somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোল্লায় যাক গণতন্ত্র, সংবিধান পুড়ে হোক ছাঁই

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গোল্লায় যাক গণতন্ত্র, সংবিধান পুড়ে হোক ছাঁই

আতংক উৎকন্ঠার ৫ই জানুয়ারি , হতাশা নিরাশার ৫ই জানুয়ারি , গণতন্ত্র আর সংবিধান বাহানার ৫ই জানুয়ারি বলা চলে ভালোয় ভালোয় বিদায় হলো। গোল্লায় যাক গণতন্ত্র, সংবিধান পুড়ে হোক ছাঁই ; আমার ভায়ের লাশ পালাবার উৎসবটা যে তেমন মেতে উঠেনি সেটাই শান্তি, আমার আনন্দ সেখানেই।
লাশ যে একেবারে পড়েনি তা নয়। যে মায়েদের বুক খালি হয়েছে তাঁদের কে শান্তনা দেবার ভাষা আমার জানা নেই, খালেদা হাসিনার হয়তোবা জানা থাকতে পারে। হয়তোবা অনতি বিলম্বে মহান নেত্রী দুই শান্তির এক ফালি সুন্দর সুরৌম্য বাণী নিয়ে নিহতদের পরিবারের কাছে হাজির হবেন। আমি ঐ মৃত মানুষগুলোর পরিবারের প্রতি বিনীত মিনতি করে বলি গণতন্ত্র আর সংবিধান রক্ষার বাহানাকারী ঐ মানুষ দু'জন আপনাদের কাছে আসলে মুখের উপর আপনারা জিজ্ঞাস করুন একজন তারেক অথবা একজন জয়ের লাশ দেখে কি তাঁরা সহ্য করতে পারবেন?
বাংলাদেশে লাশ পড়া একটি নৈমিত্যিক বিষয় হয়ে গেছে, শিবির নামের এক চরম সম্ভাবনাময় তরুণের লাশ পড়ছে হয়তো নয়তোবা পুলিশ নামে আমাদের এক রক্ষক ভাইয়ের। লাশ পড়ছে সাধারণ পথচারী অথবা নিরীহ নিষ্পাপ কোন শিশুর। কারা পেলছে লাশ? লাশরাই মারছে লাশদের।গত্যন্তরহীন মানুষ অনোন্যপায় মানুষ একে অপরকে মারছে। নিজে না মারলে মারা পড়বে ভয়ে মারছে একে অপরকে। কেন এ অবিশ্বাস, কেন এতো চরম ভাবে মরণের মহোৎসবে মেতে গেছি আমরা? কে দেবে জবাব , কে এই চুড়ান্ত বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে আমাদেরকে?

শিবির একটি ছাত্র সংগটনের নাম। জামাত নিয়ে আমার কোন কথা নেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকালীন সময়ে তৎকালীন জামাত ও তার নেতাদের ভূমিকা বিষয়ে বিচার হওয়া বাঞ্ছনিয় মনে করি। কিন্তু ছাত্র শিবিরে যারা এখন সক্রিয় তাদের বয়সতো আমাদের স্বাধীনতার বয়সের চেয়ে কম, তারা আমাদেরই প্রজন্ম। তাদেরকে আমরা এমন সাংঘাতিক ভাবে প্রতিপক্ষ করে তুলছি কেন? প্রশ্নটা হয়তোবা খুব সুন্দর নয়, অনেকের ভালো লাগবে না। কিন্তু এই সত্যকে উপলব্দি করার সময় এসেছে। আপনার আমার প্রত্যেকের ঘরে কিন্তু শিবির জন্ম নিচ্ছে। শিবির মানেই কিন্তু 'স্বাধীনতার বিরোধী চিন্তার বালক' ভাবা সমীচিন হবে না। ওরা যা ই হোক ওরা ও এই ভূখন্ডেরই সন্তান, ৭১ পরবর্তী প্রজন্ম। ওদের কে বুঝতে চেষ্টা করা উচিৎ, যদি ওরা বিপদগামী হয় সঠিক পথে ফেরাবার চেষ্টা করতে হবে, ফেরাতে হবে। অস্ত্র কোন বিগড়ে যাওয়া স্বজনকে সঠিক করতে পারেনা আরো বেশি বিগড়িয়ে দেয়। শিবিরের ছেলেগুলো নিয়ে এখানে লেখার কারণ আজ মৃত্যুর নগ্নখেলায় ওরাই মরছে বেশী অথবা মারছে অথচ ওরা ও তো কারো না কারো সন্তান, ওদেরকে নিয়ে ও তো কোন না কোন একটি পরিবার অনেক অনেক স্বপ্ন দেখছে। ওদের কে ও আদর দিয়ে কাজে লাগানো সম্ভব। একটি উদাহরণ দেই। আজকের দিনে ১৯৯৬ এর ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনেকের মনে পড়ার কথা। তখনকার সরকার বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামীলীগ জামাত ঐক্য ছিলো। আমিও ঐ নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলনের এক সৈনিক ছিলাম, আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমার অঞ্চলে শিবিরের ছেলে গুলো তাদের সর্বাত্মক অবদান রেখেছিলো বলেই একটি ইউনিয়নের ৪টি ভোট কেন্দ্রে সেদিন ৫ শতাংশ ভোট ও কাস্ট হতে পারেনি। গণতন্ত্র রক্ষায় সেদিন যদি ঐ ছেলে গুলো আওয়ামীলীগের ডাকে সাড়া দিয়েছিলো, দেশ গঠনে আজ কেন তারা ভূমিকা রাখবে না? দরকার শুধু আমাদের রাজনীতিবিদদের একটু উদার হওয়ার, একটু মানবিক হওয়ার। আজ হয়তোবা বিভাজনের এই খেলা থেকে কেউ কেউ সাময়িক লাভ তুলে নিচ্ছেন কিন্তু স্থায়ী ভাবে আমাদেরকে একে অপরের প্রতিপক্ষ করে দিয়ে যাচ্ছেন, এটা ঠিক হচ্ছেনা। দয়া করুন।

৫ই জানুয়ারি পেরিয়ে গেছে। ইগো সংক্রান্ত জটিলতায় বি এন পি আওয়ামীলীগ উভয় দলই পাস করেছেন বলা চলে। আর দেশপ্রেম অথবা মনবতাবোধে দু'দলই পেয়েছেন শুন্য। উভয়ই হেরেছেন চরম ভাবে।
যেদিন গেছে তা গেছে, আগামীতে দেশ রক্ষায় দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি সামান্যতম ভালবাসা অবশিষ্ট থাকলে সেই ভালবাসার অনুভবে তারা ইগো পরিহার করবেন বিশ্বাস করি। আশা করি খুবই অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ১৬ কুটি মানুষকে মৃত্যু আতংকের হাত থেকে রক্ষা করবেন আমাদের প্রভূপ্রতিম রাজনীতিবিদ গন। মানুষ ভেতরে ভেতরে প্রতিনিয়ত মরছে, ছেলে কে স্কুলে পাটিয়ে মরেছে বাবা, স্বামী কে কাজে পাটিয়ে মরছে মা, বোন কে গার্মেন্টসে পাটিয়ে মরছে বোন, স্বজন পরিজনের মৃত চিন্তায় এইযে ভেতরে ভেতরে মানুষ মরছে এই মরার হাত থেকে তাদের কে রক্ষা করুন নয়তো আপনাদের মৃত্যু শুরু হবে আর লন্ডন আমেরিকা পালিয়েও সে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবেন না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×