somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাগান --- মায়ানমারের এক অসাধারন দৃষ্টিনন্দন পুরাতাত্বিক প্রাচীন নগরীতে দুটো দিন ( শেষ পর্ব)

২৬ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অত্যাশ্চর্য্য এক নগরী বাগান

পরদিন ঠিক সকাল আটটায় আমাদের গাইড আসলো, নাম তার সারাহ। নামটি সেদেশের জন্য ব্যাতিক্রমী বটে। আমরা তৈরী হয়ে রিসেপশনেই বসে আছি ।পরিচিতির পালা শেষ করে রওনা হোলাম পর্যটকদের স্বর্গরাজ্য পুরনো বাগানের পথে। ট্যুর কোম্পানীর গাড়ীতে চলেছি বাগান নগরীসহ সেখানকার শতাব্দী প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারগুলো দেখবো বলে।

প্রথমেই সারাহ আমাদের নিয়ে গেল একটা কাঁচা বাজারে। কি ব্যাপার? উদ্দেশ্য আমাদের স্থানীয় বাজারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। হয়তো পাশ্চাত্যের পর্যটকদের কাছে এটা আকর্ষনীয় বা নতুন কিছু, কিন্ত এতো আমাদের চির পরিচিত কাচা বাজার। সেই সব্জী, মাছ, চাল -ডাল সাজিয়ে বসা বিক্রেতা। তবে সেখানকার ঐতিহ্য অনুযায়ী বিক্রেতারা বেশিরভাগই নারী। তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসলাম, অবশ্য আমার একটা স্লিপারের দরকার ছিল সেটা কেনা হলো এই যা ।


স্থানীয় কাঁচা বাজার

গাইড জানালো চল্লিশ স্কয়ার মাইল জায়গা জুড়ে গড়ে ওঠা বাগান নগরীটি পুরানো আর নতুন এই দু ভাগে ভাগ করা। পুরনো বাগান যা সরকারীভাবে সম্পুর্ন সংরক্ষিত, এখানে কোন ঘর বাড়ী তোলা নিষেধ। নতুন বাগানেই সব লোকজনের বসতি। তারপর ও সেখানে জনসংখ্যা অত্যন্ত কম। রাস্তাঘাটে কোন মানুষজন দেখেছি কিনা মনে করতে পারছি না।

বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বাবলা ঝাড়ের মাঝে ইতি উতি সুচালো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য দৃষ্টি নন্দন লাল টেরকোটার প্রাচীন মঠ যার বেশিরভাগই পরিত্যাক্ত। কয়েকবার গাড়ী থেকে নেমে ছবি তুললাম, ঘুরে ঘুরে দেখলাম। পেশায় শিক্ষিকা সারাহ হাসি মুখে শুরু করলো বাগানের ইতিহাস। আসুন আমার মুখ থেকে আপনারাও শুনে নিন সেই অভুতপুর্ব প্রাচীন এক নগরীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।


পথের দুপাশ জুড়ে এমন মঠের দেখা মিলবে

বাগান শহরে জনপদের সুচনা যদিও ২য় শতকে হয়েছিল তবে এর প্রকৃত শুরুটা হয়েছিল নবম শতকে। যখন রাজা মারমান্স ওরফে বারমান্স বর্তমান চীনের অংশ নানঝাও রাজত্বের শেষ পর্যায়ে সেখান থেকে এসে মধ্য বার্মার ইরাবতি নদীর এই ছোট্ট উপত্যকায় আস্তানা গাড়ে। রাজা বারমানস ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে একত্র করে ১০ শতকের মধেই পাগান রাজত্বকে সুসংহত করে ফেলে। আর এই পাগান বা বাগান ছিল এর রাজধানী যা তেরশ শতাব্দী পর্যন্ত অক্ষুন্ন ছিল।


একাকী নিঃসংগ

আর এই সময়েই ১১-১৩ শতকের মাঝে শুধু বাগান শহরেই ছোট বড় মিলে প্রায় ১০,০০০ মন্দির বানানো হয়েছিল। বর্তমান মায়ানমারের ভাষা, সংস্কৃতির এবং ধর্মের গোড়াপত্তন এই বাগানেই হয়েছিল বলে গন্য করা হয়। সারাহ জানালো সে সময় অনেক ধনী ব্যাক্তিরাও এখানে প্রচুর মঠ বানিয়েছিল কারন তারা মনে করতো এর ফলে তাদের স্বর্গবাস সুনিশ্চিত।


কি অসাধারন বাগানের রূপ

১০৪৪ থেকে ১২৮৭ খৃঃ সময় বাগান ছিল পাগান অর্থাৎ মায়ানমারের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দু। এই ২৫০ বছরে মাত্র ৪০ বর্গ মাইল এলাকার মাঝে মোট ১০০০ স্তুপা, ১০০০০ বৌদ্ধ মন্দির এবং ৩০০০ মনেষ্ট্রি বাগান উপত্যকায় গড়ে তুলে। বাগান হয়ে উঠলো বুদ্ধ ধর্মের এক সমৃদ্ধ পীঠস্থান। তবে এখানে কিন্ত অপরাপর ধর্ম এবং ভিন্নমতের সংমিশ্রন এবং সদ্ভাবের চিনহ লক্ষ্য করা যায়। বাগান পালি ভাষা ছাড়াও বিভিন্ন ভাষা চর্চার এক উৎকৃষ্টতম কেন্দ্র হয়ে উঠে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে পন্ডিতরা এখানে এসে বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা করত।


ভুমিকম্পে বহু মঠ এমন ভাবে ভেঙ্গে আছে

১২৮৭ সালে মোঙ্গলরা বাগান নগরীতে আধিপত্য বিস্তার শুরু করলে এই রাজ্যের স্বর্ন যুগের অবসান হতে শুরু করে। ২ লক্ষ লোকের বাস থেকে বাগান ধীরে ধীরে ছোট্ট একটি গ্রামে পরিনত হয়। এবং ১২৯৭ সালে বাগান পরিপুর্নভাবে রাজধানী হিসেবে এর রাজনৈতিক পরিচয় হারিয়ে ফেলে।


অপরূপা বাগান

বাগান শহরটি এ্কটি সক্রিয় ভুমিকম্প প্রবন অঞ্চলে অবস্থিত। গত ১০০ বছরে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০০টি ভুমিকম্প এখানে আঘাত হানে। অনেক মন্দিরের এখন কোন অস্তিত্ব নাই। সেই দশ হাজার মন্দির মঠ আর স্তুপার মাঝে এখন কারো কারো মতে মাত্র ২২২৯টি কারো মতে ৩০০০ হাজার মন্দির/মঠ টিকে আছে।


দূর থেকে গাছের ফাকে আনন্দ মঠের চুড়ো

এগুলো মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো টিলোমিনোলো, আনন্দপায়া, ধামাইয়ানগি, থাটবিনিয়ু, সোয়াজিগন ইত্যাদি। এসব হাজার হাজার মঠের কোনটি পুন্যার্থীর পদভারে মুখরিত আর কোনটি পরিত্যাক্ত। এখানকার প্রতিটি মঠের নির্মান শৈলীতে স্থানীয় নকশার বৈশিষ্ট ছাড়াও ভারতীয় এবং ক্যাম্বোডিয়ার বিখ্যাত খেমার স্থাপত্যকলার সুপষ্ট ছাপ লক্ষ্য করা যায়।


মোহনীয় বাগানের রূপ

যাই হোক ১২৯৭ পরবর্তী ৬০০ বছর অনাদরে অবহে্লায় বাগান ছোট একটি জনপদ এবং শুধুমাত্র একটি ধর্মীয়স্থান হিসেবেই শুধু পরিচিতি লাভ করে। মাঝে মাঝে বড় বড়ো মন্দিরগুলোর কিছু সংস্কার হয়েছিল তবে তা মুল কাজের সাথে মোটেও মানানসই ছিলনা। ১৯৯০ সালে বার্মার সামরিক সরকার পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য এর সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়। যদিও অনেক মন্দির তার আদিরূপেই এখন আছে যেগুলো খুব সহজেই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে অন্তর্ভুক্ত হবার দাবী রাখে, কিন্ত অত্যন্ত সামান্য কিছু সংস্কার কাজ করার জন্য ইউনেস্কো বাগান শহরটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের মর্যাদা দেয় নি।


পথের পাশে

কিন্ত তাতে বাগানের কি যায় আসে ? বাগান তার ব্যতিক্রমী এবং অতুলনীয় সৌন্দর্য্য দিয়ে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটকদের টেনে নিয়ে যায় সেখানে। এই নগরী এখন পশ্চিমা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় একটি পর্যটন স্পট। ২০১৫ সালে প্রায় ৩ মিলিয়ন পর্যটক বাগান ভ্রমন করবে বলে সেদেশের পর্যটন মন্ত্রনালয় আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন। তথ্যমতে ইতিমধ্যে প্রায় এক মিলিয়ন পর্যটক মায়ানমার তথা বাগান ভ্রমনে এসেছে। তুলনামুলক ভাবে এত ঐশ্বর্য্য থাকা সত্বেও গোটা বাংলাদেশ ভ্রমনে সারা বছরে ১ মিলিয়ন পর্যটক ও আসে না।


জায়গায় জায়গায় ভেঙ্গে পড়া সুউচ্চ দেয়ালটি ঘিরে রেখেছে পুরোনো বাগান নগরীর একটি অংশকে

চলতে চলতে প্রথমেই হাজির হোলাম দেয়ালের বাইরে অবস্থিত বিশাল প্রাঙ্গনের মাঝখান জুড়ে নির্মিত অতিকায় এক ঘন্টাকৃতির স্বর্নালী রঙের প্যাগোডায়, নাম সোয়াজিগন। দেয়ালের ব্যাপারটা এখানে আগে একটু উল্লেখ করে নেই । তা হলো এই পুরনো বাগানের একটি অংশ সেই প্রাচীন যুগ থেকেই ১২টি তোরণ উচু লাল ইটের দেয়াল দিয়ে ঘিরে রাখা, আর সেই দেয়াল বেষ্টিত বাগানের অংশে রয়েছে অনেকগুলো বিখ্যাত মঠ আর বৌদ্ধ বিহার। তোরনের বাইরের দেয়ালের সাথে লাগানো দুদিকে দুটো ছোট্ট মন্দিরে রয়েছে, এই মন্দির দুটিতে অধিষ্ঠিত রয়েছে বাগান নগরীর রক্ষাকর্তা দুজন দেব-দেবী, সম্পর্কে তারা ভাই- বোন। ।


দেয়ালঘেরা বাগানের অংশে ঢোকার ১২টি তোরণের একটি

এই দেয়াল ঘেরা অংশে ঢুকতে হলে মাথাপিছু ২০ ডলার ফি দিতে হবে যা এয়ারপোর্টেই কেটে রেখে আপনাকে দেবে বাগান নগরীতে প্রবেশাধিকারের চিনহ স্বরুপ একটি স্টিকার। আমরা যেহেতু বাসে এসেছি তাই ফি টা গেটে দিতে হলো। দেখলাম ওরা খুব অল্পদিনেই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পর্যটনকে একটি শিল্পে পরিনত করে তুলেছে ।


তোরণের দুদিকে ছোট মন্দিরের ভেতর দুটো দেব মুর্তি, নগরীর রক্ষাকর্তা যাকে বলে

যাই হোক এখন আমরা এসেছি সোয়াজিগন স্তুপায় যাকে বলা হয়ে থাকে ইয়াঙ্গন তথা মায়ানমারের বিখ্যাত সডেগন প্যাগোডার পুর্বসুরী। চারিদিক ঘুরে ঘুরে দেখতে অনেক সময় লাগলো। এখানে বুদ্ধ মুর্তি ছাড়াও বিভিন্ন স্থানীয় দেব দেবীর মুর্তি রয়েছে যা অন্য কোন মঠে চোখে পড়ে নি। যেমন বাগান নগর রক্ষকের মুর্তির প্রতিকৃতি ছাড়াও আরো অনেক অদ্ভুত রহস্যময় মুর্তি।


স্বর্নালী সোয়াজিগন স্তুপা

গাইড জানালো এই স্তুপার এক দিকে যে বিশাল ঢোলটি রয়েছে তা বাজালে অপর দিক থেকে শোনা যায় না। এর প্রাঙ্গনে Chayar বলে এক গাছ আছে যাতে সারা বছর চলে ক্লান্তিবিহীন ফুল ফোটানোর খেলা । স্থানীয়দের বিশ্বাস এই স্তুপার নীচে গৌতম বুদ্ধের পবিত্র দাঁত এবং হাড় রয়েছে। এ কারনে সোয়াজিগন বুদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত সন্মানিত এক স্তুপা।


টিলোমিনলো মঠ

এর পর আসলাম Htilominlo মঠে ।এটাও দেয়াল ঘেরা বাগান নগরীর বাইরে অবস্থিত। লাল ইটের তৈরী নান্দনিক ডিজাইনের এক সুউচ্চ তোরণ পার হয়ে আমরা ইট বিছানো পথ বেয়ে হেটে যাচ্ছি । দু দিকে সারি সারি স্যুভেনীরের দোকান। সেই সাথে রয়েছে বাগানের সম্পুর্ন নিজস্ব ঐতিহ্যময় চিত্রশিল্প স্যান্ড স্টোন পেইন্টিং এর দোকান।স্থানীয় শিল্পীরা মাটিতে উপুড় হয়ে নিবিষ্ট মনে একে চলেছে বালু লাগানো কাপড়ের উপর বাগান নগরী সম্পৃক্ত ঘটনাবলীর চিত্র।

এখানে স্যান্ড স্টোন পেইন্টিং এর একটু বিবরন না দিলেই নয় । এই চিত্র আঁকতে গেলে প্রথমে এক টুকরো সাদা কাপড়ে আঠা লাগিয়ে ইরাবতী নদীর বালি মাখানো হয়। এই বালি আবার দু রঙের। ইরাবতী নদীর বালি সাদা আর তার শাখাগুলোর বালি ধুসর রঙের। এই বালি শুকিয়ে গেলে তার পর আবার আঠা লাগিয়ে আবার বালি মাখানো। এমন ভাবে তিন চার বার করার পর তার উপর আঁকা হয় অপরূপ সব চিত্রাবলী যা আপনাকে কিনতে বাধ্য করবে। যা আমাকেও করেছিল ।


সারাহ আমাকে দেখাচ্ছে স্যান্ড পেইন্টিং এর নমুনা

অবশেষে আমরা এগিয়ে গেলাম মূল মঠের দিকে। ১২১১ সনে রাজা হিটিলোমিনলো ৪৬ মিটার উচু তিন স্তরের এই মঠটি নির্মান করেছিলেন।অন্য দেশের কথা জানি না তবে মায়ানমারের প্রতিটি মঠেরই চারিদিকে খিলান আকৃতির খোলা দরজা। দরজার ভেতরে বর্গাকৃতি ঘরে চারটি বিশাল আকৃতির বুদ্ধ মুর্তি চারিদিকে মুখ করে আছে । তাদের মতে এর অর্থ হলো পৃথিবীর চারিটি দিক আর সেই চারিদিকেই বুদ্ধের কল্যানকর সুদৃষ্টি ছড়িয়ে আছে । সারাহ জানালো ১৯৭৫ এর ভুমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এই অনিন্দ সুন্দর মঠটি পরে ঠিক করা হয়েছিল।


টিলোমিনলো মঠের খিলানাকৃতি দরজা

দোকানগুলোকে ছাড়িয়ে আসার পর মঠ ঘুরে দেখবেন কিছুটা সময় নিয়ে । তারপর নির্জন নিরিবিলি সেই মঠের টেরাকোটা ইটের পৈঠায় বসে যখন আপনার ক্লান্ত পা দুটোকে ছড়িয়ে দেবেন, তখন পাশেই সেই শত বছরের পুরনো নিমের শাখায় ঝিরি ঝিরি শব্দ তুলে বয়ে যাওয়া বাতাসের স্পর্শে আমি নিশ্চিত আপনি হারিয়ে যাবেন শতাব্দী প্রাচীন এক জগতে ।


সুবিখ্যাত আনন্দ পায়া

সারাহর ডাকে উঠে আসলাম ।এর পর আমাদের দেখার তালিকায় আসলো বার্মার প্রাচীন মঠের মধ্যে সবচেয়ে সংরক্ষিত ও অবিকৃত মঠ আনন্দপায়া। এর আসল নাম সংস্কৃতভাষায় অনন্ত পিনিয়া অর্থাৎ সীমাহীন জ্ঞ্যান। ১০৯১ সনে তৈরী নির্মিত এই মঠ বাগানের চারটি মঠের মাঝে অন্যতম প্রধান আকর্ষন। অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এই মঠের উপরে রয়েছে নানা রকম রত্ন খচিত স্বর্নালী ছাতা যা মায়ানমারের সব মঠেই দেখা যায়।


আনন্দ পায়া , পায়া অর্থ মঠ

এই মঠের নির্মান শৈলিতে রয়েছে মায়ানমার আর ভারতীয় স্থাপত্যকলার সুস্পষ্ট ছাপ। মঠের ভেতরে ঢুকে করিডোর দিয়ে হেটে গেলে দেখতে পাবেন চারিদিকে চারটি স্বর্নালী পাতে মোড়া বিশাল সাইজের বুদ্ধের মুর্তি যা প্রথাগতভাবেই চারিদিকে মুখ করে আছে।


এমনি ভাবে চারিদিকে মুখ করে আছে চারটি গৌতম বুদ্ধের মুর্তি

চারিদিকে ঘুরে আসা করিডোরের দেয়াল জুড়ে রয়েছে গৌতম বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন সময়ের বিশেষ করে প্রথম দিকের ঘটনাবলী নিয়ে কিছু ফ্রেস্কো, আর হাতে আঁকা ছবি । ছাদে আকা পেইন্টিং এর কিছু কিছু অবিকৃত রয়েছে আর কিছু বা মুছে গেছে কালের করাল গ্রাসে।


আনন্দ মঠের করিডোরের ভল্ট আকৃতির ছাদে আঁকা চিত্র যা দেখে আপনার ভ্যাটিকান এর সিস্টিন চ্যাপেলের কথা


আনন্দ মঠের ভেতরের দেয়ালে বুদ্ধের জীবন নিয়ে তৈরী ফ্রেসকো


দেয়ালের গায়ে আঁকা রঙ্গীন ময়ুর

প্রাঙ্গনেও রয়েছে দেখার মত অনেক কিছু । তবে সংস্কার কাজের জন্য মনেষ্ট্রিতে ঢোকা সম্ভব হয়নি।আস্তে আস্তে বের হয়ে আসলাম আনন্দ মঠ থেকে।

এর পরের গন্তব্য আরেকটি উল্লেখযোগ্য মঠ নাম তার ধাম্মাইয়াঙ্গী।



লাল ইটের তৈরী ধাম্মাইয়াঙ্গী মঠের দৃষ্টিনন্দন তোরন

ধাম্মাইয়াঙ্গী মঠটি অনেকটা মিশরের পিরামিডের আদলে তৈরী, আকারেও বিশাল, বাগানের যে কোন উচু জায়গা থেকেই এটি আপনার নজর কাড়তে বাধ্য। সারাহ জানালো স্থানীয়রা এই মঠকে ভুতুড়ে বলে মনে করে। কারন এর নির্মাতা রাজা নারাথু তার বাবা, ভাই এমনকি রানীকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করেছিল। অনেকে মনে করে এর বন্ধ দেয়ালের পেছনে অনেক হীরে জহরত লুকিয়ে আছে। এসব ছাড়াও এই মঠে রয়েছে বুদ্ধের দ্বৈত মুর্তি যা একটি ব্যাতিক্রম ।

বিশাল মঠটি খুটিয়ে খুটিয়ে দেখার পর ফিরে এলাম সেই তোরণের কাছে যেখানে এক মহিলা কাচা আম ফালি ফালি করে কেটে পরিস্কার পলিথিনের প্যাকেট করে বিক্রি করছিল, সাথে লবন আর শুকনা মরিচের গুড়োর ছোট ছোট প্যাকেট। তাই একটা কিনলাম ২০০ চেস দিয়ে । প্রচন্ড সেই গরমের মাঝে সেই কাচামিঠা আমের স্বাদ অপুর্ব লাগছিল।


সুবিশাল ধাম্মাইয়াঙ্গী মঠ

মায়ানমারের বিভিন্ন মঠের দেয়ালে ছোট সাইনবোর্ডে লেখা আছে ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য্য বজায় রাখার জন্য পোশাকের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা। যেমন নারী পুরুষ নির্বিশেষে হাফ প্যন্ট বা হাতা কাটা গেঞ্জী পরা সম্পুর্ন নিষেধ। পর্যটকদের মধ্যে বেশিরভাগই তা মেনে চলার চেষ্টা করছে বিখ্যাত বার্মিজ লুঙ্গির মাধ্যামে যাকে বার্মিজরা লঞ্জি বলে উল্লেখ করছিল।

এরপর থটবিন্নিয়ু, গদপালিন আর সুলামানি মঠ দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে গেল। সাথে সাথে পেটের মধ্যে ছুচোর কীর্তন । দুপুরও হয়ে আসলো তাই খেতে বসলাম নির্ধারিত রেস্টুরেন্টে।


সাদামাটা রেস্তোরায় দুপুরের খাবারের অপেক্ষায়

দেয়াল ঘেরা বাগান নগরীর একটি ছিমছাম রেস্তোরায় আমাদের দুপুরের খাবারের ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। সারাহ বিশেষ করে আমাদের ধর্ম আর খাবার ব্যাপারে আগেই তাদের সতর্ক করে দিয়েছিল। ভালো করে প্লেট বাসন ধুয়ে দেয়া ছাড়াও কোন নিষিদ্ধ খাবার যেন তালিকায় না থাকে তার নির্দেশ ছিল। তিন বছরের এক দুষ্ট ছেলের মা সারাহর মুখে হাসি যেন লেগেই ছিল।


ল্যাকারের তৈরী জিনিস পত্র

খাবার পর হোটেলে ফেরার পথে সে আমাদের নিয়ে গেল এক ল্যাকার কারখানায়, যেখানে ঐ এলাকার বিখ্যাত ল্যাকারের (এক প্রকার গাছের আঠালো কষ)জিনিসপত্রগুলো তৈরী হচ্ছে। বিশেষভাবে কারখানার হাসিখুসি মালিক আমাদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখালো দক্ষ শিল্পীদের হাতের সেই সব পরিশ্রমের ফসল। কিনে আনলাম কিছু ছোট খাটো ঘর সাজানোর সামগ্রী স্যুভেনীর হিসেবে।

রুমে ফেরা মাত্র আজও আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামলো । ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মুষল ধারে সেই বৃষ্টিতো নয় যেন আশীর্বাদ। প্রচন্ড সেই তাপদাহের মাঝে ঠান্ডা ঠান্ডা সেই বৃষ্টি ভেজা বাতাসের ছোয়া কি অপুর্ব তার অনুভূতি তা ভাষায় প্রকাশের নয়।


গাইড সারাহ ও আমাদের চালক সহ বাহন

ঠিক বিকেল সাড়ে চারটায় গাইড এসে আমাদের নিয়ে রওনা হলো পুরনো বাগানে। পুরো বাগান শহরটি উপর থেকে পরিস্কারভাবে দেখার জন্য আমরা প্রচন্ড আগ্রহী ছিলাম। আমি শুনেছি আভ্যন্তরীন ফ্লাইটগুলো বাগানের উপর দিয়ে যাতায়তের সময় ঘোষনা দিয়ে প্লেন নীচে নামিয়ে আনে, এতই তার সৌন্দর্য্য। আমরা কি ভাবে দেখবো ?

জানি বৃটিশ কোম্পানীর তৈরী হট বেলুনেও চড়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। তার জন্য গুনতে হবে মাথাপিছু ২৮০ থেকে ৩২০ ডলার। শুন্যের মাঝে বেলুনের দুলুনির কথা মনে পড়ার সাথে সাথেই আমার নার্ভাস লাগতে লাগলো। আমার সহ -পর্যটক যখন সে ব্যাপারে খোজ খবর নিচ্ছিল গাইড জানালো এখন অফ সিজন তাই বেলুন উড়া বন্ধ। সহযাত্রী নিদারুন মনমরা হলো কিন্ত আমি খুব খুশী হোলাম।


নাম না জানা এক মঠ

বেলুন বাদ, এখন কি করে উপর থেকে পুরো নগরীটি দেখা যায় সে ব্যাপারে গাইডকে জিজ্ঞেস করলুম। গাইডের মতে বাগান নগরীর বিখ্যাত সুর্যোদয় আর সুর্যাস্ত দেখার জন্য অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে এক ওয়াচ টাওয়ার কিন্ত সেটা নগরীর এক প্রান্তে থাকায় পুরো শহরের অসাধারন সেই রূপ আপনি দেখতে পাবেন না। যা আমরাও পরে খেয়াল করেছি ।


Shwesandaw বিহারের সিড়ি

এখন কি হবে ? সারাহ অভয় জানিয়ে বল্লো এর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা হলো এই নগরীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মঠ Shwesandaw Pagoda। বলা হয়ে থাকে প্রথম দিকের এই মঠটি মায়ানমারের জাতির পিতা রাজা অনর্থ ১০৫৭ সালে নির্মান করেছিলেন । সারাহ আরো জানালো দেয়ালের বাইরে অবস্থিত এই মঠটি নিয়ে মোট চারটি মঠ চারিদিক থেকে এই নগর ও নগরবাসীকে সব ধরনের জাগতিক সমস্যা থেকে সুরক্ষিত করে রাখে ।
কিন্ত এই মঠের মাথায় উঠে সুর্যাস্ত দেখতে হলে আপনাকে পাঁচ ধাপে তৈরী চওড়া চওড়া খাড়া সিড়ি বেয়ে সেই উপরের সরু চাতালে উঠতে হবে যা বয়স্ক আর শিশুদের জন্য নিরাপদ নয় বলে গাইড জানালো। আমরা প্রথম ক্যাটাগরীতে পরায় আর সাহস করিনি। সুর্যোদয় আর সুর্যাস্ত এ দুটি সময়ে সেখানে থাকে পর্যটকদের প্রচন্ড ভীড়। এ পর্যন্ত বাগানের যত ছবি তার বেশিরভাগই এখান থেকে তোলা বলে শুনেছি।


এটাই সেই মঠ ধাম্মা ইয়াজাকি যেখান থেকে আমরা সুর্যাস্ত দেখেছিলাম

শুনে মনটাই খারাপ হয়ে গেল । এত দূর আসলাম আর বাগানের আসল সৌন্দর্য্যটাই দেখা বাকি থেকে যাবে ! সারাহ বল্লো 'চলো আগে চা খাই তারপর দেখা যাবে'। এই বলে গাড়ী করে নিয়ে গেল অল্প কিছু সিড়ি বেয়ে উঠা লাল ইটের অসাধারন কারুকার্য্যময় এক মঠের উপর নাম তার ধাম্মা ইয়াজাকি, তবে সারাহ একে টি টেম্পল বলে উল্লেখ করছিল। সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে সারাহ জানালো এই মঠেও নাকি প্রচুর ট্যুরিষ্ট আসে বাগানের অপরূপ সুর্যোদয় আর সুর্যাস্ত দেখার জন্য। তবে অফ সিজন থাকায় গোটা সাতেক ইউরোপিয় পর্যটক ছাড়া আর কেউ ছিল না।


মঠের এই ছোট ঘরগুলোতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা একসময় ধ্যান করতো

মঠের উপর চত্বরে যেতেই দেখি দুজন ছবি বিক্রেতা বিখ্যাত স্যান্ডস্টোন পেইন্টিং এর পশরা সাজিয়ে বসেছে। ছবির ব্যাপারে আমার আগ্রহ দেখে ওরা বার বার হাসিমুখে ইশারায় জানতে চাইলো আমি কিনবো কি না ? ভাষার কারনে তাদের বুঝাতে পারিনি আমি যে সকালেই টিলোমিনলো মঠ থেকে কিনে ফেলেছি চমৎকার এক স্যান্ড পেইন্টিং।


স্যান্ড পেইনটিং

আমাদের জন্য ট্যুর কোম্পানীর পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল চা আর সাথে বিভিন্ন রকম টা ও। সারাহ কাপে চা ঢেলে আমাকে ডাকছে কিন্ত আমার মতন চা পাগল সেই ডাক উপেক্ষা করে অবাক নয়নে দেখছে বিশ্বের কাছে লুকিয়ে থাকা এক বিস্ময়কর প্রাচীন জনপদ নাম তার বাগান ।


অপরূপ সেই বিকেল

সত্যি বলতে কি চারিদিকে তাকিয়ে আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম, ঐ যে দূর দূর দিগন্ত জুড়ে বিস্তৃত সবুজ আর সবুজ এর মাঝে লাল টেরাকোটার অসংখ্য মন্দির, ছোটবেলা থেকেই যে নদী তার নামটির জন্যই আমার প্রিয় তালিকায় রয়েছে সেই ইরাবতী নদীর রেখা, আর সেই অবর্ননীয়, অপরূপ সুর্যাস্তের যে দৃশ্যটুকু দেখলাম তা আমার মনের ক্যানভাসে সারা জীবনের জন্য যেন এক ছবি একে রেখে গেল , যা কখনোই ভোলার নয়। সেই অপুর্ব দৃশ্যের বর্ননা দেয়ার মত ভাষা আমার জানা নেই।


সুর্য্য অস্ত যাবার জন্য তৈরী হচ্ছে

আস্তে আস্তে সুর্য্য ডুব দিচ্ছে পশ্চিম দিগন্তে । কেমন বিষন্ন হয়ে উঠলো মন সেই হাজার বছরের প্রাচীন নগরীর এক ভাঙ্গা মন্দিরের চাতালে দাঁড়িয়ে। ছবি বিক্রেতারা আস্তে আস্তে তাদের পসরা গুটিয়ে তুলছে, আবার আসবে আগামীকাল হয়তো। আমরা অবশ্য তখন থাকবো না। চারিদিকে আধার ঘনিয়ে আসছে ধীর লয়ে।


সাঁঝের বাগান

আমাদের জন্য চা সাজিয়ে বসে আছে সারাহ । আজন্ম বাগানে বেড়ে ঊঠা সারাহর হয়তো এ দৃশ্যে কোন প্রতিক্রিয়া নেই, কিন্ত আমাদের দৃষ্টি তখন সুদুরের পানে । সেই অনির্বচনীয় দৃশ্যের সবটুকু মাধুরী যেন চুমুকে চুমুকে পান করে চলেছি। আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে আসলো চারিদিক । বসলাম সারাহর বাড়িয়ে দেয়া চায়ের কাপ হাতে নিয়ে।


চা

চা খেতে খেতে সারাহ জানালো ‘তোমাদের নিয়ে বাগানের ভেতরেই মেঠো পথ দিয়ে নাম না জানা ছোট ছোট কিছু মঠ দেখানোর কথা ছিল, কিন্ত বৃষ্টি হয়েছে। এখন মাটির নীচ আর ভেঙ্গে পড়া পরিত্যাক্ত মঠের ইটের ফাঁক ফোকর থেকে বিষাক্ত সব সাপ বেরিয়ে আসার সময়। আমি সাপকে অনেক ভয় পাই জুন। আমার বাবা সাপের কামড়ে মারা গিয়েছে। আর মায়ানমারে অন্যান্য অসুখ বিসুখের চেয়ে সাপের কামড়েই বেশি মানুষ মারা যায় আর তার বেশিরভাগই হলো এই বাগানে’।
সারাহর কথা শুনে আমিও আতংকিত হোলাম, আমিও যে সাপকে ভীষন ভয় পাই আর সাপের বসবাসের জন্য বাগান একটি আদর্শ স্থানই বটে।


গত রাতে খেয়ে দেয়ে এই গাছের নীচে বসেছিলাম

মনে পড়লো গত রাত্রির কথা। খেয়ে দেয়ে ঘরের সামনে গাছের নীচে একটি পাকা ইটের নীচু একটি দেয়ালে পা ঝুলিয়ে বসে আছি। হটাৎ মাথার উপর তক্ষক সাপ (গিরগিটির মত দেখতে) ডেকে উঠলো। আমি চমকে সভয়ে উপরের দিকে তাকালাম। পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিল রিসোর্টের এক কিশোর কর্মচারী, আমাকে ভয় পেতে দেখে হাসি মুখে বল্লো,
‘ম্যাম ইটসে বাফ’(বার্ড)।
আমি বললাম “নো,ইটস নট আ বাফ, আই থিংক ইটস আ স্নেক”।
সে অত্যন্ত জোরের সাথে মাথা ঝাকিয়ে চারিদিকে হাত ছড়িয়ে বলে উঠলো,
‘ওহ নো, নো ম্যাম, হেয়ার নো স্ন্যাশ’।
তক্ষককে আমরা ছোটবেলা থেকে সাপই জানতাম । ছেলেটির প্রতিবাদে আর কথা বাড়ালাম না

আজ বিকেলে গাইড সারাহর সাপের ভয়ে সেই আদিম সবুজ বাবলা বনের ভেতর দিয়ে মেঠো পথে হেটে হেটে লাল লাল মঠগুলো কাছ থেকে দেখতে না পারায় দারুন এক আক্ষেপ রয়ে গেল মনে।

মনে পড়লো গত কালকের ছেলেটির কথা ‘হেয়ার নো স্ন্যাশ ম্যাম’।


ধীরে ধীরে রাত নেমে আসছে বাগানে

দুদিন থেকে আমাদের মন ভরলো না একদা পাগান রাজ্যে যা এখন বাগান নামে সারা বিশ্বে পরিচিত। পরদিন সকালে যাত্রা হলো শুরু অন্য কোথাও, অন্য এক প্রদেশে।

শেষ

ছবি সব আমাদের ক্যামেরায় তোলা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭
৬৪টি মন্তব্য ৬৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×