে ১৯৬২-এর বিশ্বকাপ জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তো তাঁরই। ১৯৬৬-এর আসরে খেললেও ব্রাজিলকে নিয়ে প্রথম রাউন্ডের বাধা পেরোতে পারেননি। হাঙ্গেরির বিপক্ষে তিন গোলে হেরে সেই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেল ব্রাজিলের। জাতীয় দলের হয়ে গারিঞ্চার শেষ ম্যাচও এটিই। জেনে অবাক হবেন, ৬০ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ওই একটি মাত্র ম্যাচেই পরাজিত দলে ছিলেন তিনি!
জাতীয় দলের হয়ে খেলা ৬০ ম্যাচে ১২টি গোল করেছেন। এই পরিসংখ্যান দিয়ে গারিঞ্চার বিস্ময়কর ক্ষমতার কিছুই অনুমান করা যাবে না। তাঁর ক্ষমতাটা বুঝতে হলে, এটুকু জানাই যথেষ্ট যে অনেক ফুটবল-বোদ্ধা গারিঞ্চাকে পেলের সমমানের ফুটবলার মনে করেন! তাঁর ‘বানানা কিক’ (বাঁকানো শট) ও ‘ফলিং লিফ শট’ (ঝরাপাতা শট—গোলের দিকে যাওয়ার পথে যা গতি পরিবর্তন করত দুবার) তো ফুটবল-রূপকথায় চিরন্তন জায়গা করে দিয়েছে তাঁকে।
খেলা ছাড়ার পর গারিঞ্চা ডুবে যান বেহিসেবি জীবনে। অ্যালকোহলে ডুবে গিয়ে তাঁর বেপরোয়া জীবনের ইতি ঘটে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে। ব্রাজিলিয়ানদের ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ গারিঞ্চার সমাধিফলকে এই ফুটবল কবিকে নিয়ে লেখা আছে ছোট্ট দুটো লাইন, ‘সে ছিল মিষ্টি এক শিশু, যে কথা বলত পাখিদের সঙ্গে।’

সেরা ইতালীয়!

জিওসেপ্পে মিয়াজ্জা (ইতালি)ঃ



১৯২৭ সালে ইন্টার মিলানের মূল দলে ১৭ বছর বয়সী একটি ছেলেকে দেখে চমকে উঠেছিলেন সিনিয়র খেলোয়াড় লিওপোল্ডো কোন্তি, ‘এই ইল বাল্লিয়া বড়দের দলে কী করে!’ সেই থেকে খেলোয়াড়টির নাম হয়ে গেল—ইল বাল্লিয়া, খুদে শিশু।
কিন্তু কাজের বেলায় তিনি ‘শিশু’ নন; সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার জিওসেপ্পে পেপিনো মিয়াজ্জা। এই মিয়াজ্জাকে ছাড়া ইতালির প্রথম দুটি বিশ্বকাপ জয়ের গল্পই লেখা হয় না। শুধু ইতালির নয়, ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের তালিকায়ও নিঃসন্দেহে চলে আসবেন এই ফরোয়ার্ড।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বাবাকে হারানো মিয়াজ্জার জন্ম ১৯১০ সালে, মিলানে। ইন্টার মিলানের হয়ে প্রথম বিভাগে অভিষেক ১৭ বছর বয়সে। ১৯২৯-৩০ মৌসুমে চালু হয় সিরি ‘এ’। ৩৩ ম্যাচে ৩১ গোল করে মিয়াজ্জা সে মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে অভিষেক সে মৌসুমেই। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-২ গোলে জেতা ম্যাচে জোড়া গোল মিয়াজ্জার। কদিন পর হাঙ্গেরির বিপক্ষে করেন হ্যাটট্রিক। কি ক্লাব, কি জাতীয় দল—গোলমেশিন মিয়াজ্জার গোল পেতে সমস্যা হয়নি কোথাও।
অথচ কী আশ্চর্য! ১৯৩৪-এর বিশ্বকাপে কোচ ভিত্তরিও পোজ্জো তাঁর পজিশনই পাল্টে ফেললেন। সেন্টার ফরোয়ার্ড থেকে সরিয়ে নিয়ে এলেন ইনসাইড ফরোয়ার্ডে। দেশজুড়ে তাই উঠল বিতর্কের ঝড়। নিজ সিদ্ধান্তে কিন্তু অটল
রইলেন পোজ্জো। আর কী চমত্কারভাবেই না সেটা
কাজে লাগালেন মিয়াজ্জা। মনোযোগ দিলেন গোল
করার চেয়ে করানোতে। দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেনের বিপক্ষে
জয়সূচক গোলটি করেছিলেন। ইনজুরি নিয়ে ফাইনাল খেলতে নেমেও ভূমিকা রাখলেন দলের বিশ্বজয়ে।
তাঁর ক্রস থেকেই জয়সূচক গোলটি করেন শিয়াভিনো।
চার বছর পর অধিনায়ক হিসেবে ফ্রান্স বিশ্বকাপে যান।
এবারও রাখেন উজ্জ্বল। নিজে করেন এক গোল;
ফাইনালের দুটিসহ বানিয়ে দিলেন আরও
অনেকগুলো।

‘বড়’ ফুটবলার

রোনালদো (ব্রাজিল)ঃ



১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের সঙ্গে ১৭ বছর বয়সী ‘বাচ্চা’ একটা ছেলে এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ছেলেটি মাঠে নামেনি। ড্রেসিং রুমে খেলোয়াড়েরা তাঁকে ডাকত ‘রোনালদিনহো’ বলে; মানে ছোট্ট রোনালদো। ‘ছোট্ট’ বলার কারণ, দলে তখন রোনালদো রদ্রিগেজ নামে সিনিয়র এক খেলোয়াড় ছিলেন।
দু বছর পর আটলান্টা অলিম্পিকে সেই ‘বাচ্চা’ ছেলেটি মাঠে নামল হলুদ জার্সি পরে। কিন্তু এবারও তাঁর শার্টের পেছনে লেখা—রোনালদিনহো। কারণ, এবার দলে আছেন রোনালদো গুইয়ারো! ছেলেটি কি তাহলে ছোটই হয়ে থাকবে! ‘বড়’ হবে না?
১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে এই দুনিয়াকে সাক্ষী রেখে ‘বড়’ হয়ে গেলেন রোনালদো লুইস নাজারিও ডি লিমা। এতটাই বড় হয়ে গেলেন যে কয়েক বছরের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গেল, ব্রাজিলের জার্সি গায়ে এসে গেছেন আরেক বিস্ময়।
রোনালদোর বিশ্বজয়টা শুরু ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে। পিএসভি আইন্দহোফেন থেকে স্যার ববি রবসনের আগ্রহে বার্সায় এসে লা লিগায় ওই মৌসুমে ৩৪ গোল করলেন, সব মিলিয়ে মৌসুমে ৪৭ গোল। এই দুর্দান্ত কীর্তি দিয়ে ২০ বছর বয়সেই জিতে ফেলেন ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব ।
ওই শুরু, এর পর থেকে রোনালদো মানেই গোল আর গোল। এক দশকেরও বেশি বিশ্বের এক নম্বর স্ট্রাইকার হয়ে ছিলেন। দুর্দান্ত গতি আর শরীরের ঝাঁকুনিতে ছিটকে ফেলতেন ডিফেন্ডারকে। গোল করাটা ছিল খাওয়া-ঘুমানোর মতো অভ্যাসের ব্যাপার। ক্লাব পারফরম্যান্সটা দেখুন—৫০১ ম্যাচে ৩৪৭ গোল। শুধু স্প্যানিশ দুই ক্লাব বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়েই করেছেন এর ১৫১টি!
পুরস্কারও পেয়েছেন তিনবার ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতিতে। ১৯৯৬-১৯৯৭ টানা দু বছর, এর পর আবার ২০০২ সালে। ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে জিতেছেন ইউরোপ-সেরার ব্যালন ডি’অর। ব্রাজিলের জার্সি গায়েও একই রকম দুর্বার। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ৪টি গোল করে, তিনটি গোল করিয়ে ব্রাজিলকে ফাইনালে তুললেন। দুর্ভাগ্য বয়ে আনল ফাইনালের দিন রহস্যময় এক অসুস্থতা। মাঠে নামলেও নিজের ছায়া হয়ে থাকলেন, দলকে বিশ্বকাপ জেতানোও হলো না। দুঃখটা ঘোচালেন ২০০২ বিশ্বকাপে। আট গোল করে ব্রাজিলকে উপহার দিলেন ‘পেন্টা’—পঞ্চম বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপে ১২ গোল নিয়ে গিয়েছিলেন ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপে। জাপানের বিপক্ষে দুই গোল করে ছুঁয়ে ফেললেন জার্ড মুলারকে। আর ঘানার বিপক্ষে এক গোলে হয়ে গেলেন বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোরার। ‘দ্য ফেনোমেনন’ নামটা তো আর এমনিতেই হয়নি!

উৎস ঃ প্রথম আলো

১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×