somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৯

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৮" পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুনঃ অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৮

বইমেলার শেষদিনে মেলা শুরু হয়েছিলো বেলা ১ টা থেকে। বিকেল নাগাদ ভিড় বাড়তে শুরু করে। আমি বিকেল ৫টার কিছু পরে মেলায় পৌঁছলাম। প্রথমে বইপত্র প্রকাশনে কিছুক্ষণ বসলাম। শেষদিন বলে সেদিন ঐ স্টলে অন্যান্য বেশ কয়েকজন লেখক লেখিকা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবার উপস্থিতিতে স্টলটা বেশ সরগরমই ছিলো। ক্রেতাদের ভিড়ও মোটামুটি ভালোই ছিল। মেলার শুরু থেকে লক্ষ্য করেছিলাম, এই স্টলে কবি সালাহউদ্দিন আহাম্মদ এর গত বইমেলায় প্রকাশিত "জলের নামতা" বইটি বিক্রী হচ্ছে। বই এর নামটা আমাকে মুগ্ধ করে। কয়েকটা কবিতা ওখানে দাঁড়িয়েই পড়েছিলাম, বেশ ভালো লেগেছিল। পরে জানলাম সালাহউদ্দিন আহাম্মদ কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের একজন এক্স ক্যাডেট। প্রকাশককে বলে রেখেছিলাম, আমি কবির সাথে পরিচিত হতে চাই, উনি যেদিন স্টলে আসেন সেদিন যদি আমি স্টলে উপস্থিত থাকি তবে তিনি যেন আমাদের পরিচয় করিয়ে দেন। সেদিন স্টলে পৌঁছে দেখলাম, প্রকাশক সেখানে উপস্থিত নেই, তবে একজন "জলের নামতা"য় শুভেচ্ছা স্বাক্ষর দিচ্ছেন। বুঝলাম, উনিই "জলের নামতা"র কবি। নিজে থেকেই পরিচিত হলাম। আমিও একজন এক্স ক্যাডেট জেনে উনি যথাবিহিত সৌজন্য প্রদর্শন করলেন। আমরা একে অপরের বই নিজেদের মধ্যে বিনিময় করলাম।

সেদিন বেশ কিছু শিশু কিশোরও আমার বইটির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলো। এদের কারো কারো নাম মনে রেখেছি, আবার কারো কারোটা ভিড়ের ডামাডোলে ভুলেও গেছি, তবে ওরা সবাই ছবি তুলে নিয়েছে ওদের কিংবা ওদের বাবা মায়ের সেলফোনে, আমিও আমারটায়। তেমন কয়েকটা ছবি এখানে দিলাম। কুড়িগ্রামের কবি সোহান সরকার এর বই ‘নয়নমনি’ও বিক্রয় হচ্ছিলো একই স্টল থেকে। তার সাথেও নিজ নিজ বই এর সৌজন্য কপি বিনিময় হলো। এমসিসি’র এক্স ক্যাডেট সদা হাসিখুশী শরীফ এলো আমার এবং অন্যান্য এক্স ক্যাডেটদের বই কিনতে। এখানে বলে রাখি যে ‘বইপত্র প্রকাশন’ থেকে এবারে মোট চারজন এক্স ক্যাডেটের বই বিক্রয় হয়েছে। বইমেলায় আমার বইটির সর্বশেষ ক্রেতাছিলেন এ এস এম ইউনুছ। তিনি “বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম (BDSF)” এ কাজ করেন। তার দুই সহকর্মীর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তাদের একজনের নাম সুমাইয়া জামান, অপরজন সাবিদিন ইব্রাহীম, যিনি একজন সদালাপী, সদা হাসিখুশী সজ্জন ব্যক্তি, সেটা মনে রেখেছি। আরও মনে রেখেছি যে তিনি একজন খ্যাতিমান অনুবাদক। অনুবাদ সাহিত্যে তার বেশ কিছু ভালো কাজ রয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে এবং সুমাইয়া পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। ইউনুছ সাহেব বেশ আলাপী লোক। তিনি BDSF এর পরবর্তী কোন একটা আলোচনায় গেস্ট স্পীকার হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য আমাকে আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন।

বইমেলার শেষ দিন হিসেবে ‘বইপত্র প্রকাশন’ এর প্রকাশক আমাদের মিষ্টিমুখ করালেন। আজিজ সুপার মার্কেটে লোক পাঠিয়ে তিনি আমাদের জন্য চিকেন শর্মা, সন্দেশ আর পেপসি আনিয়েছিলেন। স্টল বন্ধ করার আগে তিনি আমাদের সাথে একটা ছবিও তুললেন, তবে সবার পেছনে দাঁড়িয়ে। সবশেষে একটা হৃদ্যতাপূর্ণ আমেজ নিয়েই আমার এবারের বইমেলার মাসব্যাপী অভিজ্ঞতার অবসান হলো। সে আমেজ নিয়েই বাসায় ফিরে এলাম, তবে বাসায় প্রবেশের আগে দেখলাম আমার বন্ধু ও প্রতিবেশী আহসান উল্লাহ’র অফিস কাম বৈঠকখানায় আলো জ্বলছে। উঁকি মেরে দেখি উনি এবং আমার অপর এক বন্ধু যাকে তাঁর পান্ডিত্যের কারণে আমরা সবাই “গুরু” বলে ডাকি, বসে গল্প করছেন। তাদের উভয়কে আমার দুটো বই দিয়ে আমিও সে আলাপচারিতায় কিছুক্ষণের জন্য যোগ দিলাম। তারপরে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এলাম, শেষ হলো মাসব্যাপী বই ও বইমেলা নিয়ে উত্তেজনা ও উদ্দীপনার।


ঢাকা
৩০ মার্চ ২০১৬
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।


কবি সালাহউদ্দিন আহাম্মদ (ককক) এর সাথে, তার "জলের নামতা" হাতে...


শান্তির সাথে...


"জীবনের জার্নাল" হাতে ইশমাম....


তিন ক্ষুদে পাঠকের সাথে...


বইমেলার শেষ দিনে...শেষ ক্ষণে....শিল্পীর হাতে "গোধূলির স্বপ্নছায়া", মোহনার হাতে "জীবনের জার্নাল"...


এবারের বইমেলার আমার বইটির সর্বশেষ ক্রেতা এ এস এম ইউনুছ (মেরুন রঙের পাঞ্জাবি পরিহিত), সুমাইয়া জামান আর তার পাশে দাঁড়ানো সাবিদিন ইব্রাহিম, যিনি একজন বিখ্যাত অনুবাদক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। পেছনে দন্ডায়মান "বইপত্র প্রকাশন" এর প্রকাশক মাহবুবুর রহমান বাবু। মেলা সাঙ্গ হবার পরে ছবিটি তোলা হয়। —
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×