somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ না করার খেসারত’

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত সোমবারের ঘটনা আবারও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মানুষকে আতঙ্কিত করতে জামায়াতে ইসলামী যেকোনও কৌশল অবলম্বন করতে পারে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল হিসেবে দলটি এ সুযোগ নেবে-এটাই তাদের চরিত্র। শুধু ভোটের স্বার্থ দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। এ ধরনের রাজনীতি মানুষকে উন্নয়ন দিতে পারে না। বরং জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাস দমনে সরকারের ইচ্ছাগুলো প্রশ্নবিদ্ধ করে। সরকারের অবস্থান পরিষ্কারভাবে জানতে চায় মানুষ। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ না করার খেসারত দিচ্ছে জনগণ। সম্প্রতি রাজধানীসহ কয়েকটি বড় শহরে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। রাস্তায় অগ্নিসংযোগে করা হয় বিপুল সংখ্যক গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাস। চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয় । এ থেকে রক্ষা পায়নি স্কুল কলেজে পড়-য়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। কয়েকজন বুদ্ধিজীবী এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমাদের সময়কে।

ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি সান সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর দল। বিচার বাধাগ্রস্ত করতে তারা দেশের কয়েকটি অঞ্চলে এক ধরনের গুপ্ত হামলা চালিয়ে ভয়ঙ্কর তাণ্ডব করেছে। যদিও এ সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধীদের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি। সম্ভবত দলটি এ ঘটনা ঘটিয়ে দেশবাসীকে তাদের শক্তির ‘ম্যাসেজ’ দিতে চেয়েছে । তিনি আরও বলেন, আমরা কিন্তু পার্লামেন্টে ‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করতে মত দিয়েছিলাম। কারণ, জামায়াতে ইসলামী কাণ্ডকীর্তি সম্পর্কে আমাদের একাত্তরের অভিজ্ঞতা আছে। ধর্ম নিয়ে দলটি রাজনীতি করেছে। মানুষ হত্যা করেছে। সরকারের কিছু কিছু বিষয়ের সমালোচনা করে সৈয়দ আনোয়ার বলেন, স্ববিরোধী আচরণ দেখেতে চাই না। বর্তমান সরকারের অবস্থাটি আমরা পরিষ্কারভাবে জানতে চাই।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি, বিএনপিসহ বিভিন্ন দল আচরণ বদলালেও ১৯৪১ সালে জš§ নেওয়া এ দলটি বদলায়নি। একাত্তরে দলটি এদেশের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। গত সোমবার দলটি জনগণের ক্ষতি করে আতঙ্কিত সৃষ্টি করেছে। সুপ্রিম কোর্ট এদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে বলেছে। এ থেকে এটা প্রমাণিত হল যে, তারা এহেন কর্ম নেই যা পারে না। জামায়াতের আস্তিনে এরূপ আরও ১শটি সংগঠন আছে। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ রাখার বিরোধিতা আমরা করেছি একারণেই। বঙ্গবন্ধু ও তার সহকর্মীদের দূরদর্শিতা ছিল বলেই বাহাত্তরের সংবিধানে ধর্ম নিয়ে রাজনীতির কথা ছিল না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এরপরও সরকারের বোধোদয় হবে কি?

বিশিষ্ট কবি রফিক আজাদ বলেছেন, রাষ্ট্র সকল মানুষের কথা বিবেচনা করে বলেই তার কোনও ধর্ম থাকে না। ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে। রাজনীতির নামে দেশের জনগণকে জিম্মি করা, আতঙ্কিত করা, হত্যা করা, সম্পদ ধ্বংস করা, আগুন দেওয়ার মত ঘটনা জামায়াতে ইসলামী করে থাকে। তারা ধর্মকে ব্যবহার করে আসছে জš§লগ্ন থেকেই। এতবড় ঘটনার পর আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে, জামায়াত পরিকল্পিতভাবে আরও তাণ্ডব করবে। এ কারণে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের ধর্ম হওয়া উচিত জনগণের নিরাপত্তা, জনগণের সুযোগ-সুবিধা। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা অবিকৃতভাবে ধারণ করছে বাহাত্তরের মূল সংবিধান।

গত ২৬ জুন আলোচনা সভায় ‘সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম রাখলে ভোটের হিসাব উল্টোও হতে পারে’ এমন বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হয়েছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি কবীর চৌধুরী।
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×