somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

’৭১-এর যুদ্ধাপরাধ ও জামায়াতে ইসলামী

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে বাংলাদেশে স্মরণকালের নৃশংসতম গণহত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করা কখনও সম্ভব হত না যদি না এদেশীয় কিছু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল তাদের সহযোগিতা করত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তার প্রধান সহযোগী দল ছিল জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সঙ্গে মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামীর মত দল থাকলেও সেই সময়ের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় হত্যা ও নির্যাতনের ক্ষেত্রে জামায়াত ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
দল হিসেবে জামায়াত যেমন মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামের চেয়ে অধিকতর সংগঠিত, হত্যার অতীত রেকর্ড পর্যালোচনা করলেও জামায়াত তাদের সহযোগীদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। ১৯৫৩ সালে পাকিস্তানের লাহোরে জামায়াতে ইসলামী অন্ততপক্ষে ২০ হাজার কাদিয়ানীকে হত্যা করেছিল। এই হত্যাকাণ্ড থেকে আহমদীয়া মুসলিম জামায়াতের নারী-শিশু-বৃদ্ধ কেউ রেহাই পায়নি। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াতকে দায়ী করে পাকিস্তানের আদালত দলের প্রধান আবুল আলী মওদুদীকে তখন মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছিল। পরে সৌদি বাদশাহর অনুরোধে মওদুদীর মৃত্যুদণ্ড রদ করা হয়। সেই থেকে শুরু হয়েছে ধর্মের নামে জামায়াতের হত্যাকাণ্ডের রক্তাক্ত রাজনীতি।
’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুণ্ঠনসহ যাবতীয় দুষ্কর্মে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতার পাশাপাশি নিজেরাও উদ্যোগী হয়ে রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি ঘাতক বাহিনী গঠন করেছে এবং ইসলামের দোহাই দিয়েই গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অংশগ্রহণ করেছে । এর শত শত প্রমাণ পাওয়া যাবে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র মুক্তিযুদ্ধকালীন দৈনিক ‘সংগ্রাম’ ও অন্যান্য সংবাদপত্রে।
পাকিস্তানের বর্বর ঘাতক বাহিনীকে সাহায্য করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ১০ এপ্রিল জামায়াতের গোলাম আযমরা তাদের সহযোগীদের নিয়ে শান্তি কমিটি গঠন করেন। এই শান্তি কমিটি গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিহত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করা। কমিটির প্রথম বৈঠকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতম নরমেধযজ্ঞ সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনগণকে আখ্যায়িত করা হয় ইসলামবিরোধী হিসেবে। প্রকৃতপক্ষে গোলাম আযমদের কাছে পাকিস্তান, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলাম একই অর্থ বহন করে। যে কারণে তাদের কাছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যেমন ইসলামবিরোধী কাজ, জামায়াতে ইসলামীর বিরোধিতাও ইসলামবিরোধী কাজ।
’৭১-এর ১২ এপ্রিল ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি কমিটির মিছিলে গোলাম আযম নেতৃত্ব দেন এবং মিছিল শেষে গোলাম আযম গণহত্যাকারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। (দৈনিক সংগ্রাম, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১)। পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বরকমভাবে সাহায্য করার জন্য জেনারেল টিক্কা খান এ সময় শান্তি কমিটির কর্মতৎপরতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের ‘আজাদী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী ও শান্তি কমিটির মধ্যে যোগসূত্র প্রতিষ্ঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে জামায়াত নেতা (গোলাম আযম) বলেন, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্যে শান্তি কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’ (দৈনিক পাকিস্তান, ১৬ আগস্ট ১৯৭১)
শান্তি কমিটির তৎপরতা চালানোর পাশাপাশি জামায়াত নেতা গোলাম আযম পাকিস্তানি সৈন্য বাহিনীর সহযোগী একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠনে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন। তাঁর নির্দেশে জামায়াত নেতা এ কে এম ইউসুফ ’৭১-এর মে মাসে খুলনার খান জাহান আলী রোডের একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন জামায়াতকর্মী নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠন করেন। প্রথম পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী ছিল শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন। ’৭১-এর ১ জুন জেনারেল টিক্কা খান ‘পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স ১৯৭১’ জারি করে আনসার বাহিনীকে বিলুপ্ত করে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন, যদিও এর মূল নেতৃত্ব ছিল জামায়াতের হাতে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের পূর্ণাঙ্গ সেনাবাহিনীর সদস্যের সমান ক্ষমতা অর্পণ করে ৭ সেপ্টেম্বর এক অধ্যাদেশ জারি করে। (নং ৪/৮/৫২/৫৪৩ পি এস=১/ক৩৬৫৯ ডি-ক)।
সংক্ষিপ্ত সামরিক ট্রেনিং প্রদানের পর রাজাকাররা প্রথমেই যে কাজটি করতো সেটি হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে বেপরোয়া লুণ্ঠন, নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা এবং নারী নির্যাতন। পাকিস্তানি সৈন্যদের পথ প্রদর্শক হিসেবে এবং যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণের কারণে পাকিস্তানি জেনারেলরা রাজাকারদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় হোটেল এম্পায়ার-এর এক কর্মী সমাবেশে গোলাম আযম বলেন, ‘পাকিস্তান টিকিয়ে রাখার জন্যই জামাতে ইসলামী শান্তি কমিটি এবং রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। ..... জামাতের কর্মীরা শাহাদত বরণ করে পাকিস্তানের দুশমনদের বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা মরতে রাজী, তবুও পাকিস্তানকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করতে রাজী নয়।’ (দৈনিক পাকিস্তান, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)।
’৭১ জামায়াতে ইসলামীর বর্বরতার আরেকটি নৃশংস উদ্যোগ হচ্ছে হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর কায়দায় আলবদর, আলশামস বাহিনী গঠন, বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন এবং জামায়াতের ঘাতকদের দ্বারা সুপরিকল্পিতভাবে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের হত্যা। জামায়াত নেতা কামরুজ্জামানের উদ্যোগে ’৭১-এর এপ্রিলে শিক্ষিত তরুণ জামায়াতী ও তাদের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত এই বাহিনীর নেতাদের প্রধান কাজ ছিল পাকিস্তানি জেনারেল রাও ফরমান আলীর সঙ্গে বৈঠক করে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন করা। একই সঙ্গে স্বাধীনতাকামী বাঙালীদের খুঁজে বের করে হত্যা করা, হিন্দুদের বলপূর্বক মুসলমান বানানো, সেমিনার ও প্রচারপত্রের মাধ্যমে পাকিস্তানি ও জামায়াতী চিন্তাধারা প্রচার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সশস্ত্রভাবে মোকাবেলা করা ছিল বদর বাহিনীর নৃশংস তৎপরতার উল্লেখযোগ্য দিক। মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, কামরুজ্জামান, মীর কাশেম আলী প্রমুখ জামায়াত নেতার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই ঘাতক বাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় বরণের প্রাক্কালে এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যে পৈশাচিক বর্বরতায় হত্যা করেছে বিশ্বের ইতিহাসে তার নজির পাওয়া যাবে না। দেশের প্রখ্যাত লেখক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ ও সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার শত শত বুদ্ধিজীবী হত্যার জন্য দায়ী এই আলবদর বাহিনী। ১৪ সেপ্টেম্বর (’৭১) ‘আলবদর’ শিরোনামে এক নিবন্ধে জামায়াতীদের মুখপত্র ‘সংগ্রাম’ লিখেছিল, ‘আলবদর একটি নাম! একটি বিস্ময়। আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী আল-বদর সেখানেই। যেখানেই দুষ্কৃতকারী আল-বদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দুষ্কৃতকারীদের কাছে আল-বদর সাক্ষাৎ আজরাইল।’
’৭১-এর ৭ নবেম্বর ‘বদর দিবস’ উদযাপন করতে গিয়ে ঢাকার বায়তুল মোকাররমের প্রাঙ্গণে ইসলামী ছাত্র সংঘের এক সমাবেশে আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ চার দফা ঘোষণা প্রচার করেন। এই ঘোষণায় বলা হয়, ‘...যতদিন পর্যন্ত দুনিয়ার বুক থেকে হিন্দুস্তানের নাম মুছে দেয়া না যাবে ততদিন পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেবো না। ...আগামীকাল থেকে হিন্দু লেখকদের কোন বই অথবা হিন্দুদের দালালী করে লেখা পুস্তকাদি লাইব্রেরীতে কেউ স্থান দিতে পারবেন না, বিক্রী বা প্রচার করতে পারবেন না। যদি কেউ করেন তবে পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকরা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেবে। ...এই ঘোষণা বাস্তবায়িত করার জন্য শির উঁচু করে বুকে কোরান নিয়ে মর্দে মুজাহিদের মতো এগিয়ে চলুন। প্রয়োজন হলে নয়াদিল্লী পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে আমরা বৃহত্তর পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করব।’ পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মীর কাশেম আলী ‘বদর দিবসের শপথ’ হিসেবে ঘোষণা করেন— ‘ক) ভারতের আক্রমণ রুখে দাঁড়াবো। খ) দুষ্কৃতকারীদের খতম করবো, গ) ইসলামী সমাজ কায়েম করবো।’ (দৈনিক পাকিস্তান, ৮ নবেম্বর ১৯৭১)।
বদর বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মতিউর রহমান নিজামী ১৪ নবেম্বর দৈনিক সংগ্রাম-এ লিখেছেন— ‘সেদিন আর খুব দূরে নয় যেদিন আল-বদরের তরুণ যুবকেরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হিন্দু বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে, হিন্দুস্তানকে খতম করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করবে।’ বদর বাহিনীর অপর দুই প্রধান নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ এবং মীর কাশেম আলী ২৩ নবেম্বর এক বিবৃতিতে সৈনিক হিসেবে প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার জন্যে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এই সময়ে প্রকাশিত তাদের এক প্রচারপত্রে বলা হয়— ‘মনে রাখবেন আপনারা পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার জন্যই কেবল যুদ্ধ করছেন না। এ যুদ্ধ ইসলামের। নমরুদের হাত থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য আমাদের আমীরের (গোলাম আযমের) নির্দেশ পালন করুন।’
১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী যাদের ‘দুষ্কৃতকারী’, ‘ভারতীয় চর’, ‘নমরুদ’, ‘শত্র“’, ‘জারজ সন্তান’ ইত্যাদি বলতো তারা এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা— যাদের মরণপণ সংগ্রাম, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উঠলে জামায়াত এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা সব সময় যে সব কথা বলে এর বিরোধিতা করে সেগুলো হচ্ছে— ১) জামায়াত কখনও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, ২) বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কোন সুযোগ নেই এবং ৩) গত ৩৬ বছরে যেহেতু কোন সরকার তাদের বিচার করেনি এবং কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা করেনি, সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং এটি মীমাংসিত বিষয়।
’৭১-এর ঘাতক দালালদের এসব কথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং নির্জলা মিথ্যা ছাড়া যে আর কিছু নয় ’৭১-এর দৈনিক ‘সংগ্রাম’ ও অন্যান্য পত্রিকা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। শুধু জামায়াতের মুখপত্র নয়, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও জামায়াতের সঙ্গে আলবদরের সম্পৃক্তির কথা বলা হয়েছে। ‘পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র (রাজনৈতিক) বিভাগের পাক্ষিক গোপন প্রতিবেদনে (’৭১-এর অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধ) বলা হয়েছে, ‘১৭-১০-৭১ তারিখে পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘ (ওঈঝ) রংপুর শাখার একটি সম্মেলন (১০০ জনের) এটিএম আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্যদের ভেতর ডচওঈঝ-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী হাসান মোঃ মুজাহিদ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, দলের কর্মীদের উচিৎ হবে ইসলামবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে ইসলামী চেতনার যুব স¤প্রদায়কে নিয়ে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলা। তিনি বিভিন্ন স্তরে আলবদর বাহিনী গঠন করে দেশকে ভেতরের ও বাইরের আক্রমণ থেকে রক্ষারও আহ্বান জানান।’
’৭১-এর নবেম্বরের প্রথমার্ধের অনুরূপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘৭-১১-৭১ তারিখে ঢাকাসহ প্রদেশের অন্যান্য স্থানে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা প্রভৃতি আয়োজনের মাধ্যমে ‘আলবদর দিবস’ পালিত হয়েছে জামাতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মীদের দ্বারা, যেখানে অন্যান্য বিষয়ের ভেতর পাকিস্তানের প্রতি হিন্দুস্থানের আগ্রাসী মনোভাবের নিন্দার পাশাপাশি আলবদর বাহিনীতে যোগ দিয়ে পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার উদ্দেশ্যে শত্র“ ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।’ পাকিস্তানের গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদনে এ ধরনের বহু বিবরণ পাওয়া যাবে।
সাধারণ ক্ষমা সম্পর্কে জামায়াত হিটলারের নাৎসি মন্ত্রী গোয়েবলস-এর কায়দায় বিরামহীন মিথ্যা বলে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর সরকার কখনও যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করেনি। বরং তাদের বিচারের জন্য তখন একাধিক আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল, এমনকি সংবিধান পর্যন্ত সংশোধন করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ২৪ জানুয়ারি (’৭২) ‘দালাল (বিশেষ ট্রাইবুনালস) আদেশ’ জারি করেন। এরপর এই আদেশ ৬ ফেব্র“য়ারি, ১ জুন ও ২৯ আগস্ট ’৭২ তারিখে তিন দফা সংশোধনীর পর চূড়ান্ত হয়। দালাল আইনের অধীনে ৩৭ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিভিন্ন আদালতে তাদের বিচার আরম্ভ হয়। দালাল আইনে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সহ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যাবতীয় অপরাধের বিচারের বিধান ছিল।
সরকারি চাকুরিতে কর্মরতদের কেউ দালালী ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না তা যাচাই করার জন্য সরকার ১৩ জুন ১৯৭২ তারিখে আরেকটি আদেশ জারি করে, যা তখন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের সহযোগীদের বিচারের জন্য ২০ জুলাই ১৯৭৩ তারিখে জাতীয় সংসদে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন’ ১৯৭৩ পাশ করা হয়।
১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর দালাল আইনে আটক যে সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই তাদের জন্য সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। তবে সাধারণ ক্ষমার প্রেসনোটে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে— ‘ধর্ষণ, খুন, খুনের চেষ্টা, ঘরবাড়ি অথবা জাহাজ-অগ্নিসংযোগের দায়ে দণ্ডিত ও অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে ক্ষমাপ্রদর্শন প্রযোজ্য হইবে না।’ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর দালাল আইনে আটক ৩৭ হাজারের অধিক ব্যক্তির ভেতর প্রায় ২৬ হাজার ছাড়া পেয়েছিল। তারপরও ১১ হাজারের বেশি ব্যক্তি এ সকল অপরাধের দায়ে কারাগারে আটক ছিল এবং তাদের বিচার কার্যক্রম অব্যাহত ছিল। বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় এসে ’৭৫-এর ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন বাতিল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
দালাল আইন বাতিল হলেও ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবুনালস) অ্যাক্ট ১৯৭৩’ অনুযায়ী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার সাথে জড়িত পাকিস্তানিদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস-এর সদস্যদের বিচার এখনও করা সম্ভব। এই আইনে কীভাবে ট্রাইবুনাল গঠিত হবে, কারা ট্রাইবুনালের বিচারক ও আইনজীবী হবেন, ট্রাইবুনালের ক্ষমতা এবং এই ট্রাইবুনাল কত ধরনের যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার করতে পারবে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করলেও এই আইন বাতিল করেন নি।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের দায় থেকে অব্যাহতির অজুহাত তৈরি করার জন্য জামায়াতের নেতারা ’৭২-এর সিমলা চুক্তি এবং পরবর্তী ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কথা বলেন। সিমলা চুক্তি হয়েছে ’৭২-এর ২ জুলাই তারিখে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে, এতে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে কোন কথা বলা হয়নি। ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছিল তার ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, যেহেতু বাংলাদেশ সরকার ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দীকে বিচার না করে ক্ষমা করে দিয়েছে, সেহেতু তারা পাকিস্তানে ফেরত যেতে পারে।
পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা প্রদর্শন সম্পর্কে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ কামাল হোসেন বলেছেন, যেহেতু পাকিস্তান নিজ দেশে তাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল সে কারণেই বাংলাদেশ তাদের বিচার না করে ছেড়ে দিয়েছে উপমহাদেশে শান্তি ও সমঝোতার বাতাবরণ সৃষ্টির জন্য। এর সঙ্গে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থেকে অব্যাহতির প্রসঙ্গ আলোচনায় আসতে পারে না। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পরও দালাল আইনে বাংলাদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম অব্যাহত ছিল, এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবুন্যালস) অ্যাক্ট ১৯৭৩’-ও বাতিল করা হয়নি। এ কারণেই বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি একাকার করে ফেলার কোন সুযোগ নেই।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর যে সব সরকার ক্ষমতায় ছিল তারা কেউ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, এটা জাতির জন্য নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে অতীতে কোন সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নেয়নি বলে বিচার তামাদি হয়ে গেছে কিংবা যুদ্ধাপরাধী বলে বাংলাদেশে কেউ নেই। যুদ্ধাপরাধের বিচার কখনও তামাদি হয় না। ৬০-৬৫ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য খুঁজে বের করে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পর জামায়াতের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তাই তখন তাদের গ্রেফতার ও বিচার সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল এবং সংবিধান সংশোধন করে তাদের দেশে ফেরার পথ সুগম করেছেন। এখনও যেহেতু তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং সংবিধানকে উপহাস করে বক্তৃতা বিবৃতি অব্যাহত রেখেছেন— তাদের বিচার করা অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে জরুরি হয়ে উঠেছে।
জামায়াত যদি যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত না হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উঠলে দলের নেতারা কেন উন্মাদের মতো আচরণ করেন? শুধুমাত্র অপরাধীরাই বিচারের কাঠগড়াকে ভয় পায়। বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই জামায়াত আমাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল। তখন ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আমার নিঃশর্ত মুক্তি এবং মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল। জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে সেই সব সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছিলাম— আমি মামলা প্রত্যাহারের পক্ষে নই। কারণ আদালতে আমি প্রমাণ করতে চাই রাষ্ট্রদ্রোহী আমি নই, যারা আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছে তারাই রাষ্ট্রদ্রোহী। নিজেদের নিরাপরাধ প্রমাণের জন্য জামায়াতের নেতাদের সবচেয়ে বড় সুযোগ হচ্ছে বিচারের সম্মুখীন হওয়া। বিশেষ ট্রাইবুনাল যদি জামায়াতকে বা দলের কোন নেতাকে যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি দেয় কারও কিছু বলার থাকবে না। যুদ্ধাপরাধী না হলে জামায়াতের উচিৎ হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের দাবি সমর্থন করা। কিন্তু নিজামীরা তা করবেন না, কারণ আমরা যা জানি তার চেয়ে বেশি জামায়াত জানে মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা কীভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর খেদমত করেছিল, কীভাবে গণহত্যা, নারী নির্যাতন ও লুণ্ঠনসহ যাবতীয় ধ্বংসযজ্ঞে লিপ্ত ছিল।
জামায়াত এখনও মনে করে বাংলাদেশ পাকিস্তান রয়ে গেছে। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে পাকিস্তানি জেনারেলদের যে ধারণা জামায়াতের ধারণা তার চেয়ে আলাদা কিছু নয়। পাকিস্তানিরা মনে করে ’৭১-এ এদেশে কোন মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার যুদ্ধ হয়নি, সেটা ছিল গৃহযুদ্ধ। তারা আরও মনে করে ’৭১-এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেনি, নিহতের সংখ্যা খুব বেশি হলে ৫০ হাজার যার অর্ধেকের বেশি বিহারী। জামায়াতও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ মনে করে— অর্থাৎ ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ, যা একই দেশের ভেতর হয়। ৩০ লক্ষ শহীদের সংখ্যাও জামায়াতের নেতাদের কাছে অতিরঞ্জিত মনে হয়। কিছু দিন আগেও এক টেলিভিশনের আলোচনায় জামায়াতের জনৈক বুদ্ধিজীবী ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ বলেছেন, ’৭১-এ নিহতের সংখ্যা বলেছেন, ২৬ হাজার!
তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ও এখন বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলছে। গত জানুয়ারিতে (২০০৮) ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর মহাসচিব আইরিন খান ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছেন। গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বর্তমান সরকারের প্রধান ও সেনাবাহিনী প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। গত ১ এপ্রিল (২০০৮) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনাকালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের কথা জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের প্রধান একাধিক বার বলেছেন যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেয়া হবে না। এত কিছুর পরও সরকার যদি এখনই যুদ্ধাপরাধীদের সনাক্ত করে বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ না করে তাহলে আত্মস্বীকৃত যুদ্ধাপরাধীরা নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বলবে যে তারা যুদ্ধাপরাধ করেনি। বর্তমান সরকার নিশ্চয়ই গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদী-কামরুজ্জামানদের যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য ক্ষমতায় আসেনি!
৩ মে ২০০৮

(শাহরিয়ার কবির)
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×